কুয়েতের সংবিধান

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

কুয়েতের সংবিধান (আরবি: الدستور الكويتي, প্রতিবর্ণীকৃত: ad-distūr al-Kuwayti, টেমপ্লেট:IPA-afb) ১৯৬১-১৯৬২ সালের কুয়েতি সাংবিধানিক সম্মেলন নির্বাচনের মাধ্যমে সৃষ্ট হয় এবং ১৯৬২ সালের ১১ই নভেম্বর কুয়েতি আমিরসামরিক বাহিনীর কমান্ডার শেখ আবদুল্লাহ আল-সালিম আল সাবাহ এতে স্বাক্ষর করে আইন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

কুয়েতের স্বাধীনতার পর ও ইরাকি আক্রমণের হুমকির ভিত্তিতে ১৯৬১ সালের জুন মাসে আমির আবদুল্লাহ আল-সালিম আল সাবাহ ঘোষণা দেন তিনি কুয়েতের জন্য সংবিধান রচনা করবেন। ডিসেম্বর মাসে গণপরিষদের জন্য নির্বাচন হয়, যা ১৯৬২ সালের ১১ই নভেম্বর আইন নম্বর ১ হিসেবে প্রবর্তিত একটি সংবিধানের খসড়া তৈরি করে। সংবিধানের অনুচ্ছেদসমূহ দুইবার বাতিল করা হলেও দলিলটি কুয়েতের রাজনৈতিক ব্যবস্থার অভিপ্রায়ের মৌলিক বিবৃতি হিসেবে রয়ে গেছে।[১]

কুয়েতের সংবিধানের সময়রেখা[সম্পাদনা]

সূত্র:[২][৩]

  • ১৯ জুন ১৯৬১: স্বাধীনতা
  • ২১ জুন ১৯৬১: কুয়েত আরব লীগে সদস্যপদ পাওয়ার জন্য আবেদন করে
  • ২৫ জুন ১৯৬১: আবদ-আল করিম কাসিম ইরাকের জন্য কুয়েত দাবি করেন
  • ৩০ জুন ১৯৬১: কুয়েত জাতিসংঘে প্রবেশের অনুরোধ করে
  • ১ জুলাই ১৯৬১: ব্রিটিশ সৈন্যরা কুয়েতে অবতরণ করে
  • ৪ জুলাই ১৯৬১: আরব লীগ প্রশ্ন তোলে যে নতুন রাষ্ট্র (যেমন কুয়েত) অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সদস্য রাষ্ট্রসমূহের সর্বসম্মতি বা সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন কিনা
  • ৭ জুলাই ১৯৬১: সোভিয়েত ইউনিয়ন কুয়েতের স্বাধীনতাকে "সম্মান" করার জন্য ব্রিটিশ নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রস্তাবে ভেটো দেয়
  • ১০-১৬ জুলাই ১৯৬১:
  • ২০ জুলাই ১৯৬১: কুয়েত আরব লীগে অন্তর্ভুক্ত হয়, ইরাকি প্রতিনিধিদল প্রতিবাদে বৈঠক থেকে বেরিয়ে যায়
  • ২১ জুলাই ১৯৬১: আরব লীগ কুয়েতে আরব সৈন্য পাঠানোর প্রস্তুতি নেয়
  • ২৬ আগস্ট ১৯৬১: কুয়েতের আমির শেখ আবদুল্লাহ আল-সালিম আল-সাবাহ সাংবিধানিক সম্মেলনের নির্বাচন সংক্রান্ত একটি আইন লেখার জন্য একটি কমিটি নিয়োগ দেন
  • ৬ সেপ্টেম্বর ১৯৬১: নির্বাচন সংক্রান্ত আইন জারি
  • ১০ সেপ্টেম্বর ১৯৬১: আরব বাহিনী আরব লীগের পৃষ্ঠপোষকতায় কুয়েতে আসতে শুরু করে; তন্মধ্যে ছিল সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব প্রজাতন্ত্র, জর্ডান, সুদান এবং তিউনিসিয়ার সেনাবাহিনী
  • ১০ অক্টোবর ১৯৬১: ব্রিটিশ বাহিনী কুয়েত থেকে সেনা প্রত্যাহার সম্পূর্ণ করে
  • ৩০ নভেম্বর ১৯৬১: কুয়েত আবার জাতিসংঘের সদস্যতার জন্য আবেদন করে এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন আবার আবেদনে ভেটো দেয়
  • ৩০ ডিসেম্বর ১৯৬১: সাংবিধানিক সম্মেলনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়
  • ২০ জানুয়ারি ১৯৬২: সাংবিধানিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশন
  • ২৭ মার্চ ১৯৬২: বিশিষ্ট আরব জাতীয়তাবাদী জসিম আল-কাতামি পররাষ্ট্র বিষয়ক উপমন্ত্রী নিযুক্ত হন
  • ১১ নভেম্বর ১৯৬২: ১৯৬২-এর সংবিধান জারি
  • ২৩ জানুয়ারি ১৯৬৩: প্রথম জাতীয় পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়
  • ৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৩: কাসিমকে উৎখাত ও হত্যা করা হয়
  • ১৪ মে ১৯৬৩: কুয়েত জাতিসংঘে অন্তর্ভুক্ত হয়
  • ৪ অক্টোবর ১৯৬৩: ইরাকি সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কুয়েতকে স্বীকৃতি দেয়
  • ১২ অক্টোবর ১৯৬৩: কুয়েত ইরাকি সরকারকে ৩০ মিলিয়ন ব্রিটিশ পাউন্ড ঋণ প্রদান করে

