স্বপনকুমার চক্রবর্তী
স্বপনকুমার চক্রবর্তী | |
---|---|
২০১১ খ্রিস্টাব্দে অধ্যাপক চক্রবর্তী | |
জন্ম | ২৯ জুলাই ১৯৫৪ |
মৃত্যু | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ | (বয়স ৬৭)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
মাতৃশিক্ষায়তন | প্রেসিডেন্সি কলেজ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | লেখক,শিক্ষাবিদ |
দাম্পত্য সঙ্গী | ভাস্বতী চক্রবর্তী |
সন্তান | সৌর চক্রবর্তী |
অধ্যাপক ড.স্বপনকুমার চক্রবর্তী( ২৯ জুলাই ১৯৫৪ — ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১)) [১] ছিলেন একজন বিশিষ্ট লেখক, চিন্তাবিদ এবং ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপক। প্রখ্যাত ভারতীয় এই শিক্ষাবিদ ছিলেন ভারতের জাতীয় গ্রন্থাগারের প্রাক্তন মহাপরিচালক কলকাতার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নামাঙ্কিত মানবিক বিভাগের’ বিশিষ্ট অধ্যাপক, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপক এবং ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলের প্রাক্তন সচিব এবং কিউরেটর। তিনি কলকাতার সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশ্যাল সায়েন্সেস' এর (সিএসএসএসসি), লাইব্রেরি বিষয়ক উপাচার্যের উপদেষ্টা, অশোক বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশিষ্ট ভিজিটিং ফ্যাকাল্টি, এসপি জৈন স্কুল অব গ্লোবাল ম্যানেজমেন্টের চেয়ারপার্সন ছিলেন ।
জীবন[সম্পাদনা]
স্বপন চক্রবর্তীর স্কুলের পড়াশোনা কলকাতা বয়েজ স্কুলে। তারপর প্রেসিডেন্সি কলেজ হতে স্নাতক হন এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরাজী ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট (ডি.ফিল) উপাধি লাভ করেন।
তিনি ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে অধ্যাপনা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন এবং ২০০৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে ২০০৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বিভাগীয় প্রধান ছিলেন। [২]
২০০৮ খ্রিস্টাব্দে অধ্যাপক চক্রবর্তী ভারতের জাতীয় গ্রন্থাগারের মহাপরিচালক নিযুক্ত হন। ২০১০ খ্রিস্টাব্দে প্রেসিডেন্সি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত হলে ২০১১ খ্রিস্টাব্দে তিনি অন্যতম মেন্টর নিযুক্ত হন। ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় হতে অবসরের পর প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তনী অধ্যাপক চক্রবর্তী প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নামাঙ্কিত মানবিক বিভাগের’ বিশিষ্ট অধ্যাপক হন।[৩] তিনি এক সময় স্কুল অফ কালচারাল টেক্সটস অ্যান্ড রেকর্ডসের যুগ্ম পরিচালকও ছিলেন। [২]
অধ্যাপক চক্রবর্তী বিভিন্ন সময়ে নরেন্দ্রপুরের রামকৃষ্ণ মিশন আবাসিক কলেজে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউনিভার্সিটি অফ মালায়া য় অধ্যাপনা করেছেন। এছাড়াও তিনি ভিজিটিং অধ্যাপক হিসাবে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংলিশ স্টাডিজ ইনস্টিটিউট এবং লন্ডনের কিংস কলেজ বক্তৃতা দেন। তিনি বাকিংহামের আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ে হাডসন স্ট্রোড রেনেসাঁ বক্তৃতা প্রদান করেন।
অধ্যাপক চক্রবর্তী সুবক্তা হিসাবে বিশেষ পরিচিত ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে যে যে প্রতিষ্ঠানে তিনি বক্তৃতা করেন সেগুলি হল -
- কলকাতার পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমিতে— ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় স্মারক বক্তৃতা, সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় স্মারক বক্তৃতা এবং জিতেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী স্মারক বক্তৃতা।
- পশ্চিমবঙ্গ নাট্য আকাডেমিতে—শম্ভু মিত্র স্মারক বক্তৃতা।
- পশ্চিমবঙ্গ কবিতা একাডেমিতে—বুদ্ধদেব বসু স্মারক বক্তৃতা, শক্তি চট্টোপাধ্যায় স্মারক বক্তৃতা, সুখলতা রাও স্মারক বক্তৃতা।
- কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে— রণজয় কারলেকর বক্তৃতা।
- বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের বক্তৃতা।
