গিল ল্যাংলি
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | গিলবার্ট রোচ অ্যান্ড্রুজ ল্যাংলি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | উত্তর অ্যাডিলেড, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রেলিয়া | ১৪ সেপ্টেম্বর ১৯১৯|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১৪ মে ২০০১ ফুলার্টন, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া | (বয়স ৮১)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | - | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১৮৯) | ৯ নভেম্বর ১৯৫১ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২ নভেম্বর ১৯৫৬ বনাম ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৩০ মার্চ ২০১৯ |
গিলবার্ট রোচ অ্যান্ড্রুজ গিল ল্যাংলি, এএম (ইংরেজি: Gil Langley; জন্ম: ১৪ সেপ্টেম্বর, ১৯১৯ - মৃত্যু: ১৪ মে, ২০০১) দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার উত্তর অ্যাডিলেডে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন।[১] অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫১ থেকে ১৯৫৬ সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে সাউথ অস্ট্রেলিয়া দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন গিল ল্যাংলি। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন।
একাধারে তিনি টেস্ট ক্রিকেটার, অস্ট্রেলীয় রুলস ফুটবলার ও সংসদ সদস্যের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। ১৯৭৭ থেকে ১৯৭৯ সময়কালে ডন ডানস্ট্যানের নেতৃত্বাধীন শ্রমিক সরকারের দক্ষিণ অস্ট্রেলীয় আইনসভার স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
শৈশবকাল
[সম্পাদনা]সরকারী বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন গিল ল্যাংলি। ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবেও শিক্ষানবিশ ছিলেন। কিশোর অবস্থাতেই সর্বক্রীড়ায় পারদর্শী হয়ে উঠেন। ক্রিকেট ও অস্ট্রেলীয় রুলস ফুটবলে দক্ষতা দেখান। সাবেক টেস্ট ক্রিকেটার ও শীর্ষস্থানীয় ফুটবলার ভিক রিচার্ডসনের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ হয় তার।[২]
১৯৩৯ সালে সাউথ অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ফুটবলে লীগে (এসএএনএফএল) স্টার্ট ক্লাবের পক্ষে রোভার হিসেবে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয় গিল ল্যাংলি’র। এরপর থেকে ১৬৩ খেলায় অংশ নিয়ে ৩৪১ গোল করেন। ১৯৪৫ ও ১৯৪৭ সালে ক্লাবের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এ পর্যায়ে ১৯৪৫ ও ১৯৪৬ সালে স্টার্টের সেরা ও পরিচ্ছন্ন খেলোয়াড়ের পুরস্কার লাভ করেছিলেন তিনি।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন এসেনডন ফুটবল ক্লাবের পক্ষে ভিক্টোরিয়ান ফুটবলে লীগে (ভিএফএল) চারটি খেলায় অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি।[২] তন্মধ্যে, ১৯৪৩ সালের ভিএফএল গ্র্যান্ড ফাইনালেও তার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল। ১৯৫০ মৌসুম শেষে ফুটবল খেলা থেকে অবসর গ্রহণ করেন গিল ল্যাংলি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
[সম্পাদনা]মূলতঃ ব্যাটিংয়ের অভিজ্ঞতার নিয়ে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার সদস্যরূপে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে যাত্রা শুরু করেন গিল ল্যাংলি। ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৪৫ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের বিপক্ষে অভিষেক ঘটে তার। এরপর ডিসেম্বর, ১৯৪৭ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো উইকেট-রক্ষণে অগ্রসর হন। তাৎক্ষণিকভাবেই স্ট্যাম্পের পিছনে অবস্থান করে সফলতার স্বাক্ষর রাখেন।
