ইংরেজিভাষী বিশ্ব

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিশ্বজুড়ে ইংরেজি ভাষার বিস্তার।
  যেসব দেশ বা প্রদেশে ইংরেজি ভাষা এক সরকারি ভাষা বা বেশিরভাগ জনসংখ্যার মাতৃভাষা।
  যেসব দেশ বা প্রদেশে ইংরেজি ভাষা এক সরকারি ভাষা, কিন্তু বেশিরভাগ জনসংখ্যার মাতৃভাষা নয়।

ইংরেজিভাষী বিশ্ব (ইংরেজি: English-speaking world) বলতে বিশ্বের ৮৮টি দেশ ও অঞ্চলকে বোঝায় যেখানে ইংরেজি ভাষা সরকারি, প্রশাসনিক ও সাংস্কৃতিক ভাষা। ২০০০-এর দশকের শুরুতে ১০০ থেকে ২০০ কোটি মানুষ ইংরেজিতে কথা বলতে পারত।[১][২] সমস্ত বক্তার সংখ্যা অনুযায়ী ইংরেজি বিশ্বের বৃহত্তম ভাষা এবং মাতৃভাষী বক্তার সংখ্যা অনুযায়ী এটি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ভাষা। এছাড়া ভৌগোলিকভাবে এটি সবচেয়ে বেশি বিস্তৃত ভাষা। যেসব দেশে ইংরেজি ভাষা বেশিরভাগ জনসংখ্যার মাতৃভাষা সেইসব দেশ একত্রে "অ্যাংলোস্ফিয়ার" (Anglosphere, আক্ষ.'ইঙ্গ-মণ্ডল') নামে পরিচিত এবং ইংরেজিভাষী বক্তা "অ্যাংলোফোন" (Anglophone) নামে পরিচিত।

যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ডস্কটিশ নিম্নভূমি ইংরেজি ভাষার জন্মভূমি এবং সপ্তদশ শতাব্দীর শুরুতে বিশ্বজুড়ে এই ভাষার আধুনিক রূপ ছড়িয়ে পড়েছিল। প্রথমে ইংল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের বৈশ্বিক প্রভাবের দ্বারা ইংরেজি ভাষা ছড়িয়ে পড়েছিল, পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক প্রভাবের দ্বারা ইংরেজি ভাষা ছড়িয়ে পড়েছিল। যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সমস্ত প্রকার মুদ্রিত ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মাধ্যমে ইংরেজি ভাষা আন্তর্জাতিক আলোচনার প্রধান ভাষায় পরিণত হয়েছিল। এছাড়া বিভিন্ন অঞ্চল এবং বিজ্ঞান, নৌ পরিবহনআইনশাস্ত্রের মতো বৃত্তিমূলক ক্ষেত্রে ইংরেজি ভাষা লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কায় পরিণত হয়েছে।[৩]

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভারতে মোট ইংরেজিভাষী বক্তার সংখ্যা সর্বোচ্চ, যথাক্রমে ৩০ কোটি ৬০ লাখ এবং ২৬ কোটি ৫০ লাখ। এর পরে আছে পাকিস্তান (১০ কোটি ৪০ লাখ), যুক্তরাজ্য (৬ কোটি ৮০ লাখ) ও নাইজেরিয়া (৬ কোটি)।[৪] ২০২২ সালের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে প্রায় ৪০ কোটি জনসংখ্যার মাতৃভাষা ইংরেজি।[৫] দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে ইংরেজিভাষী বক্তাদের অন্তর্গত করলে মোট ইংরেজিভাষী বক্তার আনুমানিক সংখ্যা ১৫০ কোটি থেকে ২০০ কোটির মধ্যে।[২] ২০০৩ সালে ডেভিড ক্রিস্টাল পর্যবেক্ষণ করেছিলেন যে মাতৃভাষী বক্তা নয় এমন ইংরেজিভাষী বক্তার সংখ্যা ৩:১ অনুপাতে ইংরেজি মাতৃভাষী বক্তার সংখ্যাকে ছাপিয়ে গিয়েছিল।[৬]

