স্বপন দাশগুপ্ত

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
স্বপন দাশগুপ্ত
সাংসদ, রাজ্যসভা
কাজের মেয়াদ
২৫শে এপ্রিল, ২০১৬ - ১৬ই মার্চ, ২০২১
পূর্বসূরীনিজেই
সংসদীয় এলাকামনোনীত
কাজের মেয়াদ
১লা জুন, ২০২১ - বর্তমান
পূর্বসূরীনিজেই
সংসদীয় এলাকামনোনীত
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম৩রা অক্টোবর, ১৯৫৫
কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ,ভারত
রাজনৈতিক দলভারতীয় জনতা পার্টি
দাম্পত্য সঙ্গীরেশমি রায় দাশগুপ্ত
সন্তান১ পুত্র
প্রাক্তন শিক্ষার্থীসেন্ট ষ্টিফেন কলেজ, দিল্লি
স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডন
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাসাংবাদিক, লেখক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক
পুরস্কারপদ্মভূষণ ২০১৫

স্বপন দাশগুপ্ত (৩রা অক্টোবর, ১৯৫৫) একজন ভারতীয় সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব[১]। তিনি ভারতের ডানপন্থী রাজনীতির অন্যতম প্রভাবশালী একজন বুদ্ধিজীবী এবং বিভিন্ন সংবাদপত্রে হিন্দু জাতীয়তাবাদ সম্পর্কিত প্রবন্ধ লেখার জন্যে পরিচিত। তিনি ভারতের আইনসভার উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার একজন মনোনীত সাংসদ। ২০২১ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করবার জন্য তিনি রাজ্যসভা থেকে ইস্তফা দেন। নির্বাচনে পরাজিত হবার পর স্বপন দাশগুপ্ত ২০২১ সালের ১লা জুন পুনরায় রাজ্যসভার সাংসদ মনোনীত হন। ২০১৫ সালে সাহিত্য ও শিক্ষাক্ষেত্রে অবদানের জন্য স্বপন দাশগুপ্ত পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত হন[২]

প্রারম্ভিক জীবন ও পড়াশোনা[সম্পাদনা]

স্বপন দাশগুপ্ত ১৯৫৫ সালের ৩রা অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় একটি বাঙালি বৈদ্য ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। সেন্ট পলস স্কুল, দার্জিলিং এবং লা মার্টিনিয়ার, কলকাতা থেকে পড়াশোনা করার পর ১৯৭৫ সালে দিল্লির সেন্ট স্টিফেন কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

এরপর তিনি স্টাডিজ অফ ওরিয়েন্টাল আন্দ আফ্রিকান স্টাডিজ ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডন থেকে এমএ এবং পিএইচডি অর্জন করেন।

পরবর্তীকালে, ১৯৭৯ সালে তিনি তার পরিবারিক ব্যবসা ক্যালকাটা কেমিক্যাল কোম্পানি পরিচালনার উদ্দেশ্য সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ভারতে ফিরে আসেন।

অবশেষে তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত নফিল্ড কলেজে জুনিয়র রিসার্চ ফেলো হিসাবে যুক্তরাজ্যে ফিরে আসেন, যেখানে তিনি দক্ষিণ এশীয় রাজনীতি বিষয়ে পড়াশোনা ও গবেষণা করেন।

পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার স্থানীয় রাজনীতি সম্পর্কে তাঁর থিসিসের একটি অংশে রণজিত গুহ সম্পাদিত সাবাল্টার্ন স্টাডিজ সম্পর্কিত একটি খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে[৩]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

তিনি দ্য ইকোনমিক টাইমসের লাইফস্টাইল বিভাগের সম্পাদিকা রেশমি রায় দাশগুপ্তের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ এবং তাঁদের এক পুত্র সন্তান রয়েছে, যিনি ভারতের সুপ্রিম কোর্টে অনুশীলনকারী আইনজীবী। তারা নয়াদিল্লিতে বসবাস করেন।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

স্বপন দাসগুপ্ত দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া, দ্য স্টেটসম্যান, ইন্ডিয়া টুডের মতো বিখ্যাত বিখ্যাত সব ইংরেজি দৈনিক সংবাদপত্রে সম্পাদকীয় বিভাগে লেখালিখি করেছেন[৪]। বিভিন্ন ইংরেজি চ্যানেল গুলিতে স্বপন দাশগুপ্ত কে ভারতীয় রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে মতামত দেবার জন্যে অতিথি হিসাবে আমন্ত্রন করা হয়।

২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে স্বপন দাশগুপ্তকে লারসেন ও টুব্রোর পরিচালনা পর্ষদে ইউনিট ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়ার মনোনীত প্রার্থী হিসাবে মনোনীত হন। রাজ্যসভাযর সাংসদ নিযুক্ত হওয়ার পরে লারসেন ও টুব্রোর পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

রাজনীতি[সম্পাদনা]

প্রাথমিকভাবে ট্রটস্কিবাদে আকৃষ্ট হওয়া সত্ত্বেও স্বপন দাসগুপ্ত ইংল্যান্ডে থাকাকালীন থ্যাচারপন্থী হয়ে ওঠেন। সেই সময় থেকে ডানপন্থী রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন এবং ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্য হিসাবে জাতীয় রাজনৈতিক থিয়েটারে তিনি তীব্রভাবে সক্রিয় হয়ে পড়েন। মুশিরুল হাসান ৯০-এর দশকে তাকে ইংরেজি ভাষা সংবাদমাধ্যমে বিজেপির কার্যকরী প্রধান-মুখপাত্র হিসাবে চিহ্নিত করেছিলেন[৫]

এপ্রিল, ২০১৬ সালে, ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় স্বপন দাশগুপ্তকে রাজ্যসভায় মনোনীত করেছিলেন। তাঁর মেয়াদটি ২০২২ অবধি অব্যাহত ছিল। ২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিলে, ২০২১ সালের ১লা মার্চ, ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস দলের আইনি পদক্ষেপ নেয়। যার ফলস্বরুপ তিনি রাজ্যসভার সদস্য হিসাবে পদত্যাগ করেন, কারণ মনোনীত সদস্য হিসাবে রাজ্যসভায় সাংসদ পদে অধিষ্ঠিত থাকা কোনও ব্যক্তি কোন রাজনৈতিক দলের টিকিটে প্রার্থী হতে পারবেন না।

সমালোচনা[সম্পাদনা]

ঐতিহাসিক মীরা নন্দা তাঁকে ভারতের ডানপন্থী রাজনীতির অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বুদ্ধিজীবী হিসাবে উল্লেখ করেছেন। তানিকা সরকারের মতো ঐতিহাসিক স্বপন দাসগুপ্তের লেখালিখির সাথে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠনের চিন্তার সাদৃশ্য খুঁজে পেয়েছেন। মনীষা বসু তার লেখা 'দ্য রেটরিক অফ হিন্দু ইন্ডিয়া'য় স্বপন দাসগুপ্তকে বাম-উদারপন্থী বুদ্ধিজীবীদের বিপক্ষে অন্যতম মুখ হিসাবে গণ্য করেছেন[৫]

লিখিত বই[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]