আসুনসিওন

স্থানাঙ্ক: ২৫°১৮′ দক্ষিণ ৫৭°৩৮′ পশ্চিম / ২৫.৩০০° দক্ষিণ ৫৭.৬৩৩° পশ্চিম / -25.300; -57.633
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আসুনসিওন
The Very Noble and Loyal City of
Our Lady Santa María de la Asunción
রাজধানী জেলা
Felipe Méndez Asunción Paraguay.jpg
Palacio de Gobierno2.jpg
Panteón nacional de los Héroes - Paraguay.jpg
Asunción Paraguay.jpg
Teatro Municipal Ignacio A. Pane.jpg
Costanera - panoramio (4).jpg
From the top to bottom, left to right:
Skyline of the historic center of Asunción • Palacio de los LópezNational Pantheon of the Heroes • Skyline of the neighborhood Ycuá SatíMunicipal Theatre Ignacio A. PaneAsuncion rambla.
আসুনসিওনের পতাকা
পতাকা
আসুনসিওনের প্রতীক
প্রতীক
ডাকনাম: Mother of Cities
স্থানাঙ্ক: ২৫°১৮′ দক্ষিণ ৫৭°৩৮′ পশ্চিম / ২৫.৩০০° দক্ষিণ ৫৭.৬৩৩° পশ্চিম / -25.300; -57.633
দেশপ্যারাগুয়ে
জেলারাজধানী জেলা
প্রতিষ্ঠাকাল১৫৩৭
সরকার
 • IntendantMario Ferreiro
আয়তন
 • রাজধানী জেলা১১৭ বর্গকিমি (৪৫.২ বর্গমাইল)
 • মহানগর১,০১৪ বর্গকিমি (৩৯২ বর্গমাইল)
উচ্চতা৪৩ মিটার (১৪১ ফুট)
জনসংখ্যা (2016)
 • রাজধানী জেলা৫,২৫,২৫২
 • জনঘনত্ব৪,৪১১/বর্গকিমি (১১,৪২০/বর্গমাইল)
 • মহানগর২১,৯৮,৬৬২
বিশেষণAsunceno, -a
Postal code1001-1925
এলাকা কোড(+595) 21
HDI (2011)0.742 – high
ClimateCfa

আসুনসিওন (ইউকে: /əˌsʊnsiˈɒn/, ইউএস: /ɑːˌsnsiˈn, ɑːsnˈsjn/,[১][২][৩] স্পেনীয়: [asunˈsjon]) প্যারাগুয়ের রাজধানী এবং বৃহত্তম শহর।

শহরটি প্যারাগুয়ে নদীর পূর্ব তীরে অনেকটা প্যারাগুয়ে নদী এবং পিলকোমায়ো নদীর মিলিত হওয়ার স্থানে অবস্থিত। প্যারাগুয়ে নদী এবং আসুনসিওন উপসাগর উত্তরপশ্চিমে শহরটিকে দেশটির পশ্চিমা অঞ্চলগুলা থেকে এবং দক্ষিণে আর্জেন্টিনা থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে। শহরের বাকি অংশে রয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় বিভাগ।

আসুনসিওন দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে প্রাচীন শহরগুলোর একটি এবং রিও দে লা প্লাটা বেসিনের যে অঞ্চলগুলোতে মানুষের বসবাস অবিরত রয়েছে সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন। আর এ কারণে, শহরটিকে “দ্য মাদার অব সিটিজ” বলা হয়। স্পেনীয় ঔপনিবেশিক অভিযান এখান থেকেই বুয়েনোস আইরেস এর দিত্বীয় ভিত্তি, ভিয়ারিকা, কোরিয়েনতেস, সান্তা ফে, সান্তা ক্রুস দে লা সিয়েরা এবং কর্দোবা সহ অন্যান্য শহর অনুসন্ধানে বের হয়।

প্রশাসনিকভাবে, শহরটি রাজধানী অংশ এবং কোনো বিভাগের অংশ নয়। গ্রান আসুনসিওন নামক শহরটির মহানগর এলাকায় ফার্নান্দো দে লা মোরা, স্যান লোরেঞ্জো, লাম্বারে, লুকে, মারিনো রোকে আলোনজো এবং নিয়েমবে, স্যান অ্যানতোনিও , কাপিয়াতা, ভিয়া এলিজা এবং লিম্পিও অবস্থিত এবং এর জনসংখ্যা প্রায় দুই মিলিয়ন। আসুনসিওন স্টোক এক্সেঞ্জ আসুনসিওন পৌরসভাকে বিভিপিএএসএ: এমইউএ হিসেবে তালিকাভূক্ত করেছে। নির্মান এবং সেবা প্রদান সংক্রান্ত কাজে বিনিয়োগের জন্য সর্বোত্তম শহরগুলোর একটি আসুনসিওন, ফলে এটি সে অঞ্চলের সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক উন্নতি সমৃদ্ধ শহরগুলোর একটি।

গ্লোবালাইজেশন এন্ড ওর্য়াল্ড সিটিজ রিসার্চ নেটওয়ার্ক শহরটিকে একটি “গামা শহর” হিসেবে শ্রেণিভূক্ত করে। এখানে প্যারাগুয়ের সরকারের কার্যালয়, প্রধান বন্দর এবং প্রধান শিল্প, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র অবস্থিত। দক্ষিণ আমেরিকার মহাদেশীয় ফুটবল খেলা পরিচালনা সংস্থা, কনমেবল এর সদর দপ্তর আসুনসিওনের নিকটে অবস্থিত। আসুনসিওন বিদেশীদের জন্য সবচেয়ে সুলভ শহরগুলোর একটি এবং ইনসাইট ক্রাইমের মতে, বুয়েনোস আইরেসসান্তিয়াগোর পর লাতিন আমেরিকার তৃতীয় নিরাপদ রাজধানী শহর।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

