ক্লদ বাকেনহাম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ক্লদ বাকেনহাম
আনুমানিক ১৯০৫ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে ক্লদ বাকেনহাম
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামক্লদ পার্সিভাল বাকেনহাম
জন্ম(১৮৭৬-০১-১৬)১৬ জানুয়ারি ১৮৭৬
হার্ন হিল, লন্ডন, ইংল্যান্ড
মৃত্যু২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৭(1937-02-23) (বয়স ৬১)
ডান্ডি, স্কটল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট
ভূমিকাউদ্বোধনী বোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৬৫)
১ জানুয়ারি ১৯১০ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট৯ মার্চ ১৯১০ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৮৯৯ - ১৯১৪এসেক্স
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৩০৭
রানের সংখ্যা ৪৩ ৫৬৪১
ব্যাটিং গড় ৬.১৪ ১৪.৫০
১০০/৫০ –/– ২/১২
সর্বোচ্চ রান ১৭ ১২৪
বল করেছে ১১৮২ ৫২১৪৮
উইকেট ২১ ১১৫০
বোলিং গড় ২৮.২৩ ২৫.৩১
ইনিংসে ৫ উইকেট ৮৫
ম্যাচে ১০ উইকেট ১৭
সেরা বোলিং ৫/১১৫ ৮/৩৩
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২/– ১৭২/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৮ জুন ২০২০
অলিম্পিক পদক রেকর্ড
পুরুষদের ফুটবল
 গ্রেট ব্রিটেন-এর প্রতিনিধিত্বকারী
স্বর্ণ পদক - প্রথম স্থান ১৯০০ প্যারিস দলগত প্রতিযোগিতা

ক্লদ পার্সিভাল বাকেনহাম (ইংরেজি: Claude Buckenham; জন্ম: ১৬ জানুয়ারি, ১৮৭৬ - মৃত্যু: ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৭) লন্ডনের হার্ন হিল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও ফুটবলার ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯১০-এর দশকের সূচনালগ্নে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে এসেক্স দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট বোলার হিসেবে বোলিং উদ্বোধন করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন পার্সি বাকেনহাম নামে পরিচিত ক্লদ বাকেনহাম

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

১৮৯৯ সাল থেকে ১৯১৪ সাল পর্যন্ত ক্লদ বাকেনহামের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল।

১৯০৫ সালে নব্বুইয়ের অধিক উইকেট পেলেও ৩২-এর অধিক রান খরচ করে ফেলেন। পরবর্তী ছয় মৌসুমে ইংল্যান্ডের সর্বাপেক্ষা ভয়ঙ্কর পেস বোলারদের তালিকায় তিনি ষষ্ঠ স্থানে ছিলেন।

১৯০৬ সালে প্রথমবারের মতো শত উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন ক্লদ বাকেনহাম। পরবর্তী কয়েক মৌসুমে বেশ কয়েকটি প্রতিনিধিত্বমূলক খেলায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। তবে, কোন টেস্টেই তাকে ইংল্যান্ড দলে খেলার সুযোগ দেয়া হয়নি। অবশেষে ১৯০৯ সালে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে ওভালে অনুষ্ঠিত সিরিজের পঞ্চম টেস্টে তাকে দলে রাখা হয়। তবে, তাকে পরবর্তীতে খেলানো হয়নি। তাকে বাদ দেয়ার বিষয়ে উইজডেনের সম্পাদক সিডনি পারডন মন্তব্য করেন যে, সাঙ্ঘাতিক রকমের ভুল ছিল ও দল নির্বাচকমণ্ডলীর সিদ্ধান্ত মোতাবেক একজন ফাস্ট বোলারের অন্তর্ভূক্তি বোকামির পর্যায়ে পড়ে।[১]

১৯০৮ সালে ওভালে সারের বিখ্যাত ব্যাটসম্যান ই. জি. হেইসের আর্থিক সুবিধা গ্রহণের খেলায় স্মরণীয় খেলা উপহার দেন। সাউথের সদস্যরূপে নর্থের বিপক্ষে ৮/১৬১ পান। লর্ডসে জেন্টলম্যান বনাম প্লেয়ার্সের মধ্যকার তিনটি খেলায় অংশ নিতে পেরেছেন। ১৯০৯ সালে মাঠকর্মী ছিলেন। এ সময়ে তিনি এমসিসি একাদশের সদস্যরূপে মন্টি নোবেলের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিপক্ষে খেলেন। তিন উইকেট নিয়ে দলের জয়ে ভূমিকা রাখেন। দ্বিতীয়টিতে প্রতিপক্ষের ৪৩৪ রানের মধ্যে তিনি ৬/৯৮ পান। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬/৬৮ পান। তন্মধ্যে, পাঁচজনকে বোল্ড করেন।

