শুক্রবার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

শুক্রবার (আধ্বব: [śukrabāra]; উচ্চারিত হয় "শুক্ক্রো‌বার্‌") হলো সপ্তাহের সাত দিনের একটি দিন, অনেক দেশে যা, স্কুল বা কর্মক্ষেত্রে, সপ্তাহের শেষ দিন হিসেবে পরিগণিত। যেসকল দেশে, আন্তর্জাতিক মাননিয়ন্ত্রক আইএসও ৮৬০১ প্রস্তাবিত "প্রথমে-সোমবার" রীতি গৃহীত হয়েছে (অর্থাৎ সপ্তাহের সূচনা সোমবার থেকে ধরা হয়), সেসব দেশে দিনটি সপ্তাহের পঞ্চম দিন। ইব্রাহীমিয় ঐতিহ্যানুসারে যেসব দেশে "প্রথমে-রোববার" রীতি গৃহীত হয়েছে, সেসব দেশে দিনটি সপ্তাহের ষষ্ঠ দিন।

অনেক দেশে, যেখানে পাঁচ দিন কর্মদিবস থাকে, শুক্রবার দিন হয় সেখানকার, সাপ্তাহিক ছুটির আগের সর্বশেষ কর্মদিবস। আর তাই এই দিনটিকে দেখা হয় উদ্‌যাপনের কারণ বা প্রশান্তির কারণ হিসেবে (যা "TGIF"-এর মতো প্রবচনের তৈরি করেছে, যদ্বারা বোঝায় "Thank God It's Friday" বা "আজ শুক্রবার, ধন্যবাদ ঈশ্বর")। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিছু কিছু অফিসে শুক্রবার দিনে, কর্মীদেরকে খানিকটা অনানুষ্ঠানিক পোশাক পরার সুযোগ দেয়া হয়, যে দিনটিকে "ক্যাযুয়্যাল ফ্রাইডে" (স্বাভাবিক শুক্রবার) বা "ড্রেস-ডাউন ফ্রাইডে" ([আনুষ্ঠানিক]পোশাক উত্তরক শুক্রবার) হিসেবে অনেকে চেনেন।

সৌদি আরব এবং ইরানে, শুক্রবার দিন হলো সপ্তাহের শেষ দিন, এবং শনিবার হলো নতুন কর্মদিবস। ইরানে, এটাই একমাত্র সাপ্তাহিক ছুটির দিন। যদিও অনেক দেশে, শুক্রবারকে সপ্তাহের প্রথম ছুটির দিন ধরা হয় এবং রবিবারকে প্রথম কর্মদিবস ধরা হয়। বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত (UAE) এবং কুয়েতে শুক্রবার দিনটি ছিলো সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং শনিবার ছিলো প্রথম কর্মদিবস। যদিও বাহরাইন এবং আরব আমিরাতে ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দের ১ সেপ্টেম্বর তা পরিবর্তন করা হয়[১], এবং পরিবর্তিত সময় হিসাবে শুক্রবারকে সপ্তাহিক ছুটির প্রথম দিন আর রবিবারকে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস ধরা হয়; ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের ১ সেপ্টেম্বর থেকে কুয়েতও তা অনুসরণ করে। বাংলাদেশেও একইভাবে শুক্রবারকে সাপ্তাহিক ছুটির প্রথম দিন এবং রবিবারকে প্রথম কর্মদিবস হিসেবে ধরা হয়।

শব্দগত উৎপত্তি[সম্পাদনা]

জন চার্লস ডলম্যানের আঁকা, মেঘ বুনছেন ফ্রিগ (Frigg)

ইংরেজি "ফ্রাইডে" (Friday) শব্দটি এসেছে পুরোন ইংরেজির "ফ্রিগেদেগ" (frīgedæg) থেকে, যার মানে হলো "ফ্রিগের (Frige) দিন", যার ল্যাটিন অনুবাদ হলো "দিয়েয ভেনেরিস (Veneris)" বা ভেনেরিসের দিন। একই রূপ রয়েছে পুরোন উচ্চ জার্মান ভাষায় "ফ্রিয়াতাগ" (Frīatag) হিসেবে, আধুনিক জার্মান ভাষায় "ফ্রেইতাগ" (Freitag) হিসেবে এবং ডাচ ভাষায় "ভ্রিজদাগ" (Vrijdag) হিসেবে।


ধর্মীয় প্রেক্ষাপট[সম্পাদনা]

হিন্দুধর্ম[সম্পাদনা]

ভৃগু এবং কাব্যমাতার (উসনা) পুত্র শুক্রের নামে দিনটির নামকরণ করা হয়েছে । হিন্দুধর্মে, শুক্রবার দেবীর রূপ, যেমন দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কালী বা পার্বতীর জন্য বিশেষ পালন করা হয় । শুক্রবার বিবাহিত মহিলাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং তারা সেই দিন দেবীর পূজা করে।

ইসলাম[সম্পাদনা]

মালয়েশিয়ার মসজিদে মুসলমানদের শুক্রবার দিনের জুমআ'র নামায

ইসলাম ধর্মমতানুযায়ী শুক্রবার দিনে সকল মুসলমান মসজিদে একত্রিত হয়ে ইমামের পিছনে দলবদ্ধভাবে জুম'আর নামায আদায় করেন। এই নামাযে সমসাময়িক বিষয়াদি সম্পর্কে খুৎবায় মুসলমানদেরকে অবহিত করা হয়। মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ট দেশসমূহে তাই সাধারণত এই দিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকে। যদিও খ্রিষ্টপ্রধান দেশসমূহে সাধারণত রবিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকে।

খ্রিষ্টধর্ম[সম্পাদনা]

খ্রিষ্টধর্মের মতানুসারে ঈস্টারের আগের শুক্রবার দিনটিকে গুড ফ্রাইডে হিসেবে উদ্‌যাপন করা হয়। এই দিনে যিশুর ক্রুশবিদ্ধ হওয়াকে স্মরণ করা হয়।

ইহুদি[সম্পাদনা]

ইহুদি মতানুসারে সাবাত উদাযাপন শুরু হয় শুক্রবার দিনের সূর্যাস্তের মাধ্যমে, আর চলতে থাকে শনিবার দিনের রাত নামার আগ পর্যন্ত।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]