সংখ্যাগরিষ্ঠ ইংরেজিভাষী দেশ[সম্পাদনা]

বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের বেশিরভাগ জনসংখ্যার মাতৃভাষা ইংরেজি, যার মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রযুক্তরাজ্য—এই পাঁচ দেশকে অনেকসময় "কোর অ্যাংলোস্ফিয়ার" (core Anglosphere) বলে অভিহিত করা হয়।[৭][৮][৯]

অনেকসময় যেসব দেশ ও অঞ্চলে ইংরেজি বা ইংরেজি-ভিত্তিক ক্রেওল ভাষা হচ্ছে প্রধান ভাষা এবং ইংরেজি হচ্ছে সরকার ও শিক্ষার প্রধান ভাষা, সেইসব দেশ ও অঞ্চলের ক্ষেত্রেও এই "অ্যাংলোস্ফিয়ার" শব্দ প্রয়োগ করা হয়, যেমন জিব্রাল্টারপ্রজাতন্ত্রী আয়ারল্যান্ড[১০]

ডেনমার্ক, নরওয়ে, নেদারল্যান্ডসসুইডেনের মতো হাতেগোনা কয়েকটি দেশের বেশিরভাগ জনসংখ্যা দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে ইংরেজি ব্যবহার করলেও এই দেশগুলোকে ইংরেজিভাষী বিশ্বের অংশ হিসাবে মনে করা হয় না, কারণ সেখানে ইংরেজি ভাষাকে এক বিদেশি ভাষা হিসাবেই মনে করা হয় এবং সেখানকার সমাজে ইংরেজি ভাষা কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক প্রভাব বিস্তার করেনি।[১১]

যেসব দেশে ইংরেজি এক সরকারি ভাষা[সম্পাদনা]

নিম্নলিখিত দেশ ও অঞ্চলে ইংরেজি এক সরকারি ভাষা (ডি ফ্যাক্টোডি জিউর)।[১২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Crystal, David (২০০৪)। The language revolutionবিনামূল্যে নিবন্ধন প্রয়োজন (ইংরেজি ভাষায়)। John Wiley & Sons। আইএসবিএন 978-0-745-63313-8 
  2. Crystal, David (২০০৮)। "Two thousand million?"। English Today (ইংরেজি ভাষায়)। 24: 3–6। এসটুসিআইডি 145597019ডিওআই:10.1017/S0266078408000023অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  3. The Routes of English
  4. English ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০২৩-০৩-০৯ তারিখে, Ethnologue, Dallas, Texas: SIL International., 2022.
  5. "What are the top 200 most spoken languages?"Ethnologue। ২০২২। ২০২৩-০৬-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-১৩ 
  6. Crystal, David (২০০৩)। English as a Global Language (2nd সংস্করণ)। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 69। আইএসবিএন 978-0-521-53032-3। ২০২৩-০৪-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৩-১৯ 
  7. Mycock, Andrew; Wellings, Ben (জুলাই ২০১৯)। "The UK after Brexit: Can and Will the Anglosphere Replace the EU?" (পিডিএফ)। Cicero Foundation। ৬ জুন ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। ...the core Anglosphere states – the USA, the UK, Canada, Australia and New Zealand... 
  8. Vucetic, Srdjan (২০১১)। The Anglosphere: A Genealogy of a Racialized Identity in International Relationsবিনামূল্যে নিবন্ধন প্রয়োজন। Stanford University Press। আইএসবিএন 9780804772242 
  9. Gregg, Samuel (১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০)। "Getting Real About the Anglosphere"Law & Liberty। অক্টো ১৭, ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। ...from what might be called the "core" Anglosphere nations: Britain, Canada, New Zealand, Australia, and the United States; 
  10. Lloyd, John (২০০০)। "The Anglosphere Project"New Statesman। ১৩ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১২ 
  11. "The Anglosphere and its Others: The 'English-speaking Peoples' in a Changing World Order – British Academy"British Academy। ২০১৭-০৪-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৫-২০ 
  12. "Field Listing - Languages"The World Factbookসেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৭-১৬