রমনা পার্ক
রমনা পার্ক রমনা উদ্যান | |
---|---|
![]() রমনা পার্কে সেগুন গাছের সারি | |
![]() | |
ধরন | নগর উদ্যান |
অবস্থান | রমনা, ঢাকা, বাংলাদেশ |
স্থানাঙ্ক | ২৩°৪৪′১৭″ উত্তর ৯০°২৪′০৪″ পূর্ব / ২৩.৭৩৮০° উত্তর ৯০.৪০১২° পূর্ব |
আয়তন | ৬৮.৫ একর (২৭.৭ হেক্টর) |
খোলা | সারা বছর উন্মুক্ত |
রমনা পার্ক বা রমনা উদ্যান ঢাকা শহরের রমনা এলাকায় অবস্থিত একটি উদ্যান। এখানে প্রতি বছর পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এটি রাজধানীবাসীর প্রাতঃভ্রমণের মূল কেন্দ্র।[১]
ইতিহাস[সম্পাদনা]
এই উদ্যানটি ১৬১০ সালে মোঘল আমলে প্রতিষ্ঠা করা হয়। সেই সময়ে রমনার পরিসীমা ছিল বিশাল এলাকা জুড়ে। মোঘলরাই রমনার নামকরণ করেন। পুরানো হাইকোর্ট ভবন থেকে পূর্বের সড়ক ভবন পর্যন্ত মোঘলরা বাগান তৈরী করেছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে কোম্পানী আমলে এ এলাকা জঙ্গলে পরিণত হয়। পরবর্তিতে ১৮২৫ সাল থেকে ব্রিটিশ কালেক্টর ডাউইজের সময় ঢাকা নগর উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় যার অন্যতম ছিল রমনা এলাকার উন্নয়ন। এ সময় এলাকার একটি অংশ ঘেরাও করে ঘোড়দৌড় বা রেসকোর্সের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আর অন্য অংশটিকে রমনা গ্রিন নাম দিয়ে যাত্রা শুরু করে আজকের রমনা পার্ক। এ সময় ঢাকার নবাব পরিবার এখানে একটি রাজকীয় বাগান তৈরি করেন যার নাম দেওয়া হয় 'শাহবাগ'। তখন পার্কের আয়তন ছিল প্রায় ৮৯ একর। এ সময় ঢাকার নবাবরা এখানে একটি চিড়িয়াখানাও গড়ে তোলেন।[২] ১৯ শতকে ব্রিটিশ শাসক এবং ঢাকার নবাবদের সহায়তায় এটির উন্নয়ন সাধন করা হয়। ঢাকা শহরের নিসর্গ পরিকল্পনার কাজ শুরু হয়েছিল ১৯০৮ সালে লন্ডনের কিউই গার্ডেনের অন্যতম কর্মী আর. এল প্রাউডলকের তত্ত্বাবধানে। শহরের সেই নিসর্গ পরিকল্পনার ফল ছিল রমনা পার্কের উন্নয়ন। ২০ বছর লেগেছিল সে কাজ শেষ হতে। [৩] যা ১৯২৮ সালে শেষ হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পরও রমনা ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হিসেবেই থেকে যায়। শাহবাগ থেকে ইডেন বিল্ডিং (সচিবালয়) পর্যন্ত নতুন একটি রাস্তা করা হয় এবং এই রাস্তার পূর্বদিকের অংশ হয় বর্তমান রমনা পার্ক। বর্তমানের সুপ্রীম কোর্ট ভবনের উত্তর-পূর্ব কোণের চিড়িয়াখানাটি তখনও বিদ্যমান ছিল। চিড়িয়াখানার প্রাণীদের মধ্যে ছিল শুধু গুটিকয়েক বাঘ, ভালুক এবং বিভিন্ন জাতের কিছু পাখি। পরে চিড়িয়াখানাটি মীরপুরে তার বর্তমান অবস্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়।[৪] তবে আনুষ্ঠানিকভাবে রমনা পার্ক উদ্বোধন করা হয় ১৯৪৯ সালে।
বর্তমানে রমনা পার্কে প্রতি বছর পহেলা বৈশাখে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হয়। রমনার বটমুলে ছায়ানটের আয়োজনে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান এখন অনেক জনপ্রিয়। রাজধানীতে প্রাতভ্রমণের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র রমনা পার্ক। এটি ‘ঢাকার ফুসফুস’ হিসেবেও পরিচিত । প্রতিদিন সকালে ও বিকালে এখানে হাঁটতে ও ব্যায়াম করতে আসেন কয়েক হাজার মানুষ।[৫]
আয়তন[সম্পাদনা]
এর আয়তন ৬৮ দশমিক ৫ একর। এর ভেতরে একটি লেক আছে যার আয়তন ৮ দশমিক ৭৬ একর। [৬]
উদ্ভিদ প্রজাতির সংখ্যা[সম্পাদনা]
