ভারতের সংবিধানের ভাগ ১

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ভাগ ১—সংঘ ও উহার রাজ্যক্ষেত্র ভারতের সংবিধানে এক আইনসংকলন, যেখানে দেশ এবং বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দ্বারা গঠিত এক সংঘ হিসাবে ভারতের আলোচনা রয়েছে।

ভারতের সংবিধানের এই ভাগে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রতিষ্ঠা, নাম পরিবর্তন, একত্রীকরণ ও সীমানা পরিবর্তন সম্পর্কিত বিভিন্ন আইন বর্তমান। এখানে "সংঘ", "রাজ্য", "ভারতের রাজ্যক্ষেত্র", "রাজ্যের রাজ্যক্ষেত্র", "সংঘশাসিত রাজ্যক্ষেত্র" এবং "অর্জিত রাজ্যক্ষেত্র" এই শব্দদের সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে যা সংবিধান জুড়ে বহুল ব্যবহৃত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নামকরণ এবং ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়, সিকিমতেলেঙ্গানা রাজ্য গঠনের সময় এই ভাগের অনুচ্ছেদ ব্যবহার করা হয়েছিল।

অনুচ্ছেদ ১ ও ২[সম্পাদনা]

সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১ অনুযায়ী "ইন্ডিয়া, অর্থাৎ ভারত, রাজ্যসমূহের সংঘ হইবে," এবং ভারতের রাজ্যক্ষেত্র প্রথম তফসিলে উল্লেখিত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল (যা সংবিধানে "সংঘশাসিত রাজ্যক্ষেত্র" নামে পরিচিত) এবং অন্যান্য অর্জিত রাজ্যক্ষেত্র নিয়ে গঠিত।

অনুচ্ছেদ ২ অনুযায়ী অর্জিত রাজ্যক্ষেত্রদের রাজ্যে রূপান্তর করা যায়। জম্মু ও কাশ্মীরকে ২০১৯ সালে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে রূপান্তর করা হয়েছিল। লাদাখকেও একইভাবে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে রূপান্তর করা হয়েছিল।

সিকিম এক বিশেষ ক্ষেত্র ছিল, কারণ নতুন অনুচ্ছেদ ২ক-এর অধীনে এটি এক নতুন ধরনের রাজ্যসত্ত্বা লাভ করেছিল এবং দশম তফসিলে এর উল্লেখ ছিল। কিন্তু এই পরীক্ষা ব্যর্থ হয়েছিল এবং সংবিধান সংশোধন আইন (১৯৭৫)-এর মাধ্যমে ভারতীয় সংঘে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।

১৯৫৬-এ সংবিধানের সপ্তম সংশোধনীর মাধ্যমে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ধারণা আনা হয়েছিল। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলো সাধারণত আয়তনে ছোট হয় কিংবা আন্তর্জাতিক চুক্তির দ্বারা শাসিত হয় কিংবা স্থানীয় নির্বাচিত প্রশাসনের জন্য রাজনৈতিকভাবে উন্নত নয়। সংবিধানের চতুর্থ তফসিলে রাজ্যসভায় আসনের প্রতিনিধিত্ব দেওয়া থাকবে।

অনুচ্ছেদ ৩[সম্পাদনা]

অনুচ্ছেদ ৩-এ নতুন রাজ্যের গঠন ও বিদ্যমান রাজ্যের আয়তন, সীমানা বা নাম পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে:

৩। সংসদ বিধি দ্বারা—

(ক) যেকোন রাজ্য হইতে কোন রাজ্যক্ষেত্র পৃথক করিয়া লইয়া, অথবা দুই বা ততোধিক রাজ্য বা রাজ্যের ভাগ সংযুক্ত করিয়া, অথবা যেকোনো রাজ্যের কোন ভাগে কোন রাজ্যক্ষেত্র সংযুক্ত করিয়া, নূতন রাজ্য গঠন করিতে পারেন;

(খ) যেকোন রাজ্যের আয়তন বৃদ্ধি করিতে পারেন;

(গ) যেকোন রাজ্যের আয়তন হ্রাস করিতে পারেন;

(ঘ) যেকোন রাজ্যের সীমানা পরিবর্তন করিতে পারেন;

(ঙ) যেকোন রাজ্যের নাম পরিবর্তন করিতে পারেন:

[তবে, এই উদ্দেশ্যে কোন বিধেয়ক রাষ্ট্রপতির সুপারিশ ব্যতিরেকে, এবং যেক্ষেত্রে কোন বিধেয়কের অন্তর্ভুক্ত প্রস্তাব রাজ্যসমূহের কোনটির আয়তন, সীমানা বা নাম প্রভাবিত করে সেক্ষেত্রে ঐ বিধেয়ক রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সেই রাজ্যের বিধানমণ্ডলের নিকট, প্রেষণে যে সময়সীমা বিনির্দিষ্ট হইয়াছে তন্মধ্যে, অথবা অধিকতর যে সময়সীমা রাষ্ট্রপতি মঞ্জুর করিতে পারেন তন্মধ্যে, ঐ বিধেয়ক সম্পর্কে উহার মতামত প্রকাশের জন্য প্রেষিত না হইয়া থাকিলে এবং ঐরূপে বিনির্দিষ্ট বা মঞ্জুরীকৃত সময়সীমা অবসান না হইয়া থাকিলে, সংসদের উভয় সদনের কোনটিতেই পুরঃস্থাপিত হইবে না।]

ব্যাখ্যা ১।—এই অনুচ্ছেদে, (ক) প্রকরণ হইতে (ঙ) প্রকরণে “রাজ্য” সংঘশাসিত রাজ্যক্ষেত্র অন্তর্ভাবিত করিবে কিন্তু অনুবিধিতে “রাজ্য” সংঘশাসিত রাজ্যক্ষেত্র অন্তর্ভাবিত করিবে না।

ব্যাখ্যা ২।—(ক) প্রকরণ দ্বারা সংসদকে যে ক্ষমতা অর্পিত হইয়াছে, তাহাতে কোন রাজ্যের বা সংঘশাসিত রাজ্যক্ষেত্রের ভাগবিশেষকে অন্য কোন রাজ্য বা সংঘশাসিত রাজ্যক্ষেত্রের সহিত সংযুক্ত করিয়া একটি নূতন রাজ্য গঠন করিবার ক্ষমতাও অন্তর্ভাবিত হইবে।]

অনুচ্ছেদ ৪[সম্পাদনা]

অনুচ্ছেদ ২ ও ৩ অনুযায়ী প্রথম ও চতুর্থ তফসিলের সংশোধনের এবং অনুপূরক, আনুষঙ্গিক ও পারিণামিক বিষয়সমূহের আইন প্রণয়ন করার সময় অনুচ্ছেদ ৪ প্রয়োগ করা হয়। অনুচ্ছেদ ৪ (২) অনুযায়ী, অনুচ্ছেদ ৪ (১)-এর অধীনে প্রণয়ন করা "কোন বিধি ৩৬৮ অনুচ্ছেদের প্রয়োজনার্থে এই সংবিধানের সংশোধন বলিয়া গণ্য হইবে না।"

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. ভারতের সংবিধান (দ্বিতীয় সংস্করণ), ১৯৮৭।
  2. ভারতের সংবিধান (তৃতীয় সংস্করণ), ২০২২।

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]