ক্রিস এভার্ট

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ক্রিস এভার্ট
১৯৭০-এর দশকে ক্রিস এভার্ট
দেশ যুক্তরাষ্ট্র
বাসস্থানবোকা র‌্যাটন, ফ্লোরিডা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
জন্ম (1954-12-21) ডিসেম্বর ২১, ১৯৫৪ (বয়স ৬৯)
ফোর্ট লডারডেন, ফ্রোরিডা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
উচ্চতা১.৬৮ মি (৫ ফু ৬ ইঞ্চি)
পেশাদারিত্ব অর্জন১৯৭২
অবসর গ্রহণ১৯৮৯
খেলার ধরনডানহাতি (দুই হাতেই ব্যাকহ্যান্ড)
প্রশিক্ষকজিমি এভার্ট
ডেনিস র‌্যালস্টন[১]
পুরস্কার$৮,৮৯৫,১৯৫
টেনিস এইচওএফ১৯৯৫ (সদস্য পাতা)
একক
পরিসংখ্যান১৩০৯-১৪৬ (৮৯.৯৬%)
শিরোপা১৫৭
সর্বোচ্চ র‌্যাঙ্কিং১নং (৩ নভেম্বর, ১৯৭৫)
গ্র্যান্ড স্ল্যাম এককের ফলাফল
অস্ট্রেলিয়ান ওপেন (১৯৮২, ১৯৮৪)
ফ্রেঞ্চ ওপেন (১৯৭৪, ১৯৭৫, ১৯৭৯, ১৯৮০, ১৯৮৩, ১৯৮৫, ১৯৮৬)
উইম্বলডন (১৯৭৪, ১৯৭৬, ১৯৮১)
ইউএস ওপেন (১৯৭৫, ১৯৭৬, ১৯৭৭, ১৯৭৮, ১৯৮০, ১৯৮২)
অন্যান্য প্রতিযোগিতা
ট্যুর ফাইনাল (১৯৭২, ১৯৭৩, ১৯৭৫, ১৯৭৭)
দ্বৈত
পরিসংখ্যান১১৭-৩৯ (৭৫.০%)
শিরোপা৩২
সর্বোচ্চ র‌্যাঙ্কিং১৩নং (১২ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৮)
গ্র্যান্ড স্ল্যাম দ্বৈতের ফলাফল
অস্ট্রেলিয়ান ওপেনফ (১৯৮৮)
ফ্রেঞ্চ ওপেন (১৯৭৪, ১৯৭৫)
উইম্বলডন (১৯৭৬)

ক্রিস্টিন ম্যারি ক্রিস বা ক্রিসি এভার্ট (জন্ম: ২১ ডিসেম্বর, ১৯৫৪) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র্রে জন্মগ্রহণকারী বিশ্বের সাবেক ১নং প্রমিলা টেনিস খেলোয়াড়। ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৭ পর্যন্ত তিনি ক্রিস এভার্ট-লয়েড নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি ১৮বার গ্র্যান্ড স্ল্যামের এককে ও ৩বার দ্বৈতের শিরোপা জয় করেছিলেন। ১৯৭৪ থেকে ১৯৭৮, ১৯৮০ ও ১৯৮১ সালে বছর শেষে তিনি বিশ্বের ১নং খেলোয়াড় ছিলেন। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে সর্বমোট ১৫৭ একক ও ২৯বার দ্বৈতের শিরোপা লাভ করেন ক্রিস এভার্ট

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

কোলেত থম্পসন ও জিমি এভার্ট দম্পতির সন্তান ছিলেন তিনি।[২] ধর্মভীরু রোমান ক্যাথলিক পরিবারে শৈশবকাল অতিবাহিত করেন।[৩] ক্রিস ও তার বোন জিন পেশাদার টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। তাদের ভাই জন এভার্ট অবার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। ১৯৭৩ সালে ফোর্ট লডারডেল এলাকায় অবস্থিত সেন্ট থমাস অ্যাকুইনাস হাই স্কুল থেকে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন।

খেলোয়াড়ী জীবন[সম্পাদনা]

