ফ্রান্স ও গণবিধ্বংসী অস্ত্র
ফ্রান্স | |
---|---|
প্রথম পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা | ফেব্রুয়ারি ১৩, ১৯৬০ |
প্রথম ফিউশন অস্ত্র পরীক্ষা | আগস্ট ২৩, ১৯৬৮ |
শেষ পারমাণবিক পরীক্ষা | জানুয়ারী ২৭, ১৯৯৬ |
বৃহত্তম ফলিত পরীক্ষা | ২.৬ মেগাটন (আগস্ট ২৪, ১৯৬৮) |
মোট পরীক্ষা | ২১০ |
নির্দিষ্ট সময়ে সর্বাধিক মজুদ | ৫৪০ (১৯৯২ সালে) |
বর্তমান মজুদ (ব্যবহারযোগ্য ও অব্যবহারযোগ্য) | ৩০০ ওয়ারহেড (২০১৮) [১][২] |
বর্তমান ব্যবহারযোগ্য মজুদ | ২৯০ ব্যবহারযোগ্য ওয়ারহেড (২০১৬)[১][২] (হামলার বাহন হিসেবে রয়েছে বোমারু বিমান ও সাবমেরিন থেকে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র)[১] |
বর্তমানে ব্যবহারযোগ্য মজুদ | ~৫১.৬[৩] |
সর্বোচ্চ ক্ষেপণাস্ত্র পরিসীমা | >১০,০০০ কিমি/৬,০০০ মাইল (এম-৫১ এস. এল. বি. এম.) |
নিউক্লিয়ার নন-প্রলিফারেশন ট্রিটি সাক্ষরকারী | হ্যা (১৯৯২, পাচঁটি পারমাণবিক বিশ্বশক্তির একটি) |
ফ্রান্স পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার নিয়ন্ত্রণ চুক্তি অনুসারে পাঁচটি পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশের মধ্যে একটি। কিন্তু দেশটির কোন জীবাণু কিংবা রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি বা মালিকানা আছে বলে জানা যায় না।[৪][৫] ১৯৬০ সালে ফরাসি রাষ্ট্রপতি শার্ল দ্য গোলের সরকারের অধীনে চতুর্থ দেশ হিসেবে ফ্রান্স স্বাধীনভাবে তৈরিকৃত পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা করে। ফরাসি সামরিক বাহিনী বর্তমানে ৩০০টির মত সচল ও মোতায়েন করা পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে বলে ধারণা করা হয় যা পৃথিবীতে ৩য় সর্বোচ্চ (যুদ্ধ পূর্ববর্তী মজুদের দিক দিয়ে, মেগাটনের হিসেবে নয়)।[৬][৭] ফরাসি জাতীয় পারমাণবিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর অধীন ন্যস্ত এই অস্ত্রগুলো ১৯৫০-এর দশকের শেষে এবং ১৯৬০-এর দশকে প্রস্তত করা হয় যাতে করে ফরাসিরা ন্যাটো থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে পারে এবং তার সাথে সাথে সার্বভৌমভাবে পারমাণবিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে।
ফরাসিরা আংশিক পারমাণবিক পরীক্ষা নিষিদ্ধকরণ চুক্তিতে সাক্ষর করেনি। যার ফলস্বরুপ ১৯৯৬ এবং ১৯৯৮ সালে ব্যাপক পারমাণবিক পরীক্ষা নিষিদ্ধকরণ চুক্তি যথাক্রমে স্বাক্ষর এবং অনুমোদনের পূর্বে পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়ে যেতে থাকে। ফ্রান্স বর্তমানে রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদদারি অস্বীকার করে এবং এটি ১৯৯৫ সালে রাসায়নিক অস্ত্রচুক্তি অনুমোদন করে। ফ্রান্স ১৯৮৪ সালে জৈব অস্ত্র চুক্তি মেনে নিতে সম্মত হয়। এছাড়াও ফ্রান্স ১৯২৬ সালে জেনেভা প্রটোকল অনুমোদন করে।
পারমাণবিক অস্ত্র |
---|
Background |
|
পারমাণবিক শক্তিধর দেশসমূহ |
|
ইতিহাস
[সম্পাদনা]ফ্রান্স পারমাণবিক অগ্রদূত রাষ্ট্রগুলোর মাঝে একটি যার একটি কারণ মারি ক্যুরির অবদান। ক্যুরির শেষ সহকারী বেট্রান্ড গোল্ডস্মিথকে ফরাসি পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি জনক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।[স্পষ্টকরণ প্রয়োজন] ফরাসি অধ্যাপক ফ্রেডরিক জুলিও-কুরি, আণবিক শক্তির হাই কমিশনার দৈনিক নিউ ইয়র্ক হেরাল্ড ট্রিবিউনকে বলেন "১৯৪৫ সালের 'সামরিক উদ্দেশ্যে আণবিক শক্তির ব্যবহার' অন্যায়ভাবে ফরাসি বৈজ্ঞানিকদের অবদানকে খাটো করে দেখায়" ।[৮]