ফলশ্রুতিতে, ১৯৪৯-৫০ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা গমনকল্পে অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্যরূপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে, ঐ সফরে কোন টেস্ট খেলায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ হয়নি তার। পরবর্তীতে অবশ্য টেস্ট ক্রিকেটে অভিষিক্ত হয়েছিলেন তিনি। ১৯৫১-৫২ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে আসে। নিয়মিত উইকেট-রক্ষক ডন টলন আঘাত পেলে তিনি তার স্থলাভিষিক্ত হন ও টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ঐ টেস্টে তিনি তিনটি ক্যাচ ও চারটি স্ট্যাম্পিং করেছিলেন। ১৯৫৩ সালে ডন টলনের অবসর গ্রহণের পর তিনিই অস্ট্রেলিয়ার প্রথম পছন্দের উইকেট-রক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। ১৯৫৬ সালে অবসর গ্রহণের পূর্ব-পর্যন্ত এ দায়িত্বে ছিলেন তিনি।[২]
১৯৫৬ সালে ইংল্যান্ড গমন করেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতাবিহীন অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্যরূপে উল্লেখযোগ্য ভূমিকায় রাখেন তিনি। লর্ডস টেস্টে নয়টি ডিসমিসালের সাথে স্বীয় নামকে জড়িয়ে রাখেন। এটিই সমগ্র অ্যাশেজ সিরিজে সফরকারীদের একমাত্র জয় ছিল। ঐ সময়ে এ পরিসংখ্যানটি টেস্ট রেকর্ডরূপে বিবেচিত ছিল। পরবর্তীতে ১৯৮০ সালে বব টেলর এ রেকর্ড ভেঙে ফেললেও ২০০০ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলীয় রেকর্ডরূপে টিকেছিল। এরই স্বীকৃতিস্বরূপ উইজডেন কর্তৃপক্ষ গিল ল্যাংলিকে এ খেলার নির্ভরযোগ্য উইকেট-রক্ষক হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৫৭ সালে উইজডেন বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননায় ভূষিত হন তিনি।[৩]
এছাড়াও, রাণীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তার পোশাক ছিঁড়ে যাবার বিষয়টিও সংবাদপত্রের শিরোনামে চলে আসে। দলীয় সঙ্গী কিথ মিলার ও ইয়ান জনসন অবশ্য খুব দ্রুত সেফটি পিন দিয়ে ছেঁড়া অংশটুকু ঢেকে দিয়েছিলেন।
নভেম্বর, ১৯৫৬ সালে কোলকাতার ইডেন গার্ডেনে স্বাগতিক ভারত জাতীয় ক্রিকেট দলভারতের বিপক্ষে নিজস্ব সর্বশেষ টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন গিল ল্যাংলি। এর একমাস পর দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার সদস্যরূপে অ্যাডিলেড ওভালে নিউ সাউথ ওয়েলসের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করার পর প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটকে বিদেয় জানান তিনি।[২]
ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর গিল ল্যাংলি ক্রীড়া সাংবাদিকতার দিকে ঝুঁকে পড়েন। দূর্লভ দ্বৈত অর্জনের সাথে স্বীয় নামকে জড়িয়ে রেখেছেন তিনি। ভিক রিচার্ডসনের সাথে তিনিও স্টার্টের পক্ষে ক্রিকেট ও ফুটবল - উভয় ক্রীড়ায় অধিনায়কত্ব করেছেন।[২]
রাজনীতিতে অংশগ্রহণ
[সম্পাদনা]লেবার পার্টির পক্ষ থেকে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার আইনসভায় যোগ দেন। এ পর্যায়ে ১৯৬২ সালের দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচনে আনলে ইলেকট্রোরাল জেলা থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। ১৯৬৫ সালের নির্বাচনের পর ৩২ বছরের মধ্যে প্রথম গঠিত শ্রমিক সরকারের সদস্য হন। ১৯৭৭ থেকে ১৯৭৯ সময়কালে আইনসভার স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৮২ সালে রাজনৈতিক জীবন থেকে অবসর নেন। ১৯৮২ সালের দক্ষিণ অস্ট্রেলীয় রাজ্যে নির্বাচনে শ্রমিক দলের কিম মেইস তার স্থলাভিষিক্ত হন।
