আলেকজান্দ্রিয়ার প্রাচীন গ্রন্থাগার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
দ্য গ্রেট লাইব্রেরি অফ আলেকজান্দ্রিয়া, ও. ফন করফেন, ঊনবিংশ শতাব্দী

আলেকজান্দ্রিয়ার প্রাচীন গ্রন্থাগার বা আলেকজান্দ্রিয়ার রাজ-গ্রন্থাগার ছিল প্রাচীন বিশ্বের বৃহত্তম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থাগারগুলির একটি। এটি মিশরের আলেকজান্দ্রিয়া শহরে অবস্থিত ছিল। খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে মিশরের টলেমিক রাজবংশের পৃষ্ঠপোষকতায় একটি প্রধান শিক্ষাকেন্দ্র হিসেবে এই গ্রন্থাগারটি গড়ে উঠেছিল। ৩০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রোমানদের মিশর আক্রমণের সময় পর্যন্ত এই গ্রন্থাগার কার্যকরী ছিল। গ্রন্থ সংগ্রহের পাশাপাশি এই গ্রন্থাগারে বক্তৃতাকক্ষ, সভাকক্ষ ও বাগানও ছিল। এই গ্রন্থাগার প্রকৃতপক্ষে ছিল মিউজিয়াম নামে এক বৃহত্তর গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অংশ। এখানে প্রাচীন বিশ্বের বহু বিশিষ্ট দার্শনিক পড়াশোনা করেছিলেন।

সম্ভবত টলেমি প্রথম সোটারের (৩২৩-২৮৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) অথবা তার পুত্র টলেমি দ্বিতীয় ফিলাডেলফাসের (২৮৩-২৪৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) রাজত্বকালে এই গ্রন্থাগার পরিকল্পিত ও স্থাপিত হয়েছিল। এই গ্রন্থাগার ছিল মিশরের ঐশ্বর্য ও ক্ষমতার প্রতীক। সারা পৃথিবী থেকে বই ধার করে তার অনুলিপি তৈরি করা ও সেই বই গ্রন্থাগারে নিয়ে আসার জন্য এই গ্রন্থাগারে কর্মচারী নিয়োগ করা হত। অধিকাংশ বইই রাখা হয় প্যাপিরাস স্ক্রোলের আকারে। তবে ঠিক কতগুলি স্ক্রোল এই গ্রন্থাগারে রক্ষিত ছিল তা জানা যায় না।

এই গ্রন্থাগার পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল। যার ফলে বহু স্ক্রোল ও বই চিরতরে নষ্ট হয়ে যায়। আলেকজান্দ্রিয়ার প্রাচীন গ্রন্থাগারের অগ্নিকাণ্ড তাই সাংস্কৃতিক জ্ঞান ধ্বংসের প্রতীক। প্রাচীন গ্রন্থগুলিতে এই অগ্নিকাণ্ডের সময় নিয়ে বিতর্ক দেখা যায়। কে এই অগ্নিসংযোগ ঘটিয়েছিলেন তা নিয়েও মতান্তর রয়েছে। এই ধ্বংস নিয়ে একটি জনশ্রুতি হল, বহু বছর ধরে জ্বলতে থাকা আগুনে এই গ্রন্থাগার বিনষ্ট হয়। সম্ভবত ৪৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দে জুলিয়াস সিজারের মিশর আক্রমণের সময়, ২৭০ খ্রিষ্টাব্দে আরেলিয়ান আক্রমণের সময়, ৩৯১ খ্রিষ্টাব্দে কপটিক পোপ থেওফিলাসের নির্দেশে সংঘটিত পৃথক পৃথক অগ্নিকাণ্ডে আলেকজান্দ্রিয়ার গ্রন্থাগার সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয় (এই ধারণা টি ১৭১৩ সালে Fr. Eusèbe Renaudot এর দ্বারা পরিত্যাক্ত হয় , এবং এটা প্রচলিত যে সেরাপিয়াম এর পূর্বেই তৃতীয় শতাব্দীতে রোমান সম্রাট অরেলিয়ান এর আক্রমণে এই লাইব্রেরি টা আংশিক ভস্মীভূত হয় এবং ৩৯১ খ্রিষ্টাব্দে এর ধ্বংস সম্পন্ন হয়)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

মূল গ্রন্থাগারটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ার পর, গবেষকরা আলেকজান্দ্রিয়া শহরেরই অন্য প্রান্তে সেরাপিয়াম নামে এক মন্দিরে একটি ছোটো গ্রন্থাগার ব্যবহার করতেন। কনস্ট্যান্টিনোপলের সক্রেটিসের মতে কপটিক পোপ থেওপিলাস ৩৯১ খ্রিষ্টাব্দে এই মন্দিরটিও ধ্বংস করে দেন।

গঠন[সম্পাদনা]

আলেকজান্দ্রিয়ার প্রাচীন গ্রন্থাগারের আকার কেমন ছিল, তা সঠিক না জানা গেলেও প্রাচীন গ্রন্থগুলির বর্ণনা অনুসারে, এই গ্রন্থাগারে স্ক্রোলের বিশাল সংগ্রহ, আঁকাবাঁকা পায়ে চলার পথ, একত্র ভোজনের কক্ষ, পড়ার ঘর, সভাকক্ষ, বাগান ও বক্তৃতাকক্ষ ছিল। আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষাপ্রাঙ্গণে এই ধরনের নকশা দেখা যায়। গ্রন্থাগারের একটি অধিগ্রহণ বিভাগ (সম্ভবত গ্রন্থভাণ্ডারের কাছে অবস্থিত ছিল বা বন্দরে জিনিসপত্র রাখার কাজে ব্যবহৃত হত) এবং একটি ক্যাটালগিং বিভাগ ছিল। একটি বড়ো ঘরে তাকে প্যাপিরারের সংগ্রহ রাখা হত। এগুলিকে বলা হত "বিবলিওথেকাই" (βιβλιοθῆκαι)। জনশ্রুতি, এই তাকগুলির উপর একটি ফলকে লেখা থাকত: "আত্মার চিকিৎসার স্থান"।[১]

গ্রন্থাগারটি ছিল আলেকজান্দ্রিয়ার মিউজিয়ামের একটি অংশ। এটি ছিল একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান। গ্রন্থাগার ছাড়াও মিউজিয়ামে ছিল জ্যোতির্বিদ্যা ও শরীরস্থান পঠনপাঠনের কক্ষ এবং দোষ্প্রাপ্য প্রাণীদের একটি চিড়িয়াখানা। যেসব বিশিষ্ট চিন্তাবিদ এই গ্রন্থাগারে পড়াশোনা ও গবেষণা করেছেন তাদের মধ্যে গণিত, প্রযুক্তিবিদ্যা, শারীরবিদ্যা, ভূগোল ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের বিশিষ্ট প্রথীতযশা মণীষীরা আছেন। এঁরা হলেন ইউক্রিড, আর্কিমিডিস, ইরাটোস্থিনিস ,হেরোফিলাস, এরাসিস্ট্রাটাস, হিপ্পারাকাস, এডেসিয়া, পাপ্পাস, থেওন, হাইপেশিয়া, আরিস্টারকাস অফ সামোসসেন্ট ক্যাথারিন[২]

সংগ্রহ[সম্পাদনা]

এই গ্রন্থাগারে কোন যুগের ঠিক কতগুলি বই ছিল, তার অনুমান করা আর সম্ভব নয়। গ্রন্থ সংগৃহীত হত প্যাপিরাসের আকারে। ৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের পর থেকে অবশ্য কোডেক্সও ব্যবহৃত হয়েছে। আলেকজান্দ্রিয়ার গ্রন্থাগারের গ্রন্থসংগ্রহকে কখনও পার্চমেন্ট কাগজে ধরে রাখা হয়নি। এর কারণ সম্ভবত মিশর অঞ্চলে প্যাপিরাস ব্যবসার রমরমা। তবে এই গ্রন্থাগার পার্চমেন্ট ব্যবহারের পরোক্ষ কারণ হয়ে উঠেছিল। গ্রন্থাগারের প্রচুর প্যাপিরাস প্রয়োজন হত বলে প্যাপিরাস রফতানি করা যেত না। তার বদলে পার্চমেন্ট রফতানির সূত্রপাত ঘটে।[৩]

কোনো কোনো ক্ষেত্রে একই লেখা একাধিক স্ক্রোলে লিখে রাখা হত। এই ধরনের "বই"গুলি ছিল প্রধান সম্পাকীয় রচনা। কথিত আছে, রাজা টলেমি দ্বিতীয় ফিলাডেলফাসের রাজত্বকালে (৩০৯-২৪৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) গ্রন্থাগারে ৫০০,০০০-এরও বেশি স্ক্রোল ছিল।[৪] কথিত আছে, বিবাহের যৌতুক হিসেবে পারগামাম গ্রন্থাগারের ২০০,০০০ স্ক্রোল মার্ক অ্যান্টনি ক্লিওপেট্রাকে উপহার দিয়েছিলেন। যদিও, কোনো কোনো ঐতিহাসিকের মতে, অ্যান্টনি যে রোমের তুলনায় মিশরের প্রতি অধিক আনুগত্য দেখিয়েছিলেন, তা প্রমাণ করার জন্যই এই ধরনের দাবি করা হয় মাত্র।[৫]

গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই গ্রন্থাগারে গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা, পদার্থবিদ্যা, প্রাকৃতিক বিজ্ঞান ও অন্যান্য নানা বিষয়ের গ্রন্থ ছিল। সাম্রাজ্যের প্রধান গ্রন্থাগার হওয়ায় এখানে প্রাচীন বিশ্বের প্রথম এবং প্রধান গ্রন্থপাঠ সমালোচনার কেন্দ্র ছিল এই গ্রন্থাগার। একই লেখা একাধিক স্ক্রোলে বিধৃত হওয়ায় তুলনামূলক গ্রন্থপাঠ সমালোচনাও তীব্রতর হত। গ্রন্থ সংগ্রহের পর প্রধান অনুলিপিগুলি তৈরি করা হত সারা পৃথিবীর বিদ্বান, রাজপরিবার ও ধনী গ্রন্থ সংগ্রাহকদের জন্য। তা থেকে গ্রন্থের প্রচুর আয়ও হত।[৬]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

রোমের টাইবেরিয়াস ক্লডিয়াস ব্যালবিলাসের লাতিন শিলালিপিতে "ALEXANDRINA BYBLIOTHECE" (অষ্টম পঙ্‌ক্তি) শব্দটি আলেকজান্দ্রিয়ার প্রাচীন গ্রন্থাগারের নামবাচক।

প্রায় সব প্রাচীন গ্রন্থেই আলেকজান্দ্রিয়ার গ্রন্থাগারকে প্রাচীন বিশ্বের বৃহত্তম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থাগারগুলির একটি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।[৭] তবে এই গ্রন্থাগারের বিবরণ ইতিহাস ও কিংবদন্তির মিশ্রণই রয়ে গিয়েছে।[৮] এই গ্রন্থাগারের মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রাচীন মিশরের ঐশ্বর্য প্রদর্শন। গবেষণা ছিল গৌণ উদ্দেশ্য।[৯] তবে গ্রন্থাগারের সঞ্চিত গ্রন্থগুলি মিশরের শাসকের কাজে লাগত।[৮]

ছদ্ম-পত্রসাহিত্য লেটার্স অফ এরিস্টেয়াস (১৮০-১৪৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে রচিত) এই গ্রন্থাগার সম্পর্কে সবচেয়ে পুরনো তথ্যসূত্র।[৯] এই বই থেকে জানা যায়, লাইব্রেরিটি টলেমি প্রথম সোটারের রাজত্বকালে (৩৬৭-২৮৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) অ্যারিস্টটলের ছাত্র ডিমেট্রিয়াস ফালেরেউস[১০] গড়ে তুলেছিলেন। অন্যমতে, টলেমি প্রথম সোটারের পুত্র টলেমি দ্বিতীয় ফিলাডেলফাসের রাজত্বকালে (২৮৩-২৪৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) এই গ্রন্থাগার গড়ে উঠেছিল।[১১] মিউজিয়ামের পাশে রাজপ্রাসাদের অঙ্গ হিসেবে অ্যারিস্টটলের লিসেয়ামের ধাঁচে এই গ্রন্থাগার গড়ে উঠেছিল।[১২]

আলেকজান্দ্রিয়ার গ্রন্থাগারের দায়িত্ব ছিল সারা বিশ্বের জ্ঞান সংগ্রহ করা। গ্রন্থাগারের অধিকাংশ কর্মচারী প্যাপিরাসে বই অনুবাদের কাজে ব্যস্ত থাকতেন।[৮] রোডসএথেন্সের বইমেলায় ঘুরে রাজার অর্থে প্রচুর বই সংগ্রহ করে এই কাজ চলত।[১৩] গালেনের মতে, বন্দরের কোনো জাহাজে কোনো বই পাওয়া গেলেই তা গ্রন্থাগারে নিয়ে আসা হত।[১১] এই বইগুলি "জাহাজের বই" নামে তালিকাভুক্ত করা হত।[১৪] তারপর সরকারি লিপিকার সেই বইয়ের অনুলিপি করতেন। মূল বইটি গ্রন্থাগারে রেখে, অনুলিপিটি মালিককে ফেরত দেওয়া হত।[১৪] অতীতকালের গ্রন্থ সংগ্রহের পাশাপাশি এই গ্রন্থাগারে একদল আন্তর্জাতিক গবেষক সপরিবারে বাস করতেন। তারা রাজার কাছ থেকে বৃত্তি পেতেন।[৬]