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ফ্রান্সের সাবেক নেতৃত্ব ফরাসি চতুর্থ প্রজাতন্ত্রের অস্থিতিশীলতার কারণে এবং আর্থিক সংকটের কারণেঝামেলার মুখোমুখি হয়।[৯] দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় গোল্ডস্মিথ প্লুটোনিয়াম নিষ্কাশনের পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। তিনি তখন আমেরিকান ম্যানহাটন প্রকল্পে ব্রিটিশ/কানাডীয় বিজ্ঞানীদলের অংশ হিসেবে কাজ করছিলেন। কিন্তু ১৯৪৫ সালে মুক্তির পর ফরাসিরা তাদের নিজস্ব কর্মসূচি প্রায় গোড়া থেকে শুরু করতে বাধ্য হয়। তা সত্ত্বেও, ১৯৪৮ সালে প্রথম ফরাসি পারমাণবিক চুল্লী ক্রিটিকাল ম্যাস অর্জন করে। ১৯৪৮ সালে স্বল্প পরিমাণে প্লুটোনিযাম নিষ্কাশন করা হয়। তখন পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যাপারে ফরাসিদের কোন বিহিত উদ্দেশ্য ছিল না, যদিও বড় আকারে প্লুটোনিয়াম উৎপাদনের জন্য পারমাণবিক চুল্লী বিনির্মানের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।[১০] ফ্রান্সিস পেরিন, ১৯৫১ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত ফরাসি আণবিক শক্তির হাই-কমিশনার বলেছিলেন যে, ১৯৪৯ হতে ইসরায়েলি বৈজ্ঞানিকদের স্যক্লে পারমাণবিক গবেষণাগারে আমন্ত্রণ জানানো হয়। পরবর্তীতে এ থেকে ফরাসি এবং ইসরায়েলি বৈজ্ঞানিকদের মাঝে সহযোগিতা এবং দুই দেশের বিজ্ঞানীদের বিষেশত ম্যানহাটান কর্মসূচির সাথে জড়িত বিজ্ঞানীদের মাঝে তথ্য আদান প্রদানের সূচনা করে।[১১][১২][১৩] ফরাসিরা বিশ্বাস করত যে, ইসরায়েলের সাথে সহযোগিতা আন্ত্রজাতিক পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের ইসরায়েলের সাথে সহযোগিতার মাধ্যমে তাঁরা আন্তর্জাতিক ইহুদি বিজ্ঞানীদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে।[১৪] লেফটেন্যান্ট কর্নেল ওয়ার্নার ডি ফার, যুক্তরাষ্ট্র বিমান বাহিনীর প্রতিবিস্তার কেন্দ্রের একটি প্রতিবেদনে বলেন, যদিও আগে ফ্রান্স পারমাণবিক গবেষণায় নেতৃস্থানীয় অবস্থানে ছিল, " ইসরায়েল এবং ফ্রান্স দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এক্ষেত্রে সমকক্ষ হয়ে পড়ে এবং ইসরায়েলি বিজ্ঞানীগণ ফরাসি উদ্যোগে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হন। পারমাণবিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ফ্রান্স এবং ইসরায়েলের অগ্রগতি পঞ্চাশের দশকের শুরুতে নিবিড়ভাবে জড়িত থাকে। জনাব ফার বলেন যে, ইসরায়েলি বিজ্ঞানীগণ খুব সম্ভবত মারক্যুল G-১ প্লুটোনিয়াম উৎপাদন চুল্লী এবং UP-১ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেন।[১৫]
১৯৫০ সালে যদিও একটা বেসামরিক পরমাণু গবেষণা কর্মসূচি শুরু করা হয়, কিন্তু এই প্রকল্পের একটি উপজাত ছিল প্লুটোনিয়াম। ১৯৫৬ সালে আণবিক শক্তির সামরিক ব্যবহারের জন্য একটা গোপন কমিটি গঠন করা হয় এবং পারমাণবিক বোমা বহনে সক্ষম বাহন তৈরি করার একটি প্রকল্প শুরু করা হয়। বিশ্বশক্তি হিসেবে টিকে থাকার জন্য ফ্রান্সের যে খুব দ্রুত পারমাণবিক অস্ত্র প্রয়োজন এবং পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির গতিবৃদ্ধি করা প্রয়োজন, এই ধারণা বদ্ধমূল করতে ১৯৫৬ সালে সুয়েজ সঙ্কটে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপকে দায়ী করা হয়ে থাকে।[১৬] ১৯৫৬ সালে সুয়েজ সঙ্কটের সময় ফরাসিরা তাদের সামরিক জোটভিত্তিক সহায়তার অংশ হিসেবে ইসরায়েলে ডিমোনা পারমাণবিক কেন্দ্র নির্মানে গোপনে সম্মত হয়। শীঘ্রই তারা উক্ত কেন্দ্রে প্লুটোনিয়াম নিষ্কাশনের জন্য একটি পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র স্থাপনে সম্মত হয়। ১৯৫৭ সালে সুয়েজ সঙ্কটের পর সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কূটনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে ফরাসি প্রেসিডেন্ট রেনে কটি তৎকালীন ফরাসি সাহারাতে C.S.E.M. গঠনের সিদ্ধান্ত নেন যেটি ছিল CIEES-এর পরিবর্তে গঠিত একটি নতুন পারমাণবিক পরীক্ষা কেন্দ্র।[১৭]
১৯৫৭ সালে ইউরাটম গঠন করা হয়, এবং, পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের আড়ালে ফরাসিরা জার্মানদের এবং ইটালিয়ানদের সাথে পারমাণবিক অস্ত্র উদ্ভাবন ও উন্নয়নে চুক্তি সাক্ষর করে।[১৮] জার্মান চ্যান্সেলর কনরাড অ্যাডেনোয়ার তাঁর মন্ত্রীসভাকে বলেন যে তিনি "ইউরাটমের মাধ্যমে আমাদের নিজস্ব পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদনের ক্ষমতা যত দ্রুত সম্ভব অর্জন করতে হবে"।[১৯] এই চিন্তাভাবনাগুলো স্বল্পস্থয়ী ছিল। ১৯৫৮ সালে দ্য গোল প্রেসিডেন্ট হন এবং জার্মানি ও ইটালিকে উৎখাত করেন।[স্পষ্টকরণ প্রয়োজন]
