জাতীয় পরিষদ (কুয়েত)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কুয়েত জাতীয় পরিষদ

مجلس الأمة الكويتي

মজলিস আল-উম্মা আল-কুয়েতি
১৫ তম আইনসভা অধিবেশন
প্রতীক বা লোগো
কুয়েতের জাতীয় প্রতীক
ধরন
ধরন
এককক্ষবিশিষ্ট
মেয়াদসীমানাই
ইতিহাস
নতুন অধিবেশন শুরু১১ ডিসেম্বর ২০১৬ (2016-12-11)
নেতৃত্ব
মারজুক আলী আল-গানিম
১১ ডিসেম্বর ২০১৬ থেকে
ইশা আহমাদ আল-কান্দারi
১১ ডিসেম্বর ২০১৬ থেকে
সম্পাদক
অউদা অউদা আল-রুওয়াই
১১ ডিসেম্বর ২০১৬ থেকে
নিয়ন্ত্রক
নায়েফ আব্দুল আজিজ আল-আজমি
১১ ডিসেম্বর ২০১৬ থেকে
গঠন
আসন৫০ জন নির্বাচিত সদস্য
সর্বোচ্চ ১৫ জন নিযুক্ত সদস্য
রাজনৈতিক দল
সময়কালের মেয়াদ৪ বছর
নির্বাচন
একক অ-স্থানান্তরযোগ্য ভোট
সর্বশেষ নির্বাচন
২৬ নভেম্বর ২০১৬
পরবর্তী নির্বাচন
২৬ নভেম্বর ২০২০
সভাস্থল
কুয়েত জাতীয় সংসদ ভবন
কুয়েত সিটি, কুয়েত
ওয়েবসাইট
kna.kw

জাতীয় পরিষদ (আরবি: مجلس الأمة) কুয়েতের এককক্ষবিশিষ্ট আইনসভা। জাতীয় পরিষদ কুয়েত সিটিতে অবস্থিত। পরিষদের সদস্যগণ সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হন; দেশটি পাঁচটি নির্বাচনী জেলায় বিভক্ত এবং প্রতিটি জেলা থেকে দশ জন করে সদস্য প্রতিনিধিত্ব করে। কুয়েতে কোন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নেই, তাই প্রার্থীরা নির্বাচনের সময় স্বতন্ত্র হিসেবে প্রার্থী হন; সাধারণত বিজয়ী হওয়ার পরে সদস্যরা অনানুষ্ঠানিক সংসদীয় জোট গঠন করে। ৫০ জন নির্বাচিত সদস্য এবং পদাধিকার বলে নিযুক্ত সর্বোচ্চ ১৫ জন সরকারী মন্ত্রীর সমন্বয়ে জাতীয় পরিষদ গঠিত হয়। ১৬ ই অক্টোবর ২০১৬-তে কুয়েতের আমির নিরাপত্তা হুমকীর কথা উল্লেখ করে জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করে ডিক্রি জারি করেন,[১] যথাসময়ের পূর্বেই ২৬ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়া হয়।

সংক্ষিপ্ত বিবরণ[সম্পাদনা]

১৯৬০-এর দশকে কুয়েতের আইনসভা জাতীয় পরিষদ প্রতিষ্ঠিত হয়।[২] এর পূর্ববর্তী সংসদ "একজন সংসদ সদস্য সুলাইমান আল-আদাসানির স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে ইরাকের রাজা গাজীকে তাৎক্ষণিকভাবে কুয়েতকে ইরাকের সঙ্গে যুক্ত করার অনুরোধ করার" পর ১৯৩৮ সালের জাতীয় পরিষদ আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৩৯ সালে বিলুপ্ত হয়ে যায়। এই দাবিটি পরিষদের বণিক সদস্যরা আহমদ আল-জাবের আল-সাবাহের কাছ থেকে তেলের অর্থ উত্তোলনের চেষ্টা করার পরে আসে, একটি প্রস্তাব তিনি প্রত্যাখ্যান করেন এবং এর ভিত্তিতে তিনি ১৯৩৯ সালে পরিষদ সদস্যদের গ্রেপ্তার করে একটি তদন্ত শুরু করেন।[৩]

জাতীয় পরিষদের সরকারি মন্ত্রীদের পদ থেকে সরানোর ক্ষমতা আছে। সংসদ সদস্যরা তাদের সাংবিধানিক অধিকার প্রয়োগ করে ঘন ঘন সরকারি সদস্যদের প্রশ্ন করে সভার কাজ ব্যাহত করেন। কুয়েত টিভিতে জাতীয় পরিষদে মন্ত্রীদের প্রশ্নোত্তর পর্ব সম্প্রচারিত হয়। সংসদ সদস্যদেরও প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করার অধিকার আছে এবং সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করা হলে, সেক্ষেত্রে মন্ত্রিসভা বদলাতে হয়।

জাতীয় পরিষদে ৫০ জন সংসদ সদস্য থাকতে পারে। পঞ্চাশ জন প্রতিনিধি চার বছরের মেয়াদে জনপ্রিয় ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন। মন্ত্রিসভার সদস্যরাও প্রতিনিধি হিসাবে সংসদে বসেন। সংবিধান মন্ত্রিসভার আকার ১৬ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ করেছে এবং মন্ত্রিসভার কমপক্ষে একজন সদস্যকে অবশ্যই নির্বাচিত সংসদ সদস্য হতে হবে। নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মতো মন্ত্রীপরিষদের মন্ত্রীদেরও একই অধিকার আছে, নিম্নলিখিত দুটি ব্যতিক্রম ব্যতীত: তারা কমিটির কার্যক্রমে অংশ নেয় না এবং মন্ত্রীপরিষদের কোন সদস্যের বিরুদ্ধে কোন অনাস্থা ভোটে তারা ভোট দিতে পারে না।