রমনা পার্কে বর্তমানে উদ্ভিদ প্রজাতি ২১১টি। এর মধ্যে ফুল ও শোভাবর্ধক প্রজাতির সংখ্যা ৮৭টি, ফলজাতীয় উদ্ভিদ ৩৬টি, ঔষধি প্রজাতি ৩৩টি, কৃষি বনায়নের উদ্ভিদ প্রজাতি ৩টি, বনজ উদ্ভিদ প্রজাতি ২টি, জলজ উদ্ভিদ প্রজাতি ২টি ও মশলা উদ্ভিদ প্রজাতি ৩টি।[৭]
বিরল প্রজাতির গাছ[সম্পাদনা]
রমনা পার্কে বেশ কিছু বিরল প্রজাতির গাছ আছে। এর কয়েকটি হলো পাদাউক, পলাশ, ধারমার, কাউয়াতুতি (বনপারুল), আগর, জ্যাকারান্ডা, তমাল, বাওবাব, গি¬রিসিডিয়া, কর্পূর, স্কারলেট কর্ডিয়া, জহুরিচাঁপা, ক্যাশিয়া জাভানিকা, মাধবী, মালতী, আফ্রিকান টিউলিপ, কেয়া, অশোক, ট্যাবেবুয়া, পাখি ফুল, কফি, উদয়পদ্ম, সহস্রবেলী, গোল্ডেন শাওয়ার, পালাম, কাউফল, ঝুমকো, লতা পারুল, স্থলপদ্ম, মহুয়া, কুর্চি, বন আসরা, চন্দন, মাকড়িশাল, দুলিচাঁপা, কনকচাঁপা[৮], অঞ্জন[৯] ইত্যাদি।
রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান[সম্পাদনা]
প্রতি বছর বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখ ভোরে রমনা পার্কের রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। সংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট এটি আয়োজন করে। ছায়ানট ১৯৬৭ সালের পহেলা বৈশাখ (১৩৭৪ বঙ্গাব্দ) থেকে এখানে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান করে আসছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাদে অদ্যাবধি এই উৎসব হয়ে আসছে। বর্তমানে এটি জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে। আপামর জনসাধারণ পহেলা বৈশাখ ভোরে রমনা বটমূলে এসে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নেয়।[১০]
শিশু প্রাঙ্গণ[সম্পাদনা]
রমনা পার্কের ভিতর একটি শিশু প্রাঙ্গণ রয়েছে। শিশুদের বিনোদনের জন্য এখানে দোলনা, ঢেঁকিকল সহ বেশ কিছু খেলার উপকরণ আছে। [১১]
চিত্রশালা[সম্পাদনা]
রমনা পার্কে কুসুম বৃক্ষ। বসন্তে এর কচি পাতায় লাল রঙের নানা আভা দেখা যায়
রমনা পার্কে মণিমালা ফুল, বসন্তে গোলাপি- বেগুনি রঙের ছোট ছোট ফুল ফোটে
রমনা পার্কে হাঁটার পথে একটি কাঠবিড়ালী
রমনা পার্কে ডালিয়ার বাগান

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ নিয়মিত হাঁটুন, সমকাল,১৪ নভেম্বর ২০১৭
- ↑ "মোগলদের প্রকৃতি প্রেমের চিহ্ন হয়ে টিকে আছে আজকের রমনা পার্ক, দৈনিক সংগ্রাম, ১৪ জুলাই ২০১৯"। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০।
- ↑ মুনতাসীর মামুন, "ঢাকা: স্মৃতি বিস্মৃতির নগরী", পরিবর্ধিত সংস্করণ, জুলাই ২০০৮, অনন্যা প্রকাশনী, ঢাকা, পৃষ্ঠা ২১৭, ২২৩, আইএসবিএন ৯৮৪-৪১২-১০৪-৩
- ↑ রমনা রেসকোর্স, বাংলাপিডিয়া
- ↑ ‘ঢাকার ফুসফুসে’ প্রতিদিন প্রাতভ্রমণ (ফটো স্টোরি), বাংলা ট্রিবিউন, ২৬ নভেম্বর ২০২২
- ↑ বাংলাদেশ প্রতিদিন, ৭ নভেম্বর ২০১৬
- ↑ "ইত্তেফাক, ৩০ জুলাই ২০১৬"। ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯।
- ↑ "বাংলানিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম, ১৫ মে ২০১১"। ১৮ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ অক্টোবর ২০১৯।
- ↑ অপরূপ অঞ্জন ফুল, সমকাল, ২৬ অক্টোবর ২০২১
- ↑ ৫০ বছরে চেতনার বাতিঘর রমনা বটমূল, চ্যানেল আই অনলাইন ডটকম, ১৩ এপ্রিল ২০১৬
- ↑ রমনা শিশু পার্কে শিশুদের ভীড়, বিডিনিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |