চৌ রাজবংশ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
চৌ রাজবংশ

周朝
আনু. খ্রিস্টপূর্ব ১০৪৬ অব্দ–খ্রিস্টপূর্ব ২৫৬ অব্দ
চীনের পশ্চিম চৌ রাজবংশ (খ্রিস্টপূর্ব ১০৫০ – ৭৭১ অব্দ)
চীনের পশ্চিম চৌ রাজবংশ (খ্রিস্টপূর্ব ১০৫০ – ৭৭১ অব্দ)
অবস্থারাজ্য
রাজধানী
  • ফেংহাও[ক] ( খ্রিস্টপূর্ব ১০৪৬–৭৭১ অব্দ)
  • ওয়াংচেং[খ] ( খ্রিস্টপূর্ব ৭৭১–৫১০ অব্দ; খ্রিস্টপূর্ব ৩১৪–২৫৬ অব্দ)
  • চেংচৌ ( খ্রিস্টপূর্ব ৫১০-৩১৪ অব্দ)
প্রচলিত ভাষাপ্রাচীন চীনা ভাষা
ধর্ম
চীনা লোকজ ধর্ম, পূর্বপুরুষদের উপাসনা, স্বর্গের উপাসনা[১]
সরকারসমাজতান্ত্রিক রাজতন্ত্র
রাজা 
• আনু. খ্রিস্টপূর্ব ১০৪৬ – ১০৪৩ অব্দ
রাজা য়ু
• খ্রিস্টপূর্ব ৭৮১ – ৭৭১ অব্দ
রাজা ইউ
• খ্রিস্টপূর্ব ৭৭০–৭২০ অব্দ
রাজা ফিং
• খ্রিস্টপূর্ব ৩১৪–২৫৬ অব্দ
রাজা নান
চ্যান্সেলর 
ইতিহাস 
• মুয়ের যুদ্ধ
আনু. খ্রিস্টপূর্ব ১০৪৬ অব্দ
• রাজপ্রতিনিধি
খ্রিস্টপূর্ব ৮৪১–৮২৮অব্দ
• ওয়াংচেং-এ রাজধানী পরিবর্তন
খ্রিস্টপূর্ব ৭৭১ অব্দ
• ছিন রাজ্য কর্তৃক রাজা নানের স্থলাভিশক্তি
খ্রিস্টপূর্ব ২৫৬ অব্দ
• শেষ চৌ সম্রাটের পতন
খ্রিস্টপূর্ব ২৪৯ অব্দ
জনসংখ্যা
• খ্রিস্টপূর্ব ২৭৩ অব্দ
৩০,০০০,০০০
• খ্রিস্টপূর্ব ২৩০ অব্দ
৩৮,০০০,০০০
মুদ্রাপ্রাচীন চীনা মুদ্রা
পূর্বসূরী
উত্তরসূরী
শাং সাম্রাজ্য
ছিন সাম্রাজ্য
বর্তমানে যার অংশ China
চৌ রাজবংশ
প্রাচীন ব্রোঞ্জ লিপিতে (উপরে), মোহর লিপিতে (মধ্যে), কাইসু লিপিতে (নিচে) "চৌ"
চীনা অক্ষর
চীনা
চীনের ইতিহাস
চীনের ইতিহাস
প্রাচীন যুগ
নব্যপ্রস্তর যুগ আনু. খ্রিস্টপূর্ব ৮৫০০ - ২০৭০ অব্দ
সিয়া সাম্রাজ্য আনু. খ্রিস্টপূর্ব ২০৭০ - ১৬০০ অব্দ
শাং সাম্রাজ্য আনু. খ্রিস্টপূর্ব ১৬০০ - ১০৪৬ অব্দ
চৌ রাজবংশ আনু. খ্রিস্টপূর্ব ১০৪৬ - ২৫৬ অব্দ
 পশ্চিম চৌ
 পূর্ব চৌ
   শরৎ বসন্ত কাল
   যুদ্ধরত রাজ্য কাল
সামন্ততান্ত্রিক যুগ
কিন সাম্রাজ্য খ্রিস্টপূর্ব ২২১ - ২০৬ অব্দ
হান সাম্রাজ্য খ্রিস্টপূর্ব ২০৬ অব্দ - ২২০ খ্রিস্টাব্দ
  পশ্চিম হান
  সিন সাম্রাজ্য ৯ - ২৩ খ্রিস্টাব্দ
  পূর্ব হান
তিন রাজ্য ২২০ - ২৮০ খ্রিস্টাব্দ
  চাও ওয়েই, শু হানপূর্ব য়ু
চিন সাম্রাজ্য ২৬৫ - ৪২০ খ্রিস্টাব্দ
  পশ্চিম চিন
  পূর্ব চিন ষোল রাজ্য
উত্তর ও দক্ষিণ রাজবংশ
৪২০ - ৫৮৯ খ্রিস্টাব্দ
সুই সাম্রাজ্য ৫৮১ – ৬১৮ খ্রিস্টাব্দ
তাং রাজবংশ ৬১৮ – ৯০৭ খ্রিস্টাব্দ
  (দ্বিতীয় চৌ রাজবংশ ৬৯০–৭০৫ খ্রিস্টাব্দ)
পাঁচ সাম্রাজ্য ও
দশ রাজ্য

৯০৭ – ৯৬০ খ্রিস্টাব্দ
লিয়াও রাজবংশ
৯০৭ – ১১২৫ খ্রিস্টাব্দ
সং রাজবংশ
৯৬০ – ১২৭৯ খ্রিস্টাব্দ
  উত্তর সং পশ্চিম সিয়া
  দক্ষিণ সং চিন
ইউয়ান রাজবংশ ১২৭১ – ১৩৬৮ খ্রিস্টাব্দ
মিং রাজবংশ ১৩৬৮ – ১৬৪৪ খ্রিস্টাব্দ
চিং রাজবংশ ১৬৪৪ – ১৯১১ খ্রিস্টাব্দ
আধুনিক যুগ
গণতান্ত্রিক চীন ১৯১২ – ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দ
গণচীন
১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দ – বর্তমান
গণচীন (তাইওয়ান)
১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দ – বর্তমান

