বড়কলীয়া নস্করা
বড়কলীয়া নস্করা | |
---|---|
গ্রাম | |
ডাকনাম: নস্করা | |
অসমের মানচিত্রে বড়কলীয়া নস্করার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৫°৫৫′৫৯″ উত্তর ৯০°০৩′২৪″ পূর্ব / ২৫.৯৩৩১৮৪° উত্তর ৯০.০৫৬৭৪০৩° পূর্ব | |
দেশ | ভারত |
আসন | দক্ষিণ শালমারা |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৮,২৭৩ |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় মান সময় (ইউটিসি+৫:৩০) |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | IN-AS-DB |
বড়কলীয়া নস্করা গ্রামটি ধুবড়ী জেলার দক্ষিণ শালমারা মহুকুমার অন্তর্গত একটি রাজহ গ্রাম। এই গ্রামটির সাথে আরও অনেকগুলি ছোটো-বড়ো গ্রাম জড়িত হয়ে আছে। প্রায় ১০ টি ছোটো গ্রাম দ্বারা গঠিত একটি রাজস্ব গ্রাম। এর নস্করা গ্রাম পঞ্চায়েতও যুক্ত করে।[১]
দিসপুর হলো নস্করা গ্রামের রাজধানী। নস্করা গ্রাম থেকে রাজ্যর রাজধানী দিসপুরের দূরত্ব প্রায় ১৭৭ কিলোমিটার। নস্করা তেকে অন্য পাশের রাজ্যর রাজধানী লখনৌ এবং তার দূরত্ব ২৪৫.৫ কিলোমিটার। অন্যান্য সমৃদ্ধ রাষ্ট্রর রাজধানীগুলি হলো শিলং ১৮৪.৬ কিলোমিটার, গেংটক ২১৩.৭ কিলোমিটার, আগরতলা ২৬১.৯ কিলোমিটার।
নামের উৎপত্তি[সম্পাদনা]
এই গ্রামটির নাম বড়কলীয়া নস্করা কীভাবে হ’ল সেই বিষয়ে কোনও ধরনের সঠিক ইতিহাস বা প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে, একটি জনশ্রুতি মতে পুরণিকালে এই অঞ্চলটিতে “নস্কর” নামের একজন রাভা বাস করছিলেন। আর সেই রাভার নাম অনুসারে গ্রামটির নাম নস্করা হয় বলে অনেকে মনে করেন। অন্য একটি জনশ্রুতি মতে আছে যে, পুরণিকালে এই গ্রামে খেজুরের “রস” প্রচুর উৎপন্ন হত। এবং মুরব্বী মানুষেরা “রস”কে “নস” বলত। তাই এই জায়গায় রস বা নস উৎপন্ন করা হয়েছিল বলে “কর” ধাতু যোগ দিয়ে নস্করা হইছে । (অর্থাৎ রস তৈরি করা ঠাই)
জনসংখ্যা[সম্পাদনা]
২০১১ সালের লোকপিয়ল অনুসারে বড়কলীয়া নস্করা গ্রামের জনসংখ্যা ৮২৭৩ জন এবং এর মধ্যে পুরুষ ৪১৮০ জন এবং মহিলা ৪০৯৩ জন ।[২]
নস্করা গ্রামের গ্রামগুলি[সম্পাদনা]
- কুসবারী[৩]
- ধাপান পারা
- বড় নস্করা
- ছটো নস্করা
- নস্করা বিলপারা
- চিনাবারী
- রাধুরাম চালা
- শেরশো ভাঙার পার
- শিমূলচালা
- আমচালা
নস্করার আশপাশের গ্রাম এবং দূরত্ব[সম্পাদনা]
- বাউশকাটা ৭.৭ কিলোমিটার,
- বালাডোবা ৬.৯ কিলোমিটার,
- রাবাটারী ৬.৬ কিলোমিটার,
- হামিদাবাদ ৫.৪ কিলোমিটার,
- টুমনী ১১.০ কিলোমিটার,
- ফকিরগঞ্জ ৫.৪ কিলোমিটার,
- পটাকাটা ১৩.৮ কিলোমিটার,
- আইরকাটা ৪.০ কিলোমিটার।[৩]
রাজ ভাষা[সম্পাদনা]
