ইরানি পপ সঙ্গীত
ইরানের সঙ্গীত | |
---|---|
সাধারণ প্রকার | |
ধারা | |
নির্দিষ্ট ফর্ম | |
জাতিগত সঙ্গীত | |
অন্য রূপ | |
গণমাধ্যম ও অনুষ্ঠান | |
সঙ্গীত উৎসব | |
সঙ্গীত মাধ্যম | |
জাতীয়তাবাদী ও দেশাত্মবোধক গান | |
জাতীয় সঙ্গীত |
|
অন্যান্য | |
ইরানি পপ সঙ্গীত মূলত ইরান থেকে উদ্ভূত পপ সঙ্গীতকে বোঝায়, যেখানে প্রধানত ফার্সি এবং দেশের অন্যান্য আঞ্চলিক ভাষার গান অন্তর্ভুক্ত। পশ্চিমা বিশ্বে এটি ফার্সি পপ সঙ্গীত হিসাবে ব্যাপকভাবে উল্লেখিত।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]প্রাথমিক ইরানি জনপ্রিয় সঙ্গীত
[সম্পাদনা]ইরানি পপ সঙ্গীতের উৎপত্তি ১৯ শতকের কাজার রাজবংশের সময়কালে।[১] সে সময়ে মুত্রেব শৈলীর অধিকাংশ পরিবেশনকারী ছিলেন ইহুদি।[২] ১৯৩০ সালে বেতার আবিষ্কারের এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, ইরানে জনপ্রিয় সঙ্গীতের একটি ধারা আবির্ভূত হয় এবং বিকাশ লাভ করে।[১]
১৯৫০-১৯৭০-এর দশকে
[সম্পাদনা]১৯৫০-এর দশকে ইরানের পশ্চিমাঞ্চলের প্রভাবশালী পপ সঙ্গীত আবির্ভূত হয়।[৩] ১৯৫০-এর দশকের পুর্বে, ইরানের সঙ্গীত শিল্প প্রথাগত গায়কদের দ্বারা প্রভাবিত ছিল।[৩] ভিগুয়েন, ইরানি পপ ও জ্যাজ সঙ্গীত "সুলতান" নামে পরিচিত, যিনি এই বিপ্লবের অগ্রগামী ছিলেন।[৩][৪][৫] তিনি গিটার সঞ্চালনকারী প্রথম ইরানি সঙ্গীতশিল্পীদের একজন।[৩]
ইরানের শাস্ত্রীয় পপ শিল্পীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত, অ্যান্ডি, আরেফ, বিজন মুর্তজাভি, ডারিয়ুষ, ইবি, ফারমার্স আসলানি, ফারহদ, ফরেদুন ফাররোখজাদ, গিতি পশেই, গুগুশ, হাসান শামীমাজাদ, হায়েদেহ, হোমেয়রা, লেইলা ফোরৌহার, ম্যাহেস্তি, নূশাফারিন, পারভেজ মগসদী, রমেশ, শাহরাম শাবপারেহ, এবং ভারুযান।
-
পারভিজ মগসাদি ব্যান্ড। বাম থেকে: ওনিক, ডারিয়ুষ, পারভিজ, কিভান, মাসিস, নেলি এবং এলিস আলভান্দি (১৯৬০-এর দশকে)।
-
১৯৭৬ সালে একটি কনসার্টে হায়েদেহ, লোগমান আধামি এবং অন্যান্য সঙ্গীতশিল্পী।
-
১৯৭০-এর দশকে ফারহদ মেহরাদ
-
১৯৭০-এর দশকে ম্যাহেস্তি।
-
১৯৭০-এর দশকে হোমেয়রা
১৯৭৯-এর ইসলামি বিপ্লবের পরবর্তী
[সম্পাদনা]১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর, ইরানের পটভূমি থেকে পপ সঙ্গীত নিষিদ্ধ করা হয় এবং ফলে সম্পূর্ণরূপে বিলীন হয়ে যায়।[৬] অনেক ইরানি শিল্পী বিদেশে অভিবাসিত হয়, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে, কেউ কেউ যুক্তরাজ্যে এবং এদের অনেক নির্বাসিত আবস্থায় গান গাওয়া অব্যাহত রাখে। এরপর থেকে, বেশকয়েকটি জনপ্রিয় ইরানি টেলিভিশন চ্যানেল এবং বেতার স্টেশন দেশের বাইরে কার্যসম্পাদন করে যা বিভিন্ন উপগ্রহের মাধ্যমে প্রচারিত হয়। এই ব্রডকাস্ট কোম্পানি ইরানি পপ শিল্পীদের প্রচার এবং বিশ্বের সমস্ত দেশে বসবাসরত ইরানিদের সাথে যুক্ত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।[৭]
১৯৯০-এর দশকে, নতুন সরকার কর্মকর্তারা ইরানি সঙ্গীতের বিদেশী ও বেসরকারি উৎসগুলোর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য একটি "শালীন" পপ সঙ্গীত উৎপাদন এবং প্রচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আলী মোলেম (কবি)[৮] এবং ফেয়ারদুন শাহবাজিয়ান (সংগীতশিল্পী) আইআরআইবি-তে একটি পরিষদের নেতৃত্ব দেন, যা দেশীয় পপ সঙ্গীত পুনরুজ্জীবনের তত্ত্বাবধান করে।[৯]
সাদ্দহর আঘিলি ছিলেন বিপ্লব পরবর্তী প্রথম ইরানি গায়কদের মধ্যে আন্যতম, যিনি ইরানের অভ্যন্তরে নতুন ফার্সি পপ গান তৈরির জন্য জাতীয় টেলিভিশনে প্রচারণা এবং উল্লেখযোগ্য সমর্থক পেয়েছিলেন। তিনি ভায়োলিন ও গিটার বাজানোয় অত্যন্ত দক্ষ এবং প্রতিভাবান গায়ক ছিলেন। তিনি ইরানে সফল ও জনপ্রিয় সঙ্গীতজ্ঞ এবং গায়ক হয়ে ওঠেন, যদিও অবশেষে কানাডায় অভিবাসিত হয় এবং তারপর তার কর্মজীবন চালিয়ে যেতে ইরানের বাইরে লস অ্যাঞ্জেলেসে চলে যান।
রাষ্ট্রপতি খাতামির অধীনে ইরানের অভ্যন্তরে সাংস্কৃতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে দেশের বেশ কয়েকজন নতুন পপ গায়ক আবির্ভূত হয়েছিল।[৬][১০] নতুন প্রশাসনের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই এরশাদ মন্ত্রণালয় বিভিন্ন নীতি গ্রহণ করে, বিশেষত শিল্পকে সহজে নিরীক্ষণ করার লক্ষ্য। নতুন গৃহীত নীতিতে অল্প সংখ্যক শিল্পীর জন্য সীমাবদ্ধতা হ্রাস করা হয়, অন্যদিকে বাকিদের জন্য এটি কঠোর করা হয়। তবে, অ্যালবাম মুক্তির সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।
আরিয়ান, বিপ্লব পরবর্তী ইরানের মহিলা গায়কদের প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদিত পপ সঙ্গীত ব্যান্ড, যারা ইরানের পপ সঙ্গীতে নতুন অধ্যায় শুরু করে।[১১] তারা সুপরিচিত ব্রিটিশ-আইরিশ গায়ক ক্রিস ডি বুরগের সাথে তাদের চতুর্থ অ্যালবাম বি টু, বা টু-এ কাজ করেছিল[১২] এবং প্রথম ইরানি ব্যান্ড যা ইংরেজি জীবনী অভিধান এবং ইন্টারন্যাশনাল হু'স হু ইন মিউজিক ডাইরেক্টরিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
২০০৯ সালের শেষদিকে, সের্ভান খসরাভি ইউরোপিয় বেতার স্টেশনে উচ্চ ঘূর্ণন এয়ারপ্লে অর্জনকারী প্রথম গার্হস্থ্য ইরানি শিল্পী।[১৩] তিনি "সাত-ই-নাইন" ("৯ ঘটিকা") গানের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন,[১৪] যা ইরানি অনলাইন মিডিয়াতে শিরোনাম তৈরি করেছিল।[১৫] আগস্ট ২০১০ সালে, ফারজাদ ফারজিন তার তৃতীয় বৈধ অ্যালবাম শানস ("সুযোগ") থেকে "চিক চিক" ("ট্রিকেল ট্রিকেল") গানের সাথে তার প্রথম ইউরোপীয় চার্ট তৈরি করেছেন।[১৬]
পুরস্কার
[সম্পাদনা]উল্লেখযোগ্য আন্তর্জাতিক পুরস্কার
[সম্পাদনা]- ১৯৭১: গুগুশ, কান মিডেম-এ প্রথম পুরস্কার ও গোল্ডেন রেকর্ড, তার ৭ম রেকর্ডের জন্য।
- ১৯৭২: গুগুশ, কার্থেজ সঙ্গীত উৎসবে প্রথম পুরস্কার।
- ১৯৭২: গুগুশ, তিউনিশিয়ায় শিল্পের প্রথম পদক।
- ১৯৭৩: গুগুশ, সানরেমো সঙ্গীত উৎসবে অংশগ্রহণ।[১৭]
- ২০০২: ডীপ দিশ, সেরা রিমিক্স রেকর্ডিং-এর জন্য গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী
- ২০০৬: অ্যান্ডি মাদাদিয়ান, সেরা মধ্য প্রাচ্যের গান ও সেরা মধ্য প্রাচ্যের অ্যালবাম; জেপিএফ পুরস্কার।