জাতীয় পরিষদ কুয়েতের প্রধান আইন প্রণয়নকারী কর্তৃপক্ষ। আমির আইনে ভেটো দিতে পারে তবে জাতীয় পরিষদ দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের মাধ্যমে তার ভেটোকে বাতিল করতে পারে। জাতীয় পরিষদের (সংবিধানের ৪ অনুচ্ছেদ অনুসারে) আমির কর্তৃক নিয়োগ অনুমোদন করা বা অনুমোদন না করার সাংবিধানিক অধিকার আছে। অসুস্থতার কারণে সাদের অক্ষমতার কারণে ২০০৬ সালে জাতীয় পরিষদ কার্যকরভাবে তার পদ থেকে সাদ আল-সাবাহকে সরিয়ে দেয়। ২০০১ সালে নাথান জে ব্রাউন কুয়েতের জাতীয় সংসদকে আরব বিশ্বের সর্বাধিক স্বাধীন সংসদ হিসাবে চিহ্নিত করেন;[৪] ২০০৯ সালেে এরান সেগাল এটিকে মধ্য প্রাচ্যের অন্যতম "শক্তিশালী" সংসদ হিসাবে বিবেচিত করেন।[৫]

লিঙ্গ ভারসাম্য[সম্পাদনা]

২০০৫ সালে মহিলারা ভোটের অধিকার অর্জন করে। ২০০৬ ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে কোন মহিলা প্রার্থীই কোন আসনে জিততে পারেনি। নারীরা ২০০৯ সালের নির্বাচনে জাতীয় পরিষদে প্রথম আসন লাভ করে, সে বছর চার জন মহিলা; আসিল আল-আওয়াদি, রোলা দাসতি, মাসুমা আল-মোবারক এবং সালওয়া আল-জাসার নির্বাচিত হন।[৫]

বিলুপ্তিকরণ[সম্পাদনা]

সংবিধানিক আদালত পরিষদ ‍বিলুপ্ত করার ক্ষমতা রাখে এবং অবশ্যই পরবর্তী দুই মাসের মধ্যে নতুন নির্বাচন আহ্বান করতে হবে। সাংবিধানিক আদালতটিকে আরব বিশ্বের অন্যতম স্বাধীন বিচার বিভাগীয় আদালত বলে ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয়।[৬] পরিষদ বিলুপ্ত করার ক্ষমতা আমিরেরও আছে তবে পরবর্তীতে দুই মাসের মধ্যে অবশ্যই নতুন নির্বাচনের ডাক দিতে হবে। সাংবিধানিক আদালত সংসদ ভেঙে আমিরের ডিক্রি অকার্যকর করতে পারে।

সংসদ ভবন[সম্পাদনা]

মূল নিবন্ধ: কুয়েত জাতীয় সংসদ ভবন

সংসদ ভবনটির নকশা করেন ডেনিশ স্থপতি জান অ্যাডজন, তিনি সিডনি অপেরা হাউজের নকশাও করেছেন।

রাজনৈতিক দলসমূহ[সম্পাদনা]

যদিও কুয়েতে রাজনৈতিক দলগুলি আইনতগত ভাবে স্বীকৃত নয়, তবে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল আছে। পরিষদটি স্বতন্ত্র সদস্য ছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিয়ে গঠিত:

  • উদারপন্থী, ধর্মনিরপেক্ষ ব্লক: ২০১৩ সালের নির্বাচনে দশ জন সদস্য নির্বাচিত হয় এবং তারা বর্তমান সংসদের বৃহত্তম রাজনৈতিক ব্লক।
  • সাবি (জনপ্রিয়) ব্লক: মধ্যবিত্তদের বিষয়গুলো তুলে ধরে জনগণের (সুন্নি ও শিয়া), উদারপন্থী এবং জাতীয়তাবাদী দলগুলির একটি জোট। পপুলার অ্যাকশন ব্লক তাদের প্রধান রাজনৈতিক দল।
  • ইসলামিক ব্লক: সুন্নি ইসলামপন্থী সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত। ২০১৩ সালের জাতীয় নির্বাচনে ইসলামিক ব্লকের ৩ জন সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Hussain Al-Qatari & Jon Gambrell (অক্টোবর ১৬, ২০১৬)। "Kuwaiti cabinet resigns, parliament dissolves"Associated Press News। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১৬, ২০১৬ 
  2. Robert F. Worth (২০০৮)। "In Democracy Kuwait Trusts, but Not Much"New York Times 
  3. Jill Crystal Oil and politics in the Gulf page 49
  4. Nathan J. Brown। "Mechanisms of accountability in Arab governance: The present and future of judiciaries and parliaments in the Arab world" (পিডিএফ)। পৃষ্ঠা 16–18। ১০ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  5. Eran Segal। "Kuwait Parliamentary Elections: Women Making History" (পিডিএফ)। Tel Aviv Notes। পৃষ্ঠা 1। ২০১৫-০১-০৪ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  6. "Kuwait court ruling may threaten economic recovery"Reuters। ১৫ মে ২০১৩। ২৪ জুন ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জুলাই ২০১৩ 

বহিঃ সংসংযোগ[সম্পাদনা]