নস্করার আদি ভাষা হ'ল অসমীয়া, বাংলা। যদিও গ্রামটির রাজ ভাষা অসমীয়া কিন্তু বাড়িতে বা অন্যজনের সাথে বেশিরভাগ মানুষে বাংলা ব্যভহার করে থাকেন। কোনও একটা রাজহ অনুষ্ঠান বা সরকারি কার্য্যালয়ে কেবল অসমীয়া ভাষা ব্যবহার করা দেখা যায়। এর পরেও স্কুল কলেজতেও আসমীয়া বলা বাধ্যতা করা হইছে। নস্করা গ্রামের মানুষেরা নগর বা শহর বা অসমের বাইরে অন্য জাগায় গেলে যোগাযোগের জন্য অসমীয়া ভাষা ব্যবহার করতে দেখা যায়।[৪]
বিশেষ[সম্পাদনা]
নস্করা গ্রামটি ইউটিসি ৫.৩০ সময় অঞ্চলে অভস্থিত এবং এটি ভারতীয় মান সময় (IST) অনুসরণ করে। নস্করা সূর্য উঠার সময় আইএসটি থেকে -৩০ মিনিটের মধ্যে পরিবর্তিত হয়। নস্করায় যানবাহন চালানোর দিক বাওঁদিক, গাড়ী চালানোর সময়ে সব যানবাহনকে বাওঁসাইট দিয়ে যেতে হয়। নস্করার মানুষের রাষ্ট্রীয় মুদ্রা ব্যবহার করে যা ভারতীয় রুপি এবং এর ইন্টানেশনাল মুদ্রা কোডটি INR। বিদেশ থেকে ভারতীয় দেশের ডাইলিং কোড +৯১ যুক্ত করে নস্করার ফোন এবং মোবাইলগুলি লাভ করতে পারে। নস্করার মানুষেরা দৈনিন্দন জীবনে দিন/মাস/বছর তারিখের ফর্মেটটি অনুসরণ করে।
প্রধান জীবিকা[সম্পাদনা]
এই গ্রামের বেশিরভাগ মানুষেরা কৃষি করে জীবিকা নির্বাহ করে আছে। কিছু সংখ্যাক মানুষ সরকারি চাকরি করে। যদিও গ্রামটির প্রধান জীবিকা কৃষি কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণে ভূমি না থাকার জন্য গ্রামের মানুষ অন্য উপায় বেছে নিয়েছে। যেমন কিছু লোকে দোকান কৰে, কিছু লোকে মাছ মারে, কিছু লোক গুয়াহাটী বা অন্য রাজ্য গিয়া হাজিরা বা ব্যক্তিগত খণ্ড কোম্পানিতে চাকরি করে। কিছুলোক আবার বে-সরকারী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে টাকা অর্জন করছে। কিছুলোক অসমের বয়ন শিল্প (তাঁতশাল)এ কাম করে। তাঁতশালে কাপোড় তৈরী করে সেই কাপোড়গুলি মেঘালয়, হাটশিঙিমারি, মানকাচর ইত্যাদি জাগায় নিয়ে বিক্রি করে।
খেতে উৎপাদন করা শস্য[সম্পাদনা]
ধান, পাট, গম, সরশ্যা, টিশি, মটর, বুট, কুঁইশাৰ, মরিছ, আলু, ভেণ্ডি, কেরেলা, জাতিলাও, বিলাতিলাও, টমেটো, বেগুন, বান্ধাকবি, ফুলকবি, ওলকবি, মূলা, গাজর, পিয়াজ, রশুন ইত্যাদি।
যাতায়ত[সম্পাদনা]
নস্করা গ্রামের প্রায়শই রাস্তা-ঘাট কাঁচা। যদিও কিছু রাস্তা পাকা দেখতে পাওয়া যায় কিন্তু সেইগুলি অনেক খারাপ অবস্থা হয়ে আছে।
রে’ল স্টেশন[সম্পাদনা]
নস্করার পাশের রে’ল স্টেশনটি ধুবড়ী যা প্রায় ১৩.৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত (যা জলপথ দিয়ে যেতে হয়)। নিম্নলিখিত তালিকাটি অন্যান্য রে’ল স্টেশন এবং মামাকুডি থেকে তার দূরত্ব দেখানো হ’ল।
