বিষয়বস্তুতে চলুন

ভারতের সংবিধানের ভাগ ১৭

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ভারতের সংবিধানের ভাগ ১৭-এ সরকারি ভাষা বিষয়ক ৩৪৩ থেকে ৩৫১ পর্যন্ত মোট ১২টি অনুচ্ছেদ রয়েছে, যা নিম্নলিখিত চারটি অধ্যায় জুড়ে বিস্তৃত।[১]

অধ্যায় ১ - সংঘের ভাষা

[সম্পাদনা]

প্রথম অধ্যায়ের অনুচ্ছেদ ৩৪৩ ও ৩৪৪ অনুযায়ী ভারতের সরকারি ভাষা দুটি: দেবনাগরী লিপিতে হিন্দিইংরেজি[২] এতে আরও বলা আছে যে ভারতীয় সংখ্যাসমূহের আন্তর্জাতিক রূপটি কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যবহার্য সংখ্যা পদ্ধতি। এটি ভারতের সরকারি ভাষা হিসাবে ইংরেজির চেয়ে হিন্দির প্রয়োগ ও প্রগতিশীল ব্যবহারকে সমর্থন করার জন্য ভারতের রাষ্ট্রপতির উপর একটি দায়িত্বও বজায় রেখেছে, পাশাপাশি ভারতে সরকারি উদ্দেশ্যে ইংরেজি ব্যবহারের উপর বিধিনিষেধ আরোপের ক্ষমতাও দেয়। এছাড়া ইংরেজি ভাষার জায়গায় হিন্দি ভাষা প্রচলিত করার জন্য ভারতের রাষ্ট্রপতিকে সংবিধানের প্রারম্ভ হতে ১৫ বছরের সময় দেওয়া হয়েছে, অবধি এখনও এই অধিকার প্রয়োগ করা হয়নি। অধ্যায়ে আরও লেখা হয়েছে যে পূর্বে উল্লিখিত দায়িত্বগুলি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক পরিচালিত হয়েছে তা নিশ্চিত করে লোকসভা থেকে ২০ জন এবং রাজ্যসভা থেকে ১০ জন মোট ৩০ জন লোকের সমন্বয়ে একটি কমিশন গঠন করা উচিত।

অধ্যায় ২ - আঞ্চলিক ভাষাসমূহ

[সম্পাদনা]

দ্বিতীয় অধ্যায়ের অনুচ্ছেদ ৩৪৫ থেকে ৩৪৭ অনুযায়ী, যে ভারতের রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ভারতের কোনও সরকারি ভাষাকে সরকারি উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত। এটি একটি আঞ্চলিক ভাষা গ্রহণ এবং ভারতের সরকারি ভাষা হওয়ার সম্ভাবনাও স্বীকার করে, যদি রাষ্ট্রপতি মনে করেন যে ভারতের জনসংখ্যার একটি বিরাট পরিমাণ মানুষ এটি চায়।

অধ্যায় ৩ - সুপ্রীম কোর্ট, হাইকোর্টসমূহ ইত্যাদির ভাষা

[সম্পাদনা]

তৃতীয় অধ্যায়ের অনুচ্ছেদ ৩৪৮ ও ৩৪৯ অনুযায়ী, সংসদ আইন প্রণয়ন না করলে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত (সুপ্রীম কোর্ট) ও প্রত্যেক উচ্চ আদালতের (হাইকোর্ট) যেকোনো বিধানিক পাঠ্য ইংরেজি ভাষাতে হওয়া উচিত। এছাড়া যে কোনও রাজ্যের রাজ্যপাল রাষ্ট্রপতির পূর্বসম্মতি সহ উচ্চ আদালতে হিন্দি ভাষা ব্যবহারের অনুমতি দিতে পারেন।

অনুচ্ছেদ ৩৪৮ (২) অনুযায়ী:

(১) প্রকরণের (ক) উপ-প্রকরণে যাহা কিছু আছে তৎসত্ত্বেও, কোন রাজ্যের রাজ্যের রাজ্যপাল ***, রাষ্ট্রপতির পূর্ব-সম্মতি সহ, ঐ রাজ্যের যে হাইকোর্টে প্রধান অধিষ্ঠান আছে তাহার কার্যবাহে হিন্দী ভাষার, অথবা ঐ রাজ্যের সরকারী প্রয়োজনে ব্যবহৃত অন্য কোন ভাষার, ব্যবহার প্রাধিকৃত করিতে পারেন:
তবে, ঐরূপ হাইকোর্ট কর্তৃক প্রদত্ত বা কৃত কোন রায়, ডিক্রী বা আদেশ সম্পর্কে এই প্রকরণের কোন কিছুই প্রযুক্ত হইবে না।[২]

অধ্যায় ৪ - বিশেষ নির্দেশনসমূহ

[সম্পাদনা]

অনুচ্ছেদ ৩৫০, ৩৫০ক, ৩৫০খ ও ৩৪১ অনুচ্ছেদ নিয়ে চতুর্থ অধ্যায় গঠিত। এই অধ্যায় অনুযায়ী, যেকোনো ব্যক্তি ভারতের যেকোনো সরকারি ভাষায় কোনো ক্ষোভের প্রতিকারের জন্য একটি নিবেদন পেশ করতে পারেন। এছাড়া সংখ্যালঘু ভাষার সংরক্ষণের জন্য ভারত সরকারের ঐ ভাষাগোষ্ঠীর শিশুদের শিক্ষার প্রাথমিক স্তরে মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগসুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা করার উচিত। এতে আরও বলা হয়েছে যে ঐরূপ সযোগসুবিধার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং পূর্ববর্তী ব্যবস্থাগুলি আদতে কার্যকর হয়েছে তা সুনিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্রপতির একজন বিশেষ আধিকারিক নিয়োগ করা উচিত। সবশেষে, অধ্যায়টিতে বলা হয়েছে যে ভারত সরকারের হিন্দি ভাষার বিস্তার নিশ্চিত করার পাশাপাশি ভাষার সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের বিষয়টিও নিশ্চিত করা উচিত।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Constitution of India 2007, পৃ. 212–217।
  2. ভারতের সংবিধান (বাংলা ভাষায়, তৃতীয় সংস্করণ), ২০২২

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]
  • ভাগ ১৭, ভারতের সংবিধান (তৃতীয় সংস্করণ) (বাংলা ভাষায়), ২০২২।