তিয়ানশি
ধরন | বেসরকারি কোম্পানি |
---|---|
শিল্প | একীভূত ও এমএলএম |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৯৯৫ |
প্রতিষ্ঠাতা | লি জিনইউয়ান |
সদরদপ্তর | , চীন |
বাণিজ্য অঞ্চল | বিশ্বব্যাপী |
প্রধান ব্যক্তি |
|
পণ্যসমূহ | |
কর্মীসংখ্যা | ৮,০০০ |
অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান | তিয়ানজিন তিয়ানশি বায়োলজিক্যাল ডেভেলপমেন্ট কোঃ লিমিটেড, তিয়ানশি ইহাই কোঃ লিমিটেড |
ওয়েবসাইট | www |
টিয়েন্স গ্রুপ বা তিয়ানশি (/ˈtiːɛns/, চীনা: 天狮; ফিনিন: তিয়ানশি; আক্ষরিক: "স্বর্গীয় সিংহ" থেকে) হল একটি চীনা বহুজাতিক একীভূত এমএলএম কোম্পানি, যার সদর দপ্তর চীনের তিয়ানজিনে অবস্থিত। তিয়ানশি গ্রুপ জৈবপ্রযুক্তি, শিক্ষা, খুচরা পণ্য বিক্রয়, পর্যটন, অর্থসংস্থান ও ই-বাণিজ্য নিয়ে কাজ করে থাকে।[১] প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে প্রতারণামূলক এমএলএম ব্যবসার জন্য ব্যপকভাবে সমালোচিত।[২][৩][৪]
ইতিহাস
তিয়ানশি গ্রুপ ১৯৯৫ সালে লি জিনইউয়ান কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়।[৫] তিয়ানশি ১৯৯৭ সালে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করে। সেই সময় কোম্পানির প্রাথমিক পণ্যসমূহের মধ্যে অন্যতম ছিল ঐতিহ্যবাহী চীনা ঔষধি পণ্য, ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট এবং কফি। ২০০৮ সালে, তিয়ানশি জানায় যে বিশ্বব্যাপী তাঁদের ১.২ কোটি এমএলএম পরিবেশক ও ৪ কোটি গ্রাহক রয়েছে। যার মধ্যে জার্মানিতে ৪০,০০০-এরও বেশি এমএলএম পরিবেশক রয়েছে।[৬] অন্যদিকে গ্রাহকদের মধ্যে বেশিরভাগ গ্রাহক রাশিয়া ও জার্মানিতে রয়েছে। ২০১৪ সালে তারা জানায় যে উগান্ডায় তাঁদের ২ লক্ষ পরিবেশক রয়েছে।[৭]
২০১৫ সালের মে মাসে, চার দিনের ফ্রান্স সফর করতে প্রতিষ্ঠানটি তাঁদের ৬,৪০০ জন কর্মচারী ফ্রান্সে প্রেরণ করে। নিসে থাকাকালীন, তারা দীর্ঘতম "মানব-নির্মিত বাক্যাংশ" তৈরি করে গিনেস বিশ্ব রেকর্ড স্থাপন করে।[৮]
সমালোচনা
বাংলাদেশ
তিয়ানশি বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে সমালোচিত একটি প্রতিষ্ঠান। বলা হয়, তিয়ানশির ব্যাবসায়িক চক্রে যুক্ত হয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার বহু মানুষ প্রতারিত, ক্ষতিগ্রস্ত ও সর্বশান্ত হয়েছে, বিশেষত কুমিল্লা, ঢাকার স্বল্পোন্নত অঞ্চলসমূহ, বরিশাল, মানিকগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, রাজশাহী, ফেনী, চাঁদপুরসহ আরও বিভিন্ন জেলা এবং বহু ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, এর পণ্যের কোন কার্যকারিতা নেই এবং এর পণ্যগুলোর দাম বাজারে প্রাপ্ত বিখ্যাত কোম্পানিগুলোর পণ্যের তুলনায় ৪ থেকে ২০ গুণ বেশি।[২][৩][৪][৯][১০][১১][১২][১৩] ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশে তিয়ানশিসহ দেশী-বিদেশী সকল প্রকার এমএলএম বাণিজ্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।[১৪]
যুক্তরাষ্ট্র