১৯৫৮-মে সঙ্কটের যখন সময দ্য গোল প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করেন, তখন আণবিক বোমা বানানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ১৯৬০ সালে ইসরায়েলি বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষক হিসেবে রেখে এবং তাদের বৈজ্ঞানিক তথ্য-উপাত্ত গ্রহণের পূর্ণ ক্ষমতা দিয়ে একটি সফল পারমাণবিক পরীক্ষা চালানো হয়।[২০] পরীক্ষাগুলি চালানোর পর দ্য গোল দ্রুত ইসরায়েলের সাথে ফরাসি পারমাণবিক কর্মসূচির বিচ্ছেদের পদক্ষেপ নেন।[২১] এরপর থেকে ফ্রান্স নিজস্ব পারমাণবিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি এবং রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছে যাতে করে পারমাণবিক যুদ্ধ লাগার সময় যদি, যুক্তরাষ্ট্র নিজ শহরগুলি বাঁচাতে পশ্চিম ইউরোপের সাহায্যে এগিয়ে আসতে অপারগতা জানায়, সেক্ষেত্রেও যাতে ফ্রান্স নিজের নিরাপত্তা বজায় রাখতে পারে।[২২]
১৯৭০-এর শুরুর দিকে এবং ৮০র দশক জুড়ে যুক্তরাষ্ট্র ফরাসি কর্মসূচিতে প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান করা শুরু করে। ব্রিটিশ পারমাণবিক কর্মসূচিতে আমেরিকানরা প্রকাশ্যে সহায়তা করলেও ফরাসিদের করেছিল গোপনে। নিক্সন প্রশাসন, তার পূর্বতন প্রেসিডেন্টদের তুলনায়, আমেরিকার বন্ধুদের পারমাণবিক অস্ত্রের মালিকানার বিরোধিতা করেনি। তাঁরা বিশ্বাস করত যে, সোভিয়েতরা একাধিক পারমাণবিক শক্তির অধিকারী পশ্চিমা শক্তিকে মুকাবিলা করতে অধিকতর বিপত্তির সম্মুখীন হবে। ১৯৪৬ সালের আণবিক শক্তি আইন পারমাণবিক অস্ত্রের নকশা সংক্রান্ত তথ্য আদান প্রদান নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এই সংক্রান্ত কার্যক্রম প্রতিরোধে তাঁরা "নেতিবাচক নির্দেশনা" বা, "কুড়িটি প্রশ্ন" নামক পদ্ধতি ব্যবহার করেন। ফরাসি বৈজ্ঞানিকরা তাঁদের আমেরিকান সমতুল বিজ্ঞানীদের তাদের গবেষণা সম্পর্কে বলে জেনে নিতেন যে তারা সঠিক কিনা। ফরাসিরা যে সকল ক্ষেত্রে সহযোগিতা পেতেন তার মধ্যে ছিল, মার্ভ, বিকিরণ প্রতিরোধী ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ তৈরি, সামরিক ডিজাইন, সোভিয়েত মিসাইল প্রতিরোধী ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, এবং উন্নত কম্পিউটার প্রকৌশল। যেহেতু ফরাসি কর্মসূচি দেশের "সর্বাধিক মেধাবী সন্তানদের" আকর্ষণ করত, আমেরিকানরাও ফরাসি প্রোগ্রাম থেকে সুফল পেতে লাগল। এই সম্পর্ক দুই দেশের সামরিক সহযোগিতা জোরদার করতে ভূমিকা রাখে। ১৯৬৬ সালে ন্যাটোর নেতৃত্ব-ক্রম থেকে ফ্রান্সের প্রস্থান সত্ত্বেও, ফ্রান্স দুটি আলাদা পারমাণবিক টার্গেটিং পরিকল্পনা প্রণয়ন করে, একটা ছিল "জাতীয়" যেটা ফরাসি পারমাণবিক প্রতিরক্ষা বাহিনীর জন্য অর্থাৎ ফ্রান্সের সুরক্ষার জন্য, আর আরেকটা ছিল ন্যাটোর সাথে সমন্বিত পরিকল্পনা।[২২]
মনে করা হয় ফ্রান্স ইতপূর্বে নিউট্রন কিংবা উন্নত তেজস্ক্রিয় বোমার পরীক্ষা চালিয়েছে। দৃষ্টত, ১৯৬৭[২৩] সালে প্রাথমিক প্রযুক্তিগত পরীক্ষার মাধ্যমে ফ্রান্স এক্ষেত্রে নেতৃস্থানীয় অবস্থান গ্রহণ করে, আর ১৯৮০[ক] সালে সত্যিকারের নিউট্রন বোমা পরীক্ষা করে।
পারমাণবিক পরীক্ষা
[সম্পাদনা]১৯৬০ হতে ১৯৯৫ পর্যন্ত ফরাসিরা ২১০ টি পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা চালায়। আলজেরিয় যুদ্ধের মধ্যভাগে সেখানে পারমাণবিক পরীক্ষা শুরু করা হয়। ১৯৬০ হতে ১৯৬৬ পর্যন্ত সতেরোটি পরীক্ষা করা হয় সেখানে। একশত তিরানব্বইটি করা হয় ফরাসি পলিনেশিয়ায়।[২৫][২৬]
পারমাণবিক পরীক্ষার একটা সংক্ষিপ্ত তালিকা এখানে রয়েছে: ফরাসি পারমাণবিক পরীক্ষার তালিকা
সাহারার পরীক্ষাকেন্দ্রসমূহ (১৯৬০–৬৬)
[সম্পাদনা]মূল নিবন্ধ: গের্বোই ব্লু ও আগাথে (আণবিক পরীক্ষা)
রেউনিওঁ, নিউ ক্যালেডোনিয়া এবং ক্লিপারটন দ্বীপ নিয়ে অনুসন্ধান শেষে বিশেষ অস্ত্র বিভাগের প্রধান জেনারেল চার্লস এলিয়েরেট, ১৯৫৭ সালের একটি রিপোর্টে ফ্রান্সের জন্য দুটি সম্ভাব্য পরীক্ষাস্থানের প্রস্তাব করেন। ফরাসি আলজেরিয়ার সাহারা মরুভূমি এবং ফরাসি পলিনেশিয়া। কিন্তু তিনি পলিনেশিয়ার বিপক্ষে যুক্তি দেন এই জন্য যে, এর অবস্থান ফ্রান্স হতে অনেক দূরে এবং এখানে কোন বড় বিমানবন্দর নেই। তদুপরি তিনি বলেন আলজেরিয়াকে সাময়িকভাবে বিবেচনা করা যেতে পারে, খুব সম্ভবত আলজেরিয় যুদ্ধ চলার কারণে।[২৭]