স্পেনীয় কনকিস্তাদোর, হুয়ান দে আয়োলাস (মৃত্যু: আনুমানিক ১৫৩৭) প্যারাগুয়ে নদী পার হয়ে আলতো পেরুতে অবস্থিত খনিতে যাওয়ার সময়ে সর্বপ্রথম শহরটির অঞ্চলে প্রবেশ করেন বলে ধারণা করা যায়। পরবর্তীতে হুয়ান দে সালাজার ই এসটিনোসা এবং পেদ্রো দে মেন্ডোজার আত্মীয়, গোঞ্জালো দে মেন্ডোজাকে আয়োলাস এর অনুসন্ধানে পাঠানো হয়, তবে তারা তাকে খুজে পেতে ব্যর্থ হয়। দে সালাজার নদীর উৎসের দিকে এবং পরে নদীর উৎসের বিপরীতে যাওয়ার পথে তার জাহাজগুলোতে পণ্য সামগ্রী পুনঃসরবরাহ করতে নদীটির বাম পাড়ে একটি সাগরে দীর্ঘ সময়ের জন্য থামেন। স্থানীয়রা বাসিন্দারা বন্ধুত্বপূর্ণ দেখে তিনি সেখানে একটি দূর্গ তৈরি করেন। তিনি এটির নাম দেন সেনিওরা সান্তা মারিয়া দে লা আসুনসিওন (অর্থ: আমাদের অ্যাসাম্পনের লেডি সেন্ট মারি)। আগস্ট মাসের ১৫ তারিখে রোমান ক্যাথলিক চার্চ ভোজন আয়োজনের মাধ্যমে এটি উৎযাপন করে।

১৫৪২ সালে, স্থানীয়রা বুয়েনোস আইরেস ধ্বংস করে দিলে, স্পেনীয়রা আসুনসিওনে পালিয়ে যায়। ফলে, শহরটি উত্তর-পূর্ব আর্জেন্টিনা (ইন্ডিস এর একটা বিশাল অঞ্চল), বর্তমান প্যারাগুয়ে এবং ব্রাজিলের বিভিন্ন অঞ্চল নিয়ে বিশাল স্পেনীয় ঔপনিবেশিক অঞ্চলের কেন্দ্রে পরিণত হয়। আসুনসিওন ছিল প্রথম আসুনসিওন সম্মেলনের স্থান। এ সম্মেলনে স্থানীয়দের সুসমাচার প্রচারণা, লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা এবং গুয়ারানি ভাষা ব্যবহারের উপর নির্দেশিকা প্রদান করা হয়।

১৭৩১ সালে হোজে দে আনতেকেরা ই ক্যাস্ত্রো এর নেতৃত্বে পরিচালিত হওয়া বিদ্রোহটি স্পেনীয় ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রথম বিদ্রোহগুলোর একটি। বিদ্রোহটি ব্যর্থ হলেও, এতে ক্রিওয়ো, মেসতেজো এবং প্যারাগুয়ের স্থানীয়দের মধ্যে স্বাধীনতার আগ্রহের লক্ষণ প্রকাশ করে। এ বিদ্রোহটি ১৮১১ সালে প্যারাগুয়ের স্বাধীনতায় প্রভাব বিস্তার করে। আসুনসিওন শহরে হুয়েনা মারিয়া দে লারা’র বাসগৃহে, প্যারাগুয়ে স্পেনীয় গর্ভনরের (বার্নান্দো দে ভালাস্কো) উপর হামলা করার উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতারা একটি সাক্ষাতে বসেন। ১৮১১ সালের মে মাসের ১৪ এবং ১৫ রাতে তারিখে বিদ্রোহীরা এতে সফল হয় এবং গভর্নর, ভালাস্কোকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করে। বর্তমানে লারা’র বাসগৃহ “কাসা দে লা ইন্ডেপেন্ডেনসিয়া” (স্বাধীনতার বাসগৃহ) জাদুঘর এবং ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে বিদ্যমান রয়েছে।

প্যারাগুয়ে স্বাধীনতা লাভ করার পর, আসুনসিওনে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসে। হোজে গেসপার রদ্রিগেজ দে ফ্রান্সিয়া’র শাসনকালে (১৮১৩-১৮৪০) শহরটি জুড়ে রাস্তা নির্মাণ করা হয় এবং সেগুলোর নাম দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতি, কার্লোস আন্তোনিও লোপেজ এর শাসনকালে (১৮৪৪-১৮৬২) অর্থনৈতিক নীতিমালা পরিবর্তনের ফলে শহরটির আরো উন্নয়ন সাধিত হয়। লোপেজ এর শাসনকালে ৪০০ এর বেশি বিদ্যালয়, অনেকগুলো ধাতব কারখানা এবং দক্ষিণ আমেরিকার প্রথম রেলওয়ে নির্মাণ করা হয়। ১৮৬২ সালে, লোপেজ এর মৃত্যুর পর তার পুত্র, ফ্রন্সিসকো সালানো লোপেজ রাষ্ট্রপতি হন। তার শাসনকালে ১৮৬৪-১৮৭০ পর্যন্ত পাচঁ বছর প্যারাগুইয়ান যুদ্ধ চলে। ১৮৬৯ সালের জানুয়ারি মাসের ১ তারিখে, জেনারেল. জুয়োন জে সোজা ডা ফোন্সেকা কোস্তা এর নেতৃত্বে ব্রাজিলীয় বাহিনী শহরটি দখলে নেয়। সশস্ত্র যুদ্ধের পর, ১৭৭৬ সাল পর্যন্ত ব্রাজিলীয়রা শহরটি নিজেদের দখলে রাখে।