৩৪বার গ্র্যান্ড স্ল্যামের এককের চূড়ান্ত খেলায় পৌঁছেন যা পেশাদার টেনিসের ইতিহাসে পুরুষ বা মহিলাদের প্রতিযোগিতায় যে-কোন খেলোয়াড়ের চেয়ে বেশি।[৪] সেমি-ফাইনাল বা তারচেয়ে বেশি স্তরে ৫৬ গ্র্যান্ড স্ল্যামের মধ্যে ৫২টিতেই তার উপস্থিতি ছিল। তন্মধ্যে, ১৯৭১ সালের ইউএস ওপেন থেকে শুরু করে ১৯৮৩ সালের ফ্রেঞ্চ ওপেন পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে ৩৪বার সেমি-ফাইনাল বা তারচেয়ে বেশি স্তরে পৌঁছেছিলেন।[৫] গ্র্যান্ড স্ল্যামের এককের প্রতিযোগিতায় প্রথম বা দ্বিতীয় রাউন্ডে তিনি কখনও হারেননি। গ্র্যান্ড স্ল্যামের এককে ফ্রেঞ্চ ওপেনে সাতবার শিরোপা পেয়ে রেকর্ড গড়েন। ২০১৪ সালে সেরেনা উইলিয়ামস তার সাথে সর্বাধিক ছয়বার ইউএস ওপেনের শিরোপা পান।

একক খেলায় এভার্টের জয়ের পরিসংখ্যান হচ্ছে ৮৯.৯৬% (১৩০৯-১৪৬) যা টেনিসের উন্মুক্ত যুগের ইতিহাসে পুরুষ বা মহিলাদের মধ্যে সর্বাধিক। ক্লে কোর্টে ডব্লিউটিএ রেকর্ড হিসেবে একক খেলায় জয়ের হার ৯৪.৫৫% যা অদ্যাবধি অক্ষুণ্ন রয়েছে।

১৯৭০-এর দশকে এভার্টের নতুন প্রতিপক্ষ হিসেবে মার্টিনা নাভ্রাতিলোভার আবির্ভাব ঘটে। তারা পরস্পর বন্ধু ও নিয়মিতভাবে দ্বৈতে অংশগ্রহণ করলেও টেনিসের ইতিহাসে অন্যতম সেরা প্রতিপক্ষ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। সকল ধরনের মাঠে তিনি সফলতা লাভ করেন। তন্মধ্যে, ক্লে কোর্টেই সর্বাধিক প্রভাববিস্তার করেছিলেন। এভার্টের সর্বাধিক সাতবার ফ্রেঞ্চ ওপেনের এককে শিরোপা লাভের রেকর্ডটি দীর্ঘ ২৭ বছর অক্ষত ছিল। কিন্তু, জুন, ২০১৩ সালে রাফায়েল নাদাল তা ভেঙ্গে ফেলেন। ১৯৮৯ সালে পেশাদারী টেনিস থেকে অবসর নেন তিনি। এভার্ট ডব্লিউটিএ ট্যুর চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা জয় করেন চারবার। এছাড়াও, আটবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র্রকে ফেড কাপের শিরোপা জয়ে সহায়তা করেন। ১৯৮৯ সালে ফেড কাপে সর্বশেষ খেলায় কনচিটা মার্টিনেজের বিরুদ্ধে ৬-৩, ৬-২ ব্যবধানে জয় পেয়েছিলেন।

অবসর[সম্পাদনা]

১৯৭৫-১৯৭৬ ও ১৯৮৩-১৯৯১ সর্বমোট এগারো বছর মহিলাদের টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।[৬] ফিলিপ চ্যাট্রিয়ার পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। হল অব ফেমেও তার নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। অবসর পরবর্তীকালে তিনি কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি ইএসপিএনে খেলা বিশ্লেষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন তিনি।

বৈবাহিক জীবন[সম্পাদনা]

১৯৭০-এর দশকে পুরুষদের শীর্ষস্থানীয় খেলোয়াড় জিমি কনর্সের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন যা জনসমক্ষে বেশ প্রচারণা পায়। ১৯৭৪ সালে উভয়েই উইম্বলেডনের এককে শিরোপা জয়ের পর একত্রে স্থিরচিত্রে ধরা পড়েন। এছাড়াও তারা মাঝে-মধ্যেই মিশ্র দ্বৈতে অংশ নিয়েছিলেন। ১৯৭৪ সালের ইউএস ওপেনের মিশ্র দ্বৈতে রানার-আপ হয়েছিলেন। ১৯ বছর বয়সে তারা সম্পর্ক গড়ে তোলেন ও ৮ নভেম্বর, ১৯৭৪ তারিখে বিয়ে করার পরিকল্পনা করেন। কিন্তু, তাদের এ প্রণয়ের স্থায়িত্ব পায়নি ও বিবাহ বাতিল হয়ে যায়। মে, ২০১৩ সালে কোনর্স তার আত্মজীবনীতে লিখেছেন যে, এভার্ট সন্তানসম্ভবা ছিলেন ও গর্ভপাত ঘটান।[৭][৮][৯]