ধারাবাহিকভাবে ফেব্রুয়ারি ১৯৬০ হতে ১৯৬১ পর্যন্ত একাধিক বায়ুমণ্ডলীয় পারমাণবিক পরীক্ষা Centre Saharien d'Expérimentations Militaires("সাহারা সামরিক অভিক্রিয়া কেন্দ্র") কর্তৃক পরিচালিত হয়েছিল। প্রথম পরীক্ষা যেটাকে বলা হয়েছিল Gerboise Bleue ("নীল জারবোয়া") যেটি ১৩ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬০ আলজেরিয়াতে করা হয়। বিস্ফোরণটি হাম্মুদিয়া সামরিক ঘাটি হতে ৪০ কিলোমিটার দূরে, রাকানের নিকট, যেটি ছিল সাহারা হতে দক্ষিণমুখী হয়ে মালি পর্যন্ত তানজারুফাত মহাসড়কের শেষ শহর, এবং বাশার হতে ৭০০ কিমি / ৪৩৫ মাইল দূরবর্তী।[২৮] ডিভাইসটির ৭০ কিলোটন উৎপাদ্ ছিল। যদিও আলজেরিয়া ১৯৬২ সালে স্বাধীনতা লাভ করে, ফ্রান্স ১৯৬৬ পর্যন্ত আলজেরিয়ায় ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। ফরাসি জেনারেল পিয়েরে মারি গ্যালোয়াকে le père de la bombe("আণবিক বোমার জনক") খেতাব দেওয়া হয়।
আরও তিনটি বায়ুমন্ডলীয় পরীক্ষা ১ এপ্রিল ১৯৬০ থেকে ২৫ এপ্রিল ১৯৬১ হাম্মুদিয়ায় পরিচালনা করা হয়। সৈনিক, কর্মী এবং এলাকার যাযাবর তুয়ারেগ সম্প্রদায়ের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল। ফরাসি পত্রিকা L'Humanité এর মতে কোনরকম প্রটেকশন ছাড়াই সবাই উপস্থিত ছিল, খুব বেশি হলে তাদের মধ্যে কিছু ব্যক্তি প্রত্যেকটা পরীক্ষা পর্যবেক্ষণের পর গোসল করেন। ২৭ ডিসেম্বর ১৯৬০ Gerboise Rouge("লাল জারবোয়া") (৫ কিলো টন), যেটি ছিল তৃতীয় আণবিক বোমা, হিরোশিমার আণবিক বোমার তুলনায় অর্ধেক শক্তিশালী, বিস্ফোরিত হলে, জাপান, সোভিয়েত রাশিয়া, মিসর, মরক্কো, নাইজেরিয়া, ঘানা প্রতিবাদ করে।[২৯]
৫ জুলাই ১৯৬২ আলজেরিয়ার স্বাধীনতার পর ১৯ মার্চ ১৯৬২ তারিখে সম্পাদিত এভিয়ান চুক্তির ফলাফল স্বরূপ, ফরাসি সামরিক বাহিনী পরীক্ষাস্থান আলজেরিয় সাহারার অন্য একটি জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যেতে সম্মত হয়। জায়গাটি ছিল তামনারাসেত হতে ১৫০ কিমি উত্তরে ১, ইন ইকার গ্রামটির নিকট। ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক বিস্ফোরণগুলো গ্র্যানিট হিজার পর্বতমালার অন্তর্গত তাওরির্ত তান আফেল্লা পর্বতের গিরিখাদগুলোতে সম্পন্ন করা হচ্ছিল। এভিয়ান চুক্তির মধ্যে একটি গোপন ধারা ছিল যেটিতে বলা হয়েছিল "আলজেরিয়া সমর্পন করছে... ফ্রান্সের নিকট কিছু কিছু বিমানঘাটি, ভূখণ্ড, এলাকা এবং সামরিক স্থাপনা যেগুলি ইহার[ফ্রান্স] নিকট প্রয়োজনীয়" পাঁচ বছরের জন্য।
এরপর C.S.E.M.Centre d'Expérimentations Militaires des Oasis ("মরুদ্যান সামরিক অভিক্রিয়া কেন্দ্র")নামক ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক কেন্দ্র দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। ৭ নভেম্বর ১৯৬১ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৬ পর্যন্ত সর্বমোট ১৩ টি পরীক্ষা চালানো হয় ইন একার স্থাপনায়। ১ জুলাই ১৯৬৭ নাগাদ সকল ফরাসি স্থাপনা খালি হয়ে যায়।
১৯৬২ সালের ১ মে তে একটি ভূগর্ভস্থ কূপ পরীক্ষা হিসেবে পরিকল্পিত "বেরিল" পরীক্ষা, যেটি ছিল হিরোশিমা অপেক্ষা চার গুণ শক্তিশালি, পরীক্ষা চালনার সময় একটি দুর্ঘটনা ঘটে[৩০] উক্ত কূপের ত্রুটিপূর্ণ ঢাকনির কারণে তেজস্ক্রিয় পাথর এবং ধুলা বায়ুমন্ডলে বের হয়ে এসেছিল। ৬২১তম বিশেষ অস্ত্র গ্রুপের ৯ জন সৈন্য তেজস্ক্রিয়তায় আক্রান্ত হয়।[৩১] সৈন্যগণ ৬০০ মিলিসিভার্ট পর্যন্ত তেজস্ক্রিয়তার মাঝে উন্মুক্ত অবস্থায় ছিল। উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন, ফরাসি সামরিক বাহিনীর মন্ত্রী, পিয়েরে মেসমার, এবং গবেষণামন্ত্রী গ্যাস্টন পালেওস্কি। যখন বিস্ফোরণের কারণে সৃষ্ট তেজস্ক্রিয় ধুম্রমেঘ, আকস্মিক বাতাসের দিক পরিবর্তনের কারণে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়ার সময় আরও ১00 এর মত ব্যক্তি, যাদের মধ্যে ছিলেন কর্মকর্তা, সৈনিক এবং আলজেরিয় কর্মী, ৫০ মিলিসিভার্ট অথবা এর চাইতে নিচুমাত্রার তেজস্ক্রিয়তার সম্মুখীন হয়েছিলেন। তাঁরা যে যেভাবে পারেন, বেশিরভাগক্ষেত্রে কোন রকম সুরক্ষাব্যবস্থা ছাড়াই পলায়ন করেন। পালেওস্কি ১৯৮৪ সালে লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন, যেটির কারণ হিসেবে উনি বেরিল দুর্ঘটনাকে দয়ী করে আসছিলেন। ২০০৬ সালে ব্রুনো বারিলট, নিউক্লিয়ার পরীক্ষার একজন বিশেষজ্ঞ, উক্ত স্থাপনাটিতে তেজষ্ক্রিয়তার পরিমাপ করেন এবং ঘণ্টায় গামা রশ্মি হিসাবে ৯৩ মাইক্রোসিভার্ট পান, যা ছিল অফিশিয়ালি, ১ বছরে যতটুকু গ্রহণ করা সম্ভব তার ১%।[৩২] এই ঘটনাটি ২০০৬ সালে ধারণকৃত নাটকীয়-তথ্যচিত্র "Vive La Bombe! "[৩৩] তে দেখানো হয়।
সাহারার স্থাপনা সমূহ
[সম্পাদনা]- CIEES (Centre Interarmées d'Essais d'Engins Spéciaux, বাংলায় "সংযুক্ত বিশেষ বাহন পরীক্ষাকেন্দ্র "): কলুম-বাশারের ১২ কিমি (৭.৫ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত হাম্মাকির, আলজেরিয়া:
- ১৯৪৭ হতে ১৯৬৭ পর্যন্ত রকেট ক্ষেপণে ব্যবহার করা হয়। [৩৪]
- C.S.E.M. (Centre Saharien d'Expérimentations Militaires): আয়িন-সালাহ'র পশ্চিমে রাকানে, তানজারুফাত, আলজেরিয়া:
- ১৯৬০ হতে ১৯৬১ পর্যন্ত বায়ুমন্ডলীয় পরীক্ষার কাজে ব্যবহৃত হয়।
- C.E.M.O. (Centre d'Expérimentations Militaires des Oasis): হিজার পর্বতমালার মধ্যে অবস্থিত আইন-আকার, তামনারাসেত, তান আফেল্লা হতে ১৫০ কিমি/৯৩ মাইল দুরত্বে, আলজেরিয়া:
- ১৯৬১ হতে ১৯৬৭ পর্যন্ত ভূগর্ভস্থ পরীক্ষার কাজে ব্যবহৃত।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় পরীক্ষাকেন্দ্রসমূহ (১৯৬৬–১৯৯৬)
[সম্পাদনা]পারমাণবিক পরীক্ষার জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হওয়া সত্ত্বেও ফরাসি সরকার তাহিতিতে ফা'আ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। এর জন্য সরকারের আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা ছিল পর্যটনশিল্প কিন্তু তারা তার তুলনায় অত্যধিক টাকাপয়সা ও সম্পদ খরচ করে বসে। ১৯৫৮ সাল নাগাদ, প্রথম সাহারা পরীক্ষার পূর্বে, ফ্রান্স নতুন পরীক্ষাকেন্দ্র স্থাপনের জন্য জায়গা খোজা শুরু করে, যেহেতু তাদের সাথে আলজেরিয়ার রাজনৈতিক টানাপোড়েন চলছিল এবং মাটির উপরে পামাণবিক পরীক্ষা নিষিদ্ধ হবার সম্ভাবনা ছিল। অনেকগুলি দূরবর্তী ফরাসি দ্বীপ , আল্পসের তলদেশ, পিরেনিস এবং কর্সিকা নিয়ে গবেষণা করা হয়। কিন্তু, প্রকৌশলিগণ মেট্রোপলিটান ফ্রান্সের সম্ভাব্য পরীক্ষাস্থান গুলিতে বিভিন্ন সমস্যা খুজে পান। [২৭]
১৯৬২ সাল নাগাদ ফ্রান্স আশা করছিল যে, আলজেরিয় স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সাথে তারা দরকষাকষি করে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত সাহারাকে পরীক্ষাকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারব, কিন্তু তারা এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে হাইড্রোজেন বোমার জন্য তাদের আরও কিছু বায়ুমন্ডলীয় পরীক্ষা করার প্রয়োজন পড়বে, যেটা আলজেরিয়ায় করা সম্ভব নয়। ফরাসি পলিনেশিয়ায় মুরুরুয়া এবং ফাংগাটাউফটা কে সে বছর নির্বাচন করা হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট শার্ল দ্য গল ১৯৬৩ সালের ৩ জানুয়ারি এই ঘোষণা দেন। তিনি আরও বলেন যে এটা পলিনেশিয়ার দুর্বল অর্থনীতির জন্য একটা ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে। পলিনেশিয় রাজনীতিবিদ ও সাধারণ মানুষ এই সিদ্ধান্তকে সাদরে গ্রহণ করে। কিন্তু পরীক্ষা শুরু হবার পর এগুলি বিতর্কিত হিসেবে পরিচিত হতে থাকে, বিশেষত বিচ্ছিন্নতাবাদী পলিনেশিয়দের মাঝে।[২৭]
১৯৬৬ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত পলিনেশিয়ায় ১৯৩ টি পারমাণবিক পরীক্ষা চালনা করা হয়। ২৪ আগস্ট ১৯৬৮ ফ্রান্স সর্বপ্রথম থার্মোনিউক্লিয়ার অস্ত্র—যার ছদ্মনাম ছিল ক্যানোপাস—ফারাঙ্গুটার ওপর বিস্ফোরণ ঘটায়। একটা ফিসন যন্ত্র একটা লিথিয়াম-৬ ডিউটেরাইড এর প্রজ্বলন করে, যা ছিল, একটা উচ্চভাবে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম জ্যাকেটের মাঝে এবং যা ২.৬ মেগাটনের একটা বিস্ফোরণ ঘটায়।
সিমুলেশন কর্মসূচী (১৯৯৬–২০১২)
[সম্পাদনা]এই অনুচ্ছেদটি সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন। (জুলাই ২০১৯) |