চৌ রাজবংশ (চীনা: 周朝; ফিনিন: Zhōu cháo [tʂóʊ tʂʰɑ̌ʊ]) ছিল শাং সাম্রাজ্য পরবর্তী ও ছিন সাম্রাজ্য পূর্ববর্তী চীনের একটি প্রাচীন সাম্রাজ্য। এই সাম্রাজ্য চীনের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় রাজত্ব করে। এই সাম্রাজ্যের সময়কালকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়। প্রথমটি আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১০৪৬ অব্দ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ৭৭১ অব্দ পর্যন্ত স্থায়ী ছিল এবং তা পশ্চিম চৌ নামে পরিচিত ছিল। এই সময়েই চীনের প্রকৃত রাজনৈতিক ও সামরিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয়টি খ্রিস্টপূর্ব ৭৭০ অব্দ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ২৫৬ অব্দ পর্যন্ত স্থায়ী ছিল এবং তা পূর্ব চৌ নামে পরিচিত ছিল।[২]

চৌ রাজবংশ সময়কালে, বিশেষ করে শেষ দিকে, চীনের সভ্যতার বিকাশ লাভ করে। পূর্ব চৌ রাজবংশ সময়ে কনফুসিয়াস, লাউযি, মেনসিয়াস, মোজি কর্তৃক কনফুসীয় ধর্ম, তাও ধর্মসহ বিভিন্ন মতবাদ প্রসার লাভ করে। এই সময়ে ব্রোঞ্জের তৈরি যুদ্ধ ও কৃষি সরঞ্জাম উৎপাদন শুরু হয়। এছাড়া যুদ্ধরত রাজ্য কালে লেখার আধুনিক রূপ উন্মোচিত হয়।[৩]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

প্রতিষ্ঠা লাভ[সম্পাদনা]

চৌ রাজবংশ প্রতিষ্ঠার পূর্বে শাং সাম্রাজ্য সময়কালে এই সম্প্রদায় বর্তমান শানসি প্রদেশের গুয়ানঝং এলাকায় বসবাস করত। এই সম্প্রদায়ের নেতা ছিলেন জি। সিমা কিয়ান তার ইতিহাসের আলেখ্য বইতে বলেন, গুগং ডানফু বিন থেকে ওয়েই নদীর পাড়ে তার সম্প্রদায় নিয়ে চলে আসেন। তার বড় দুই পুত্র তাইবো ও ঝংইয়ং এই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় এবং ইয়াংজি নদীর নিম্নভুমিতে য়ু রাজ্য গড়ে তুলে। তার ছোট পুত্র জিলি উত্তরাধিকারীসূত্রে এই সম্প্রদায়ের দায়িত্ব লাভ করে এবং শাং সাম্রাজ্যের আশেপাশে তার রাজত্ব বিস্তার করতে থাকে। তার ক্ষমতা বিস্তারে শাং সম্রাট ওয়েন ডিং ভীত হয় এবং সাইকো নামক স্থানে গুপ্ত হামলা চালায়। শাং সম্রাট চৌ জিলির পুত্র ওয়েনকে ইউলি নামক স্থানে বন্দী করে এবং ওয়েনের বড় পুত্র বোয়ি কাওয়ের পরিবর্তে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ওয়েনের দ্বিতীয় পুত্র য়ু মুয়ের যুদ্ধে তার পিতামহ ও বড় ভাইয়ের অপমানের প্রতিশোধ নেয় এবং শাংদের পরাজিত করে চৌ রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করে।

প্রচলিত পৌরাণিক গল্প[সম্পাদনা]

চীনা পুরাণ অনুসারে, চৌ রাজবংশের বংশবিস্তার শুরু হয় সম্রাট কু’র সহচর জিয়াং ইউয়ান শাংডির প্রার্থনা করে অলৌকিকভাবে কি নামক এক সন্তান লাভ করেন। কথিত আছে, কিকে তার মা তিনবার পরিত্যাগ করলেও সে অলৌকিকভাবে বেঁচে যায়। সিয়া সাম্রাজ্য সময়কালে তাকে তাই এলাকার জমিদারিত্ব দেয়া হয় এবং তিনি সেখানে কৃষিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। সিয়া সম্রাট তাকে জি উপাধি প্রদান করেন এবং পরবর্তীতে শাং সম্রাট তাং তাকে মরণোত্তর হৌজি উপাধি দেন।[৪] কি’র পুত্র বুঝু বৃদ্ধ বয়সে তার পিতার পেশা ত্যাগ করেন এবং তার পুত্র জি জু পুরোপুরি এই পেশা ত্যাগ করে জিরং ও বেইডির মত যাযাবর জীবনযাপন শুরু করেন। জি জুর পুত্র গং লিউ তার লোকজন নিয়ে আবার কৃষিকাজ শুরু করেন এবং বিন এলাকায় বসবাস শুরু করেন। পরে রাজা তাই তার সম্প্রদায়কে বিন থেকে ওয়েই নদীর তীরে চৌয়ে নিয়ে আসেন।[৫]

ডিউক তার দুই পুত্র তাইবো ও ঝংইয়ংকে শাং রাজা য়ু য়ি ও ওয়েন ডিংয়ের উপঢৌকন হিসেবে জিরং সম্প্রদায়কে দমনকারী রাজা জিলির নিকট প্রেরন করেন। তাইবো ও ঝংইয়ং ইয়াংজি নদীর বদ্বীপে পালিয়ে যায় এবং সেখানে লোকজনকে নিয়ে য়ু রাজ্য গড়ে তুলে। জিলির পুত্র রাজা ওয়েন তার রাজধানী ফেংহাওয়ে স্থানান্তর করেন। খ্রিস্টপূর্ব ১০৪৬ অব্দে ওয়েনের পুত্র য়ু এবং তার সহচর জিয়াং জিয়া ৪৫,০০০ সেনা এবং ৩০০ রথ নিয়ে হুয়াংহো নদী দিকে অগ্রসর হন এবং মুয়ের যুদ্ধ-এ শাং সম্রাট চৌকে পরাজিত করে চৌ সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে।[গ] চৌরা শাং রাজ পরিবারের একজনকে সং রাজ্যের ডিউক হিসেবে জায়গীর দান করে। এই নিয়মকে বলা হয় 二王三恪