গালেনের মতে, তৃতীয় টলেমি এথেন্সবাসীর কাথ থেকে এসিলাস, সোফোক্লিসইউরিপিডিসের মূল বইগুলি সংগ্রহের অনুমতি চেয়েছিলেন। এর পরিবর্তে এথেন্সবাসীরা প্রচুর পনেরো ট্যালেন্ট (৪৫০ কিলোগ্রাম) ওজনের মূল্যবান ধাতু বন্ধকী রাখতে চান। তৃতীয় টলেমি সেই পরিমাণ অর্থ জমা রাখলেও মূল বইগুলি গ্রন্থাগারেই রেখে দেন।[১৫] তবে এই গল্পটি টলেমিক রাজবংশের অধীনে এথেন্সের উপর আলেকজান্দ্রিয়ার ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য প্রচারিত অসত্য গল্পও হতে পারে। আলেকজান্দ্রিয়া ছিল মিশরের মূল ভূখণ্ড ও ফারোজ দ্বীপের মধ্যে যোগাযোগরক্ষাকারী বন্দর। এখানে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের বণিকরা আসতেন। ধীরে ধীরে এটি একটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকেন্দ্রে পরিণত হয় এবং পরে প্যাপিরাসের অন্যতম প্রধান উৎপাদন কেন্দ্রে পরিণত হয়। যা এখানে গ্রন্থ উৎপাদনেও সহায়ক হয়।[১৬]

এই গ্রন্থাগারের সম্পাদকেরা হোমারের গ্রন্থ সম্পাদনার জন্য বিশেষভাবে খ্যাত ছিলেন। অধিকতর বিখ্যাত সম্পাদকেরা সাধারণত "প্রধান গ্রন্থাগারিক" উপাধি পেতেন। এঁদের মধ্যে জেনোডোটাস, রোডসের অ্যাপোলোনিয়াস, এরাটোস্থেনিস, বাইজান্টিয়ামের অ্যারিস্টোফেনস ও সামোথ্রেসের অ্যারিস্টারকাসের নাম উল্লেখযোগ্য।[১৭] প্রথম গ্রন্থপঞ্জিকার ও পিনাকেস-এর রচয়িতা ক্যালিমাকাস এই গ্রন্থাগারের প্রথম ক্যাটালগ তৈরি করেছিলেন। তবে তিনি এই গ্রন্থাগারের প্রধান গ্রন্থাগারিক ছিলেন না।[১৮] খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে গবেষকরা নিরাপদতর স্থানে বড়ো রাজার পৃষ্ঠপোষকতা লাভের আশায় এই গ্রন্থাগার ছেড়ে যেতে শুরু করেন। ১৪৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে অষ্টম টলেমি আলেকজান্দ্রিয়া থেকে সকল বিদেশি গবেষককে বিতাড়িত করেন।[১৯]

উত্তরাধিকার[সম্পাদনা]

ইয়াহিয়া আল-ওয়াসিতির চিত্র ১২৩৩, বাগদাদের একটি আব্বাসীয় গ্রন্থাগারে আরব পণ্ডিতদের চিত্রিত করছেন

পুরাকীর্তিতে[সম্পাদনা]

আলেকজান্দ্রিয়া গ্রন্থাগারটি প্রাচীন বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম এবং সর্বাধিক মর্যাদাপূর্ণ গ্রন্থাগার ছিল, তবে এটি একমাত্র থেকে দূরে ছিল।[২০][২১][২২] হেলেনিস্টিক পিরিয়ডের শেষে, পূর্ব ভূমধ্যসাগরের প্রায় প্রতিটি শহরে একটি পাবলিক লাইব্রেরি ছিল এবং অনেকগুলি মাঝারি আকারের ন্গোরেও ছিল।[২০][২৩] রোমান আমলে, কেবল লাইব্রেরির সংখ্যা প্রসারিত হয়।[২৪] খ্রিস্টীয় চতুর্থ শতাব্দীর মধ্যে কেবল রোম শহরেই কমপক্ষে দুই ডজন পাবলিক গ্রন্থাগার ছিল।[২৪]

