সাংলী জেলা
সাংলী জেলা | |
---|---|
মহারাষ্ট্রের জেলা | |
মহারাষ্ট্রের মধ্যে সাংলী জেলার অবস্থান | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | মহারাষ্ট্র |
বিভাগ | পুণে বিভাগ |
সদর শহর | সাংলী |
তালুক | |
সরকার | |
• লোকসভা কেন্দ্র | |
আয়তন | |
• মোট | ৮,৫৭২ বর্গকিমি (৩,৩১০ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ২৮,২২,১৪৩ |
• জনঘনত্ব | ৩৩০/বর্গকিমি (৮৫০/বর্গমাইল) |
• পৌর এলাকা | ২৫.১১% |
জনমিতি | |
• সাক্ষরতা | ৮২.৪১% |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+05:30) |
জাতীয় সড়ক | জাতীয় সড়ক-৪, জাতীয় সড়ক-২০৪ |
গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত | ৪০০-৪৫০ মিমি |
ওয়েবসাইট | http://sangli.gov.in/ |
সাংলী জেলা পশ্চিম-ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের একটি প্রশাসনিক জেলা। সাংলী শহরটি জেলা সদর। জেলার ২৫.১১% অঞ্চল শহরাঞ্চল। সাংলী এবং মিরাজ বৃহত্তম শহর। কিরলস্করওয়াড়ির শিল্প শহরটিও সাংলী জেলায় অবস্থিত। শিল্পপতি লক্ষ্মণরাও কির্লোস্কার এখানে প্রথম কারখানা শুরু করেছিলেন। আখের উচ্চ উত্পাদনশীলতার কারণে এটি ভারতের চিনির বাটি হিসাবে পরিচিত। সাংলী জেলা মহারাষ্ট্রের অন্যতম উর্বর এবং উচ্চ বিকাশযুক্ত জেলা। জেলাটি রাজ্যের একটি রাজনৈতিক পাওয়ার হাউস হিসাবে খুব জনপ্রিয়। এটি অনেক রাজনীতিবিদ এবং আমলা সরবরাহ করেছে এবং কৃষকদের স্বর্গ হিসাবে পরিচিত।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]সাংলী জেলা একটি সাম্প্রতিক সৃষ্টি, ১৯৪৯-এর শেষদিকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি তখন দক্ষিণ সাতারা নামে পরিচিত ছিল এবং ১৯৬১ সাল থেকে এর নাম পরিবর্তন করা হয় সাংলী। এটি আংশিকভাবে কয়েকটি তালুক নিয়ে গঠিত যা এককালে সাতারা জেলার অংশ ছিল। সাংলীর আশেপাশের কুন্ডাল অঞ্চলটি ছিল চালুক্যদের রাজধানী। প্রায় ১৬০০ বছর পুরানো কুন্ডাল অঞ্চলটি যা কৌন্ডান্যপুর নামে পরিচিত ছিল, মূলত কর্ণাটকের একটি অংশ ছিল।[২]
ভূগোল
[সম্পাদনা]সাংলী জেলা মহারাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। এটি উত্তরে সাতারা ও সোলাপুর জেলা, পূর্বে কর্ণাটক রাজ্যের বিজয়পুর জেলা, দক্ষিণে কোল্হাপুর জেলা এবং কর্ণাটকের বেলগাভি জেলা এবং পশ্চিমে রত্নগিরি জেলা দ্বারা সীমাবদ্ধ।
সাংলী জেলা বর্না ও কৃষ্ণা নদীর অববাহিকায় অবস্থিত। অন্যান্য ছোট ছোট নদী যেমন ওয়ারানা এবং পঞ্চগঙ্গা নদী কৃষ্ণা নদীতে প্রবাহিত হয়। এই অঞ্চলের জমি কৃষিকাজের জন্য উপযুক্ত।
সাংলী জেলার ভূপ্রকৃতি আশেপাশের জেলাগুলির থেকে পৃথক। পূর্ব্দিকের শিরালা, ওয়ালওয়া, পালুসের মত মহকুমাগুলি উচ্চ বৃষ্টিপাত এবং বন্যার জন্য বিখ্যাত। ২০০৫ সালের বন্যায় দুধনদী, পুনাদি, খেড়, ওয়ালওয়া ইত্যাদি অনেকগুলি গ্রাম নিমজ্জিত হয়েছিল
অন্যদিকে পশ্চিমের মহকুমাগুলি খরা এবং ট্যাংকারবাহিত পানীয় জলের সরবরাহ ব্যবস্থার জন্য বিখ্যাত। তবে সাম্প্রতিক প্রকল্পগুলি টেম্বু-মহিষাল যোজনা, টাকারি প্রকল্প (টাকারি শহরে অবস্থিত এবং সাগরেশ্বরের বন্যজীবন অভয়ারণ্য অঞ্চলে জলের উত্তোলন এবং সংরক্ষণ), ভিটা জল প্রকল্প (দুধোন্ডি এবং ঘোগোয়ান গ্রামে অবস্থিত) এই অঞ্চলের জলসীমার পরিবর্তন করছে। এই জল প্রকল্পগুলি কৃষ্ণা নদীর উপর অবস্থিত।
পর্যটন
[সম্পাদনা]সাগরেশ্বর বন্যজীবন অভয়ারণ্য ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের একটি সুরক্ষিত অভয়ারণ্য। এটি সাংলী জেলার তিনটি মহকুমা নিয়ে অবস্থিত: কাড়েগাঁও, ওয়ালভা এবং পালুস। বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যটি মানবসৃষ্ট; বন্যজীবনের বেশিরভাগ প্রজাতিই কৃত্রিমভাবে চালু হয়েছিল। এটির ক্ষেত্রফল প্রায় ১১ বর্গ কিলোমিটার। এতি একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। আগস্ট থেকে ফেব্রুয়ারি ভ্রমণের জনপ্রিয় সময়। সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন কার্যকলাপ হাইকিং করে পাহাড়ের শীর্ষে ওঠা, যেখান থেকে আখের খেতের মধ্যে দিয়ে কৃষ্ণা নদীকে বয়ে যেতে দেখা যায়।