পশ্চিম চৌ[সম্পাদনা]

পশ্চিম চৌ সাম্রাজ্যের অঙ্গরাজ্য

রাজা য়ু পুরনো রাজধানীতে আনুষ্ঠানিকতা পালন করলেও তার রাজপ্রাসাদ ও শাসনকার্য পরিচালনার জন্য হাওজিং-এর কাছে রাজধানী স্থাপন করেন। য়ু'র অল্পবয়সে মৃত্যু ও কোন যোগ্য উত্তরসূরী না থাকায় ডিউক তার উত্তরসূরী রাজা চেংকে রাজকীয় ক্ষমতাবলে তার কাজে সহায়তা করত। ডিউকদের ক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে থাকলে পূর্বে অবস্থিত অন্যান্য চৌ রাজপুত্ররা সঙ্কিত হয়ে পড়ে ও তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। তারা স্বাধীনচেতা অভিজাত ও কিছু ডংয়ি সম্প্রদায়কে একত্রিত করে। ডিউক বিদ্রোহ দমন করে পূর্বে সাম্রাজ্য বিস্তার করে। বিস্তৃত চৌ রাজবংশ তদারকি ও আর কোনো বিদ্রোহ দমনের জন্য ডিউক ফেংজিয়ান পদ্ধতি চালু করেন। এছাড়া তিনি শাং সাম্রাজ্য সময়কালের স্বর্গীয় আদেশ মতবাদ অনুসারে আইনের বৈধতা ব্যাখা করেন।

বিকেন্দ্রীকরণের ফলে সময়ের সাথে সাথে চৌ রাজাদের সাথে অন্যান্য স্থানীয় রাজাদের পারিবারিক সম্পর্ক স্থাপিত হতে থাকে। আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা চৌদের সাথে পারিবারিক সম্পর্কের ফলে স্থানীয় ক্ষমতা ও সম্মান লাভ করতে থাকে। যখন রাজা ইউ সুন্দরী বাও সির জন্য তার রানী জিয়াংকে নির্বাসিত করে, রানীর পিতা মারকুইস জেং ও যাযাবর কুয়ানরংদের সাথে নিয়ে খ্রিস্টপূর্ব ৭৭১ অব্দে হাওজিংদের ক্ষমতাচ্যুত করে। রাজা ইউয়ের মৃত্যুর পর অভিজাতরা শেন প্রদেশে একত্রিত হয় এবং মারকুইসের পৌত্র ও জিয়াংয়ের পুত্র পিংকে রাজা হিসেবে ঘোষণা দেয় এবং রাজধানী পূর্বদিকে চেংচৌয়ে স্থানান্তর করা হয়। যার ফলে পশ্চিম চৌ সাম্রাজ্য সময়কাল শেষ হয়।[৬]

পূর্ব চৌ[সম্পাদনা]

পূর্ব চৌ রাজ কর্তৃপক্ষের রাজকাজে অবহেলা সত্ত্বেও রাজার নিয়মকানুন মেনে চলার কারণে আরও পাঁচ শতাব্দী রাজত্ব করে। এই সময়ে শরৎ বসন্ত যুগ শুরু হয়। এছাড়া খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর মাঝামাঝিতে চিন রাজ্য বিভক্তির ফলে যুদ্ধরত রাজ্য কাল শুরু হয়। খ্রিস্টপূর্ব ৪০৩ অব্দে চৌ রাজদরবার বুঝতে পারে যে হান রাজ্য, চৌ রাজ্যওয়েই রাজ্য পুরোপুরি স্বাধীন হয়ে গেছে, খ্রিস্টপূর্ব ৩৪৪ অব্দে ওয়েই রাজ্যের রাজা হুই নিজেকে রাজা হিসেবে দাবী করে। এছাড়া আরও কিছু রাজ্য প্রসিদ্ধি লাভ করে। খ্রিস্টপূর্ব ২৫৬ অব্দে ছিন রাজ্য যখন চৌ রাজধানী চেংচৌ দখল করে তখন শেষ চৌ রাজা নানকে হত্যা করা হয়। ওয়েনকে পূর্ব চৌয়ের ডিউক ঘোষণা করা হয় এবং খ্রিস্টপূর্ব ২৪৯ অব্দের মধ্যে ছোট ছোট রাজ্যগুলোকে বাদ দেওয়া হয়। খ্রিস্টপূর্ব ২২১ অব্দে ছিন শি হুয়াং চীনকে কি রাজ্যে একত্রিত করেন।[৭]

পূর্ব চৌ সময়কে চীনের দর্শনের স্বর্ণযুগ বলা হয়। এই সময়ে বিদ্রোহী সামন্তপতিরা পর্যটক ও পন্ডিতদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করেন, যেমন কি রাজ্যের জিসিয়া একাডেমি। ফলে চিন্তার শত শাখা বিস্তার লাভ করে। চিন্তার নয় শাখা, মেনসিয়াসের কনফুসীয় মতবাদ, আইনের শাসন, মহিবাদ, তাও ধর্ম, কৃষি কলা, কূটনীতি, সুন সুর সামরিক নীতি ও প্রকৃতিবাদ অন্যান্য শাখার উপর প্রভাব বিস্তার করে।[৮]

সামাজিক ব্যবস্থা[সম্পাদনা]

সিল্ক পেইন্টিংয়ে ড্রাগনে চড়া মানুষ, খ্রিস্টপূর্ব ৫ম-৩য় শতাব্দী, চাংশার জিডাংকু টোম্ব, হুনান প্রদেশ
হানফু পরিহিত রথচালক, চু রাজ্য (খ্রিস্টপূর্ব ৭০৪ – ২২৩ অব্দ)

স্বর্গীয় আদেশ[সম্পাদনা]

পশ্চিম চৌ সময়ের ব্রোঞ্জের তৈরি পাত্র, আনু. খ্রিস্টপূর্ব ১০০০ অব্দ
যুদ্ধরত রাজ্য যুগের ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরি রথচালক, খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ বা ৩য় শতাব্দী
মাসানে আবিস্কৃত পূর্ব চৌ সময়কালের কবর, হুবেই প্রদেশ, খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দী
পূর্ব চৌ সময়কালের তলোয়ার, হুনান প্রদেশ
বানশানে আবিস্কৃত পেয়ালা, হাংচৌ, হাংচৌ জাদুঘর
মারকুইসের কবর, হুবেই প্রদেশ, খ্রিস্টপূর্ব ৪৩৩ অব্দ
বাঘরুপী ব্রোঞ্জের তৈরি সরঞ্জাম, বাওজি, শানসি প্রদেশ, আনু. খ্রিস্টপূর্ব ৯০০ অব্দ

চৌরা শাংদের পরাজিত করে এবং শাংডিতিয়ান বা স্বর্গের উপাসনা ছাড়াও শাংদের পূর্বপুরুষের উপাসনা পদ্ধতি সার্বজনীন উপাসনা হিসেবে গ্রহণ করে। তারা চীনের শাসকদের স্বর্গীয় পুত্র বলে দাবী করে এবং তাদের শাসনব্যবস্থাকে স্বর্গীয় আদেশের সাথে তুলনা করে। কারো সিংহাসনচ্যুতি বা কারো বিরুদ্ধে সফল বিদ্রোহ প্রমাণ করে যে সে স্বর্গীয় আদেশ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এতে বর্ণিত আছে যে, চৌরা নৈতিকভাবে শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করায় তারা শাং এলাকায় কর্তৃত্ব স্থাপন করেছে এবং নৈতিকতা বিবর্জিত ও দুর্নীতিগ্রস্ত হওয়ায় শাংদের সরিয়ে তার ক্ষমতা দখল করেছে। এই মতবাদে আরও বর্ণিত আছে যে, একই কারণে সিয়া সাম্রাজ্য ও শাং সাম্রাজ্য বিলুপ্ত হয়েছে এবং চৌরা তাদের অয়াইনের প্রতি শ্রদ্ধার কারণে সেই সময় ও পরবর্তী সময়ের শাসক হয়েছে।[৯]

সমাজতন্ত্র[সম্পাদনা]

পশ্চিম চৌ সময়কালের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহৃত রান্নার পাত্র

পশ্চিমা লেখকেরা চৌ রাজবংশকে সমাজতান্ত্রিক বলে অভিহিত করে কারণ চৌদের ফেংজিয়ান পদ্ধতি (封建) ইউরোপের মধ্যযুগের শাসনব্যবস্থার সাথে তুলনীয়। এই বিকেন্দ্রীকরণ পদ্ধতির কিছু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। যখন চৌ সাম্রাহ্য প্রতিষ্ঠিত হয়, বিজিত এলাকাসমূহ উপরাজ্যে বিভক্ত করা হয়। শুধুমাত্র পিতার দিক থেকেই ও জ্যেষ্ঠত্বের ভিত্তিতে উত্তরাধিকারী নির্বাচিত হত।[১০] এই পদ্ধতি অনুসারে পিতার মৃত্যুর পর তার বড় পুত্র তার ক্ষমতার উত্তরাধিকারী হত। ছোট পুত্রদের অন্য এলাকায় স্বল্প ক্ষমতা দিয়ে পাঠানো হত এবং তাদের পঞ্চম প্রজন্ম পর্যন্ত এই বংশের ধারক হত।[১১] এই পদ্ধতি পরবর্তী সময়ে কোরিয়ান পরিবারে নব্য কনফুসীয় মতবাদের প্রভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ঝু সি একে চীনের পুনঃপ্রতিষ্ঠা বলে অভিহিত করেন।[১২]

ফেংজিয়ান পদ্ধতি ও আমলাতন্ত্র[সম্পাদনা]

রাজকীয় পদের পরেই আরেকটি পদ ডিউক নামে একটি পদ ছিল। এক সময় ডিউকরা ক্ষমতাধর হতে থাকে এবং রাজ্যগুলোকে কেন্দ্রীভূত করতে থাকে। বিকেন্দ্রীকরনের ফলে রাজ্যগুলোর মধ্যে ছোট ছোট যুদ্ধ দেখা দেওয়ায় কেন্দ্রীকরন জরুরি হয়ে পরে। ডিউক ক্ষমতা লাভ করলে রাজ্যগুলো নিয়োগকৃত আমলাদের দ্বারা আমলাতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত হয়। এই ধরনের কিছু মিল থাকা সত্ত্বেও মধ্য ইউরোপীয় যুগের সাথে কিছু পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। একটি লক্ষণীয় পার্থক্য ছিল, চৌরা দুর্গের পরিবর্তে প্রাচীর বিশিষ্ট নগরীতে থেকে শাসন করত। অন্য আরেকটি পার্থক্য ছিল, তাদের কোন যাজক ছিল না বরং ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করত শাং সম্প্রদায়ের মোড়ল শ্রেণীর একজন, যাকে শি নামে ডাকা হত। যখন ডিউকদের কেন্দ্রীভূত করা হয় তখন তাদের বিভিন্ন রাজকাজে আমলা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তাদেরকে পশ্চিমা নাইট উপাধিধারীদের সমতুল্য মনে করা হয়। তারা বিভিন্ন পদে যোগদান করে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে যাতাযাত করতে পারত। যারা কোনো চাকরি পেত না তারা যুবকদলকে শিক্ষাদানে লিপ্ত হত। তাদের মধ্যে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ ছিলেন কনফুসিয়াস। তিনি তাদের নৈতিকতার শিক্ষা দিতেন। অপরদিকে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ফলে কনফুসীয় সদগুণাবলীর পরিবর্তে কঠোর আইন ও শাস্তির বিধান কার্যকর হয়। ছিন সাম্রাজ্য পতনের পর এবং হান সাম্রাজ্য উত্থান হলে, চীনারা আবার কনফুসীয় মতবাদ মানবিক গুণাবলীর দিকে ফিরে যায়।

কৃষি[সম্পাদনা]
Zhou vase with glass inlays, খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ-তৃতীয় শতাব্দী, ব্রিটিশ মিউজিয়াম

চৌ রাজবংশ সময়কালে কৃষি সরকার কর্তৃক পরিচালিত হত। অভিজাতরা সকল কৃষিজমির মালিকানা গ্রহণ করে কৃষকদের জায়গীর প্রদান করত। যেমন, এই পদ্ধতি অনুসারে এক খণ্ড জমিকে নয় ভাগে ভাগ করে মাঝের অংশের ফসল সরকার গ্রহণ করত এবং বাকি অংশের ফসল কৃষকরা পেত। এইভাবে সরকার অতিরিক্ত খাদ্য মজুদ করত এবং খরার সময়ে বিতরন করত। দাস প্রথার প্রচলনের পর অভিজাতদের নির্দেশে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উৎপাদন খাত বিস্তার লাভ করে, যেমন ব্রোঞ্জ গলানো, যা দিয়ে যুদ্ধের ও কৃষিকাজের হাতিয়ার তৈরি হত। এছাড়া বয়ন ও স্থাপত্যেও প্রসিদ্ধি লাভ করে। পশ্চিম চৌ সময়ের শেষের দিকে মানুষ ধাতুবিদ্যায় পারদর্শী হয়ে উঠতে শুরু করে।[১৩]

চীনের প্রথম হাইড্রোলিক প্রকৌশল প্রকল্প চৌ সাম্রাজ্য সময়কালে শুরু হয়, যা মূলত কৃষিকাজে জলসেচের সুবিধার জন্য। রাজা ঝুয়াংয়ের সময়ে ওয়েই রাজ্যের চ্যান্সেলর সুনশু আও বর্তমান উত্তর আনহুই প্রদেশে নদী খনন করে পানি মজুদ করে। এই কারণে সুনশুকে চীনের প্রথম হাইড্রোলিক প্রকৌশলী হিসেবে অভিহিত করা হয়। পরবর্তী সময়ে সিমেন বাও বৃহদাকারে জলসেচের ব্যবস্থা করেন।

সামরিক বাহিনী[সম্পাদনা]

পশ্চিম চৌদের শক্তিশালী সামরিক বাহিনী ছিল। তারা দুটি প্রধান ভাগে বিভক্ত ছিল। একটি ছিল পশ্চিমের ছয় সেনাবাহিনী ও অপরটি চেংচৌয়ের আট সেনাবাহিনী। তারা উত্তরে লয়েস প্লুটো, বর্তমান নিংসিয়া, ও হুয়াংহো নদীর প্লাবনভূমিতে অবস্থান করত। প্রথমদিকের চৌ রাজারা দক্ষ সেনাপ্রধান ছিল। তারা প্রায়ই তাদের বিভিন্ন জায়গীর থেকে যাযাবরদের দমন করার জন্য যুদ্ধ করত। চৌরা সবচেয়ে বেশি সামরিক ক্ষমতাধর ছিল রাজা চৌয়ের শাসনামলের ১৯তম বছরে। রাজা চৌ ইয়াংজি নদীর তীরবর্তী এলাকায় প্রায়ই যুদ্ধ করে যাযাবরদের দমন করার জন্য সুপরিচিত ছিল। পরবর্তী রাজাদের সামরিকনীতি তুলনামূলকভাবে অকার্যকর ছিল। রাজা লি দক্ষিণে যাযাবরদের দমন করার জন্য ১৪ সেনাবাহিনী পাঠালে তা পরাজিত হয়। রাজা সুয়ানের কুয়ানরংদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ব্যর্থ হয়। কুয়ানরংরা রাজা ইউকে হত্যা করে। শাং সাম্রাজ্য সময়কালে মধ্য এশিয়ায় প্রথম রথ ব্যবহৃত হলেও চৌ সাম্রাজ্য সময়ের যুদ্ধে এর সবচেয়ে বেশি ব্যবহার দেখা যায়।[১৪]

সংস্কৃতি[সম্পাদনা]

চৌরা শাংদের মত একই ভাষা ব্যবহার করত। তাদের শব্দভান্ডার ও পদবিন্যাস একই ছিল।[ঘ][১৫] ডেভিড ম্যাকক্রর গবেষণাও একই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে।[১৬] চৌরা শাংদের সংস্কৃতি গ্রহণ করেছে,[১৭] যা তাদের শাংদের সংস্কৃতির উত্তরসূরীতে পরিণত করেছে।[১৮] একই সময়ে তারা শাং সাম্রাজ্যের পশ্চিমের জিরংদের সাথে যোগসূত্র বজায় রেখে চলছিল। শাংরা তাদের উপসম্প্রদায় হিসেবে ধরে নিয়েছিল।[১৯]

চৌদের পূর্বপুরুষেরা শানসি প্রদেশের উচ্চভূমিতে বসবাস করত এবং তারা গুয়াংশে সংস্কৃতি ধারণ করত। রাজা লিউ তার লোকজনকে নিয়ে ফেন উপত্যকার নিম্নভূমি ও হুয়াংহো নদীর পশ্চিম তীরে চলে আসে। সেখানে তারা পুনরায় কৃষিকাজ শুরু করে। তার পুত্র কিং জিয়ে তার লোকজনকে নিয়ে জিং নদীর উচ্চ উপত্যকায় চলে যায়। ডাং ফু যাযাবর রংডিদের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য তাদের ওয়েই উপত্যকায় নিয়ে আসার পূর্ব পর্যন্ত তারা সেখানে বসবাস করতে থাকে। এই সময়ে চৌরা কিয়াং সম্প্রদায়ের সাথে মিশ্রিত হয়ে যায়। ফলে তারা উত্তরাধিকার সূত্রে সিওয়া ও আনগুও সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি গ্রহণ করে এবং কিয়াংদের সাথে রাজনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। এই পর্যায়ে শাংদের ব্রোঞ্জ সংস্কৃতি চৌদের প্রভাবিত করে। কি এলাকায় এই প্রভাব বেশি লক্ষণীয় হয়। চৌদের পূর্বপুরুষ, স্থানীয় শানসি লংশান, কিয়াং সম্প্রদায় ও উত্তরের কিছু সম্প্রদায়ের সাথে যোগসূত্র স্থাপন করে তাদের সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আসে।[২০]

দর্শন[সম্পাদনা]

