মধুমিতা
পূর্ণ নাম | মধুমিতা মুভিজ |
---|---|
ঠিকানা | মতিঝিল ঢাকা বাংলাদেশ |
অবস্থান | ১৫৮/১৬০ মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা |
স্থানাঙ্ক | ২৩°৪৩′২২″ উত্তর ৯০°২৫′১৯″ পূর্ব / ২৩.৭২২৮০৩৮° উত্তর ৯০.৪২১৮১৯৬° পূর্ব |
মালিক | ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ |
ধরন | চলচ্চিত্র প্রেক্ষাগৃহ |
ধারণক্ষমতা | ১০০০ |
পর্দা | ১ |
নির্মাণ | |
চালু | ১ ডিসেম্বর ১৯৬৭ |
বন্ধ | ১৭ মার্চ ২০২০ |
পুনঃচালু | ১৫ অক্টোবর ২০২১ |
মধুমিতা মুভিজ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার মতিঝিলে অবস্থিত একটি চলচ্চিত্র প্রেক্ষাগৃহ। ঢাকার ব্যবসায়ী সিরাজ উদ্দিনের উদ্যোগে ১৯৬৭ সালে প্রেক্ষাগৃহটি নির্মাণ করা হয়। ১০০০ আসন বিশিষ্ট মধুমিতা বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন প্রেক্ষাগৃহ। ক্লিওপেট্রা এই প্রেক্ষাগৃহের প্রথম প্রদর্শিত চলচ্চিত্র। মধুমিতায় ১৯৮১ সালে বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হয়েছিল। ১৯৮২ সালে হয়েছিল ফরাসি চলচ্চিত্র উৎসব। যাত্রা শুরুর পর মধুমিতা মুভিজ কোভিড-১৯ মহামারীর জন্য ১৭ মার্চ ২০২০-এ বন্ধ ছিল, যা ১৫ অক্টোবর ২০২১-এ পুনরায় চালু করা হয়।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]সিনেমা হলটি প্রতিষ্ঠা করেন সিরাজ উদ্দিন। তিনি ঢাকার একজন ব্যবসায়ী ছিলেন, যার কেমিকেলের কারখানা ছিল। ১৯৬৭ সালে মহানগর নামক একটি বাংলা ভাষার ভারতীয় চলচ্চিত্র শহরের বলাকা সিনেমা হলে প্রদর্শিত হচ্ছিলো। চলচ্চিত্র পাগল সিরাজ চলচ্চিত্রটি দেখতে চেয়েও টিকিট সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে তিনি জিদ করে একটি সিনেমা হল নির্মাণের পরিকল্পনা করেন। সিনেমা হলের প্রস্তাবিত নামের জন্য তিনি দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় একটি বিজ্ঞাপন প্রকাশ করেন। বিজ্ঞাপন দেখে অনেকেই তার কাছে নাম পাঠান। সেই নামগুলোর মধ্য থেকে তিনি "মধুমিতা" নামটিকে পছন্দ করেন এবং যে এই নামটি প্রস্তাব করেছেন তাকে ৫০০ পাকিস্তানি রুপি ও সিনেমা হলের একটি টিকিট পুরস্কার হিসেবে প্রদান করেন। পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের ৬ষ্ঠ স্পিকার আবদুল জব্বার খান ১৯৬৭ সালের ১ ডিসেম্বর প্রেক্ষাগৃহটি উদ্বোধন করেন। মধুমিতায় প্রদর্শিত প্রথম চলচ্চিত্রটি ছিল ১৯৬৩ সালের মার্কিন মহাকাব্যিক ঐতিহাসিক নাট্য চলচ্চিত্র ক্লিওপেট্রা। তখন প্রেক্ষাগৃহটি ম্যাগনেটিক সাউন্ড সুবিধা দিয়ে সজ্জিত ছিল। সিনেমা হলে ঢাকার মিটফোর্ডের ওটিস পারফিউম হাউসের সুগন্ধি ব্যবহার করা হত।[১][২][৩] ১৯৮১ সালে ২৭ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব প্রেক্ষাগৃহে উদ্বোধন করা হয়।[৪] ১৯৮২ সালে মধুমিতায় ফরাসি চলচ্চিত্র উৎসব হয়।[৫] কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে সরকার-আরোপিত লকডাউনের কারণে ১৭ মার্চ ২০২০-এ[৬] প্রেক্ষাগৃহটি বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে মধুমিতার বর্তমান মালিক ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন। যাইহোক, তিনি মধুমিতাকে পুনরায় চালু করতে চাননি কারণ তিনি এমন কাউকে খুঁজে পাননি যিনি এরূপ পরিস্থিতিতে বড় বাজেটের চলচ্চিত্র মুক্তি দিতে চান। তিনি ২৫ জুন ২০২১-এ সিনেমা হল পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত নেন এবং ঘোষণা করেন যে মধুমিতা সেই দিন নবাব এলএলবি দেখাবে, তবে সরকারি বিধিনিষেধের ফলে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।[৭] অবশেষে মধুমিতা ১৫ অক্টোবর ২০২১-এ বাংলা ভাষার ভারতীয় চলচ্চিত্র বাজি দেখানোর মাধ্যমে পুনরায় চালু করা হয়।[৬][৮]
বৈশিষ্ট্য
[সম্পাদনা]এই প্রেক্ষাগৃহে ১০০০ আসন বিশিষ্ট একটি মাত্র পর্দা রয়েছে।[৬] এখানে বসার ব্যবস্থা তিনটি ভাগে বিভক্ত। সেগুলো যথাক্রমে ড্রেস সার্কেল, রিয়ার সার্কেল ও মিডল সার্কেল নামে পরিচিত।[১] এখানে রয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, পার্কিং, ডলবি ডিজিটাল সাউন্ড সিস্টেম সহ শৌচাগার ব্যবস্থা। মধুমিতায় প্রতিদিন চারটি শো দেখানো হয়।[৩] এখানে থ্রিডি চলচ্চিত্র দেখানোর সুবিধা রয়েছে।[৬]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ আলী, মাসুম (১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭)। "ক্লিওপেট্রা দিয়ে যাত্রা শুরু মধুমিতার"। প্রথম আলো। ৩০ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০২২।
- ↑ "ঢাকার সিনেমা হল মধুমিতার ৫০ বছর: সেই রমরমা অবস্থা আর নেই"। বিবিসি বাংলা। ১ ডিসেম্বর ২০১৭। ৩০ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০২২।
- ↑ ক খ "৫০ বছরে ঐতিহ্যবাহী মধুমিতা সিনেমা হল"। দৈনিক ইনকিলাব। ১ ডিসেম্বর ২০১৭। ৩০ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০২২।
- ↑ কবির, আলমগীর (২১ সেপ্টেম্বর ২০২০)। "দেশে যেভাবে সিনেমা হলের যাত্রা শুরু হয়েছিল"। দৈনিক নয়া দিগন্ত। ৩০ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০২২।
- ↑ অনুপম হায়াৎ (২০১২)। "চলচ্চিত্র উৎসব"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ ক খ গ ঘ "মধুমিতাকে টিকিয়ে রাখতে শেষ চেষ্টা"। সারাবাংলা.নেট। ২ অক্টোবর ২০২১। ৩০ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০২২।
- ↑ "'মধুমিতা হল চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া হবে'"। সমকাল। ২৩ জুন ২০২১। ৩০ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০২২।
- ↑ "কলকাতার বাজী ছবি দিয়েই খুলছে মধুমিতা সিনেমা হল"। আমাদের সময়। ১৪ অক্টোবর ২০২১। ৩০ অক্টোবর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০২২।