১৯৮৪ সালে অস্ট্রেলীয় দিবসের সম্মাননায় গিল ল্যাংলিকে অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়া পদবীতে ভূষিত করা হয়। ২০০১ সালে প্রথমবারের মতো ঘোষিত স্টার্ট ফুটবল ক্লাব হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত হন। ক্রিকেটে অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তার সম্মানার্থে অ্যাডিলেড ওভালে ‘গিল ল্যাংলি ফাংশন রুম’ নামাঙ্কিত করা হয়।
ব্যক্তিগত জীবন
[সম্পাদনা]ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর লন বোলে অংশ নিতেন। দীর্ঘদিন আলঝেইমার’স রোগে আক্রান্ত হবার পর গিল ল্যাংলি’র দেহাবসান ঘটে। দুই পুত্র, দুই কন্যা ও নয় নাতি-নাতনি ছিল তাঁর। গিল ল্যাংলির ভ্রাতৃস্পুত্র জেফ ল্যাংলি ১৯৬৯-৭০ মৌসুম থেকে ১৯৭৯-৮০ মৌসুম পর্যন্ত সাউথ অস্ট্রেলিয়া ও কুইন্সল্যান্ডের পক্ষে খেলেছেন।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Australia – Test Batting Averages"। ESPNCricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "Obituaries: Gil Langley"। The Daily Telegraph। London। ১৭ মে ২০০১।
- ↑ "Wisden's Five Cricketers of the Year"। ESPNcricinfo। ESPN। ২৩ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১৫।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]- ডন টলন
- রন স্যাগার্স
- লেন মাডকস
- উইজডেন বর্ষসেরা ক্রিকেটার
- অস্ট্রেলীয় টেস্ট ক্রিকেটারদের তালিকা
- অস্ট্রেলীয় টেস্ট উইকেট-রক্ষকদের তালিকা
গ্রন্থপঞ্জী
[সম্পাদনা]- de Kretser, L. (2001) "Great ally of bowlers", p. 68, Melbourne Herald Sun, 3 July 2001.
- Eyre, R. (2001) "Gil Langley dies aged 81" CricInfo, 15 May 2001. Accessed 31 May 2006.
- Guinness, R. (2001) "Former Test keeper dies", p. 19, The Australian, 16 May 2001.
- O'Brien, S. & Burtenshaw, D. (2001) "Farewell to the odd-job MP and sports legend", p. 13, Adelaide Advertiser, 16 May 2001.
- Penberthy, D. (2001) "Laconic, sporting MP was a great Australian", p. 33, Daily Telegraph, 25 May 2001.
- Ramsey, A. (2001) "Test keeper kept order in the house", p. 17, The Australian, 12 June 2001.
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে গিল ল্যাংলি (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে গিল ল্যাংলি (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
- এএফএল টেবিল পরিসংখ্যানে গিল ল্যাংলি (ইংরেজি)
আরও পড়ুন
[সম্পাদনা]- Brydon Coverdale, "Australia's Winter Allrounders: XI Test Cricketers who played Australian Rules football at the highest level", Cricinfo, 28 May 2007
- "Biography: Gilbert Langley"। Full Points Footy। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- Gilbert Langley: SA Parliament profile
বিধানসভার আসন | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী কলিন ডানেজ |
আনলের সংসদ সদস্য ১৯৬২ – ১৯৮২ |
উত্তরসূরী কিম মেইস |
পূর্বসূরী টেড কনেলি |
দক্ষিণ অস্ট্রেলীয় আইনসভার স্পিকার ১৯৭৭–১৯৭৯ |
উত্তরসূরী ব্রুস ইস্টিক |
- ১৯১৯-এ জন্ম
- ২০০১-এ মৃত্যু
- ২০শ শতাব্দীর অস্ট্রেলীয় রাজনীতিবিদ
- অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার
- অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট ক্রিকেটার
- অস্ট্রেলীয় ক্রীড়াবিদ-রাজনীতিবিদ
- অ্যাডিলেড থেকে আগত ক্রিকেটার
- উইজডেন বর্ষসেরা ক্রিকেটার
- দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার
- মেম্বার্স অব দি অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়া
- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অস্ট্রেলীয় সেনা কর্মকর্তা
- উইকেট-রক্ষক