অনেক ইতিহাসবিদের মতে, এ যুদ্ধে শহরটির দুই-তৃতীয়াংশ বাসিন্দা নিহত হওয়ায় যুদ্ধটি থেকে শহরটির ধীর গতিতে পতন শুরু হয়। যুদ্ধের পর, উন্নয়ন ধীর হয়ে পড়ে এবং অর্থনীতি স্থির হয়ে যায়।

প্যারাগুইয়ান যুদ্ধের পর, ধীরে ধীরে শহরটি পুনর্নির্মাণের চেষ্টা করা হয়। ১৯ শতকের শেষের দিকে এবং ২০ শতকের শুরুর দিকে ইউরোপ এবং উসমানীয় সাম্রাজ্য থেকে অনেক শরণার্থী শহরটিতে প্রবেশ করে। ফলস্বরূপ, অনেক নতুন স্থাপনা নির্মিত হয় এবং শহরটি যুদ্ধের পর যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি উন্নতি লাভ করে।

১৮৭১ সালে, শহরটিতে একটি ট্রামওয়ে চালু করা হয়। প্রথমদিকে ঘোড়া এবং বাস্প চালিত ট্রাম এবং ১৯১৩ সালে, বৈদ্যুতিক ট্রাম চলাচল শুরু হয়। শহরটির শেষ ট্রাম সেবা ১৯৯৫ সালে বন্ধ হয়ে যায় এবং ১৯৯৭ সালের নভেম্বর মাসে, আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাম চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ভূগোল[সম্পাদনা]

আর্জেন্টিনা-প্যারাগুয়ে সীমান্তে সমান্তরাল ২৫° ১৫' এবং ২৫° ২০' দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যে এবং ৫৭° ৪০' ও ৫৭° ৩০' পশ্চিম অক্ষাংশের মধ্যে অবস্থিত। শহরটি প্যারাগুয়ে নদীর বাম তীরে নদীটির সাথে পিলকোমায়ো নদীর মিলনাস্থলে অবস্থিত। প্যারাগুয়ে নদী এবং আসুনসিওন উপসাগর উত্তরপশ্চিমে শহরটিকে দেশটির পশ্চিমা অঞ্চলগুলো এবং দক্ষিণে আর্জেন্টিনা থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে। শহরের বাকি জুড়ে রয়েছে দেশটির দেশটির কেন্দ্রীয় বিভাগ।

প্যারাগুয়ে নদীর পাশে অবস্থিত হওয়ায়, শহরটিতে অনেক ধরনের প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করা যায়। শহরটি আয়তক্ষেত্রাকার ব্লক আকারে কিছু নিচু পাহাড় জুড়েও অবস্থিত। বসন্তকালে লাপাচো গাছে ফুল ফোটাকে কেন্দ্র করে লামব্রেতে অবস্থিত কারো লামব্রে সহ বিভিন্ন স্থানে অসাধারণ বিভিন্ন প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। পার্কে ইন্ডেপেন্ডেন্সিয়া এবং কার্লোস আন্তোনিও লোপেজ সহ বিভিন্ন উদ্যান প্যারাগুয়ের সাধারণ চাষাবাদের বিশাল অঞ্চল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কাবারা, ক্লাভেল, তারুমা, কাচিনগা এবং তাকুমবু সহ শহরটি জুড়ে বেশ কিছু নিচু পাহাড় এবং সামান্য উচুঁ অঞ্চল রয়েছে।

বিভাগ এবং এলাকা[সম্পাদনা]

আসুনসিওনের অন্তর্ভূক্ত এলাকাসমূহ

আসুনসিওন ভৌগলিকভাবে কয়েকটি বিভাগে বিভক্ত, ফলে শহরটির বিভিন্ন এলাকা কাছাকাছি অবস্থান করে।

জলবায়ু[সম্পাদনা]

আসুনসিওনের জলবায়ু আদ্র উপসাগরীয় যা উপসাগরীয় সাভানা জলবায়ু থেকে একটু ভিন্ন এবং গরম, আদ্র গ্রীস্মকাল (জানুয়ারি মাসের গড় তাপমাত্রা ২৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৮১.৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট) এবং হালকা শীত (জুলাই মাসের গড় তাপমাত্রা ১৭.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৬৩.৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট এ জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য। আপেক্ষিক আদ্রতা সারা বছর বেশি থাকায়, তাপ ইন্ডেক্সটিতে গ্রীস্মকালের ক্ষেত্রে বায়ুর প্রকৃত তাপমাত্রা থেকে বেশি তাপমাত্রা এবং প্রকৃতপক্ষে, শীতকাল আরো ঠান্ডা হতে পারে। শহরটির বার্ষিক গড় তাপমাত্রা ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৭৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট। শহরটিতে প্রতি বছর ৮০ দিনের বেশি ১৪০০ মিলিমিটার (৫৫ ইঞ্চি)। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসের ১ তারিখে শহরটির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, ৪২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় এবং ২০১১ সালের জুলাই মাসে শহটির সর্বনিম্ন তাপমাত্রা, -১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।

আধুনিক যুগে শহরটিতে তুষারপাত কখনো হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি, তবে ক্ষুদ্র তুষারযুগে, ১৭৫১ সালে শেষবারের মতো তুষারপাত হয়।