১৯১১ সালে নিজস্ব স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করেন। এ পর্যায়ে ১৩৪ উইকেট পান। তবে, ১৯১০ সালে ১১৮ উইকেট পেলেও উইকেট প্রতি ১৭.৬৬ রান দিয়েছিলেন। ১৯০৫ থেকে ১৯১১ সময়কালে ২৩-এর কম খরচে ৮২৮ উইকেট পান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে ১৯১৪ সালে কাউন্টি ক্রিকেট বন্ধ হলে ২৫.৩০ গড়ে ১,১৫২ উইকেট পান।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে চারটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন ক্লদ বাকেনহাম। সবগুলো টেস্টই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলেছিলেন তিনি। ১ জানুয়ারি, ১৯১০ তারিখে জোহেন্সবার্গে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ৭ মার্চ, ১৯১০ তারিখে কেপ টাউনে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯০৯-১০ মৌসুমে কেবলমাত্র একবারই এইচ. ডি. জি. লেভেসন গাওয়ারের অধিনায়কত্বে দক্ষিণ আফ্রিকা গমনের সুযোগ পান। শীতকালে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। পাঁচ টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজের চারটিতে খেলেন। চার টেস্টে অংশ নিয়ে ২৮ গড়ে ২১ উইকেট দখল করেন। তন্মধ্যে, জোহেন্সবার্গে সিরিজের তৃতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫/১১৫ পান। ১৯১১ সালের ব্যক্তিগত সেরা মৌসুম অতিবাহিত করেন। ১৩৪ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। তাসত্ত্বেও, ১৯১১-১২ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরের বয়সের দিক বিবেচনায় এনে তাকে দলে রাখা হয়নি।[২]

মূল্যায়ন[সম্পাদনা]

দীর্ঘদেহী ও অতিরিক্ত শক্তিমত্তার অধিকারী হিসেবে খুবই দ্রুতগতিতে বেশ ভালোমানের বোলিং করতেন। নিজের নামকে আরও ফুঁটিয়ে তুলতে পারতেন। কিন্তু, স্লিপ ক্যাচ ফসকে যাবার বিষয়টি তাকে দূর্ভাগ্যজনকভাবে দেখতে হতো। ফিল্ডিংয়ে দূর্বলতার কারণে বাকেনহামকে বেশ রান খরচ করতে হয়েছিল। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ২৫-এর অধিক গড়ে উইকেট পেয়েছেন যা তার সমসাময়িক খেলোয়াড়দের তুলনায় বেশি ছিল। আক্রমণধর্মী ব্যাটসম্যান ক্লদ বাকেনহাম প্রায়শঃই দলের প্রয়োজনে বেশ কার্যকর ইনিংস খেলতেন।

কৃশকায় ও দীর্ঘ দেহের অধিকারী এবং বিশাল গোঁফ নিয়ে পার্সি বাকেনহাম খেলতে নামতেন। ফাস্ট বোলিং ও নিচেরসারির কার্যকরী ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ভূমিকা রাখতেন। ১৮৯৯ থেকে ১৯১৪ সাল পর্যন্ত এসেক্সের পক্ষে খেলেন। তবে, খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুরদিকে তাকে বেশ প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়েছিল। ফিল্ডিংয়ে তার ভূমিকা অনেকাংশে জবুথবু ছিল।

ফুটবলে অংশগ্রহণ[সম্পাদনা]

শৌখিন ফুটবলার হিসেবেও ক্লদ বাকেনহামের সুনাম ছিল। এসেক্সের পক্ষে কাউন্টি পর্যায়ে ফুটবল খেলতেন তিনি। আপটন পার্ক এফ.সি’র পক্ষে রাইট-ব্যাক অবস্থানে খেলতেন। ১৯০০ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের ফুটবল বিষয়ে তার দল স্বর্ণপদক লাভ করে।

১৯১৪ সালে অবসর গ্রহণের পর পেশাদারী পর্যায়ে স্কটল্যান্ডীয় ক্লাব ফরফারশায়ারে খেলেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে রয়্যাল গ্যারিসন আর্টিলারিতে যুক্ত ছিলেন। যুদ্ধ শেষে রেপটন স্কুলে ক্রিকেট কোচের দায়িত্ব পালন করেন।[৩]

নিজ গৃহে স্বল্পকালীন রোগে ভোগেন। অতঃপর ২৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৭ তারিখে ৬১ বছর বয়সে স্কটল্যান্ডের ডান্ডি এলাকায় ক্লদ বাকেনহামের দেহাবসান ঘটে। তার মৃত্যুতে উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমেনাকে উল্লেখ করা হয়েছিল যে, ‘তিনি নিজেকে যতটুকু ভাবতেন, তার চেয়েও অধিক খরুচে ছিলেন। ’[৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Notes by the Editor"। Wisden Cricketers' Almanack। Part I (1910 সংস্করণ)। Wisden। পৃষ্ঠা 171–172। 
  2. Christopher Martin-Jenkins (১৯৮০)। The Complete Who's Who of Test Cricketers (1980 সংস্করণ)। Orbis। পৃষ্ঠা 27 
  3. "Obituary, 1937"। Wisden Cricketers' Almanack (1938 সংস্করণ)। Wisden। পৃষ্ঠা 936–937। 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

গ্রন্থপঞ্জী[সম্পাদনা]