বেতার তরঙ্গ
বেতার তরঙ্গ বা রেডিও তরঙ্গ এক প্রকারের তড়িৎ-চৌম্বকীয় বিকিরণ যার তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সীমা ১ মিলিমিটার থেকে ১০,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। এই তরঙ্গ খালি চোখে দেখা যায় না। বেতার তরঙ্গের কম্পাঙ্ক দৃশ্যমান আলোর থেকে কম - ৩ কিলোহার্টজ থেকে ৩০০ গিগাহার্টজ। বেতার তরঙ্গের রেঞ্জ ৩০০ গিগা হার্টজ থেকে ৩০ হার্টজ পর্যন্ত হতে পারে। ৩০০ গিগা হার্টজ রেডিও তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্য ১ মিলিমিটার (চালের দানার চেয়ে ছোট); আবার ৩০ হার্টজ রেডিও তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্য ১০,০০০ কিলোমিটার (যা পৃথিবীর ব্যাসার্ধের চেয়েও দীর্ঘ)। বড় তরঙ্গ দৈর্ঘ্য খুবই কম শক্তি সম্পন্ন হয় এবং অকল্পনীয় দুরত্ব পাড়ি দিতে পারে। অন্যান্য সব তড়িৎ-চৌম্বকীয় বিকিরণের মত বেতার তরঙ্গও আলোর গতিতে ভ্রমণ করে। প্রাকৃতিক উপায়ে বেতার তরঙ্গ সৃষ্টি হয় সাধারণতঃ বজ্রপাত বা মহাজাগতিক বস্তু থেকে। কৃত্রিমভাবে তৈরীকৃত বেতার তরঙ্গ মোবাইল টেলিযোগাযোগ, বেতার যোগাযোগ, সম্প্রচার, রাডার ও অন্যান্য দিকনির্দেশনা (navigation) ব্যবস্থা, কৃত্রিম উপগ্রহের সাথে যোগাযোগ, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সহ অসংখ্য কাজে ব্যবহৃত হয়। ভিন্ন কম্পাঙ্কের বেতার তরঙ্গের বৈশিষ্ট্য ভিন্ন রকম হয়। বড় তরঙ্গদৈর্ঘ্যের বেতার তরঙ্গ পৃথিবীর একটি বড় অংশকে ঘিরে নিতে পারে, ছোট বা ক্ষুদ্র তরঙ্গ আয়নমন্ডল দ্বারা প্রতিফলিত হতে পারে এবং অতি ক্ষুদ্র দৈর্ঘ্যের বেতার তরঙ্গ খুবই অল্প বাঁক নিতে পারে বলে শুধু দৃষ্টি রেখা (line of sight) বরাবর ভ্রমণ করতে পারে।