চীনা দর্শন খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে উৎপত্তি হলেও চৌ সাম্রাজ্য সময়কালে বিস্তার লাভ শুরু করে। কনফুসীয় ধর্ম প্রবর্তক কনফুসিয়াসতাও ধর্ম প্রবর্তক লাউযি ছিলেন চীনের শ্রেষ্ঠ দার্শনিক। তাদের দর্শন ও চিন্তাচেতনা পরবর্তী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত ও প্রভাবিত করে। অন্যান্য দার্শনিক ও গবেষকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন মোজি, মহি ধর্মের প্রবর্তক; মেনসিয়াস, কনফুসীয় গবেষক ও বিশ্লেষক; শাং ইয়াং ও হান ফেই, প্রাচীন চীনের আইনসর্বস্বতা প্রণয়নকারী; সুন জি, তার সময়ে প্রাচীন চীনের বুদ্ধিজীবীদের প্রধান।[২১]

লি[সম্পাদনা]

লি দর্শনের সূত্রপাত হয় পশ্চিম চৌ সাম্রাজ্য সময়কালে। কনফুসীয় ধর্মমতে সামাজিক কর্মকাণ্ড, যেমন সামাজিক ভেদাভেদ, নৈতিকতা, ও বস্তুনিষ্ঠ জীবনের সাথে সম্পর্কিত নিয়মাবলী এই দর্শনের আলোচ্য বিষয়। বুক অব রায়টস, চৌলি, ও য়িলি গ্রন্থে লি সম্পর্কে বিশদ বর্ণনা রয়েছে। এই পদ্ধতি প্রথমদিকে পুরোপুরি মানা হলেও পরে পশ্চিম চৌ সাম্রাজ্য সময়কালে এতে নৈতিক মূল্যবোধ ও নিয়মনিষ্ঠার ভাগ দেখা যায়।

রাজা[সম্পাদনা]

চৌ রাজবংশের শাসকেরা শাং শাসকদের মত ওয়াং নামে পরিচিত ছিল। ওয়াং মানে হল রাজা। রাজা য়ু পূর্বসূরী শাং সামন্তপতী গুগং ডানফু, জিলি, ও ওয়েনকে ও চৌ রাজা বলে অভিহিত করা হয়।

বি.দ্র. চীনের ইতিহাসে খ্রিস্টপূর্ব ৮৪১ অব্দে গংহে রাজপ্রতিনিধি সময়কালের পূর্বের সময়ে তারতম্য দেখা যায়। সিয়া-শাং-চৌ কালানুক্রম প্রকল্প এবং এডওয়ার্ড এল. শাউঘনেসির পশ্চিম চৌ রাজবংশের চূড়ান্ত কালানুক্রম অনুসারে চৌ সাম্রাজ্যের ব্যাপ্তি নিচে দেওয়া হল

জন্মনাম মরণোত্তর নাম রাজত্বকাল
ফা 周武王 রাজা য়ু আনু. খ্রিস্টপূর্ব ১০৪৬ – ১০৪৩ অব্দ
আনু. খ্রিস্টপূর্ব ১০৪৫ – ১০৪৩ অব্দ
সং 周成王 রাজা চেং আনু. খ্রিস্টপূর্ব ১০৪২ – ১০২১ অব্দ
আনু. খ্রিস্টপূর্ব ১০৪২/১০৩৫ – ১০০৬ অব্দ
চৌ 周康王 রাজা কাং আনু. খ্রিস্টপূর্ব ১০২০ – ৯৯৬ অব্দ
আনু. খ্রিস্টপূর্ব ১০০৫/১০০৩ – ৯৮৭ অব্দ
সিয়া 周昭王 রাজা চৌ আনু. খ্রিস্টপূর্ব ৯৯৫ - ৯৭৭ অব্দ
আনু. খ্রিস্টপূর্ব ৯৭৭/৯৭৫ – ৯৫৭ অব্দ
滿 মান 周穆王 রাজা মু আনু. খ্রিস্টপূর্ব ৯৭৬ – ৯২২ অব্দ
আনু. খ্রিস্টপূর্ব ৯৫৬ – ৯১৮ অব্দ
繄扈 য়িহু 周共王/周龔王 রাজা গং আনু. খ্রিস্টপূর্ব ৯২২ - ৯০০ অব্দ
আনু. খ্রিস্টপূর্ব ৯১৭/৯১৫ – ৯০০ অব্দ
জিয়ান 周懿王 রাজা য়ি আনু. খ্রিস্টপূর্ব ৮৯৯ - ৮৯২ অব্দ
আনু. খ্রিস্টপূর্ব ৮৯৯/৮৯৭ - ৮৭৩ অব্দ
辟方 পিফাং 周孝王 রাজা সিয়াও আনু. খ্রিস্টপূর্ব ৮৯১ - ৮৮৬ অব্দ
আনু. খ্রিস্টপূর্ব ৮৭২ - ৮৬৬ অব্দ
সাই 周夷王 রাজা য়ি আনু. খ্রিস্টপূর্ব ৮৮৫ – ৮৭৮ অব্দ
আনু. খ্রিস্টপূর্ব ৮৬৫ – ৮৫৮ অব্দ
হু 周厲王/周剌王 রাজা লি খ্রিস্টপূর্ব ৮৭৭ – ৮৪১ অব্দ
খ্রিস্টপূর্ব ৮৫৭/৫৩ – ৮৪২/৮২৮ অব্দ
共和 গংহে রাজপ্রতিনিধি খ্রিস্টপূর্ব ৮৪১ – ৮২৮ অব্দ
জিং 周宣王 রাজা জুয়ান খ্রিস্টপূর্ব ৮২৭ – ৭৮২ অব্দ
宮湦 গংশেং 周幽王 রাজা ইউ খ্রিস্টপূর্ব ৭৮১ – ৭৭১ অব্দ
পূর্ব চৌ রাজবংশ
宜臼 য়িজিও 周平王 রাজা পিং খ্রিস্টপূর্ব ৭৭০ – ৭২০ অব্দ
লিন 周桓王 রাজা হুয়ান খ্রিস্টপূর্ব ৭১৯ – ৬৯৭ অব্দ
তুও 周莊王 রাজা ঝুয়াং খ্রিস্টপূর্ব ৬৯৬ – ৬৮২ অব্দ
胡齊 হুকি 周僖王 রাজা সি খ্রিস্টপূর্ব ৬৮১ – ৬৭৭ অব্দ
লাং 周惠王 রাজা হুই খ্রিস্টপূর্ব ৬৭৬ – ৬৫২ অব্দ
ঝেং 周襄王 রাজা জিয়াং খ্রিস্টপূর্ব ৬৫১ – ৬১৯ অব্দ
壬臣 রেনচেন 周頃王 রাজা কিং খ্রিস্টপূর্ব ৬১৮ – ৬১৩ অব্দ
বান 周匡王 রাজা কুয়াং খ্রিস্টপূর্ব ৬১২ – ৬০৭ অব্দ
ইয়ু 周定王 রাজা ডিং খ্রিস্টপূর্ব ৬০৬ – ৫৮৬ অব্দ
য়ি 周簡王 রাজা জিয়ান খ্রিস্টপূর্ব ৫৮৫ – ৫৭২ অব্দ
泄心 সিয়েসিন 周靈王 রাজা লিং খ্রিস্টপূর্ব ৫৭১ – ৫৪৫ অব্দ
গুই 周景王 রাজা জিং খ্রিস্টপূর্ব ৫৪৪ - ৫২১ অব্দ
মেং 周悼王 রাজা ডাও খ্রিস্টপূর্ব ৫২০ অব্দ
গাই 周敬王 রাজা জিং খ্রিস্টপূর্ব ৫১৯ - ৪৭৬ অব্দ
রেন 周元王 রাজা ইউয়ান খ্রিস্টপূর্ব ৪৭৫ - ৪৬৯ অব্দ
জিয়ে 周貞定王 রাজা ঝেনডিং খ্রিস্টপূর্ব ৪৬৮ - ৪৪২ অব্দ
去疾 কুজি 周哀王 রাজা আই খ্রিস্টপূর্ব ৪৪১ অব্দ
শু 周思王 রাজা সি খ্রিস্টপূর্ব ৪৪১ অব্দ
ওয়েই 周考王 রাজা কাও খ্রিস্টপূর্ব ৪৪০ - ৪২৬ অব্দ
য়ু 周威烈王 রাজা ওয়েইলিয়ে খ্রিস্টপূর্ব ৪২৫ - ৪০২ অব্দ
জিয়াও 周安王 রাজা আন খ্রিস্টপূর্ব ৪০১ - ৩৭৬ অব্দ
সি 周烈王 রাজা লিয়ে খ্রিস্টপূর্ব ৩৭৫ - ৩৬৯ অব্দ
বিয়ান 周顯王 রাজা সিয়ান খ্রিস্টপূর্ব ৩৬৮ - ৩২১ অব্দ
ডিং 周慎靚王 রাজা শেনজিং খ্রিস্টপূর্ব ৩২০ - ৩১৫ অব্দ
ইয়ান 周赧王 রাজা নান খ্রিস্টপূর্ব ৩১৪ - ২৫৬ অব্দ