অতীব সম্প্রতি, ফ্রান্স সুপারকম্পিউটারের সাহায্যে পারমাণবিক বিস্ফোরণের সিমুলেশন ও গবেষণা শুরু করেছে।
বর্তমান পারমাণবিক ডকট্রিন ও রণকৌশল
[সম্পাদনা]ফরাসি আইন যে কোন নির্দিষ্ট সময়ে চারটির মাঝে অন্তত একটি পারমাণবিক ডুবোজাহাজকে আটলান্তিক মহাসাগরে টহল দেবার পূর্বশর্ত আরোপ করেছে, যুক্তরাজ্যের ন্যায়।[৩৫]
২০০৬ সালে ফরাসি প্রেসিডেন্ট জ্যঁ শিরাক উল্লেখ করেন যে, সন্ত্রাশী রাষ্ট্র কর্তৃক হামলা ঠেকাতে ফ্রান্স পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারে প্রস্তত। তিনি আরও উল্লেখ করেন, ফরাসি পারমাণবিক বাহিনী এইভাবে ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা পোষণ করে।[৩৬]
২০০৮ সালের ২১ মার্চ প্রেসিডেন্ট নিকোলা সার্কোজি ঘোষণা করেন, ফ্রান্স তাঁর বিমান সহকারে পরিবহনযোগ্য পারমাণবিক পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ কমিয়ে ফেলবে(যেটি বর্তমানে ৬০টি TN81 ওয়ারহেডের সমন্বয়ে গঠিত বাহিনীকে এক তৃতীয়াংশ কমিয়ে ২০টি তে নিয়ে আসে এবং সমগ্র ফরাসি শস্ত্রাগারকে ৩০০ টির কম ওয়ারহেডে নিয়ে আসে।[৩৭][৩৮]
পারমাণবিক পরীক্ষাবিরোধী বিক্ষোভ
[সম্পাদনা]- জুলাই ১৯৫৯ তে, যখন ফ্রান্স ঘোষণা করল যে তারা সাহারাতে পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা শুরু করবে, তখন নাইজেরিয়া এবং ঘানায় প্রতিবাদ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়। লাইবেরিয়া ও মরক্কোর সরকারও এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানায়। ১৯৫৯ সালের ২০ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ২৬ টি আফ্রিকান ঔ এশিয়ান সদস্য কর্তৃক একটি প্রস্তাব পাশ হয় যেখানে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় এবং "এই ধরনের পরীক্ষা হতে বিরত থাকার জন্য" ফ্রান্সকে অনুরোধ করা হয়। [৩৯]
- ১৯৬৮ সাল নাগাদ কেবলমাত্র ফ্রান্স ও চীন ছিল একমাত্র দেশ যারা মুক্ত বায়ুমন্ডলে পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা করছিল এবং হাইড্রোজেন বোমার মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ করছিল। এসব কারণে অধিকতর ফরাসি বায়ুমন্ডলীয় পরীক্ষার বিপক্ষে একটা বৈশ্বিক আন্দোলন গড়ে উঠে।[১০]
- ১৯৬০ হতে ফরাসি পলিনেশিয়ায় বায়ুমন্ডলীয় বিস্ফোরণের প্রতিবাদে নিউজিল্যান্ডের শান্তিবাদী সংস্থা CND ও পিস মিডিয়া দেশব্যাপী পারমাণবিক শক্তিবিরোধী আন্দোলন পরিচালনা শুরু করে। এই প্রতিবাদের মধ্যে অন্তর্গত ছিল দেশব্যাপী দুটি বৃহৎ আকারের জাতীয় পিটিশন যার কারণে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সরকারের যুক্ত উদ্যোগে ফ্রান্সের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করা হয়(১৯৭২)।[৪০]
- ১৯৭২ সালে গ্রিনপিস এবং নিউজিল্যান্ডের শান্তিবাদি সংস্থার একটা জোট একত্রিত হয়ে পারমাণবিক পরীক্ষাস্থানে একটি জাহাজের অনুমতিহীন প্রবেশের মাধ্যমে পরীক্ষা কয়েক সপ্তাহ পিছিয়ে দেয়। ঐ সময় জাহাজের কাপ্তান ডেভিড ম্যাকট্যাগার্ড'কে ফরাসি সামরিক বাহিনীর সদস্যরা প্রহার করে গুরুতরভাবে আহত করে।
- ১৯৭৩ সালে নিউজিল্যান্ডের পিস মিডিয়া একটা আন্তর্জাতিক ইয়ট বহরের আয়োজন করে যার মধ্যে ছিল ফ্রি, স্পিরিট অফ পিস, বয় রোয়েল, ম্যাজিক আইল্যান্ড, এবং তানমুর, যেটি পরীক্ষা-নিষিদ্ধ এলকার মধ্য দিয়ে যাত্রা করে।[৪১]
- ১৯৭৩ সালে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী নর্মান কার্ক প্রতীকি প্রতিবাদ হিসেবে দুটি নৌবাহিনীর ফ্রিগেট HMNZS ক্যান্টারবুরি, HMNZS ওটাগো মুরুরুয়াতে পাঠান।[৪২] তাদের সাথে ছিল রাজকীয় অস্ট্রেলীয় নৌবহরের একটি তৈলবাহী জাহাজ HMS সাপ্লাই।[৪৩]
- ১৯৮৫ সালে নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডে অবস্থিত গ্রিনপিসের জাহাজ রেইনবো ওয়ারিয়র ফরাসি গোয়েন্দা সংস্থা DGSE কর্তৃক বোমাবর্ষণ ও নিমজ্জনের শিকার হয়। উক্ত জাহাজ ফরাসি সামরিক এলাকায় প্রতিবাদ জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। নাবিকদের মধ্যে একজন, পর্তুগালের ফার্নান্ডো পেরেইরা, একজন আলোকচিত্রী, তাঁর ফটোগ্রাফিক সরঁজাম উদ্ধার করতে গিয়ে পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণ করেন। DGSE এর দুই জন সদস্যকে পাকড়াও ও দণ্ডিত করা হয়, কিন্তু পরবর্তীতে তাদেরকে বিতর্কিতভাবে ফ্রান্সে প্রত্যাবাসিত করা হয়।
