চুপিম্‌ফা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
চাওফা চ্যু-পিম্‌-ফা
চাওফা
আসামের রাজা
রাজত্ব১৪৯৩ সাল থেকে ১৪৯৭ সাল পর্যন্ত
পূর্ণ নাম
চাওফা চ্যু-পিম্‌-ফা
রাজবংশছ্যু ফৈদ , আহোম রাজবংশ
ধর্মআহোম ধর্ম

চাওফা চ্যু-পিম্‌-ফা ১৪৯৩ সাল থেকে ১৪৯৭ সাল পর্যন্ত আহোম রাজ্য শাসন করা স্বর্গদেউ ছিলেন। পিতা চুহেনফার হত্যাকারীর প্রতিশোধ নিতে তিনি উচ্চ এবং নিম্ন বর্গর লোকের উপরে সন্ত্রাসের সৃষ্টি করেছিলেন। সাধারণ ভুলের জন্য তিনি নিজের একজন গর্ভবতী পত্নীকে নাগা পাহাড়ে নির্বাসন দিয়েছিলেন। রাণী কন্‌সেং নামের পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। যিনি পরে আহোম রাজ্যের প্রথম বরপাত্রগোহাঁই হিসাবে বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছিলেন।

সিংহারোহণ[সম্পাদনা]

চুপিম্‌ফা রাজা চুহেনফার জ্যেষ্ঠ পুত্র ছিলেন। ১৪৯৩ সালে পিতার মৃত্যুর পরে চুপিম্‌ফা স্বর্গদেউ হিসাবে শিঙরি ঘরে ওঠেন।

রাজত্বকাল[সম্পাদনা]

চুহেনফার হত্যাকারীর শাস্তি[সম্পাদনা]

শাসনভার নিয়েই চুপিম্‌ফা পিতা চুহেনফার হত্যাকারীকে বিচারে মানুষ লাগান। লন্তরুবন এবং তাঁর দুজন পুত্র টাওফ্রং এবং খুন্তাওকে ধরে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।[১] অন্য ষড়যন্ত্রকারীদেরও শাস্তি দেওয়া হয়। খুংলুং বুঢ়াগোহাঁইকে চুহেনফার হত্যায় সন্দেহ করা হয়েছিল। রাজার শাস্তিতে ভয়ে বুঢ়াগোহাঁই পালিয়ে যান।[২] চুপিম্‌ফা সাথে সাথে লুংলুং খাম্‌পেঙকে নতুন বুঢ়াগোহাঁই করেন। পরে খুংলুং বুঢ়াগোহাঁই ধরা পরেন যদিও অন্য প্রধানদের অনুরোধে তিনি মৃত্যুদণ্ড থেকে ছাড়া পান। তাঁর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তাঁকে গাঁওয়ের ঘরে নির্বাসন দেওয়া হয়।[১]

রাণীর নির্বাসন এবং কন্‌সেঙের জন্ম[সম্পাদনা]

চুহেনফার সময় থেকে নাগারা আহোম রাজ্যের সাথে মিত্রতা বজায় রেখেছিল। প্রতি বছরে তাঁরা আহোম রাজধানীতে এসে উপঢৌকন দিয়েছিলেন। একজন নাগা দলপতি চুপিম্‌ফার একজন পত্নীর দেখা পেয়ে রাজার সম্মুখে তাঁর সৌন্দর্যের প্রশংসা করেন। রাজা খঙতে নাগাজনের গাঁওতে পত্নীকে নির্বাসন দেন। রাণী সেই সময় গর্ভবতী ছিলেন এবং কিছু দিন পরে এটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।[৩] ছেলেটিকে চেংলুং নাম দেওয়া হয়েছিল কিন্তু পরে তিনি কন্‌ছেং নামে পরিচিত হন। চুপিম্‌ফার উত্তরসূরী চুহুন্মুঙ কন্‌ছেঙের কথা জানতে পেরে তাঁকে আনিয়ে বুঢ়াগোহাঁই এবং বরগোঁহাই সমপর্যায়ের বরপাত্রগোহাঁই পদ সৃষ্টি করে নিয়োগ করেন।[৪] কন্‌ছেং বরপাত্রগোহাঁ চুহুন্মুঙের জন্য কয়েকটি যুদ্ধে অংশ নেন এবং তাঁর নেতৃত্বে আহোম সেনা পূর্ণ কামরূপ রাজ্যের পশ্চিম সীমা করতোয়া পর্যন্ত যান।[৫][৬]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

সংক্ষিপ্ত রাজত্বকালে চুপিম্‌ফা তাঁর পিতার হত্যার প্রতিশোধের জন্য বহু লোককে পরিবারের সাথে শাস্তি এবং মৃত্যুদণ্ড দেন। প্রধানরা এই কাজে সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। এমন অভিযান চলাকালীন হঠাত ১৪৯৭ সালে রাজার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর কারণ হিসাবে অনেক বুরঞ্জী প্রাকৃতিক এবং অনেকে হত্যা বলে মনে করে। অসমীয়া ইতিহাসবিদ এবং লেখক গুণাভিরাম বরুয়ার মতে চুহেনফার মৃত্যু জনতার মধ্যে উত্তেজনা এবং ভয়ের সৃষ্টি করেছিলেন। সেইজন্য প্রধানরা চুপিম্‌ফাকে হত্যা করে প্রকৃত কথা লুকিয়ে রাখেন এবং রাজার মৃত্যু প্রাকৃতিকভাবে হওয়া বলে প্রচার করেন।[৭][৮] চুপিম্‌ফার পরে তাঁর পুত্র চুহুন্মুং রাজ্যপাট পান।

টীকা[সম্পাদনা]

  1. (Barbaruah 1981, পৃ. 43)
  2. (Gait 1926, পৃ. 85)
  3. (Gait 1926, পৃ. 86)
  4. (Gait 1926, পৃ. 90)
  5. (Barua 2008, পৃ. 61)
  6. (Gait 1926, পৃ. 95)
  7. (Barua 2008, পৃ. 59)
  8. (Barbaruah 1981, পৃ. 45)

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  • Barbaruah, Hiteswar (১৯৮১)। Ahomar-Din or A History of Assam under the Ahoms (ইংরেজি ভাষায়) (১ম সংস্করণ)। গুয়াহাটি: আসামের প্রকাশনা বোর্ড। 
  • Barua, Gunaviram (২০০৮)। Assam Buranji or A History of Assam (৪র্থ সংস্করণ)। গুয়াহাটি: আসামের প্রকাশনা বোর্ড। 
  • Gait, E A (১৯২৬)। A History of Assam (2 সংস্করণ)। কলকাতা: Thackar, Spink and Co।