১৯৭৯ সালে ব্রিটিশ টেনিস খেলোয়াড় জন লয়েডেকে বিয়ে করেন ও নাম পাল্টিয়ে ক্রিস এভার্ট-লয়েড রাখেন। ব্রিটিশ গায়ক ও অভিনেতা অ্যাডাম ফেইথের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রেক্ষিতে ১৯৮৭ সালে এ দম্পতির বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটে।[১০][১১][১২]

১৯৮৮ সালে দুইবারের অলিম্পিক ডাউনহিল স্কিয়ার অ্যান্ডি মিলকে বিয়ে করে। তাদের সংসারে আলেকজান্ডার জেমস, নিকোলাস জোসেফ ও কল্টন জ্যাক নামে তিন পুত্র জন্ম নেয়। ১৩ নভেম্বর, ২০০৬ তারিখে এভার্ট বিবাহ-বিচ্ছেদের আবেদন করেন।[১৩] ৪ ডিসেম্বর, ২০০৬ তারিখে নগদ $৭ মিলিয়ন ডলার ও নিরাপত্তার বিনিময়ে তাদের সম্পর্ক চুকে যায়।[১৪]

২৮ জুন, ২০০৮ তারিখে বাহামায় অস্ট্রেলীয় গল্ফার গ্রেগ নর্ম্যানকে তৃতীয়বারের মতো বিয়ে করেন।[১৫] ২ অক্টোবর, ২০০৯ তারিখে ১৫ মাসের বৈবাহিক সম্পর্কের ইতি ঘটার ঘোষণা দেন। অতঃপর ৮ ডিসেম্বর, ২০০৯ তারিখে তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ভেঙ্গে যায়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Sarni, Jim (মার্চ ২২, ১৯৮৭)। "Evert Out To End Drought At Dallas"The Sun-Sentinel। অক্টোবর ১৭, ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৪ 
  2. "Family tree of Chris Evert"। Freepages.genealogy.rootsweb.com। সংগ্রহের তারিখ মে ১৭, ২০১১ 
  3. "Tennis great Chris Evert finds new life on the court"The Washington Post। ২৬ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 
  4. "Women with most tennis Grand Slam finals appearances"। মার্চ ২৩, ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুন ৬, ২০১২ 
  5. "Chris Evert WTA Player Profile"। ১৩ জুন ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুন ৬, ২০১২ 
  6. "International Tennis Hall of Fame profile"। International Tennis Hall of Fame। ৩০ মার্চ ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুন ৫, ২০০৭ 
  7. Jimmy, Connors (২০১৩)। The Outsider। New York City, NY: Bantam/HarperCollins। পৃষ্ঠা 132–133। আইএসবিএন 9780593069271 
  8. Jimmy, Connors। "Today Show Interview"। NBC News Today Show। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
  9. Chase, Chris (মে ২, ২০১৩)। "Jimmy Connors implies Chris Evert was pregnant with his child"USA Today। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
  10. Hamilton, Fiona (মার্চ ১০, ২০০৩)। "Adam Faith"The Times। London। 
  11. "ESPN.com: Evert: grit, grace and glamour"। Espn.go.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৬-৩০ 
  12. Reed, Susan (১৯৮৪-০২-২০)। "The Evert Lloyds: Advantage, Adam Faith"। People.com। ২০১৪-১১-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৬-৩০ 
  13. People Magazine ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১২ ডিসেম্বর ২০০৬ তারিখে Chris Evert Files for Divorce from Andy Mil, November 17, 2006
  14. Sun-Sentinel.com ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৬ ডিসেম্বর ২০০৬ তারিখে Chris Evert divorce calls for tennis great to pay hubby $7 million, December 5, 2006.
  15. Wihlborg, Ulrica (জুন ২৮, ২০০৮)। "Chris Evert and Greg Norman Wed in Bahamas"People। সংগ্রহের তারিখ মে ১৭, ২০১১ 

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]