- ১৯৯৫ সালে ব্যাপক পারমাণবিক পরীক্ষা নিষিদ্ধকরণ চুক্তি সাক্ষরের ঠিক এক বছর পূর্বে ফরাসি প্রেসিডেন্ট জ্যঁ শিরাকের মুরুরুয়া একটি পারমাণবিক পরীক্ষার সিরিজ চালানোর সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিবাদের কারণ হয়ে দাড়ায়, যার মধ্যে একটি ছিল ফরাসি মঁদের উপর নিষেদ্ধাজ্ঞা আরোপ। এই সকল পরীক্ষার উদ্দেশ্য ছিল পারমাণবিক প্রযুক্তি সম্পর্কে যথেষ্ট পরিমাণে তথ্য আহরণ করা যাতে ভবিষ্যতে অতিরিক্ত কোন পরীক্ষা করবার প্রয়োজন না পড়ে।[৪৪]
- ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ফরাসি সামরিক বাহিনী মুরুরুয়া ও ফাঙ্গাউফতায় ৩০ বছর ধরে প্রায় ২০০ টির মত পারমাণবিক পরীক্ষা চালায়। যার মধ্যে ৪৬ টি ছিল বায়ুমন্ডলীয় এবং তার মধ্যে ৫ টি ছিল তুলনামূলক নিম্ন ক্ষমতাসম্পন্ন। ২০০৬ সালের আগস্টে ফরাসি সরকারের INSERM একটি আনুষ্ঠানিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে যেখানে ১৯৯৬ সাল নাগাদ ফরাসি এলাকায় পারমাণবিক পরীক্ষা ও থাইরয়েড ক্যান্সারের একটি যোগসূত্র খুঁজে পায়।[৪৫]
ভেটেরান সৈন্যসংস্থা ও সম্মেলন
[সম্পাদনা]২০০১ সালে পারমাণবিক পরীক্ষাকার্যে অভিজ্ঞ সৈন্যদের নিয়ে একটি সংস্থা গঠিত হয় (AVEN, "Association des vétérans des essais nucléaires")।[৪৬] পলিনেশিয়ার এন. জি. ও. "মোরাউরা এ তাতুঁ" কে সাথে নিয়ে AVEN ২০০২ সালের ২৭ নভেম্বর ঘোষণা করে যে, তাঁরা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিপক্ষে অনৈচ্ছিক হত্যাকাণ্ড ও অপ্রয়োজনীয়ভাবে জীবনের ঝুঁকি সৃষ্টির একটি অভিযোগ দায়ের করবে। ২০০৩ সালের ৭ জুন টুঁর শহরের সামরিক আদালত সাহারা পরীক্ষায় জড়িত একজন ভেটেরানকে সর্বপ্রথম অশক্ত পেনশন প্রদান করে। AVEN এর এক জরিপে দেখা যায় তাদের সদস্যদের কেবলমাত্র ১২% শারিরীক সুস্থতার কথা ঘোষণা করেছে।[৩২] ২০০৭ সালের ১৩ ও ১৪ ফেব্রুয়ারি আলজেরিয়ার রাষ্ট্রপতি আবদুলআজিজ বুটেফিকার সরকারি তত্ত্বাবধায়নে আলজেরিয়ায় পারমাণবিক পরীক্ষার ফলাফল শীর্ষক একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কথা বাদ দিলেও প্রায় দেড়শ বেসামরিক ব্যক্তি আলজেরিয় ও ফরাসি পলিনেশিয়ায় পারমাণবিক পরীক্ষাস্থানে অবস্থান করছিলেন বলে ধারণা করা হয়।[৩২] ১৯৬০ সালে আলজেরিয়ায় ফরাসি পরীক্ষার একজন ফরাসি ভেটেরান বলেন যে, তাদের কোন প্রকার প্রতিরক্ষামূলক পোশাক অথবা মুখোশ ছাড়াই বিস্ফোরণ এত কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করতে বলা হয় যে, উনি হাত দিয়ে চোখকে রক্ষা করেন এবং, বিস্ফোরণের চমকানি তার হাত ভেদ করে তাঁর চোখে এসে লাগে। [৪৭] এই ধরনের স্বাস্থ্যঝুকিতে ভোগা ভেটেরানদের অনেকগুলি গ্রুপের মধ্যে একটি হচ্ছে AVEN, ২০০৯ সালে যার সদস্যসংখ্যা ছিল ৪,৫০০।[৪৬]
পরীক্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ
[সম্পাদনা]অনেক দিন থেকেই আলজেরিয়া ও ফরাসি পলিনেশিয়া উভয় স্থানেই ফরাসি পারমাণবিক পরীক্ষায় ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণের দাবি করে আসছেন। ফরাসি সরকার ১৯৬০ সালের শেষ থেকেই পারমাণবিক পরীক্ষায় সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তিদের ক্ষতির কথা অস্বীকার করে আসছেন।[৪৮] বেশ কিছু ফরাসি ভেটেরান এবং কিছু আফ্রিকান ও পলিনেশিয় গ্রুপ ফরাসি সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারণা অভিযান, জনসম্পর্ক প্রতিযোগিতা ও আদালতে মামলা পরিচালনা করে আসছে। মে ২০০৯ তে, বার জন ফরাসি ভেটেরানের একটি দল "সত্য ও ন্যায়" নামক একটি প্রচারণা সংগঠন গঠন করেন। তাঁরা দাবি করেন যে, তাঁরা ১৯৬০ এর দশকে পারমাণবিক পরীক্ষার কারণে স্বাস্থ্যগত অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছেন। কিন্তু তাঁরা আইন অমান্যকারীদের শিকার ব্যক্তিদের পক্ষে ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য গঠিত সরকারি কমিশন(CIVI) এর নিকট দাবি আদায়ের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন, এবং পূণরায় একটি প্যারিস আপিল বিষয়ক আদালতে মামলা করে হেরে যান, যখন আদালত ১৯৭৬ সালের পরে উক্ত ঘটনার ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তি বিধিবদ্ধ নয় বলে রায় দেন।