- ২০১৩: ফারজাদ ফারজিন, সেরা গান এবং পারফরম্যান্স; আর্ট-ফুটবল উৎসব।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ জারঘামি, মোহাম্মদ (২০০৩)। "ইরানের সঙ্গীত"। iranchamber.com (ইংরেজি ভাষায়)। ইরান চেম্বার সোসাইটি। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ Hemmasi, Farzaneh (২০১৭)। "Iran's Daughter and Mother Iran: Googoosh and Diaspora Nostalgia for the Pahlavi Modern"। Popular Music। 36:2: 159–60।
- ↑ ক খ গ ঘ সাবা, সাদেক (নভেম্বর ২৬, ২০০৩)। "Obituary: Vigen Derderian"। দ্য গার্ডিয়ান। London। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ২৪, ২০১৩।
- ↑ Armbrust, Walter (২০০০)। Mass Mediations: New Approaches to Popular Culture in the Middle East and Beyond। University of California Press। পৃষ্ঠা ৭০।
- ↑ সাবা, সাদেক (অক্টোবর ২৭, ২০০৩)। "Iranian pop legend dies at 74"। বিবিসি সংবাদ। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১৮, ২০১৪।
- ↑ ক খ পিয়েরেল, ড্যানিয়েল (২ জুন ২০০০)। "Rock Rolls Once More in Iran As Hard-Liners Back Pop Revival" [ইরানে আরো একবার রক রোলস..]। দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "টিভি সম্প্রচার জন্য টিপস জমা"। pmc.tv। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ ইস্পাহান (১৭ আগস্ট ২০০৬)। "শিল্প ও সংস্কৃতি"। ইরান: ইরান ডেইলি। ২০০৬-১০-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ ফয়রদুন শাহবাজিয়ান (১৭ আগস্ট ২০০৬)। "ফার্সি কলা সঙ্গীত l An interview with Fereydoun Shahbazian"। ইরান: ইরান ডেইলি। ২০১২-০২-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "Roll Over, Khomeini! Iran Cultivates A Local Rock Scene, Within Limits" [রোল ওভার, খোমেনী!]। দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট। ২৩ আগস্ট ২০০১। ২৬ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "Iran's first pop revolutionaries"। বিবিসি। ১৩ ডিসেম্বর ২০০৪। ৭ মে ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "Chris de Burgh to play 'cheek to cheek' with Iranian band in Tehran" [তেহরানে ইরানি ব্যান্ডের সাথে ক্রিস ডি বুরগ!]। দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ। দ্য টেলিগ্রাফ মিডিয়া গ্রুপ। ২৪ জুলাই ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "Iraanse popster Sirvan Khosravi deze week de diXte of FunX Radio"। FunX (Radio network)। ১৬ জুন ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "Sirvan Khosravi - Saate 9 (Review)"। Bia2.com।
- ↑ "آهنگ "ساعت 9" سیروان؛ رتبهی اول چارت رادیوی هلندی شد"। Musicema।
- ↑ "FunX XTips Chart"। FunX (Radio network)।
- ↑ বাহমনী, বেহেরোজ (১১ ফেব্রুয়ারি ২০০৩)। "A Treasure Hunter's Efforts Pay Off, An Album of Long Lost Googoosh Songs, San Remo 73"। The Iranian। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৮।