বংশধর[সম্পাদনা]

হান সম্রাটেরা উত্তরাধিকারসূত্রে চৌ রাজাদের উপাধি লাভ করে। এই নিয়মকে বলা হয় 二王三恪। নিউ বুক অব তাং অনুসারে সুই সম্রাটেরা পিতার দিক থেকে জিনের ডিউক য়ুর পুত্র চৌ রাজা জি বোকিয়াওের বংশধর। জি বোকিয়াওয়ের পরিবার শিপ তাং পরিবার হিসেবে পরিচিত ছিল।[২২] হংনংয়ের ইয়াং সুই সম্রাটদের পূর্বসূরী ছিলেন[২৩][২৪][২৫] এবং লংসি লি ছিলেন তাং সম্রাটদের পূর্বসূরী।[২৬] চৌজুনে লি এবং ফানইয়াংয়ের লু শাংডং থেকে উৎপত্তি লাভ করে এবং তাদের লিউ সম্প্রদায়ের সাথে যোগসূত্র ছিল। লিউ সম্প্রদায়ের হংনংয়ের ইয়াং ও গুয়ানলংয়ের অন্যান্য সম্প্রদায়ের সাথে যোগসূত্র ছিল।[২৭] জিনের ডিউক য়ু হংনংয়ের ইয়াংয়ের পূর্বসূরী ছিল। তাং সাম্রাজ্যের হংনংয়ের ইয়াং, হেডংয়ের জিয়া, ও তাইইউয়ানের ওয়াং সং সাম্রাজ্যের সম্রাটদের পূর্বসূরী ছিল।[২৮]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

পাদটীকা[সম্পাদনা]

  1. Fenghao is the modern name for the twin city formed by the Western Zhou capitals of Haojing and Fēngjīng.
  2. The exact location of Wangcheng and its relation to Chengzhou is disputed. According to Xu Zhaofeng, "Chengzhou" and "Wangcheng" were originally synonymous and used to name the same capital city from 771 to 510 BC. "The creation of a distinction between Wangcheng and Chengzhou probably occurred during the reign of King Jing", under whom a new capital "Chengzhou" was built to the east of the old city "Wangcheng". Nevertheless, the new Chengzhou was still sometimes called Wangcheng and vice versa, adding to the confusion.
  3. Sima Qian was only able to establish historical dates after the time of the Gonghe Regency. Earlier dates, like that of 1046 BC for the Battle of Muye, are given in this article according to the official PRC Xia–Shang–Zhou Chronology Project, but they remain contentious. Various historians have offered dates for the battle ranging between 1122 and 1027 BC.
  4. Bodman (1980), p. 41: "Moreover, Shang dynasty Chinese at least in its syntax and lexicon seems not to differ basically from that of the Zhou dynasty whose language is amply attested in inscriptions on bronze vessels and which was transmitted in the early classical literature."