সাতবাহন আমলে প্রতিষ্ঠিত সাগরেশ্বর শিবমন্দির একটি জনপ্রিয় তীর্থ। এটি আসলে একটি বৃহত ক্ষেত্র যা ৫১টি ছোট ছোট মন্দিরের সমন্বয়ে গঠিত। এছাড়াও এই অঞ্চলে অনেক শিবমন্দির রয়েছে, যা চালুক্য রাজাদের দ্বারা নিররমিত হয়েছিল।
কমল ভাইরাও মন্দিরটিও দেখার মত, যা শক্ত বেসাল্ট শিলা দিয়ে নির্মিত।
পালুসের কৃষ্ণা ভ্যালি ওয়াইন পার্ক ও একটি জনপ্রিয় ভ্রমণ স্থান।
জনমিতি
[সম্পাদনা]বছর | জন. | ±% |
---|---|---|
১৯০১ | ৬,৪৫,৬৯৬ | — |
১৯১১ | ৬,১৩,৭৫১ | −৪.৯% |
১৯২১ | ৫,৯৭,৩৭১ | −২.৭% |
১৯৩১ | ৭,০৮,৮৫৮ | +১৮.৭% |
১৯৪১ | ৮,১৪,৪৪৯ | +১৪.৯% |
১৯৫১ | ১০,০০,৩৭৫ | +২২.৮% |
১৯৬১ | ১২,৩২,৯৮৬ | +২৩.৩% |
১৯৭১ | ১৫,৪২,৫৬০ | +২৫.১% |
১৯৮১ | ১৮,৩৪,২৯৩ | +১৮.৯% |
১৯৯১ | ২২,০৯,৪৮৮ | +২০.৫% |
২০০১ | ২৫,৮৩,৫২৪ | +১৬.৯% |
২০১১ | ২৮,২২,১৪৩ | +৯.২% |
২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী সাংলী জেলার জনসংখ্যা ২,৮২২,১৪৩ জন [৩] যা প্রায় জামাইকা[৪] রাষ্ট্রের জনসংখ্যা অথবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কানসাস [৫] রাজ্যের জনসংখ্যার সমতুল্য। জনসংখ্যার বিচারে ভারতের ৬৪০টি জেলার মধ্যে সাংলীর স্থান ১৩৭তম। জেলায় জনসংখ্যার ঘনত্ব ৩২৯ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (৮৫০ জন/বর্গমাইল)। ২০০১ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে জেলার জনসংখ্যা-বৃদ্ধির হার ছিল ৯.১৮ শতাংশ। জেলার লিঙ্গানুপাত প্রতি ১০০০ জন পুরুষ পিছু ৯৬৪ জন নারী এবং সাক্ষরতার হার ৮২.৬২ শতাংশ।
ভাষা ভিত্তিক জনমিতি
[সম্পাদনা]ভারতের ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী জেলার জনসংখ্যার ৮৫.৯৭% মারাঠি ভাষা, ৫.২২% হিন্দি ভাষা, ৫.০৯% কন্নড় ভাষা, ২.৩৮% উর্দু ভাষা এবং ০.৫০%তেলুগু ভাষায় কথা বলেন[৬]।
সংস্কৃতি
[সম্পাদনা]কুন্ডাল বীরভদ্র মন্দির পাহাড়ের কাছে অবস্থিত। এই মন্দিরটির ৩০০ বছরের ইতিহাস রয়েছে। কুন্ডাল হ'ল দিগম্বর জৈনদের তীর্থস্থান, প্রতি বছর হাজার হাজার জৈন ধর্মাবলম্বী মানুষ এখানে মহারাজা জয়সিংয়ের স্মৃতিবিজড়িত মন্দিরপরিদর্শনে আসেন।
কুন্ডাল জারি পার্শ্বনাথ সহ বিভিন্ন পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত।এখানে দুটি গুহায় মহাবীরের প্রতিমা এবং রাম, সীতা এবং লক্ষ্মণের চিত্র রয়েছে। অন্য একটি পাহাড়ের চূড়ায় বৃহত উন্মুক্ত স্থান সমব শরণও জৈনদের দ্বারা পবিত্র হিসাবে বিবেচিত হয়। তারা বিশ্বাস করেন যে মহাবীর এখানে তাঁর অনুগামীদের প্রবচন দিয়েছিলেন।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Election Commission website ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৬ মার্চ ২০০৯ তারিখে
- ↑ "Chalukya capital tells a tale of ruin"। Radhesham Jadhav। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৪-১৪।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;districtcensus
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ US Directorate of Intelligence। "Country Comparison:Population"। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১১।
Benin 9,325,032
- ↑ "2010 Resident Population Data"। U. S. Census Bureau। ২৩ আগস্ট ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১১।
North Carolina 9,535,483
- ↑ 2011 Census of India, Population By Mother Tongue