নারায়ণ সান্যাল (মাওবাদী)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
নারায়ণ সান্যাল
নারায়ণ সান্যাল
জন্ম
মৃত্যু১৭ এপ্রিল, ২০১৭
কলকাতা, (বর্তমান ভারত ভারত)
জাতীয়তাব্রিটিশ ভারতীয়, ভারতীয়
নাগরিকত্ব ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)
 ভারত (২০১৭ সাল পর্যন্ত)
পেশাপেশাদার বিপ্লবী
প্রতিষ্ঠানএমসিসি
পরিচিতির কারণসি পি আই (মাওবাদী) দলের পলিটব্যুরো সদস্য
রাজনৈতিক দলভারতের কমিউনিস্ট পার্টি, ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী)

নারায়ণ সান্যাল (মৃত্যুঃ ১৭ এপ্রিল, ২০১৭) একজন প্রবীন মাওবাদী নেতা ও ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী) দলের পলিটব্যুরো সদস্য ছিলেন। তিনি মাওবাদ অনুসৃত রাজনীতির জগতে বিজয়দা বা নভীন কুমার হিসেবেও সমধিক পরিচিত ছিলেন।

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

অধুনা বাংলাদেশ এর বগুড়া জেলায় এক সম্পন্ন পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন নারায়ণ সান্যাল। তার পিতা ছিলেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস জেলা সমিতির প্রধান নেতা। সরোজিনী নায়ডু, বিধানচন্দ্র রায় প্রমুখেরা তাদের বাড়িতে আসতেন। ফলত রাজনৈতিক পরিমন্ডলে বেড়ে ওঠেন তিনি।[১] ১৯৪০ সালে দেশভাগের আগেই তার পরিবার ভারতে চলে আসে। শিক্ষা সম্পন্ন করার পর ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার চাকরিতে যোগ দেন নারায়ন সান্যাল।[২][৩]

রাজনীতি[সম্পাদনা]

৬০ এর দশকে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনের নেতা, বিপ্লবী অনন্ত সিং এর সংস্পর্শে আসেন নারায়ন ও ম্যান-মানি-গান গ্রুপের সাথে যুক্ত ছিলেন নকশাল আন্দোলন শুরুর আগে পর্যন্ত। ১৯৬৭ সালে নকশাল আন্দোলনের প্রভাবে বিপ্লবী রাজনীতিতে যোগ দেন ও ১৯৬৯ সালে বিহার চলে যান। জানা যায় এই কাজে তাকে উৎসাহ প্রদান করেছিলেন সুশীতল রায়চৌধুরীসরোজ দত্ত। বিহারে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) নেতা সত্যনারায়ন সিংহের গ্রুপে যোগদান করেন। মতাদর্শ গত কারণে সত্যনারায়ন সিংহ অন্য গ্রুপ তৈরী করলে তিনি চারু মজুমদারপন্থী হিসেবে বিহার রাজ্যে পার্টি পূনর্গঠনে হাত দেন ও জেহানাবাদ - পালামৌ জেলা এলাকায় সংগঠন গড়ে তোলেন। ১৯৭৩ সালে গ্রেপ্তার হন ও বামফ্রন্ট সরকার ১৯৭৭ এ ক্ষমতায় আসার পর অন্যান্য রাজনৈতিক বন্দিদের সাথে তিনিও মুক্তি পান।[৩] সিপিআই (এম এল) এর ভাঙনের পরে ১৯৭৮ সালে অন্যান্য মাওপন্থী রাজনৈতিকদের সাথে মিলে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী-লেনিনবাদী)(পার্টি ইউনিটি) নামক দল গঠন করেন। এসময় নভীন কুমার নামে পরিচিত হতেন নারায়ন সান্যাল। ১৯৮৭ সালে এই দলের সাধারণ সম্পাদক হন। ১৯৯৮ সালে পার্টি ইউনিটি, ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী-লেনিনবাদী) (জনযুদ্ধ) গোষ্ঠীর সাথে মিলে যায়। ২০০৪ সাল নাগাদ মাওবাদি কমিউনিস্ট সেন্টার (এম সি সি) ও জনযুদ্ধের ঐক্য দ্বারা গঠিত ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী) দলের পলিটব্যুরো সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। অর্ধ শতকেরও বেশি সময় ধরে রাজনীতির সাথে থাকা নারায়ণ দলের তাত্ত্বিক ও অন্যতম প্রবীন নেতা ছিলেন।[২][৪][৫]

গ্রেপ্তার ও মৃত্যু[সম্পাদনা]

২০০৫ সালে ছত্তীসগঢ় রাজ্যের রায়পুর বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেপ্তার হন তিনি। রায়পুর জেলে তাকে দেখতে যাওয়ার কারণে মাওবাদী অভিযোগে বন্দী হন ডাক্তার বিনায়ক সেনও।[৬] ২০১৪ সালে শারীরিক অসুস্থতার কারণে মুক্তি পান নারায়ণ সান্যাল। বয়েসজনিত কারণে ও ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে ১৭ এপ্রিল, ২০১৭ সালে কলকাতায় মারা যান এই মাওবাদী নেতা।[১][৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "ভারতের শীর্ষ মাওবাদী নেতা বগুড়ার নারায়ণের মৃত্যু"। ২ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ 
  2. "মারা গেলেন সিপিআই মাওবাদীর বর্ষীয়ান নেতা নারায়ণ সান্যাল"khaboronline.com। ১৮ এপ্রিল ২০১৭। ৪ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ 
  3. "Top Maoist leader Narayan Sanyal passes away"thehindu.com। সংগ্রহের তারিখ ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ 
  4. "Top Maoist ideologue Narayan Sanyal passes away in Kolkata"hindustantimes.com। সংগ্রহের তারিখ ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ 
  5. "মাওবাদী নেতা নারায়ণ সান্যাল( বিজয়দা) প্রয়াত"। সংগ্রহের তারিখ ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  6. "মানবাধিকা্র বিনায়ক সেনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড"shaptahik.com। সংগ্রহের তারিখ ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]