রাসসুন্দরী দেবী: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ও অন্যান্য সংশোধন
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{তথ্যছক লেখক|name=রাসসুন্দরী দেবী
{{তথ্যছক লেখক
| নাম = রাসসুন্দরী দেবী
| চিত্র =
|birth_date=১৮১০
| স্থানীয়_নাম =
|birth_place=[[পাবনা]], বাংলা, ব্রিটিশ ভারত
| জন্ম_তারিখ = ১৮১০
|death_date=১৮৯০
| জন্ম_স্থান = [[পাবনা]], বাংলা, ব্রিটিশ ভারত
|occupation=লেখিকা
| মৃত্যু_তারিখ = ১৮৯০
|language=[[বাংলা ভাষা|বাংলা]]|nationality=ভারতীয়
| পেশা = লেখিকা
|ethnicity=[[বাঙালি]]
| ভাষা = [[বাংলা ভাষা|বাংলা]]
|citizenship=ভারত (ব্রিটিশ ভারত)}}
| বাসস্থান =
'''রাসসুন্দরী দেবী''' ({{Lang-en|Rassundari Debi}}) একজন বাঙালি লেখক যিনি প্রথম পূর্ণাঙ্গ আত্মজীবনী লেখক হিসাবে চিহ্নিত <ref>{{cite web|author=Deepa Bandopadhyay|title=নারীর লেখা নারীর কথা|url=http://www.kaliokalam.com/2012/12/01/%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80%E0%A6%B0-%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%96%E0%A6%BE-%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80%E0%A6%B0-%E0%A6%95%E0%A6%A5%E0%A6%BE/}}</ref> আধুনিক বাংলা সাহিত্যে। তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নারী লেখকদের মধ্যে একজন।
| জাতীয়তা = ভারতীয়
| নাগরিকত্ব = ভারত (ব্রিটিশ ভারত)
| পুরস্কার =
}}
'''রাসসুন্দরী দেবী''' ({{Lang-en|Rassundari Debi}}) একজন বাঙালি লেখক যিনি প্রথম পূর্ণাঙ্গ আত্মজীবনী লেখক হিসাবে চিহ্নিত <ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|লেখক=Deepa Bandopadhyay|শিরোনাম=নারীর লেখা নারীর কথা|ইউআরএল=http://www.kaliokalam.com/2012/12/01/%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80%E0%A6%B0-%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%96%E0%A6%BE-%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80%E0%A6%B0-%E0%A6%95%E0%A6%A5%E0%A6%BE/}}</ref> আধুনিক বাংলা সাহিত্যে। তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নারী লেখকদের মধ্যে একজন।


তিনি [[পূর্ববঙ্গ|পূর্ববঙ্গে]] জন্মগ্রহণ করেন এবং প্রথম ভারতীয় নারী হিসাবে আত্মজীবনী লিখেছিলেন এবং প্রথম বাঙালি হিসাবে একটি আত্মজীবনী লেখেন। [[:s:নির্ঘণ্ট:আমার জীবন.djvu|আমার জীবন]] তার আত্মজীবনী, ১৮৭৬ সালে প্রকাশিত হয়েছিল।
তিনি [[পূর্ববঙ্গ|পূর্ববঙ্গে]] জন্মগ্রহণ করেন এবং প্রথম ভারতীয় নারী হিসাবে আত্মজীবনী লিখেছিলেন এবং প্রথম বাঙালি হিসাবে একটি আত্মজীবনী লেখেন। [[:s:নির্ঘণ্ট:আমার জীবন.djvu|আমার জীবন]] তার আত্মজীবনী, ১৮৭৬ সালে প্রকাশিত হয়েছিল।
১৬ নং লাইন: ২২ নং লাইন:
রাসসুন্দরী ১৮১০ সালে [[পাবনা জেলা]]র পোতাদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা পদ্মলোচন রায় মারা যান যখন রাসসুন্দরী খুব ছোট ছিলেন। তিনি কখনো তার বাবাকে দেখেননি এবং তার মা ও আত্মীয়দের দ্বারা তিনি প্রতিপালিত হয়েছিলেন। তিনি তার বাবার বাড়িতে একটি ধর্মপ্রচারক মহিলা দ্বারা পরিচালিত স্কুলে থাকতেন, যেখানে ছেলেরাও অধ্যয়ন করতেন। রাসসুন্দরী একটি সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য স্কুলে উপস্থিত ছিলেন এবং সেখান থেকে [[বাংলা]] ও [[ফার্সি]] ভাষা শেখেন।
রাসসুন্দরী ১৮১০ সালে [[পাবনা জেলা]]র পোতাদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা পদ্মলোচন রায় মারা যান যখন রাসসুন্দরী খুব ছোট ছিলেন। তিনি কখনো তার বাবাকে দেখেননি এবং তার মা ও আত্মীয়দের দ্বারা তিনি প্রতিপালিত হয়েছিলেন। তিনি তার বাবার বাড়িতে একটি ধর্মপ্রচারক মহিলা দ্বারা পরিচালিত স্কুলে থাকতেন, যেখানে ছেলেরাও অধ্যয়ন করতেন। রাসসুন্দরী একটি সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য স্কুলে উপস্থিত ছিলেন এবং সেখান থেকে [[বাংলা]] ও [[ফার্সি]] ভাষা শেখেন।


