লাসুবন গিরিখাত

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
লাসুবন গিরিখাত
উচ্চতা১,৬৪০ ফুট (৫০০ মিটার)
অবস্থানশ্রীমঙ্গল

লাসুবন গিরিখাত হচ্ছে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি প্রাচীন গিরিখাত[১][২] যার অবস্থান ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্তবর্তী সিন্দুরখান ইউনিয়নের ঘন জঙ্গলবেষ্ঠিত পাহাড়ি এলাকায়।[৩]

নামকরণ[সম্পাদনা]

খাসি ভাষায় লাসুবন শব্দের অর্থ হলো পাহাড়ি ফুল বা জংলি ফুল।[৪] দাপ্তরিককাজে লাসুবন গিরিখাত নাম হলেও শ্রীমঙ্গল গিরিখাত নামেই স্থানীয়দের কাছে বহুল পরিচিত। ছোট-বড় অনেকগুলো পাথুরে ছড়া বা ঝিরি রয়েছে এই গিরিখাতে। তবে এই এলাকায় বড় তিনটি গিরিখাতের সন্ধান পাওয়ায় এটি পর্যটকদের নজরে আসে।[৫] যা স্থানীয় খাসি ভাষায় ক্রেম ক্লু, ক্রেম কেরি ও ক্রেম উল্কা নামে প্রচলিত।[৬]

সন্ধান[সম্পাদনা]

সীমান্ত এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশ দেখতে গিয়ে শ্রীমঙ্গলের এক গণমাধ্যমকর্মী এবং কয়েকজন প্রকৃতিপ্রেমী ঘন জঙ্গলের ভিতরে খুঁজ পান এই গিরিখাতের। বিষয়টি তারা মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করেন।[৭] গিরিখাতের এই বিশেষ জায়গাটির অবস্থান রাজধানী শহর ঢাকা থেকে প্রায় ২১৫ কিলোমিটার এবং মৌলভীবাজার জেলা শহর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে।

গঠন[সম্পাদনা]

লাসুবন গিরিখাত গুলোর কোনটা এক কিলোমিটার, আবার কোনটা এর চেয়ে কম। নিচে নামলে হঠাৎ যদি উপর থেকে পানি নামে তাহলে উপরে ওঠার কোন পথ থাকে না বলে এই গিরিখাতগুলোতে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। কিছু কিছু জায়গা আবার খাড়া পাথরের দেয়াল[৩] যেখানে খুব সহজে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। স্থানীয় নাহার খাসিয়া পুঞ্জির অভ্যন্তরে গিরিখাত এলাকাটির অবস্থান। লাংগুলিয়া ছড়া নামের একটি পাহাড়ি ছড়া ধরে পুরো এলাকাটি ঘুরে আসা যায়। যেটি ভারতের ত্রিপুরা থেকে নেমে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ছড়াটি প্রায় ২৫ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে মিশেছে শ্রীমঙ্গলের বিলাস ছড়ায়। সর্পিল বাঁক নিয়ে চলা ছড়ার সাথে মিশেছে আরও প্রায় শ’খানেক ছোট-বড় পাথুরে ছড়া।[৪] এর মধ্যে কয়েকটি গিরিখাত রয়েছে।

পাহাড় থেকে ৫০০ মিটার নিচে এসব গিরিখাত কোথাও আকারে চ্যাপ্টা আবার কোথাও সরু।[৬] ফলে একেবারে নিচের বা ভেতরের অংশে সূর্যের আলো পৌঁছানোর সুযোগ নেই। স্থানীয়রা এটিকে উল্কা বলে ডাকেন। ছোট ছোট ঝিরিধারায় শোনা যায় অবিরাম জলের শব্দ।[১] তবে বর্ষা মৌসুমে পানির প্রবাহ বেশি থাকে পাহাড়ের বুক বেয়ে নেমে আসা এসব ছোট ঝিরিগুলোতে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "শ্রীমঙ্গলে নতুন পর্যটন স্পট 'লাসুবন'"বণিক বার্তা। জুন ২১, ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০২২ 
  2. "শ্রীমঙ্গলের গিরিখাত"দৈনিক সমকাল। ২০ জুলাই ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০২৩ 
  3. "শ্রীমঙ্গলে দুর্গম পাহাড়ে তিনটি প্রাচীন সরু গিরিখাতের সন্ধান"ডিবিসি নিউজ। ১৬ জুন ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০২২ 
  4. "'লাসুবন'- শ্রীমঙ্গলে প্রাচীন গিরিখাতের সন্ধান!"। eyenews.com। ১৬ জুন ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০২২ 
  5. "ঘুরে আসুন শ্রীমঙ্গলের লাসুবন গিরিখাত"। sylhet-tribune। নভেম্বর ১৩, ২০২২। জানুয়ারি ১১, ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০২৩ 
  6. "'লাসুবন' শ্রীমঙ্গলের নতুন পর্যটন স্পট"বৈশাখ নিউজ। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০২২ 
  7. "শ্রীমঙ্গলের লাসুবনে সন্ধান মিলল তিন গিরিখাতের"দৈনিক জনকণ্ঠ। ২৩ জুন ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০২৩