এফডিএ তিয়ানশিকে একটি পরামর্শমূলক চিঠি পাঠিয়ে সতর্ক করে জানায় যে, "হাঁপানি, ক্যান্সার, বাত, ডায়াবেটিস, কার্ডিওভাসকুলার রোগ, মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন, স্ট্রোক, যৌন সংক্রামিত রোগ (যেমন, হারপিস), সেরিব্রাল এম্বোলিজম এবং স্মৃতিভ্রংশ" নিয়ে তাদের চিকিত্সাগুলি বা এগুলি প্রতিরোধ করার দাবি ফেডারেল ফুড, ড্রাগ এবং কসমেটিক আইনকে লঙ্ঘন করে।[১৫] এফডিএ এখনও "গুরুতর রোগের জন্য অবৈধভাবে বিপণন করা পণ্যের" তালিকায় তিয়ানশিকে তালিকাভুক্ত করে রেখেছে।[১৬]
তথ্যসূত্র
- ↑ "China's Tiens Group to enter Indian e-commerce market"। Economic Times। সংগ্রহের তারিখ ২২ মে ২০১৬।
- ↑ ক খ "বরিশালে ডিভাইস দিয়ে সর্বরোগের চিকিৎসা!"। জনকন্ঠ। ৬ অক্টোবর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১৯।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ক খ "কিশোরগঞ্জে চীনা সামগ্রী বিক্রি, চিকিৎসার নামে 'প্রতারণা'"। bdnews24.com। ৭ অক্টোবর ২০১২। ৯ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ ক খ "'তিয়ানশির' এক ওষুধেই সব রোগের চিকিৎসা!"। archive1.ittefaq.com.bd। দৈনিক ইত্তেফাক। ১৬ জুন ২০১৬। ৯ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ "Li Jinyuan: "The World Focus On China Now. TIENS Is In!" (ইংরেজি ভাষায়)। বিজনেস ওয়ার্ল্ড। সংগ্রহের তারিখ ১৯ এপ্রিল ২০১৮।
- ↑ "Tiens in Deutschland" (জার্মান ভাষায়)। তিয়ানশি। ২১ অক্টোবর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ মে ২০১৫।
- ↑ ওয়ান, জেমস (জুন ১৯, ২০১৪)। "The Chinese multinational making millions out of vulnerable Ugandans" (ইংরেজি ভাষায়)। দ্য গার্ডিয়ান। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ২৩, ২০১৮।
- ↑ "Chinese firm sends 6,400 employees on French holiday" (ইংরেজি ভাষায়)। বিবিসি নিউজ। ৯ মে ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১০ মে ২০১৫।
- ↑ "ডিগ্রি ছাড়াই চিকিৎসক, ফি ৫০০ টাকা!"। archive.prothom-alo.com। প্রথম আলো। ১৪ মে ২০১০। ৯ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ আবুল কালাম আজাদ (১৯ জুন ২০১৫)। "লাইসেন্সবিহীন এমএলএম কোম্পানির রমরমা ব্যবসা"। প্রথম আলো। রাজশাহী। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১৯।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ মহিউদ্দিন মোল্লা (২৪ ডিসেম্বর ২০১৭)। "ডিসি এসপি হওয়ার দরকার নেই, মাসেই কোটিপতি!"। বাংলাদেশ প্রতিদিন। কুমিল্লা। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ "নবাবগঞ্জে মানুষের জীবন নিয়ে খেলছে তিয়ানশি | মহানগর"। jugantor.com। যুগান্তর। ২৯ জুন ২০১৯। ৯ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ আব্দুর রাজ্জাক (২২ অক্টোবর ২০১৬)। "অষ্টধাতু আর অপচিকিৎসায় প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ"। নয়া দিগন্ত। ঘিওর, মানিকগঞ্জ। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ ফখরুল ইসলাম (১১ এপ্রিল ২০১৫)। "সব এমএলএম অবৈধ"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০২০।
- ↑ "Advisory Letter - Tiens Group"। মার্কিন খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৯ এপ্রিল ২০২১।
- ↑ "Products Illegally Marketed for Serious Diseases"। fda.gov (ইংরেজি ভাষায়)। মার্কিন খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন। সংগ্রহের তারিখ ১৯ এপ্রিল ২০২১।