মিলড্রেড হ্যারিস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মিলড্রেড হ্যারিস
Mildred Harris
হ্যারিস, আনু. ১৯১৮-২০
জন্ম(১৯০১-১১-২৯)২৯ নভেম্বর ১৯০১
মৃত্যু২০ জুলাই ১৯৪৪(1944-07-20) (বয়স ৪২)
লস অ্যাঞ্জেলেস, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মৃত্যুর কারণনিউমোনিয়া
পেশাঅভিনেত্রী
কর্মজীবন১৯১২–১৯৪৪
দাম্পত্য সঙ্গীচার্লি চ্যাপলিন (বি. ১৯১৮; বিচ্ছেদ. ১৯২০)[১]
এভারেট টেরেন্স ম্যাকগভার্ন (বি. ১৯২৪; বিচ্ছেদ. ১৯২৯)
উইলিয়াম পি. ফ্লেকেনস্টাইন (বি. ১৯৩৪; মৃ. ১৯৪৪)
সন্তান

মিলড্রেড হ্যারিস (ইংরেজি: Mildred Harris; ২৯ নভেম্বর, ১৯০১ – ২০ জুলাই, ১৯৪৪) ছিলেন ২০শ শতাব্দীর শুরুর দিকের একজন মার্কিন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী।[২] তিনি চার্লি চ্যাপলিনের প্রথম স্ত্রী। হ্যারিস ১০ বছর বয়সে শিশু অভিনেত্রী হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র দ্য পোস্ট টেলিগ্রাফার (১৯১২)। তিনি প্রথম সবাক চলচ্চিত্র মেলোডি অব লাভ (১৯২৮) এ অভিনয় করেন। তিনি হলিউডের নির্বাক চলচ্চিত্র যুগের অন্যতম প্রচারণা এবং পারশ্রমিকপ্রাপ্ত অভিনেত্রী ছিলেন।[৩]

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

হ্যারিস ১৯০১ সালে ২৯ নভেম্বর শাইয়েন, ওয়াইয়োমিং এ জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা হ্যারি হ্যারিস ছিলেন একজন টেলিগ্রাফ পরিচালক এবং মাতা অ্যানা পারসন্স ফুট। হ্যারিস ১০ বছর বয়সে শিশু অভিনেত্রী হিসেবে অভিনয় শুরু করেন।[৩] ফ্রান্সিস ফোর্ড ও থমাস এইচ ইঞ্চ পরিচালিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র দ্য পোস্ট টেলিগ্রাফার (১৯১২) দিয়ে তিনি পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন। পরবর্তীতে তিনি শিশু অভিনেত্রী হিসেবে শিশু অভিনেতা পল উইলিসের বিপরীতে কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ১৯১৪ সালে দ্য ওজ ফিল্ম ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি তাকে দ্য ম্যাজিক ক্লোক অব অজ চলচ্চিত্রে ফ্লাফ ও হিজ ম্যাজেস্টি, দ্য স্কেয়ারক্রো অব অজ চলচ্চিত্রে বাটন-ব্রাইট চরিত্রে অভিনয়ের জন্য নিয়োগ দেয়। ১৯১৬ সালে ১৫ বছর বয়সে তিনি গ্রিফিথের মহাকাব্যিক ইনটলারেন্স চলচ্চিত্রে হারেম কন্যা চরিত্রে অভিনয় করেন।

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

১৯১৮ সালে মাঝামাঝিতে ১৬ বছর বয়সী হ্যারিসের সাথে অভিনেতা চার্লি চ্যাপলিনের সাক্ষাৎ হয়। তারা একে অপরের সাথে কিছুদিন মেলামেশার পর হ্যারিস জানান যে তিনি অন্তঃসত্ত্বা এবং তার পেটে চ্যাপলিনের সন্তান। কিন্তু তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়। ১৯১৮ সালের ২৩ অক্টোবর তারা লস অ্যাঞ্জেলেসে বিবাহ করেন। পরে তিনি সত্যিই অন্তঃসত্ত্বা হন।[৪] ইতোমধ্যে লুইস বি মেয়ারের সাথে হ্যারিসের চুক্তি ও তার অভিনয় জীবন নিয়ে তাদের দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়। চ্যাপলিন ভাবতেন হ্যারিস তার বুদ্ধিমত্তার সমতুল্য নন। তাদের সন্তান নরম্যান স্পেন্সার ১৯১৯ সালে জুলাইয়ে মাত্র তিনদিন বয়সে মারা যায়।[৫] ১৯১৯ সালের শরতে তারা আলাদা হয়ে যান।[৪]