- কলকাতায় পূর্ব ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে — প্রথম সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় স্মারক বক্তৃতা, প্রথম সত্যেন্দ্রপ্রসন্ন মুখার্জি স্মারক বক্তৃতা, কলকাতায় ভাস্কর চক্রবর্তী স্মারক বক্তৃতা,
- গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে— কবীন্দ্রনাথ ফুকন স্মারক বক্তৃতা।
- কলকাতায় প্রদত্ত অন্যান্য বিশেষ বক্তৃতাগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য - সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত স্মারক বক্তৃতা, কল্যাণ মৈত্র স্মারক বক্তৃতা এবং প্রথম রাঘব বন্দ্যোপাধ্যায় স্মারক বক্তৃতা। [৪]
রচিত গ্রন্থাবলি[সম্পাদনা]
- সোসাইটি অ্যান্ড পলিটিক্স ইন দ্য প্লেস অফ থমাস মিডলটন ( অক্সফোর্ড : ক্লারেন্ডন প্রেস, ১৯৯৬)।
- দ্য কালেক্টেড ওয়ার্কস অফ থমাস মিডলটন (অক্সফোর্ড: ক্লারেন্ডন প্রেস, ২০০৭) এবং থমাস মিডলটন এবং আর্লি মডার্ন টেক্সচুয়াল কালচার (অক্সফোর্ড: ক্লারেন্ডন প্রেস, ২০০৭) এর অবদানকারী সম্পাদক। (সাধারণ সম্পাদকের: গ্যারি টেলর এট .; আলাদা ভূষিত বুদ্ধিজীবীর সংস্করণ পুরস্কার দ্বারা আধুনিক ভাষা সমিতির, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র)
- (অভিজিৎ গুপ্তের সাথে সম্পাদিত) প্রিন্ট এরিয়াজ: ভারতে বইয়ের ইতিহাস (নতুন দিল্লি: স্থায়ী কালো, ২০০৪) এবং অস্থাবর প্রকার: ভারতে বইয়ের ইতিহাস II (নতুন দিল্লি: স্থায়ী কালো, ২০০৮)।
- (অভিজিৎ গুপ্তের সাথে সম্পাদিত) মুভেবল টাইপ: ভারতে বইয়ের ইতিহাস (রাণীক্ষেত: স্থায়ী কালো, ২০০))
- (অভিজিৎ গুপ্তের সাথে সম্পাদিত) জ্ঞানের ফোয়ারা: ভারতে বইয়ের ইতিহাস (হায়দ্রাবাদ: ওরিয়েন্ট ব্ল্যাকসওয়ান, ২০১৫)
- ( তানি বার্লো এবং সুজানা মাইলভস্কার সাথে ) গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাকের সাথে কথোপকথন (কলকাতা: সিগল, ২০০৬)
- শেক্সপিয়ার (কলকাতা: প্যাপিরাস, ১৯৯৯)
- বাঙালির ইঙ্গ্রেজি সাহিত্যচর্চা (কলকাতা: অনুষ্টুপ, ২০০৪)
- মুদ্রণের সংস্কৃতি ও বাংলা বই (কলকাতা: আববাস, ২০০)) এর সম্পাদক। ২০১০ খ্রিস্টাব্দে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় নরসিংহ দাস পুরস্কার প্রদান করে।
- নামহীন স্বীকৃতির সম্পাদক : অন্যান্য ভারতীয় সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রভাব (কলকাতা: জাতীয় গ্রন্থাগার, ২০১২)
জীবনাবসান[সম্পাদনা]
ইংরাজী ভাষা ও সাহিত্যের জনপ্রিয় অধ্যাপক স্বপন চক্রবর্তী ২০২১ খ্রিস্টাব্দের ১লা সেপ্টেম্বর কোভিডে আক্রান্ত হয়ে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। কিছু দিন পর তাঁর কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট আসে, অল্প সুস্থও হন, কিন্তু ফুসফুস ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ভেন্টিলেশানে থাকেন এবং অবনতি হয়। শেষে ২৫ শে সেপ্টেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর স্ত্রী ভাস্বতী চক্রবর্তীও কোভিড আক্রান্ত হয়েছিলেন, কিন্তু তিনি সুস্থ হয়ে যান। তাঁর পুত্র সৌর চক্রবর্তী একজন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ও সাংবাদিক। [৫]
প্রবন্ধ[সম্পাদনা]
- আসন্ন ধ্বংস এবং মরিয়া প্রতিকার: কলকাতা এবং এর টুকরা ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৬-১২-০২ তারিখে
- আনন্দবাজারের পত্রিকায প্রকাশিত শিক্ষাবিদ স্বপন চক্রবর্তী প্রয়াত, শোকপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর ( বাংলা: আনন্দবাজার পত্রিকা )
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ "Scholar, prof, students' fav Swapan-da passes away | Kolkata News - Times of India"। The Times of India (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-২৬।
- ↑ ক খ https://web.archive.org/web/20140513235355/http://www.jaduniv.edu.in/htdocs/view_department.php?deptid=135
- ↑ "Professor Swapan Chakravorty passes away(ইংরাজীতে)"। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-০৮।
- ↑ "Raghab Bandyopadhyay Smarak Baktrita - 1"। Tritiyo Parisar। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০২০।
- ↑ "Scholar, prof, students' fav Swapanda passes away"। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-০৮।