মে মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত শহরটিতে শুষ্ক মৌসূম চলে এবং জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে সবচেয়ে বেশি শীত অনুভূত হয়। বছরে গড়ে এক বা দুই দিন হালকা তুষারপাত হতে পারে।

আদ্র মৌসূমে শহরটি গরম এবং আদ্র আবহাওয়া বিরাজ করে, তবে মৌসূমটির শেষের দিকে আবহাওয়া তুলনামূলকভাবে ঠান্ডা হয়ে যায়। বিপরীতভাবে, শুষ্ক মৌসূমের প্রভাব হালকা। গ্রীস্মকালে প্যারাগুয়ের উত্তরাঞ্চলের গ্রান চোকো অঞ্চলে তীব্র উপসাগরীয় বজ্রঝড় সৃষ্টি হয়, যা দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়, ফলে আসুনসিওনের বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিসংখ্যানে গ্রীস্মকালে বৃষ্টিপাতের হার সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা যায়। শহরটির সবচেয়ে আদ্র মাস, এপ্রিল এবং সবচেয়ে শুষ্ক মাস, জুলাই এ যথাক্রমে ১৬৬ মিলিমিটার (৬.৫৪ ইঞ্চি) এবং ৩৯ মিলিমিটার (১.৫৪ ইঞ্চি) বৃষ্টিপাত হয়।

পরিসংখ্যান[সম্পাদনা]

শহরটির সিটি প্রপার অঞ্চলের জনসংখ্যা প্রায় ৫,৪০,০০০। প্যারাগুয়ের জনসংখ্যার (৬ মিলিয়ন) ৩০ শতাংশ মানুষ বৃহত্তর আসুনসিওনে বসবাস করে। শহরটির জনসংখ্যা ৬ শতাংশ মানুষের বয়স ৩০ এর নিচে।

১৯৭০ এর দশকের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং পরবর্তীতে গ্রামগুলোর অর্থনৈতিক অবনতির কারণে প্যারাগুয়ের অন্যান্য অঞ্চল থেকে মানুষ শহরটিতে বসবাস করতে আসায় শহরটির জনসংখ্যা শেষ কয়েক দশকে অনেক বৃদ্ধি পায়। ফার্নান্দো দে লা মোরা, স্যান লোরেঞ্জো, লাম্বারে, লুকে, মারিনো রোকে আলোনজো এর মতো গ্রান আসুনসিওনের মধ্যবর্তী শহরগুলোতে ভূমির মূল্য কম হওয়ায় এবং আসুনসিওন শহর সহজেই প্রবেশের উপায় থাকায়, সেগুলোতেই বাইরে অন্যান্য অঞ্চল থেকে আগত অধিকাংশ মানুষ বসবাস করেন। মার্কার হিউম্যান রিসার্চ কনসাল্টিং এর পাঁচ বছর থাকার বসবাসের জন্য সবচেয়ে সূলভ শহরের তালিকায় শহরটি শীর্ষ স্থানে রয়েছে।

২০০২ সালের আদমসুমারি অনাযায়ী, লিঙ্গ এবং বয়সভেদে জনসংখ্যা

বয়স জনসংখ্যা (২০০২ সালের আদমসুমারি অনাযায়ী) পুরুষ নারী
০-৪ বছর ৪৫,৩৮২ ২৩,০৫৮ ২২,৩৭৪
৫-৯ বছর ৪৬,১২০ ২৩,৩৩০ ২২,৩২৪
১০-১৪ বছর ৪৬,২৭২ ২২,৯৮৫ ২৩,২৮৭
১৫-২৯ বছর ১৫৫,৬৭৫ ৭১,৮৮৫ ৮৩,৭৯০
৩০-৫৯ বছর ১৬৪,৩৬৭ ৭৫,৮৭১ ৮৮,৪৯৬
৬০ বছর বা তার বেশি ৫৪,২৯৬ ২১,৬৮৬ ৩২,৬১০
মোট ৫১২,১১২ ২৩৮,৮৫০ ২৭৩,২৯৭

ধর্ম[সম্পাদনা]

জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ নিজেদের ক্যাথলিক চার্চের অনুসারী হিসেবে দাবি করেন। আসুনসিওন রোমান ক্যাথলিক আর্চডায়োসিসের আয়তন ২,৫৮২ বর্গকিলোমিটার এবং এর জনসংখ্যা ১,৭৮০,০০০, যার মধ্যে ১,৬১২,০০০ মানুষ ক্যাথলিক। এয়োস্তাকিও পাস্তর কুকেহো ভারগা আর্চডায়োসিসটির আর্চবিশপ। লেটার-ডে সেন্টস এর চার্চ অব জিজাজ ক্রাইস্ট সহ শহরটিতে অন্যান্য খ্রিষ্টানদেরও উপাসনালয় বিদ্যমান। এছাড়াও, মুসলিম এবং বৌদ্ধ এবং ইহুদিদেরও উপাসনালয় রয়েছে।

ভাষা[সম্পাদনা]

প্যারাগুয়ের অধিকাংশ মানুষ তাদের প্রধান ভাষা হিসেবে দুটি ভাষা ব্যবহার করে: প্যারাগুইয়ান স্পেনীয় (জনসংখ্যার ৫৬.৯% মানুষের প্রধান ভাষা) এবং গুয়ারানি ভাষা (জনসংখ্যার ১১.২% মানুষের প্রধান ভাষা)। ২৭.৪ শতাংশ মানুষ জোপারা ভাষায় কথা বলেন, যা গুয়ারানি ভাষা এবং স্পেনীয় ভাষা থেকে আগত শব্দগুলোর একটি মিশ্রণ। জনসংখ্যার ৪.৫ শতাংশ মানুষ অন্যান্য ভাষায় কথা বলেন।