১২ বছর বয়সে তিনি [[ফরিদপুর|ফরিদপুরের]] রামদিয়া গ্রামের রাজবাড়ির নীলমনি রায়ের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|url=http://mukto-mona.com/bangla_blog/?p=37932|title=পিঞ্জরাবদ্ধ এক বিহঙ্গীর ডানা ঝাপটানোর গল্প।|last=ফরিদ আহমেদ}}</ref> তিনি একজন [[বৈষ্ণব]] ধর্ম বিশ্বাসী ছিলেন। সীমিত আনুষ্ঠানিক পড়াশোনার সঙ্গে, তিনি ভক্তি (নিষ্ঠা) দ্বারা চালিত হয়ে পড়তে শেখেন, তার প্রখর ইচ্ছা হইতে বাল্মীকি পুরাণ ও চৈতন্য ভাগবত পড়তেন। তিনি ১২ জন সন্তানের জন্ম দিয়েছেন, যাদের মধ্যে ৭ জন জন্মের কিছু দিনের মধ্যে মারা যান। এতগুলো সন্তান হওয়ায় এবং তিনি দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার কারণে অসংখ্য মৃত্যু প্রত্যক্ষ করতে হয়েছে। তাঁর সাতটি সন্তানের মৃত্যু হয় চোখের সামনে। এছাড়া স্বামীকে হারিয়েছেন তিনি, হারিয়েছেন নাতি-নাতনিদেরও। এই সব প্রিয়জনদের মৃত্যু প্রত্যক্ষ করা কতখানি দুঃসহ শোকের তা ফুটে উঠেছে তাঁর লেখনিতে। তাঁর বেঁচে থাকা সন্তানেরা হলেন বিপিন বিহারী সরকার, দ্বারকনাথ সরকার, কিশোরী সরকার, প্রতাপচন্দ্র সরকার এবং শ্যামসুন্দরী। তার স্বামী ১৮৬৮ সালে মারা যান।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|title=Banglapedia: National Encyclopedia of Bangladesh|last=Amin|first=Sonia|publisher=[[Asiatic Society of Bangladesh]]|year=2003|editor-last=Islam|editor-first=Sirajul|editor-link=Sirajul Islam|edition=First|chapter=Dasi, Rassundari|editor-last2=Jamal|editor-first2=Ahmed A.|chapter-url=http://banglapedia.org/HT/D_0051.HTM|archive-url=https://web.archive.org/web/20080316055526/http://banglapedia.org/HT/D_0051.HTM|archive-date=16 March 2008}}</ref> তার ছেলে কিশোরী সরকার কলকাতা হাইকোর্টের একজন আইনজীবী হয়ে ওঠে এবং বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বইয়ের লেখক ছিলেন।<ref>''Hindu system of moral science'' (1895, 3rd revised and enlarged ed. 1912), ''Hindu system of religious science and art, or the revelations of rationalism and emotionalism'' (1898), ''Hindu system of self-culture of the Patanjala Yoga Shastra'' (1902), ''Mimansa rules of interpretation as applied to Hindu law'' (1909), ''An introduction to the Hindu system of physics, being an exposition of Kanad-Sûtras relating to the subject'' (1911).</ref> ১৮৯০ সালে রাসসুন্দরী মারা যান।
১২ বছর বয়সে তিনি [[ফরিদপুর|ফরিদপুরের]] রামদিয়া গ্রামের রাজবাড়ির নীলমনি রায়ের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।<ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://mukto-mona.com/bangla_blog/?p=37932|শিরোনাম=পিঞ্জরাবদ্ধ এক বিহঙ্গীর ডানা ঝাপটানোর গল্প।|শেষাংশ=ফরিদ আহমেদ}}</ref> তিনি একজন [[বৈষ্ণব]] ধর্ম বিশ্বাসী ছিলেন। সীমিত আনুষ্ঠানিক পড়াশোনার সঙ্গে, তিনি ভক্তি (নিষ্ঠা) দ্বারা চালিত হয়ে পড়তে শেখেন, তার প্রখর ইচ্ছা হইতে বাল্মীকি পুরাণ ও চৈতন্য ভাগবত পড়তেন। তিনি ১২ জন সন্তানের জন্ম দিয়েছেন, যাদের মধ্যে ৭ জন জন্মের কিছু দিনের মধ্যে মারা যান। এতগুলো সন্তান হওয়ায় এবং তিনি দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার কারণে অসংখ্য মৃত্যু প্রত্যক্ষ করতে হয়েছে। তাঁর সাতটি সন্তানের মৃত্যু হয় চোখের সামনে। এছাড়া স্বামীকে হারিয়েছেন তিনি, হারিয়েছেন নাতি-নাতনিদেরও। এই সব প্রিয়জনদের মৃত্যু প্রত্যক্ষ করা কতখানি দুঃসহ শোকের তা ফুটে উঠেছে তাঁর লেখনিতে। তাঁর বেঁচে থাকা সন্তানেরা হলেন বিপিন বিহারী সরকার, দ্বারকনাথ সরকার, কিশোরী সরকার, প্রতাপচন্দ্র সরকার এবং শ্যামসুন্দরী। তার স্বামী ১৮৬৮ সালে মারা যান।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=Banglapedia: National Encyclopedia of Bangladesh|শেষাংশ=Amin|প্রথমাংশ=Sonia|প্রকাশক=[[Asiatic Society of Bangladesh]]|বছর=2003|সম্পাদক-শেষাংশ=Islam|সম্পাদক-প্রথমাংশ=Sirajul|সম্পাদক-সংযোগ=Sirajul Islam|সংস্করণ=First|অধ্যায়=Dasi, Rassundari|সম্পাদক-শেষাংশ2=Jamal|editor-first2=Ahmed A.|অধ্যায়ের-ইউআরএল=http://banglapedia.org/HT/D_0051.HTM|আর্কাইভের-ইউআরএল=https://web.archive.org/web/20080316055526/http://banglapedia.org/HT/D_0051.HTM|আর্কাইভের-তারিখ=16 March 2008}}</ref> তার ছেলে কিশোরী সরকার কলকাতা হাইকোর্টের একজন আইনজীবী হয়ে ওঠে এবং বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বইয়ের লেখক ছিলেন।<ref>''Hindu system of moral science'' (1895, 3rd revised and enlarged ed. 1912), ''Hindu system of religious science and art, or the revelations of rationalism and emotionalism'' (1898), ''Hindu system of self-culture of the Patanjala Yoga Shastra'' (1902), ''Mimansa rules of interpretation as applied to Hindu law'' (1909), ''An introduction to the Hindu system of physics, being an exposition of Kanad-Sûtras relating to the subject'' (1911).</ref> ১৮৯০ সালে রাসসুন্দরী মারা যান।