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Encyclopædia Britannica: Tian"Encyclopædia Britannica। সংগ্রহের তারিখ ১১ নভেম্বর ২০১৬ 
  2. "Encyclopædia Britannica: Zhou Dynasty"Encyclopædia Britannica। ১৩ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ নভেম্বর ২০১৬ 
  3. "Zhou Dynasty"Ancient History Encyclopedia। সংগ্রহের তারিখ ১১ নভেম্বর ২০১৬ 
  4. Shijing, Ode 245.
  5. সিমা কিয়ান. রেকর্ডস অব দ্য গ্র্যান্ড হিস্ট্রোরিয়ানস, Annals of Zhou, §3.
  6. "The Steppe: Scythian successes"। Encyclopædia Britannica Online। 
  7. "The Zhou Dynasty (1045–221 BC)"চীনাহাইলাইটস। ২৩ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ নভেম্বর ২০১৬ 
  8. .Carr, Brian & al. Companion Encyclopaedia of Asian Philosophy, p. 466. Taylor & Francis, 2012. আইএসবিএন ০৪১৫০৩৫৩৫X, 9780415035354.
  9. পোলার্ড, এলিজাবেথ (২০১৫)। Worlds Together Worlds Apart। নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র: W.W. Norton& Company Inc। পৃষ্ঠা ১৪৬। আইএসবিএন 978-0-393-12376-0 
  10. Brashier, K. E. (২০১১-০১-০১)। Ancestral Memory in Early Chinaআইএসবিএন 9780674056077 
  11. ব্রাশিয়ার, কে.ই.। Ancestral Memory in Early China 
  12. মার্টিনা, ডচলার। The Confucian Transformation of Korea: A Study of Society and Ideology 
  13. "Western Zhou Dynasty"ট্রাভেল চীনা গাইড। সংগ্রহের তারিখ ১১ নভেম্বর ২০১৬ 
  14. Krech ও Steinicke 2011, পৃ. 100
  15. বডম্যান, নিকোলাস সি. (১৯৮০), "Proto-Chinese and Sino-Tibetan: data towards establishing the nature of the relationship", ভ্যান কোয়েসেম, ফ্রান্স; ওয়াহ, লিন্ডা আর., Contributions to historical linguistics: issues and materials, Leiden: E. J. Brill, পৃষ্ঠা ৩৪–১৯৯, আইএসবিএন 978-90-04-06130-9 
  16. ম্যাকক্র, ডেভিড (২০১০)। "An ABC Exercise in Old Sinitic Lexical Statistics" (পিডিএফ)Sino-Platonic Papers (২০২)। 
  17. Jessica Rawson, 'Western Zhou Archaeology,' in Michael Loewe, Edward L. Shaughnessy (eds.), The Cambridge History of Ancient China: From the Origins of Civilization to 221 B.C., Cambridge University Press 1999 pp.352-448 p.387.
  18. লি, ফেং (২০০৬), Landscape And Power In Early China, Cambridge University Press, p. 286.
  19. চিয়াং, পো-য়ি (১ জানুয়ারি ২০০৮)। "Han Cultural and Political Influences in the Transformation of the Shizhaishan Cultural Complex"। Australian National University: ১–২। 
  20. মাইসেল, চার্লস কেইথ (১৯৯৯)। Early Civilizations of the Old World: The Formative Histories of Egypt, the Levant, Mesopotamia, India and China। Psychology Press। পৃষ্ঠা ৩২৫। আইএসবিএন 978-0-4151-0975-8 
  21. Schirokauer & Brown (2006), pp. 25–47.
  22. নিউ বুক অব তাং, zh:s:新唐書
  23. Howard L. Goodman (২০১০)। Xun Xu and the Politics of Precision in Third-Century Ad China। BRILL। পৃষ্ঠা 81–। আইএসবিএন 90-04-18337-X 
  24. Bulletin। The Museum। ১৯৯২। পৃষ্ঠা 154। 
  25. Asia Major। Institute of History and Philology of the Academia Sinica। ১৯৯৫। পৃষ্ঠা 57। 
  26. R. W. L. Guisso (ডিসেম্বর ১৯৭৮)। Wu Tse-T'len and the politics of legitimation in T'ang China। Western Washington। পৃষ্ঠা 242। আইএসবিএন 978-0-914584-90-2 
  27. Jo-Shui Chen (২ নভেম্বর ২০০৬)। Liu Tsung-yüan and Intellectual Change in T'ang China, 773-819। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 43–। আইএসবিএন 978-0-521-03010-6 
  28. পিটার বোল (১ আগস্ট ১৯৯৪)। "This Culture of Ours": Intellectual Transitions in T?ang and Sung China। Stanford University Press। পৃষ্ঠা ৬৬। আইএসবিএন 978-0-8047-6575-6 
Works cited

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

  • Fong, Wen, সম্পাদক (১৯৮০), The great bronze age of China: an exhibition from the People's Republic of China, New York: The Metropolitan Museum of Art, আইএসবিএন 978-0-87099-226-1. 
  • Lee, Yuan-Yuan; Shen, Sinyan (১৯৯৯), Chinese Musical Instruments, Chinese Music Monograph Series, Chinese Music Society of North America Press, আইএসবিএন 978-1-880464-03-8. 
  • Li, Feng (২০০৬), Landscape and Power in Early China: The Crisis and Fall of the Western Zhou 1045–771 BC, Cambridge University Press, আইএসবিএন 978-0-521-85272-2. 
  • Shen, Sinyan (১৯৮৭), "Acoustics of Ancient Chinese Bells", Scientific American, 256 (4): 94, ডিওআই:10.1038/scientificamerican0487-104. 
  • Sun, Yan (২০০৬), "Cultural and Political Control in North China: Style and Use of the Bronzes of Yan at Liulihe during the Early Western Zhou", Mair, Victor H., Contact and Exchange in the Ancient World, Honolulu: University of Hawai'i Press, পৃষ্ঠা 215–237, আইএসবিএন 978-0-8248-2884-4. 
  • Wagner, Donald B. (১৯৯৯), "The Earliest Use of Iron in China", Young, S. M. M.; Pollard, A. M.; Budd, P.; ও অন্যান্য, Metals in Antiquity, Oxford: Archaeopress, পৃষ্ঠা 1–9, আইএসবিএন 978-1-84171-008-2. 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

  • Chinese Text Project, Rulers of the Zhou period – with links to their occurrences in pre-Qin and Han texts.
পূর্বসূরী
শাং সাম্রাজ্য
চীনের সাম্রাজ্য
আনু. খ্রিস্টপূর্ব ১০৪৬–২৫৬ অব্দ
উত্তরসূরী
ছিন সাম্রাজ্য

টেমপ্লেট:চৌ সাম্রাজ্য