ধুবড়ী রে’ল স্টেশন | ১৩.৯ কিমি |
গোলগঞ্জ রে’ল স্টেশন | ৩০.৯ কিমি |
গৌরীপুর রে’ল স্টেশন | ২০.৯ কিমি |
বিমান ঘাটি[সম্পাদনা]
রুপসী হ'ল পাশের বিমানবন্দর যা নস্করা গ্রাম থেকে ২৮.৯ কি.মি. দূরে। এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধর সময় বৃটিছ সরকার দ্বারা নির্মাণ করা হইছিল। মূলতঃ সামরিক উদ্দেশ্যে। ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত, ইন্ডিয়ান এয়ারলাইনস এবং কিছু ব্যক্তিগত বাণিজ্যিক বিমান কলকাতা, গুয়াহাটি এবং ধুবড়ীর মধ্যে নিয়মিত চলছিল। তার পর প্রায় ৩৬ বছর পর্যন্ত সম্পূরণ রূপে বন্ধ ছিল এই বন্দরটি। ফের প্রায় ৩৬ বছর পর এই রুপসী বিমানবন্দরটি আবার মেরামতির জন্য জিওআই দ্বারা কাম চলে আছে যদিও এখনো সম্পূর্ণ হয় নাই ।
নগর[সম্পাদনা]
বড়কলীয়া নস্করা গ্রামের পাশের নগর/গুরুত্বপূর্ণ স্থানটি ১৪.১ কিলোমিটার দূরে থাকা ধুবড়ী জেলা। নস্করার চারপাশে থাকা নগরগুলি নিম্নলিখিত ধরনের।
ধুবড়ী | ১৪.১ কিমি |
গৌরীপুর | ২০.৯ কিমি |
বিলাসীপারা | ৩৭.৩ কিমি |
লক্ষিপুর | অ. ৩০ কিমি |
শিক্ষানুষ্ঠান[সম্পাদনা]
বড়কলীয়া নস্করা গ্রামে অনেক সরকারী ও বে-সরকারী শিক্ষানুষ্ঠান রইছে। যা এই অঞ্চলের ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যত গঢ়তে যথেষ্ট ভুমিকা পালন করে ।[৫]
সরকারী বিদ্যালয়[সম্পাদনা]
- দক্ষিণ নস্করা বিলপারা এলপি স্কুল
- শান্তিপুর বরইবারী গার্লস এমই মাদ্রাসা
- পশ্চিম শিমূলচালা এলপি স্কুল
- ১৭৪ নং আমচলা এল পি স্কুল
- বড়কলীয়া নস্করা হাই স্কুল
- ২১৬৩ নং একে মণ্ডল মেমোরিয়াল এলপি স্কুল
- আবু বক্কার বেপারী মেমোরিয়াল এল পি স্কুল
- জ্যোতি হাই মাদ্রাসা
- শেরশো ভাঙার পার গার্লস স্কুল
- জে ইউ আহমেদ মেমোরিয়াল এল পি স্কুল[৫]
- চিনাবারী এল পি স্কুল
- নস্করা নয়াপারা এল পি স্কুল
- ১১৮৫ নং নস্করা এল পি স্কুল
- শিমূল চালা এল পি স্কুল
- চান্দিপারা এল পি স্কুল
- রাধুরাম চারিআলি প্রি-সিনিওর মাদ্রাসা
- বি এন বিলপারা এল পি স্কুল
- বড়কলীয়া নস্করা নবমিলন এম ই স্কুল
- খেদাইমারি চর এল পি স্কুল
- ২৬৭ নং বড়কলীয়ারপার এল পি স্কুল
- মির বক্স খাঁন মেমোরিয়াল এল পি স্কুল
- রাধুরাম চালা এল পি স্কুল
- নস্করা এম ই স্কুল
- চান্দিপারা এম ই মাদ্রাসা
ব্যক্তিগত খণ্ডর বিদ্যালয়[সম্পাদনা]
- চান্দিপারা স্মার্ট একাডেমী, চান্দিপারা
- এম বি জাতীয় বিদ্যালয়, রাধুরাম চালা[৫]
- জোনাকী জাতীয় বিদ্যালয়, শিমূলচালা
- ড. জাকির হুছাইন একাডেমী
- এচ বি বিদ্যাপীঠ, আমচালা