চ্যাপলিন লস অ্যাঞ্জেলেসের অ্যাথলেটিক ক্লাবে চলে যান। হ্যারিস চ্যাপলিনের সাথে দেখা করার চেষ্টা করতেন এবং ভাবতেন এখন সুখী দাম্পত্য জীবন সম্ভব। কিন্তু ১৯২০ সালে তিনি মানসিক অত্যাচারের কারণ দেখিয়ে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করেন। চ্যাপলিনও তার বিরুদ্ধে পরকীয়ার দোষ চাপান এবং যদিও তিনি হ্যারিসের প্রেমিকের নাম প্রকাশ করেন নি, আলা নাজিমোভাকে সন্দেহ করা হত।[৬] ১৯২০ সালের নভেম্বরে বিবাহ বিচ্ছেদ চূড়ান্ত হয় এবং হ্যারিস মামলার নিষ্পত্তি হিসেবে ১০০,০০০ মার্কিন ডলার ও কিছু সম্পত্তি লাভ করেন।[১]

১৯২৪ সালে হ্যারিস এভারেট টেরেন্স ম্যাকগভার্নকে বিয়ে করেন। তাদের দাম্পত্য জীবনের সমাপ্তি ঘটে ১৯২৯ সালে ২৬ নভেম্বর। হ্যারিস তাকে পরিত্যাগের জন্য লস অ্যাঞ্জেলেসে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করে। এই দম্পতির এক পুত্র ছিল। তাদের পুত্র এভারেট টেরেন্স ম্যাকগভার্ন জুনিয়র ১৯২৫ সালে জন্মগ্রহণ করে। ১৯৩৪ সালে নর্থ ক্যারোলিনার অ্যাশভিলে হ্যারিস ফুটবলার উইলিয়াম পি ফ্লেকেনস্টাইনকে বিয়ে করেন।[৭]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

হ্যারিস নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর একটি বড় অস্ত্রোপচারের পর ১৯৪৪ সালের ২০ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন। তিনি তিন সপ্তাহ অসুস্থ ছিলেন।[২] তাকে লস অ্যাঞ্জেলেসের হলিউড ফরেভার সিমেট্রির অ্যাবে অব দ্য সাল্মস মিউজোলিয়ামে সমাহিত করা হয়।

উত্তরাধিকার[সম্পাদনা]

লস অ্যাঞ্জেলেসের ৬৩০৭ হলিউড বলেভার্ডে হলিউড ওয়াক অব ফেমে হ্যারিসের নামে একটি তারকা রয়েছে। ১৯৯২ সালে চ্যাপলিনের জীবনীমূলক চলচ্চিত্র চ্যাপলিন-এ মিলা জভোভিচ তার ভূমিকায় অভিনয় করেন।

চলচ্চিত্রের তালিকা[সম্পাদনা]