== লিখিত বই ==
== লিখিত বই ==
১৮৭৬ সালে রাসসুন্দরীর আত্মজীবনী আমার জীবন (মাই লাইফ) প্রকাশিত হয়। বইটি দুটি অংশে রয়েছে, প্রথমটির মধ্যে ১৬ টি ছোট রচনাবলী রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে তার আত্মজীবনী। দ্বিতীয় অংশ, ১৯০৬ সালে প্রকাশিত, যার মধ্যে ১৫ টি ছোট রচনা রচনাবলী রয়েছে, প্রত্যেকটি একটি উৎসর্গমূলক কবিতা দ্বারা প্রতিস্থাপিত।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|url=https://books.google.com/?id=u297RJP9gvwC&printsec=frontcover&dq=tharu+lalita+women+writing+in+india#v=onepage&q=tharu%20lalita%20women%20writing%20in%20india&f=false|title=Women Writing in India: 600 B.C. to the early twentieth century|last=Tharu|first=Susie J.|last2=Lalita|first2=Ke|date=1991-01-01|publisher=Feminist Press at CUNY|isbn=9781558610279|pages=191|language=en}}</ref>
১৮৭৬ সালে রাসসুন্দরীর আত্মজীবনী আমার জীবন (মাই লাইফ) প্রকাশিত হয়। বইটি দুটি অংশে রয়েছে, প্রথমটির মধ্যে ১৬ টি ছোট রচনাবলী রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে তার আত্মজীবনী। দ্বিতীয় অংশ, ১৯০৬ সালে প্রকাশিত, যার মধ্যে ১৫ টি ছোট রচনা রচনাবলী রয়েছে, প্রত্যেকটি একটি উৎসর্গমূলক কবিতা দ্বারা প্রতিস্থাপিত।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.com/?id=u297RJP9gvwC&printsec=frontcover&dq=tharu+lalita+women+writing+in+india#v=onepage&q=tharu%20lalita%20women%20writing%20in%20india&f=false|শিরোনাম=Women Writing in India: 600 B.C. to the early twentieth century|শেষাংশ=Tharu|প্রথমাংশ=Susie J.|শেষাংশ২=Lalita|প্রথমাংশ২=Ke|তারিখ=1991-01-01|প্রকাশক=Feminist Press at CUNY|আইএসবিএন=9781558610279|পাতাসমূহ=191|ভাষা=en}}</ref>


জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর বইটির 'ঘটনাবলীর বিস্ময়কর ধারাবাহিকতা' এবং অভিব্যক্তির 'সহজ মাধুর্য্য'র প্রশংসা করেছেন। দীনেশ চন্দ্র সেন বলেন তার গদ্য একটি 'অতীত যুগের সহজ গদ্য রচনার সংক্ষিপ্তসার'।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|title=Vanga Sahitya Parichaya or Selections from the Bengali Literature: Volume II|last=Dinesh Chandra Sen|location=Calcutta}}</ref> তার লেখা আমার জীবন বইটি হিন্দিতে অনুবাদ করা হয়েছিল।
জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর বইটির 'ঘটনাবলীর বিস্ময়কর ধারাবাহিকতা' এবং অভিব্যক্তির 'সহজ মাধুর্য্য'র প্রশংসা করেছেন। দীনেশ চন্দ্র সেন বলেন তার গদ্য একটি 'অতীত যুগের সহজ গদ্য রচনার সংক্ষিপ্তসার'।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|শিরোনাম=Vanga Sahitya Parichaya or Selections from the Bengali Literature: Volume II|শেষাংশ=Dinesh Chandra Sen|অবস্থান=Calcutta}}</ref> তার লেখা আমার জীবন বইটি হিন্দিতে অনুবাদ করা হয়েছিল।


== তথ্যসূত্র ==
== তথ্যসূত্র ==
{{সূত্র তালিকা}}
{{Reflist}}

[[বিষয়শ্রেণী:১৮১০-এ জন্ম]]
[[বিষয়শ্রেণী:১৮১০-এ জন্ম]]
[[বিষয়শ্রেণী:১৯০০-এ মৃত্যু]]
[[বিষয়শ্রেণী:১৯০০-এ মৃত্যু]]

১৭:৪৭, ২০ মে ২০১৮ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

রাসসুন্দরী দেবী
জন্ম১৮১০
পাবনা, বাংলা, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু১৮৯০
পেশালেখিকা
ভাষাবাংলা
জাতীয়তাভারতীয়
নাগরিকত্বভারত (ব্রিটিশ ভারত)

রাসসুন্দরী দেবী (ইংরেজি: Rassundari Debi) একজন বাঙালি লেখক যিনি প্রথম পূর্ণাঙ্গ আত্মজীবনী লেখক হিসাবে চিহ্নিত [১] আধুনিক বাংলা সাহিত্যে। তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নারী লেখকদের মধ্যে একজন।

তিনি পূর্ববঙ্গে জন্মগ্রহণ করেন এবং প্রথম ভারতীয় নারী হিসাবে আত্মজীবনী লিখেছিলেন এবং প্রথম বাঙালি হিসাবে একটি আত্মজীবনী লেখেন। আমার জীবন তার আত্মজীবনী, ১৮৭৬ সালে প্রকাশিত হয়েছিল।

তিনি ভারতের প্রথম মহিলা যিনি ভারতের ইতিহাস নিয়ে চর্চা করেছিলেন।

আত্মজীবনী

রাসসুন্দরী ১৮১০ সালে পাবনা জেলার পোতাদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা পদ্মলোচন রায় মারা যান যখন রাসসুন্দরী খুব ছোট ছিলেন। তিনি কখনো তার বাবাকে দেখেননি এবং তার মা ও আত্মীয়দের দ্বারা তিনি প্রতিপালিত হয়েছিলেন। তিনি তার বাবার বাড়িতে একটি ধর্মপ্রচারক মহিলা দ্বারা পরিচালিত স্কুলে থাকতেন, যেখানে ছেলেরাও অধ্যয়ন করতেন। রাসসুন্দরী একটি সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য স্কুলে উপস্থিত ছিলেন এবং সেখান থেকে বাংলাফার্সি ভাষা শেখেন।

১২ বছর বয়সে তিনি ফরিদপুরের রামদিয়া গ্রামের রাজবাড়ির নীলমনি রায়ের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।[২] তিনি একজন বৈষ্ণব ধর্ম বিশ্বাসী ছিলেন। সীমিত আনুষ্ঠানিক পড়াশোনার সঙ্গে, তিনি ভক্তি (নিষ্ঠা) দ্বারা চালিত হয়ে পড়তে শেখেন, তার প্রখর ইচ্ছা হইতে বাল্মীকি পুরাণ ও চৈতন্য ভাগবত পড়তেন। তিনি ১২ জন সন্তানের জন্ম দিয়েছেন, যাদের মধ্যে ৭ জন জন্মের কিছু দিনের মধ্যে মারা যান। এতগুলো সন্তান হওয়ায় এবং তিনি দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার কারণে অসংখ্য মৃত্যু প্রত্যক্ষ করতে হয়েছে। তাঁর সাতটি সন্তানের মৃত্যু হয় চোখের সামনে। এছাড়া স্বামীকে হারিয়েছেন তিনি, হারিয়েছেন নাতি-নাতনিদেরও। এই সব প্রিয়জনদের মৃত্যু প্রত্যক্ষ করা কতখানি দুঃসহ শোকের তা ফুটে উঠেছে তাঁর লেখনিতে। তাঁর বেঁচে থাকা সন্তানেরা হলেন বিপিন বিহারী সরকার, দ্বারকনাথ সরকার, কিশোরী সরকার, প্রতাপচন্দ্র সরকার এবং শ্যামসুন্দরী। তার স্বামী ১৮৬৮ সালে মারা যান।[৩] তার ছেলে কিশোরী সরকার কলকাতা হাইকোর্টের একজন আইনজীবী হয়ে ওঠে এবং বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বইয়ের লেখক ছিলেন।[৪] ১৮৯০ সালে রাসসুন্দরী মারা যান।

লিখিত বই

১৮৭৬ সালে রাসসুন্দরীর আত্মজীবনী আমার জীবন (মাই লাইফ) প্রকাশিত হয়। বইটি দুটি অংশে রয়েছে, প্রথমটির মধ্যে ১৬ টি ছোট রচনাবলী রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে তার আত্মজীবনী। দ্বিতীয় অংশ, ১৯০৬ সালে প্রকাশিত, যার মধ্যে ১৫ টি ছোট রচনা রচনাবলী রয়েছে, প্রত্যেকটি একটি উৎসর্গমূলক কবিতা দ্বারা প্রতিস্থাপিত।[৫]

জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর বইটির 'ঘটনাবলীর বিস্ময়কর ধারাবাহিকতা' এবং অভিব্যক্তির 'সহজ মাধুর্য্য'র প্রশংসা করেছেন। দীনেশ চন্দ্র সেন বলেন তার গদ্য একটি 'অতীত যুগের সহজ গদ্য রচনার সংক্ষিপ্তসার'।[৬] তার লেখা আমার জীবন বইটি হিন্দিতে অনুবাদ করা হয়েছিল।

তথ্যসূত্র

  1. Deepa Bandopadhyay। "নারীর লেখা নারীর কথা" 
  2. ফরিদ আহমেদ। "পিঞ্জরাবদ্ধ এক বিহঙ্গীর ডানা ঝাপটানোর গল্প" 
  3. Amin, Sonia (২০০৩)। "Dasi, Rassundari"Islam, Sirajul; Jamal, Ahmed A.। Banglapedia: National Encyclopedia of Bangladesh (First সংস্করণ)। Asiatic Society of Bangladesh। ১৬ মার্চ ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  4. Hindu system of moral science (1895, 3rd revised and enlarged ed. 1912), Hindu system of religious science and art, or the revelations of rationalism and emotionalism (1898), Hindu system of self-culture of the Patanjala Yoga Shastra (1902), Mimansa rules of interpretation as applied to Hindu law (1909), An introduction to the Hindu system of physics, being an exposition of Kanad-Sûtras relating to the subject (1911).
  5. Tharu, Susie J.; Lalita, Ke (১৯৯১-০১-০১)। Women Writing in India: 600 B.C. to the early twentieth century (ইংরেজি ভাষায়)। Feminist Press at CUNY। পৃষ্ঠা 191। আইএসবিএন 9781558610279 
  6. Dinesh Chandra Sen। Vanga Sahitya Parichaya or Selections from the Bengali Literature: Volume II। Calcutta।