১৯৭৬ ও ১৯৮৬ সালে সংবিধান স্থগিত[সম্পাদনা]

কুয়েতের সংবিধান ১৯৭৬ সালে ও ১৯৮৬ সালে দুইবার স্থগিত করা হয়।[১][৪]

১৯৭৬ সালের আগস্টে আমির তার নীতির বিরুদ্ধে পরিষদের বিপুল বিরোধিতার প্রতিক্রিয়ায় রাজনৈতিক ও নাগরিক অধিকার (সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং আইনসভা ভেঙে দেওয়া) এবং পরিষদ সম্পর্কিত সংবিধানের চারটি অনুচ্ছেদ স্থগিত করেন। তবে, ১৯৮০ সালে সংবিধানের স্থগিত অনুচ্ছেদসমূহ জাতীয় পরিষদের সাথে পুনঃস্থাপিত হয়।[১]

১৯৮২ সালে সরকার ষোলটি সাংবিধানিক সংশোধনী পেশ করে যা অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে আমিরকে একটি বর্ধিত সময়ের জন্য সামরিক আইন ঘোষণা করার অনুমতি দিত এবং আইনসভার আকার এবং অফিসের মেয়াদ উভয়ই বৃদ্ধি করত। ১৯৮৩ সালের মে মাসে কয়েক মাস বিতর্কের পর প্রস্তাবসমূহ আনুষ্ঠানিকভাবে বাদ দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও, সাংবিধানিক সংশোধনের বিষয়টি জাতীয় পরিষদ এবং রাজপ্রাসাদ উভয় স্থানে আলোচনার বিষয় হিসেবে অব্যাহত ছিল।[১]

১৯৮৬ সালে জাতীয় পরিষদের সাথে আবার সংবিধান স্থগিত করা হয়। পূর্ববর্তী স্থগিতাদেশের মত এই পদক্ষেপের বিপুল বিরোধিতা দেখা দেয়; প্রকৃতপক্ষে ১৯৮৯-৯০ সালের গণতন্ত্র আন্দোলন সাংবিধানিক জীবনে প্রত্যাবর্তনের দাবি থেকে এর নাম হয়ে যায় সাংবিধানিক আন্দোলন। ওঠে ইরাকের কুয়েত দখলের পর, যা সমস্ত সাংবিধানিক অধিকার বাতিল করে এবং ১৯৯১ সালে কুয়েতের সার্বভৌমত্বে ফিরে আসার পরে এই বিরোধিতা আরও স্পষ্ট হয়ে।[১]

১৯৯২ সালের শুরুর দিকে অনেক সংবাদপত্রের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। ১৯৯২ সালের অক্টোবরের নির্বাচনের পর জাতীয় পরিষদ সমস্ত আমিরি ডিক্রি পর্যালোচনা করার জন্য তার সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগ করে, এ সময় জাতীয় পরিষদ বিলুপ্ত হয়ে যায়।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. ক্রিস্টাল, জিল (১৯৯৪)। "Kuwait: Constitution"। মেৎজ, হেলেন শাপিন। পার্সিয়ান গালফ স্টেটস: কান্ট্রি স্টাডিজ (৩য় সংস্করণ)। ফেডারাল রিসার্স ডিভিশন, লাইব্রেরি অব কংগ্রেস। পৃষ্ঠা ৮৪–৮৬। আইএসবিএন 0-8444-0793-3ওসিএলসি 29548413. এই উৎস থেকে এই নিবন্ধে লেখা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যা পাবলিক ডোমেইনে রয়েছে। 
  2. "Chronology June 16, 1961 - September 15, 1961"মিডল ইস্ট জার্নাল। ১৫, ৪: ৪১৬–৪৪৪। জেস্টোর 4323406 – JSTOR-এর মাধ্যমে। 
  3. হার্ব (২০১৪)। মাইকেল। ইটাকা অ্যান্ড লন্ডন: কর্নেল ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা ৯১। আইএসবিএন 978-0-8014-5336-6 
  4. উলরিখসেন, ক্রিস্টিয়ান কোটস (২০ জুন ২০১২)। "Political showdown in Kuwait"ফরেন পলিসি (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০২২ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]