শিক্ষা[সম্পাদনা]

বিদ্যালয়[সম্পাদনা]

আসুনসিওনে অনেকগুলো পাবলিক এবং প্রাইভেট বিদ্যালয় বিদ্যমান। পাবলিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে কলেহিও নেসিওনাল দে লা কাপিতাল (১৮৭৭ সালে নির্মিত, শহরটির প্রথমদিকের বিদ্যালয়গুলোর একটি), কলেহিও টেকনিকো নেসিওনাল, কলেহিও নেসিওনাল প্রেসিডেন্টে ফ্রাঙ্কো এবং কলেহিও নেসিওনাল আসুনসিওন এসকালাদা সবচেয়ে জনপ্রিয়। জনপ্রিয় প্রাইভেদ বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রয়েছে: আমেরিকান স্কুল অব আসুনসিওন, কলেহিও স্যান লোরেঞ্জো হোজে, সান্ত আনেস, কলেহিও দেল সোল, কলেহিও সান্তা ক্লারা, কলেহিও গেতে, কলেহিও দে লা আসুনসিওন, কলেহিও লাস আলমেনাস, কলেহিও কামপোয়ালতো, কলেজো ডানতে আলিগিয়ারি, কলেহিও স্যান লোরেঞ্জো ফ্রান্সিস্কো, কলেহিও স্যান লোরেঞ্জোস্যান লোরেঞ্জো ইগনাসিও দে লয়োলা, কলেহিও সান্তা তেরেসা দে হেসুস, কলেহিও ইনমাকুলাদো কোরাসোন দে মারিয়া, সালেসিয়ানিতো, কলেহিও ক্রিস্টো রেয় এবং কলেহিও ইন্টারনেসিওনাল।

বিশ্ববিদ্যালয়[সম্পাদনা]

উনিভার্সিদাদ আমেরিকানা এবং উনির্ভাসিদাদ নেসিওনাল দে আসুনসিওন (রাষ্ট্র দ্বারা পরিচালিত) শহরটির প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়। উনির্ভাসিদাদ নেসিওনাল দে আসুনসিওন ১৮৮৯ সালে স্থাপিত হয় এবং এখানে ৪০,০০০ শিক্ষার্থী অধ্যায়ন করে। উনির্ভাসিদাদ কাতোলিকা নুয়েস্তা সেনিওরা দে লা আসুনসিওন ১৯৬০ সালে স্থাপিত এবং বর্তমান শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ২১,০০০। শহরের কেন্দ্রে একটি ক্যাথিড্রালের নিকটে কাতোলিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ক্যাম্পাস অবস্থিত, এছাড়াও সান্তা আনা এলাকায় লামব্রে শহরের দিকে আরেকটি বড় ক্যাম্পাস রয়েছে। উনির্ভাসিদাদ নেসিওনালের এর প্রধান ক্যাম্পাস আসুনসিওনের ৫ কিলোমিটার (৩ মাইল) স্যান লোরেঞ্জো শহরে অবস্থিত। উনির্ভাসিদাদ কাতোলিকা নুয়েস্তা সেনিওরা দে লা আসুনসিওন, উনিনোর্তে এবং উনির্ভাসিদাদ অটোনোমা দে আসুনসিওন সহ শহরটিতে আরো কিছু সংখ্যক তুলনামূলকভাবে ছোট প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।

অর্থনীতি[সম্পাদনা]

আসুনসিওনের শহরাঞ্চলের দিকে সাম্প্রতিক সময়ে বাণিজ্যের উল্লেখযোগ্য প্রসার ঘটেছে এবং সেখানে বিভিন্ন শপিং মল এবং সুপারমার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। প্যারাগুয়ের একমাত্র স্টোক এক্সচেঞ্জ, বিভিপিএএসএ এ শহরেই অবস্থিত। বিভিপিএএসএ শহরটিকে বিভিপিএএসএ: এমইউএ হিসেবে তালিকাভূক্ত করেছে।

আসুনসিওনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানী, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ গ্রুপগুলোর সদর দপ্তর অবস্থিত। শহরটিতে বিদ্যমান সহজ কর নীতি একটি আকর্ষণীয় বিষয়। বৃহত্তর আসুনসিওনে রাজধানীতে বিনিয়োগ এবং প্রসারণের উপর অনিয়ন্ত্রিত কর রয়েছে। এছাড়াও, আসুনসিওন স্টোক এক্সচেঞ্জ ২০১১ সালের আগস্ট মাসের তুলনায় ২০১২ সালের আগস্ট মাসে ৪৮৫.৭ শতাংশ মুনাফা অর্জণ করেছে। আসুনসিওন স্টোক এক্সচেঞ্জ বোন্ডে বিনিয়োগের জন্য কোনো আয়কর প্রযুক্ত হয় না। এ ধরনের নীতিমালার কারণে শহরটি উল্লেখযোগ্য বৈদিশিক বিনিয়োগ লাভ করে। লাতিন আমেরিকান বিশেষজ্ঞদের অনেকের মতে, বিনিয়োগের পরিবেশের দিক থেকে, প্যারাগুয়ে লাতিন আমেরিকা এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলের সেরা তিন দেশের একটিতে পরিণত হয়েছে। এছাড়াও, তাদের মতে, দেশটির এ গোলার্ধের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দেশ এবং বড় আকারের শিল্প কারখানা ও অবকাঠামো প্রকল্প নির্মাণের ক্ষেত্রে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিতকরণে এবং কৌশলগত বিনিয়োগ রক্ষার্থে শহরটিতে বেশ কিছু আইন বিদ্যমান। শহরটি প্যারাগুয়ের অর্থনৈতিক কেন্দ্র। সিউদাদ দেল এসতে এবং এনকার্নিসিওন আরো দুটি দেশটির আরো দুটি অর্থনৈতিক কেন্দ্র।

