উইলিয়াম চ্যাটারটন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
উইলিয়াম চ্যাটারটন
১৮৯৭ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে উইলিয়াম চ্যাটারটন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামউইলিয়াম চ্যাটারটন
জন্ম(১৮৬১-১২-২৭)২৭ ডিসেম্বর ১৮৬১
থর্নসেট, ইংল্যান্ড
মৃত্যু১৯ মার্চ ১৯১৩(1913-03-19) (বয়স ৫১)
হাইড, বৃহত্তর ম্যানচেস্টার, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি স্লো
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার, অধিনায়ক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
একমাত্র টেস্ট
(ক্যাপ ৭৪)
১৯ মার্চ ১৮৯২ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৮৮২ - ১৯০২ডার্বিশায়ার
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ২৮৯
রানের সংখ্যা ৪৮ ১০৯১৪
ব্যাটিং গড় ৪৮.০০ ২৩.১৭
১০০/৫০ ৮/৫৩
সর্বোচ্চ রান ১৬৯
বল করেছে ১১৮৯৬
উইকেট ২০৮
বোলিং গড় ২১.৪৬
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৬/৪২
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ০/– ২৩৯/৪
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৫ এপ্রিল ২০২০

উইলিয়াম চ্যাটারটন (ইংরেজি: William Chatterton; জন্ম: ২৭ ডিসেম্বর, ১৮৬১ - মৃত্যু: ১৯ মার্চ, ১৯১৩) থর্নসেট এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও ফুটবলার ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৮৯২ সালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ডার্বিশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে স্লো বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন তিনি।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

ডার্বিশায়ারের বার্চ ভ্যালের থর্নসেট এলাকায় জন্মগ্রহণকারী উইলিয়াম চ্যাটারটন তুলা কারখানার অগ্নিনির্বাপককর্মী ডেভিড চ্যাটারটন ও হান্নাহ দম্পতির সন্তান। ১৮৮১ সালে নিউটন চেশায়ারে অবস্থিত ঐ কারখানায় তিনি তুলা বহনকারীর কাজে লিপ্ত ছিলেন।[১]

১৮৮২ সাল থেকে ১৯০২ সাল পর্যন্ত উইলিয়াম চ্যাটারটনের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৮৮২ সালে ডার্বিশায়ারের পক্ষে ক্রিকেট ও ১৮৮৪ সালে ডার্বি কাউন্টির পক্ষে ফুটবল খেলতে শুরু করেন। ডার্বিশায়ারের পক্ষে সমগ্র প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন অতিবাহিত করেন। এ পর্যায়ে দশ সহস্রাধিক রান সংগ্রহের পাশাপাশি দুই শতাধিক উইকেট লাভ করেছেন। তন্মধ্যে, ১৮৮৭ থেকে ১৮৮৯ সাল পর্যন্ত দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।

১৮৮৮ সালের পূর্বে ডার্বিশায়ারের প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের মর্যাদা কেড়ে নেয়া হয়েছিল। ১৮৯৪ সালে ডার্বিশায়ার দল প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে খেলার পুনরায় মর্যাদাপ্রাপ্ত হয়। বলা হয়ে থাকে যে, তিনি একহাতে এ সাফল্যের অংশীদার ছিলেন। ১৯০২ মৌসুম শেষে ডার্বিশায়ারের খেলোয়াড়ী জীবন শেষ করেন।

ডার্বিশায়ারের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার হিসেবে পরিগণিত হয়েছিলেন। অনেকগুলো বছর পেশাদারী ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে উঁচু স্তরের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। অনেকগুলো স্ট্রোক খেলেন। তার ব্যাটিং বেশ দর্শনীয় ও দৃষ্টিনন্দন ছিল। সতর্কতার সাথে খেলার স্বীকৃতিস্বরূপ ২৫.১৫ গড়ে ১১,৬১৯ রান তুলেছিলেন। এছাড়াও, ২৩ রানেরও কম খরচায় ১৯৯ উইকেট পেয়েছেন।

এমসিসি’র পক্ষে তার অল-রাউন্ড ক্রীড়াশৈলী প্রায়শঃই বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতো। একমাত্র ঔপনিবেশিক সফরে বেশ রান করেছিলেন। ১৮৮৬ ও ১৮৮৯ সালে লেটনে এসেক্সের বিপক্ষে ১১৩ ও ১৬৮, ১৮৯১ ও ১৮৯৩ সালে ডার্বিতে ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে ১০৬ ও ১০১*, ১৮৯৫ সালে একই মাঠে লিচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ১২৭, ১৮৯৬ সালে লেটনে এসেক্সের বিপক্ষে ১১১, একই সালে ম্যানচেস্টারে ল্যাঙ্কাশায়ারের বিপক্ষে ১০৪, ১৮৯৭ সালে লেটনে এসেক্সের বিপক্ষে ১২০, ১৮৯৮ সালে ডার্বিতে হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে ১৪২, ১৯০১ সালে ব্রিস্টলে গ্লুচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ১৬৯, ১৮৯২ সালে লর্ডসে এমসিসি’র সদস্যরূপে ল্যাঙ্কাশায়ারের বিপক্ষে ১০৯* ও ১৮৯৪ সালে কেমব্রিজে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে ১১৩ রান তুলেছিলেন।

