মহাসাগর অম্লীকরণ
আমরা সবাই এই শব্দ দুইটির সাথে পরিচিত। ওশেন(ocean) অর্থ সাধারণত সমুদ্র, এসিডিফিকেসন(acidification) মানে অম্লীকরন। পুরো অর্থ সমুদ্র অম্লীকরন। সংজ্ঞা বলতে গেলে সমুদ্রের পানির pH. মান কমে যাওয়া। সমুদ্রের পানি সাধারণত সামান্য ক্ষারীয় । পৃথিবীর যত কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসৃত হচ্ছে তার মধ্যে ৩০-৪০ শতাংশ সমুদ্রের পানিতে দ্রবীভূত হয়ে পরিবেশে কার্বন ডাই অক্সাইডেরর ভারসাম্য হচ্ছে। এই কার্বন ডাই অক্সাইড ওশেন এসিডিফিকেসন ( ocean acidification) এর দায়ী । কার্বন ডাই অক্সাইড লবণ পানিতে দ্রবীভূত হয়ে কাবর্নিক এসিড। পরে তা ভেঙ্গে বাই কাবর্নেট ও হাইড্রোনিয়াম আয়ন হতে থাকে। পরে বিভিন্ন প্রক্রিয়া উপক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে সমুদ্রের পানির অম্লতা বাড়াচ্ছে
CO 2 + H 2 O = H 2 CO3 কার্বন ডাই অক্সাইড+পানি=কার্বনিক এসিড
H 2CO3 ↔ H + + HCO3 – কার্বনিক এসিড হাইড্রোজেন আয়ন +বাই কার্বনেট আয়ন HCO 3- ↔ H + + CO3 বাই কার্বনেট,কার্বনেট। এতে সাধারণ ph 8.25-8.14)
সামগ্রিক গবেষণার দেখা গেছে কোনো কোনো স্থানে ph ৭.৭৫ পাওয়া গেছে। এতে সমগ্র সমুদের জৈববৈচিত্র, প্রতিবেশ ব্যবস্থা ধ্বংস হচ্ছে।বিশেষ কোরাল সাদা হয়ে যাচ্ছে। কোরাল ধ্বংস হচ্ছে, প্ল্যাঙ্কটন, অটোট্রুপস,হেটেরোট্রুপস, ক্রাসটাসিয়া, মালস্ক,ফরামুনিফেরা, ককোথুফোরস ইত্যাদি হারিয়ে বা ধ্বংস বা বিলুপ্ত হচ্ছে। বিভিন্ন প্রজাতির মাছ হারিয়ে বা বিলুপ্ত হচ্ছে কিংবা স্থান পরিবর্ত করছে। বিভিন্ন প্রাণির বাসস্থান, প্রজনন ধ্বংস হচ্ছে। .[১]
অম্লীতা বৃদ্ধির প্রভাব[সম্পাদনা]
প্রাথমিক স্তর গুলির যেমন- ডিম্বাণু/ শুক্রাণু, জাইগট, লার্ভা, ভ্রূণ, ডিম-পোনা,রেণু, জুভেনাইল ইত্যাদি)উপর বেশ প্রভাব ফেলবে কেননা এসকল স্তরে এরা বেশ সংবেদনশীল থাকে। প্রাপ্তবয়স্ক প্রাণীদের ক্ষেত্রে এটা তাদের-স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও প্রজননকে ক্ষতিগ্রস্ত-করতে পারে। হয়তো প্রাণীর জীবনরক্ষা পাবে কিন্তু তাদের স্বাভাবিক-বংশবৃদ্ধি প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটার-ফলে প্রাণীর পুনরুৎপাদন হ্রাস পেতে-পারে। সমুদ্রের অম্লতা বৃদ্ধির ফলে-সরাসরি সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এমন-প্রাণী ও উদ্ভিদের তালিকায়-প্রথমদিকে রয়েছে খোলস বিশিষ্ট-প্রাণী, যেমন বিশেষ ধরনের মোলাস্ক (টেরোপড, ওয়েস্টর,মাসেল, ক্ল্যাম), একাইনোডার্ম (শি আর্চিন, স্টার ফিস, ব্রিটল স্টার)জাতীয় প্রাণী এবং কোরাল ও বিশেষ ধরনের খোলস বিশিষ্ট সামুদ্রিক অ্যালজি। কেননা সমুদ্রের অম্লতা-বৃদ্ধির ফলে pH এর মান কমে যাওয়ার-সাথে সাথে পানিতে থাকাকার্বনেট আয়নের (CO 32-) পরিমাণও কমে-যাচ্ছে। এ কার্বনেট আয়ন আবার-উপরোল্লিখিত খোলস বিশিষ্ট-প্রাণীদের জন্য অতি প্রয়োজনীয় কেননা এটা তাদের বাইরের শক্তখোলস ও মূল কাঠামো বা কঙ্কালতৈরিতে মূল ভূমিকা পালন করে।পানিতে কার্বনেট আয়নের স্বল্পতা এ \প্রক্রিয়াকে বাঁধাগ্রস্ত করার মাধ্যমে-প্রাণীর বৃদ্ধি এবং শারীরিক গঠন-প্রক্রিয়াকে মন্থর করে ফেলবে। আতংকের ব্যাপার হল, সমুদ্রের-পানিতে এ কার্বনেট আয়নের পরিমাণ একটি নির্দিষ্ট মাত্রার নিচে নেমে-গেলে ঐ সকল প্রাণীর শরীরের-ক্যালসিয়াম কার্বনেটের শক্ত-বহিরাবরণ দ্রবীভূত হতে শুরু করবে।ফলস্বরূপ ক্যালসিয়াম কার্বনেটেরখোলস যুক্ত অন্যান্য সকল প্রাণীর সাথে সাথে কোরাল সমূহও ক্ষতিগ্রস্ত হবে জার্মানির হামবুর্গে অবস্থিত ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইন্সটিটিউটে ক্যাথরিনা শিখ ও তার দলের এক গবেষণায় বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের প্রেক্ষিতে দেখান যে, “সমুদ্রের পানির অম্লতা বেড়ে যাওয়ার কারণে ফাইটোপ্লাঙ্কটনরা পূর্বের তুলনায় কম ডাইমিথাইল সালফাইড উৎপন্ন-করছে।""তারা নিজেদের রক্ষার করার জন্যে একটা মেকানিজম অনুসরণ করে "