  • দ্য পোস্ট টেলিগ্রাফার (১৯১২)
  • দ্য ট্রিয়াম্প অব রাইট (১৯১২)
  • হিজ নেমেসিস (১৯১২)
  • দ্য ফ্রন্টিয়ার চাইল্ড (১৯১২)
  • হিজ স্কো (১৯১২)
  • হিজ সেন্স অব ডিউটি (১৯১২)
  • আশ্যাডো অব দ্য পাস্ট (১৯১৩)
  • দ্য হুইল্‌স অব ডেসটিনি (১৯১৩)
  • দ্য মাইজার (১৯১৩)
  • দ্য ড্রামার অব দ্য এইট্‌থ (১৯১৩)
  • আচাইল্ড অব ওয়ার (১৯১৩)
  • আট্রু বিলিভার (১৯১৩)
  • দ্য সিল অব সাইলেন্স (১৯১৩)
  • গ্র্যান্ডড্যাড (১৯১৩)
  • বোরোড গোল্ড (১৯১৩)
  • রোম্যান্স অব সানশাইন অ্যালে (১৯১৪)
  • ও মিমি স্যান (১৯১৪)
  • দ্য কোর্টশিপ অব ও স্যান (১৯১৪)
  • উলভ্‌স অব দি আন্ডারওয়ার্ল্ড (১৯১৪)
  • দ্য কর্নেল্‌স অর্ডারলি (১৯১৪)
  • দ্য সোশ্যাল ঘোস্ট (১৯১৪)
  • শ্যাডোস অব দ্য পাস্ট (১৯১৪)
  • আ ফ্রন্টিয়ার মাদার (১৯১৪)
  • দ্য শেরিফ অব বিসবি (১৯১৪)
  • শর্টি অ্যান্ড দ্য ফরচুন টেলার (১৯১৪)
  • হোয়েন আমেরিকা ওয়াজ ইয়ং (১৯১৪)
  • মিলড্রেড্‌স ডল (১৯১৪)
  • দ্য ম্যাজিক ক্লোক অব অজ (১৯১৪)
  • হিজ ম্যাজেস্টি, দ্য স্কেয়ারক্রো অব অজ (১৯১৪)
  • জিমি (১৯১৪)
  • হ্যাবিট (১৯২১)
  • আ প্রিন্স দেয়ার ওয়াজ (১৯২১)
  • ফুল্‌স প্যারাডাইজ (১৯২১)
  • দ্য ফার্স্ট ওম্যান (১৯২২)
  • দ্য ফগ (১৯২৩)
  • দ্য ডেরারিং ইয়ার্স (১৯২৩)
  • দ্য লাস্ট ল্যাপ (১৯২৮)
  • হার্ট্‌স অব মেন (১৯২৮)
  • দ্য হার্ট অব আফলিজ গার্ল (১৯২৮)
  • লিঞ্জারি (১৯২৮)
  • দ্য স্পিড ক্লাসিক (১৯২৮)
  • মেলোডি অব লাভ (১৯২৮)
  • দ্য পাওয়ার অব দ্য প্রেস (১৯২৮)
  • সাইড স্ট্রিট (১৯২৯)
  • সি ফিউরি (১৯২৯)
  • নো, নো, ন্যানেট (১৯৩০)
  • দ্য মেলোডি ম্যান (১৯৩০)
  • র‍্যাঞ্চ হাউজ ব্লুজ (১৯৩০)
  • ল্যাডি টাব্‌স (১৯৩৫)
  • দ্য কোয়েরো কোন আইয়োকুরা (১৯৩৫)
  • নেভার টু লেট (১৯৩৫)
  • মুভি ম্যানিয়াক্‌স (১৯৩৬)
  • গ্রেট গাই (১৯৩৬)
  • হ্যাভিং আ ওয়ান্ডারফুল ক্রাইম (১৯৪৫)

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Charles J. Maland, 1991, Chaplin and American Culture: The Evolution of a Star Image, Princeton University Press, pp. 43-44.
  2. Associated Press (জুলাই ২১, ১৯৪৪)। "Mildred Harris Dies In West"St. Petersburg Times (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  3. "Mildred Harris"লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। ২১ জুলাই ১৯৪৪। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  4. Robinson, David (1986 [First published 1985])। চ্যাপলিন: হিউ লাইফ অ্যান্ড আর্ট (ইংরেজি ভাষায়)। London: Paladin। আইএসবিএন 0-586-08544-0  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  5. The child was buried in the Inglewood Park Cemetery under a headstone with the inscription "The Little Mouse". Beneath Los Angeles - Norman Spencer Chaplin আর্কাইভইজে আর্কাইভকৃত ৩০ জুন ২০১২ তারিখে
  6. McLellan, Diana. 2000. The Girls: Sappho Goes to Hollywood London: Robson Books. 1-86105-381-9. p. 28.
  7. Mason City Globe Gazette, March 19, 1934, p. 18, Mason City Globe Gazette online on Newspaperarchive.com

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]