১৮৯৬ সালে লেটনে এসেক্সের বিপক্ষে ১১১ ও অপরাজিত ৮৫ রান তুলেন। এরফলে, উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করা থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন তিনি। ১৮৮৯ থেকে ১৯৯৮ সালের মধ্যে প্লেয়ার্সের সদস্যরূপে জেন্টলম্যানের বিপক্ষে খেলেন। তন্মধ্যে, ১৮৯১ সালে হ্যাস্টিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৫৮ রান তুলেন। সবমিলিয়ে ২০.৬৬ গড়ে ২৪৮ রান তুলেন তিনি।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন উইলিয়াম চ্যাটারটন। ১৯ মার্চ, ১৮৯২ তারিখে কেপ টাউনে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এটিই তার একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। এরপর আর তাকে কোন টেস্টে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি।

১৮৯১-৯২ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। ঐ মৌসুমের শীতকালে ইংল্যান্ডের দুইটি দল বিদেশ গমন করে। দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ায় প্রতিনিধিত্বমূলক ঐ সফর দুইটি পরবর্তীতে টেস্টের মর্যাদাপ্রাপ্ত হয়। এরফলে, চ্যাটারটন একটি টেস্টে অংশ নেয়ার সুযোগ পান।

ফুটবলে অংশগ্রহণ[সম্পাদনা]

ক্রিকেটের পাশাপাশি ফুটবল খেলায় প্রদর্শন করেছিলেন উইলিয়াম চ্যাটারটন। ইনসাইড-ফরোয়ার্ড অঞ্চলে অবস্থান করতেন। ডার্বি কাউন্টির পক্ষে ফুটবল খেলেছেন তিনি। এরফলে, ডার্বিশায়ারের ১৯ জন ক্রীড়াবিদের অন্যতম হিসেবে ক্রিকেটের পাশাপাশি ফুটবল খেলেছেন।

৮ নভেম্বর, ১৮৮৪ তারিখে ডার্বি কাউন্টির সদস্যরূপে তাদের এফএ কাপে প্রথম খেলায় ওয়ালসল টাউনের বিপক্ষে খেলেন। ঐ খেলায় তার দল ৭-০ ব্যবধানে পরাজয়বরণ করেছিল। ১৮৮৮ সালে ফুটবল লিগ প্রবর্তনের পূর্বে ক্লাবের পক্ষে অনেকগুলো খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। ১৮৮৮-৮৯ মৌসুমে প্রথম ফুটবল লিগ মৌসুমে ডার্বি কাউন্টির পক্ষে পাঁচটি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি।[২]

১৩ অক্টোবর, ১৮৮৮ তারিখে থর্নেহোম রোডে অনুষ্ঠিত খেলায় আয়োজক দল অ্যাক্রিংটনের বিপক্ষে লিগে অভিষেক ঘটে তার। খেলায় স্বাগতিক দল ৬-২ ব্যবধানে জয় পায়। এ খেলায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে ডার্বি কাউন্টি সর্বাপেক্ষা বয়োজ্যেষ্ঠ লিগ খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি পান ও লেভি রাইটের রেকর্ড ভেঙ্গে যায়। ২০ অক্টোবর, ১৮৮৮ তারিখে ডার্বি কাউন্টি’র তৎকালীন মাঠ কাউন্টি গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত খেলাটিতে তিনি লিগে তার একমাত্র গোলটি করেছিলেন। মাথা স্পর্শের মাধ্যমে চ্যাটারটন গোল করেন। বিরতি পর্যন্ত প্রতিপক্ষীয় এভারটন ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। খেলায় ডার্বি কাউন্টি ৪-২ গোলে পরাজিত হয়। ২৬ বছর ২৯৮ দিন বয়সে চ্যাটারটনের লিগে অভিষেক গোল করেন। এরফলে, সাত সপ্তাহব্যাপী লিগ ফুটবলে তিনি ডার্বি কাউন্টির বয়োজ্যেষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে গোল করার কৃতিত্ব দেখান। ১৮৮৮-৮৯ মৌসুমে ডার্বি কাউন্টির ২২টি খেলার মধ্যে তিনি পাঁচটিতে খেলেন।[৩][৪] ঐ মৌসুম শেষে আর তিনি খেলেননি ও লিগ ফুটবলে আর অংশ নেননি।[৫]

১৯ মার্চ, ১৯১৩ তারিখে ৫১ বছর বয়সে যক্ষারোগে আক্রান্ত হয়ে বৃহত্তর ম্যানচেস্টারের হাইড এলাকায় উইলিয়াম চ্যাটারটনের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. British Census 1881
  2. "Bygone Derbyshire – William Chatterton Football Pioneer and Cricketer Supreme"। ১৯ নভেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ এপ্রিল ২০২০ 
  3. Metcalf, Mark (২০১৩)। The Origins of the Football League। Amberley। পৃষ্ঠা 65আইএসবিএন 978 1 4456 1881 4 
  4. "English National Football Archive"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-২১  (registration & fee required)
  5. Metcalf, Mark (২০১৩)। The Origins of the Football League। Amberley। পৃষ্ঠা 197আইএসবিএন 978 1 4456 1881 4 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

ক্রীড়া অবস্থান
পূর্বসূরী
এডমন্ড মেনার্ড
ডার্বিশায়ার ক্রিকেট অধিনায়ক
১৮৭৭ - ১৮৮৯
উত্তরসূরী
ফ্রেড স্পফোর্থ