যোগাযোগ ব্যবস্থা[সম্পাদনা]

শহরটি নদীর নিকটে অবস্থিত হওয়ায়, এর কেন্দ্রীয় অঞ্চলে একটি নদী বন্দর রয়েছে। বন্দরটি কৌশলগতভাবেই একটি তীরে অবস্থিত এবং সেখান থেকেই সবচেয়ে বেশি মালামাল দেশের বাহিরে প্রেরণ করা হয়। এছাড়াও, সাহোনিয়া এলাকায় একটি ছোট বন্দর এবং আর্জেন্টিনার ফার্মোসায় অবস্থিত ক্লোরিন্দা এর বিপরীতে ইটা এনরামাদায় একটি শাটল বন্দর রয়েছে।

শহরটিতে সরকারি পরিবহন ব্যবস্থা হিসেবে বাস সেবা রয়েছে, যা শহরটির বিভিন্ন অঞ্চল এবং বৃহত্তর আসুনসিওনের অন্যান্য সম্প্রদায়ের মধ্যে চলাচল করে এবং ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসের ৩০ তারিখ থেকে এ বাস সেবা পেতে ইলেক্ট্রনিক কার্ড বাধ্যমূলক করা হয়। দুটো সেবা প্রদানকারী সার্ভিস ভিন্ন দুটি কার্ড প্রদান করে: জাহা (গুয়ারানি শব্দ, অর্থ: চলো যাই) এবং মাস (স্পেনীয় শব্দ, অর্থ: আরো)।

শহরটির প্রধান লম্ব-দূরত্ব বাস টার্মিনাল রিপাবলিকা আর্জেন্টিনা চত্ত্বরে অবস্থিত এবং সেখান থেকে দেশটির সকল বিভাগ এবং আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, বলিভিয়া এবং উরুগুয়ে -এর মতো নিকটবর্তী দেশগুলোতে যাওয়ার বিভিন্ন পথে চলাচল করে। টার্মিনালটি থেকে দিনে প্রায় ১১৫টি কোম্পানির ১,৩০০ টি বাস ছেড়ে যায়। প্রতিদিন প্রায় ৫৫,০০০ যাত্রী এখান থেকে যাত্রা শুরু করেন। পবিত্র সপ্তাহ এবং নতুন বছরের দিন সহ বিভিন্ন উপলক্ষ্যের দিনে টার্মিনালটি সবচেয়ে ব্যস্ত থাকে।

বৃহত্তর আসুনসিওনের লিকেতে অবস্থিত সিলভিও পেটিরোসি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্যারাগুয়ের প্রধান জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রবেশপথ। প্যারাগুইয়ান পাইলট, সিলভিও পেটিরোসি এর বিমানবন্দরটির নামকরণ করা হয়, তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এটি প্রেসিডেন্তে এসতোয়েসনের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নামে পরিচিত। প্যারাগুয়ের ব্যস্ততম বিমানবন্দর হওয়ায়, এটি একই সাথে লাতাম প্যারাগুয়ে এবং পারানের -এর কেন্দ্র।

উবার এবং বোল্ট সহ অন্যান্য ট্যাক্সি সেবা কোম্পানি আসুনসিওনে তাদের রাইড-শেয়ার সেবা প্রদান করে। অ্যাপ ব্যবহার করে আগাম ভাড়া প্রদান ব্যতিত নগদে ভাড়া স্বাভাবিক ভাড়া নেওয়া হয়। পরিবহন, খাদ্য এবং বাসস্থান সহ দৈনিক প্রয়োজনীয় কাজে শহরটির মানুষ সাধারণত নগদে ব্যবহার করে।

পর্যটক কেন্দ্র[সম্পাদনা]

শহরটিতে গোদোয় জাদুঘর, মুসেও নাসিওনাল বেয়য়াস আর্তেস দে আসুনসিওন (জাদুঘরটিতে ১৯ শতকের চিত্রশিল্প সংরক্ষিত রয়েছে), লা এনকার্নেসিওন চার্চ, মেট্রোপলিটন ক্যাথিড্রাল, ন্যাসনাল প্যান্থিয়ন অব দ্য হিরোজ, ছোট আকারের প্যারিসের লেজাঁভালিদ ভবন (প্যারাগুয়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের অনেকের সমাধি এখানে)। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য স্থানের মধ্যে রয়েছে পালাসিও দে লোস লোপেজ, সিনেট ভবন (২০১৩ সালে নির্মিত একটি আধুনিক সংসদ ভবন) এবং কাসা দে লা ইন্ডেপেন্ডেনসিয়া (শহরটিতে অক্ষত থাকা ঔপনিবেসিক সময়ের স্থাপনাগুলোর একটি)।

কায়ে পালমা শহরের কেন্দ্রী এলাকার প্রধান শহর, যার পাশে বিভিন্ন ঐতিহাসিক ভবন, প্লাজা, দোকান, রেস্টুরেন্ট এবং ক্যাফে অবস্থিত। রাষ্ট্রপতির ভবনের সামনে অবস্থিত, “মানসানা দে লা রিভেরা” হলো কিছু সংখ্যক ঐতিহ্যবাহী বাসভবন মেরামত করে জাদুঘরে পরিণত করা হয়েছে এবং সেখান থেকে শহরটির স্থাপনার ইতিহাস লক্ষ্য করা যায়। শহরটির পুরানো রেল স্টেশনটিকেও জাদুঘরে পরিণত করা হয়েছে। সেখান থেকে লিকে এবং আরেগুয়ে শহরে যাওয়ার একটি রেলপথ (২০২৭) প্রস্তাবিত রয়েছে। আসুনসিওনের নিকটে, শহরটি থেকে ৩০ মিনিট দূরে স্যান বের্নারদিনো শহরের একটি সুন্দর হ্রদ অবস্থিত। মানুষ সাধারনত গ্রীস্মকালে স্থানটিতে ঘুরতে আসে, যা গরম আবহাওয়ায় ঘুরার জন্য একটি সুন্দর স্থান।

আসুনসিওন অনেক বিলাশবহুল শপিং মল রয়েছে, যেখানে বহুল পরিচিত ব্রান্ডগুলোর পণ্য বিক্রয় করা হয়। শহরটির বৃহত্তম শপিং মলগুলোর মধ্যে রয়েছে শপিং দেল সোল, মারিকাল লোপেজ শপিং, শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত শপিং ভিয়া মোররা এবং শহরতলীতে অবস্থিত শপিং মুল্টিপ্লাসা এবং শহরটির কেন্দ্রীয় এলাকায় অবস্থিত শপিং এক্সেলসিয়র। পিনেদো শপিং এবং শপিং স্যান লোরেঞ্জো সবচেয়ে নতুন এবং বড় আকারের শপিং মল এবং আসুনসিওন থেকে যথাক্রমে ৫.৬ কিলোমিটার (৩.৫ মাইল) এবং ৯.৩ কিলোমিটার (৫.৮ মাইল) দূরে বৃহত্তর আসুনসিওনের স্যান লোরেঞ্জো শহরে অবস্থিত। ২০১৬ সালে লা গালেরিয়া নামক একটি নতুন শপিং মল চালু হয়। এটি নীল টাউয়ারগুলোর মধ্যে অবস্থিত এবং বর্তমানে দেশটির বৃহত্তম শপিং মল।

ক্রিড়া[সম্পাদনা]

প্যারাগুয়ের প্রধান খেলা, ফুটবল এবং আসুনসিওনে দেশটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্যবাহী কিছু দল রয়েছে: অলিম্পিয়া, সেররো পোর্টেনিও, ক্লাব নাসিওনাল, ক্লাব গুয়ারানি এবং ক্লাব সোল দে আমেরিকা। এ ক্লাবগুলোর নিজস্ব স্টেডিয়াম এবং তাদের সংযুক্ত সদস্যদের জন্য বিভিন্ন স্পোর্টস ফেসিলিটি রয়েছে। দেফেনসোরেস দেল চাকো প্যারাগুয়ের প্রধান ফুটবল স্টেডিয়াম এবং এটি আসুনসিওনের কেন্দ্রীয় এলাকা থেকে কয়েক ব্লক দূরে সাজোনিয়া এলাকায় অবস্থিত। জাতীয় স্টেডিয়াম হওয়ায় সেখানে রক কনসার্ট সহ অন্যান্য ইভেন্টও আয়োজিত হয়। আসুনসিওন প্যারাগুইয়ান রাগবি ইউনিয়নেরও কেন্দ্র।

সংস্কৃতি[সম্পাদনা]

কিতো এবং লিমার পর দক্ষিণ আমেরিকার তৃতীয় প্রাচীন শহর হওয়ায় আসুনসিওনে বিভিন্ন স্পেনীয় ঔপনিবেশিক যুগের ভবন (বারোকে থেকে নিও-গোথিক স্থাপনা), জাদুঘর এবং নগর উদ্যান রয়েছে। এছাড়াও, শহরটিতে বিভিন্ন সিম্ফোনি অর্কেস্ট্রা, ব্যালে, গীতিনাট্য এবং নাট্যকলা কোম্পানি রয়েছে। সবচেয়ে জনপ্রিয় ঐকবাদন কোম্পানীগুলোর মধ্যে রয়েছে সিটি অব আসুনসিওন’স সিম্ফোনি অর্কেস্ট্রা, ন্যাসনাল সিম্ফোনি অর্কেস্ট্রা এবং নোর্দান ইউনির্ভাসিটি অর্কেস্ট্রা। পেশাদার ব্যালে কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য আসুনসিওন ক্লাসিক এন্ড মডার্ন মিউনিসিপাল ব্যালেট, ন্যাশনাল ব্যালেট এবং নোর্দান ইউনিভার্সিটি ব্যালেট। নোর্দান ইউনিভার্সিটি কোম্পানি শহরটির প্রধান অপেরা কোম্পানি। আর্লেকিন থিয়েটার ফাউন্ডেশন’স একটি লম্বা সময় ধরে থাকা নাট্যকলা কোম্পানি। এ ধরনের ইভেন্ট আয়োজনের ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে মিউনিসিপাল থিয়েটার, প্যারাগুইয়ান-জাপানিজ সেন্টার, সেন্ট্রাল ব্যাংকের লিরিক থিয়েটার, হুয়ান দে সালাসার কালচারাল সেন্টার, দ্য আমেরিকাস থিয়েটার, দ্য টম জোবিম থিয়েটার, আর্লেকিন থিয়েটার এবং মানসানা দে লা রিভেরা। শহরটিতে কনসার্টের স্থানগুলোর মধ্যে দ্য জোকি ক্লাব (আসুনসিওন) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আসুনসিওন প্যারাগুয়ের স্থাপত্যশিল্পেরও কেন্দ্র।

দ্য সেভেন ট্রেজারস অব কালচারাল হেরিটেজ মেটেরিয়াল অব আসুনসিওন[সম্পাদনা]

২০০৯ সালের এপ্রিল এবং মে মাসে আসুনসিওনে দ্য সেভেন ট্রেজারস অব কালচারাল হেরিটেজ মেটেরিয়াল নির্বাচন করা হয়। অর্গানিজাসিওন কাপিতাল আমেরিকানা দে লা কুলতুরা এর প্রস্তাবনায় এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্যারাগুইয়ান প্রতিনিধিদের সহযোগিতায় আসুনসিওনের বস্তুগত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য প্রকাশের উদ্দেশ্যে এ কাজটি সম্পন্ন করা হয়।

মোট ৪৫ টি স্থাপনার মধ্য থেকে ৭টিকে আসুনসিওনের ট্রেজারস অব কালচারাল হেরিটেজ মেটেরিয়াল হিসেবে নির্বাচন করা হয়। নির্বাচনটিতে ১২,৪১৭ জন ভোট প্রদান করেন। নির্বাচনটির ফলাফল:

দ্য সেভেন ট্রেজারস অব কালচারাল হেরিটেজ মেটেরিয়াল অব আসুনসিওন
Palacio de los López en Asunción.jpg Panteón de los Héroes en Asunción.jpg Congreso Nacional Paraguay.jpg
পালাসিও দে লোস লোপেজ পান্টেওন নাসিওনাল দে লস হের কাবিনদো
Catedral de Asunción Paraguay.jpg ASUNCION HOTEL GUARANI ESPLENDOR.jpg Teatro Municipal Ignacio A. Pane.jpg
কাতেড্রাল মেট্রোপলিটানা দে আসুনসিওন হটেল গুয়েরানি তেয়াত্রো মুনিসিপাল ইগনাসিও আ. পানে
Catedral de la Santísima Trinidad by Felipe Méndez.jpg
ইগলাসিয়া দে লা সান্তিসিমা ত্রিনিদাদ

নাইটলাইফ[সম্পাদনা]

শহরটিতে নাইটলাইফের কেন্দ্র দুটি এলাকা: শহরটির কেন্দ্র এবং মানোরা ও লাস কার্মেলিতাস এলাকা, যেখানে অনেক নৈশক্লাব এবং বার অবস্থিত।

গণমাধ্যম[সম্পাদনা]

পত্রিকা[সম্পাদনা]

শহরটিতে সবচেয়ে পঠিত পত্রিকাগুলো হলো: দিয়ারিও লা নাসিয়ন, দিয়ারিও ওয়, দিয়ারিও এবিসি, দিয়ারিও উলতিমা ওরা এবং দিয়ারিও ক্রনিকা। এর মধ্যে এবিসি এবং উলতিমা ওরা সবচেয়ে সফল।

টেলিভিশন[সম্পাদনা]

এসএনটি এবং পারাভিশিয়ন, উনিকানাল, সুর টিভি, লাতেলে, সি৯এন, আরপিসি, টেলেফুতোরো সহ অন্যান্য ফ্রি টু এয়ার টেলিভিশন ও সরকারি টেলিভিশন, প্যারাগুয়ে টিভি শহরটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টেলিভিশন চ্যানেল।

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গ[সম্পাদনা]

  • প্যারাগুইয়ান ফুটবলার, মানুয়েল আলমিরন (জন্ম: ১৯৯৪)।
  • লেখক, অউগুস্তো রোয়া বাস্তোস (১৯১৭-২০০৫)।
  • রেসিং ড্রাইভার, ইয়োসহুয়া ডোর্কসেন (জন্ম: ২০০৩)।
  • গীতিকার, হোসে আসুনসিয়ন ফ্লোরেস (১৯০৪-১৯৭২)।
  • ফুটবলার, এরিক লোপেজ (জন্ম: ২০০১)।
  • সাবেক ফুটবলার, ওসভালভো পাংরাজিও (জন্ম: ১৯৫৭)।
  • ফুটবলার, পাওলো রবের্তো ওর্তিজ (জন্ম: ১৯৫৮)।
  • টেনিস খেলোয়াড়, ভিক্টর পেকসি (জন্ম: ১৯৫৫)।
  • আইস হকি খেলোয়াড়, উইলি প্লেটি (জন্ম: ১৯৫৫)।
  • ফুটবলার, রোকে সান্তা ক্রুস (জন্ম: ১৯৮১)।
  • সংগীতশিল্পী এবং অধ্যাপক, বের্তা রোহাস (জন্ম: ১৯৬৬)।
  • প্যারাগুইয়ান ফুটবলার, রদ্রিগো রোমান (জন্ম: ১৯৮৬)।
  • প্যারাগুইয়ান ফুটবলার, মারিও সালভিয়ার (জন্ম: ১৯৯০)।
  • ফুটবলার, মিগেল আলমিরন (জন্ম: ১৯৯৪)।
  • প্যারাগুইয়ান-মার্কিন সংগীতশিল্পী, লেখক এবং সাংবাদিক, শার্লেন ওয়েল হোকস (জন্ম: ১৯৬৪)।
  • প্যারুগুইয়ান মডেল, নাদিয়া ফেরেয়রা (জন্ম: ১৯৯৯)।
  1. "Asunción" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৯-০৫-৩০ তারিখে (US) and "Asunción"Oxford Dictionaries UK English DictionaryOxford University Press [অকার্যকর সংযোগ]
  2. টেমপ্লেট:Cite American Heritage Dictionary
  3. "Asunción"মেরিয়াম-ওয়েবস্টার ডিকশনারি (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মে ২০১৯