রাসিমণি হাজং

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রাসিমণি হাজং
জন্ম১৯০১
মৃত্যু৩১ জানুয়ারি ১৯৪৬
জাতীয়তাব্রিটিশ বাঙ্গালী
পেশারাজনীতিবিদ
পরিচিতির কারণব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে অবদান
আন্দোলনটঙ্ক আন্দোলন,ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন
হাজং মাতা রশিমনি স্মৃতিসৌধ

রাসিমণি হাজং বা রশিমনি হাজং (অন্য বানানে: রাসমণি) (১৯০১ - জানুয়ারি ৩১, ১৯৪৬) ১৯৪৬ সালে সংঘটিত ময়মনসিংহের টঙ্ক আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী।[১][২] তিনি এ আন্দোলনের প্রথম শহীদ।[৩] টঙ্ক আন্দোলনের নেতা মণি সিংহের সাথেসাথে রাসিমনি হাজংয়ের অবদানের কথা স্মরণ করা হয়। নেত্রকোণা জেলায় রাসিমনি হাজং স্মরণে নির্মিত একটি স্মৃতিসৌধ রয়েছে।

জন্ম[সম্পাদনা]

১৯০১ সালে রাসিমনি হাজং বর্তমান নেত্রকোণা জেলার দুর্গাপুর উপজেলাধীন কুল্লাগড়া ইউনিয়নের বহেরাতলি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[৪]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

রাসিমনি হাজং টঙ্ক প্রথা ও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নেন। তিনি কৃষক সমিতির বিপ্লবী সদস্য ছিলেন। ১৯৪৬ সালে ভিয়েতনাম দিবস উপলক্ষে ময়মনসিংহ শহরে মিছিলের উপর গুলিবর্ষণের ফলে একজন ছাত্র নিহত হয়। সেজন্য সমগ্র ময়মনসিংহ জেলায় তীব্র বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তৎপ্রেক্ষিতে বহেরাতলী গ্রামে পুলিশের হানায় ত্রাসের সৃষ্টি হয়। পুলিশ সে গ্রামের কুমুদিনী ওরফে সরস্বতী নাম্নী এক যুবতী নারীকে জোর করে ধরে নিয়ে যাচ্ছিলো। গ্রামের কৃষক সমিতির কর্মীরা তখন দুর্গাপুরের জনসভা থেকে ফিরছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন মহিলা কর্মী রাসিমনি। তিনি অসহায় কুমুদিনীকে উদ্ধারের সংকল্পে হাতে থাকা দা দিয়ে পুলিসকে কোপাতে থাকেন। তখন পুলিস গুলি চালায়। গুলিতে রাসিমনি এবং সুরেন্দ্রনাথ নামক অপর একজন কর্মী মারা যান। এই খবর পেয়ে চতুর্দিকের কৃষক জনগণ পুলিস বাহিনীকে ঘিরে আক্রমণ শুরু করে। সংঘর্ষে দুইজন পুলিস মারা যায় ও অন্যান্যরা পালিয়ে যায়।[৪]

মৃত্যুদিনের ঘটনা[সম্পাদনা]

হাজং এলাকায় কৃষক বিদ্রোহ দমনকারী মিলিটারিদের হাত থেকে কৃষকবধূ সরস্বতীকে বাঁচাতে গিয়ে তিনি দায়ের আঘাতে একজন সৈন্যের দেহ মাথা থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে অন্য এক সৈন্যের গুলিতে রাসিমনি হাজং শহীদ হন। সোমেশ্বরী নদীর ধারে এই হাজং বিদ্রোহে শঙ্খমণি, রেবতী, নীলমণি, পদ্মমণি ও আরো অনেকে শহীদ হন।[৫] বহেরাতলী গ্রামের সেই ঘটনার সরেজমিনে তদন্ত করতে জ্যোতি বসু, ব্যারিস্টার স্নেহাংশুকান্ত আচার্য গারো পাহাড় অঞ্চলের হাজং অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে আসেন। কিন্তু ময়মনসিংহের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ব্যাস্টিন তাদের বহেরাতলী গ্রামে প্রবেশ করতে দেননি।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. সোহেল হাজং (৩১ জানুয়ারি ২০১০)। "রাশিমণি হাজং এবং টঙ্ক আন্দোলন"। www.dailyjanakantha.com। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ১৩, ২০১১ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. "Bangalee Women"। muktadhara.net। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ১৩, ২০১১ 
  3. শেখ রফিক (২ জুন ২০১১)। "বিপ্লবী রাসিমণি"। biplobiderkotha.com। আগস্ট ১৪, ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ১৩, ২০১১ 
  4. দরজি আবদুল ওয়াহাব, ময়মনসিংহের চরিতাভিধান, ময়মনসিংহ জেলা দ্বিশতবার্ষিকী উদ্‌যাপন কর্তৃপক্ষ, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ, এপ্রিল ১৯৮৯, পৃষ্ঠা ৪৪১-৪৪২।
  5. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৬৭২, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