প্রাচীন কালজুড়ে, রোমান সাম্রাজ্য খ্রিস্টান হওয়ার সাথে সাথে খ্রিস্টান গ্রন্থাগারগুলি সরাসরি আলেকজান্দ্রিয়া গ্রন্থাগারের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল এবং পূর্ববর্তী পৌত্তলিক যুগের অন্যান্য দুর্দান্ত গ্রন্থাগারগুলি সমস্ত সাম্রাজ্যের গ্রিক ভাষী পূর্ব অংশ জুড়ে প্রতিষ্ঠিত হতে শুরু করেছিল।[২৪] এই গ্রন্থাগারগুলির মধ্যে বৃহত্তম এবং সর্বাধিক বিশিষ্টগুলির মধ্যে ছিল সিজারিয়া মেরিটিমার ধর্মতাত্ত্বিক গ্রন্থাগার, জেরুজালেমের গ্রন্থাগার এবং আলেকজান্দ্রিয়ার খ্রিস্টান গ্রন্থাগার।[২৪] এই লাইব্রেরিগুলিতে পৌত্তলিক এবং খ্রিস্টান উভয় লেখা পাশাপাশি ছিল [২৪]এবং খ্রিস্টান পণ্ডিতরা আলেকজান্দ্রিয়া লাইব্রেরির পন্ডিতরা গ্রিক শাস্ত্র বিশ্লেষণের জন্য যে একই ফিলোলজিক্যাল কৌশল ব্যবহার করেছিলেন তা জুডো-খ্রিস্টান শাস্ত্রে প্রয়োগ করেছিলেন। [২৪] তবুও, পৌত্তলিক লেখকদের অধ্যয়ন রেনেসাঁ অবধি খ্রিস্টান ধর্মগ্রন্থ অধ্যয়নের গৌণ ছিল।[২৪]

হাস্যকর ভাবে, প্রাচীন গ্রন্থগুলির থাকা কিছুই নয়, কারণ সমস্ত কিছু অনুলিপি করা হয় প্রথমে পেশাদার লিপিকার দের দিয়ে পাপিরাস, এবং পরে মধযুগিও সন্ন্যাসীর দ্বারা চামড়াতে।[২৫][২৬]

পাদটীকা[সম্পাদনা]

  1. Manguel, Alberto, The Library at Night. New Haven: Yale University Press, 2008, p. 26.
  2. Idolphon.org
  3. Murray, S. A., (2009). The library: An illustrated history. New York: Skyhorse Publishing, p.14
  4. Tarn, W.W. 1928. Ptolemy II. The Journal of Egyptian Archaeology, 14(3/4), 246–260. The Byzantine writer Tzetzes gives a similar figure in his essay On Comedy.
  5. MacLeod Roy,The Library of Alexandria:Center of Learning in the Ancient World, New York:I.B Tauris & Co Ltd, 2005.
  6. Kennedy, George.The Cambridge History of Literary Criticism:Classical Criticism,New York: University of Cambridge Press, 1999.
  7. Cosmos: A Personal Voyage, Sagan, C 1980, "Episode 1: The Shores of the Cosmic Ocean"
  8. Roy MacLeod (৪ সেপ্টেম্বর ২০০৪)। The Library of Alexandria: Centre of Learning in the Ancient World, Revised Edition। I.B.Tauris। পৃষ্ঠা 1–। আইএসবিএন 978-1-85043-594-5। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০১৩ 
  9. David C. Lindberg (১৫ মার্চ ১৯৮০)। Science in the Middle Ages। University of Chicago Press। পৃষ্ঠা 5–। আইএসবিএন 978-0-226-48233-0। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০১৩ 
  10. Letter of Aristeas, 9–12.
  11. Phillips 2010
  12. Entry Μουσείον at Liddell & Scott.
  13. Erksine, Andrew. 1995. "Culture and Power in Ptolemaic Egypt: The Museum and Library of Alexandria". Greece & Rome, 2nd ser., 42(1), 38–48.
  14. Galen, xvii.a, p.606.
  15. Galen, xvii.a, p.607.
  16. Trumble ও MacIntyre Marshall 2003
  17. Whibley, Leonard; A Companion to Greek Studies 1916 pp. 122–123.
  18. Konstantinos Sp. Staikos (২০০০)। The Great Libraries: From Antiquity to the Renaissance। Oak Knoll Press & The British Library। পৃষ্ঠা 66। আইএসবিএন 1-58456-018-5 
  19. Paul G P Meyboom (১৯৯৫)। The Nile Mosaic of Palestrina: Early Evidence of Egyptian Religion in Italy। BRILL। পৃষ্ঠা 373–। আইএসবিএন 978-90-04-10137-1। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০১৩ 
  20. Garland 2008, পৃ. 60।
  21. MacLeod 2000, পৃ. 3, 10–11।
  22. Casson 2001, পৃ. 48।
  23. MacLeod 2000, পৃ. 3।
  24. Nelles 2010, পৃ. 533।
  25. Garland 2008, পৃ. 61।
  26. Nelles 2010, পৃ. 533–534।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]