[৪৯] এই প্রত্যাখ্যানের পর ফরাসি সরকার পারমাণবিক পরীক্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তিদের জন্য ১ কোটি ইউরোর ক্ষতিপূরণ তহবিল গঠন করার ঘোষণা দেন; ১৯৬০ দশকের এবং ১৯৯০-১৯৯৬ পলিনেশিয় পরীক্ষা উভয়ের জন্য।[৪৮] প্রতিরক্ষামন্ত্রী হের্ভে মরিন বলেন যে, সরকার একজন ফরাসি বিচারক ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসকদের দ্বারা একটি বোর্ড গঠন করবেন যাঁরা প্রতিটি মকদ্দমা আলাদাভাবে পর্যবেক্ষণ করে নির্ধারণ করবেন যে, ঐ ঘটনার জন্য ফরাসি পারমাণবিক পরীক্ষা দায়বদ্ধতা কতটুকু এবং যদি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি জাতিসংঘের আণবিক তেজস্ক্রিয়তা বিষয়ক বৈজ্ঞানিক কমিটি কর্তৃক ঘোষিত আণবিক কারণে সংগঠিত তেজস্ক্রিয়তার সাথে সম্বন্ধিত আঠাঁরটি অসুস্থতার কোন একটিতে ভুগছেন কি না।[৪৮][৫০] আন্দোলনকারী গ্রুপসমূহ, যাদের মধ্যে ছিল ভেটেরান সৈন্যদের গ্রুপ "সত্য ও ন্যায়" উক্ত কর্মসূচীর সমালোচনা করে যে তাঁরা অসুস্থতার তালিকা নিয়ে বেশিমাত্রায় সংরক্ষণশীল এবং অধিক পরিমাণে আমলাতান্ত্রিক। পলিনেশিয়ার গ্রুপগুলি বলে যে, উক্ত সিদ্ধান্ত ব্যপক পরিবেশ দূষণ ও তেজস্ক্রিয়তার তোয়াক্কা না করে অন্যায্যভাবে কেবলমাত্র পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোর নিকটে অবস্থিত ছোট ছোট এলাকার লোকদের কেবল তালিকাভুক্ত করবে [৫১] আলজেরিয় গ্রুপগুলো অভিযোগ করে এই সকল সীমিতকরণ অনেক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত করবে। একটি আলজেরিয় গ্রুপ অনুমান করে, ১৯৬০-৬৬ এর পরীক্ষাসমূহে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ২৭,০০০ ব্যক্তি জীবিত রয়েছেন, কিন্তু ফরাসি সরকার আনুমানিক কেবলমাত্র ৫০০ জনের একটি তালিকা দিয়েছেন।[৫২]
অ-পারমাণবিক ব্যপক ধ্বংসাত্মক অস্ত্রসমূহ
[সম্পাদনা]ফ্রান্স দাবি করে যে এটি বর্তমানে কোনপ্রকার রাসায়নিক অস্ত্রের মালিকানা নাই। ১৯৯৫ সালে রাষ্ট্রটি রাসায়নিক অস্ত্র চুক্তি (CWC) অনুমোদন করে এবং ১৯৮৪ সালে জৈবিক ও বিষাক্ত অস্ত্রচুক্তি(BWC) সাক্ষরে সম্মত হয়। এছাড়াও ফ্রান্স ১৯২৬ সালে জেনেভা প্রটোকলে সাক্ষর করে।
১৯১৪ সালের আগস্টে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে, আক্রমণকারী জার্মান সৈন্যদের বিরুদ্ধে ফ্রান্স প্রথম দেশ হিসাবে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে, যদিও এটি ছিল অ-প্রাণঘাতি কাদাঁনে গ্যাস (জাইলাইল ব্রোমাইড)। যুদ্ধ যখন ট্রেঞ্চভিত্তি্বক খন্ডযুদ্ধে রূপ নেয়, তখন ফরাসিদের বাগে পেতে জার্মানরা বিভিন্ন উপায় খুজতে আরম্ভ করে, এবং ১৯১৫ সালের ১৫ এপ্রিল ফরাসি সেনাদের বিপক্ষে ইপ্রেঁর যুদ্ধে ক্লোরিন গ্যাস দিয়ে আক্রমণ করে। এভাবে এক নতুন সমরকৌশলের সূচনা ঘটে কিন্তু এর ফলাফলে ঐদিন ফরাসি সৈন্যবিন্যাস এ সৃষ্ট ফাটলের সুবিধা জার্মানরা নিতে ব্যর্থ হয়। সময়ের সাথে সাথে পশ্চিমা রণক্ষেত্রের সেনাবাহিনীগুলোর অস্ত্রাগারে আরও শক্তিশালী ফসজিন গ্যাস ক্লোরিন গ্যাসের স্থান গ্রহণ করে, যাদের মধ্যে ছিল ফ্রান্স। যার ফলাফলে উভয় পক্ষে ব্যপক হতাহত হতে থাকে কিন্তু তা যুদ্ধ চলার সাথে সাথে আস্তে আস্তে প্রশমিত হয় উন্নততর প্রতিরক্ষাকারী পোশাক ও গ্যাসমুখোসের ব্যবহারের কারণে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনালগ্নে ফ্রান্স মাস্টার্ড ও ফসজিন গ্যাসের ব্যপক পরিমাণে মজুদ করে রেখেছিল, কিন্তু আক্রমণকারী অক্ষশক্তির বাহিনীর বিরুদ্ধে তা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকে, কারণ আক্রমণকারী অক্ষবাহিনীও কোন প্রকার রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার থেকে বিরত ছিল।
১৯৪২ এর শুরু হতে হলোকস্টের অংশ হিসেবে নাৎসি বাহিনী ফ্রান্স ও অন্যান্য অধিকৃত এলাকায় ব্যপক মাত্রায় ইহুদি ও অন্যান্য নির্ধারিত বেসামরিক জনগণের গণহত্যা শুরু করে। এই কাজে মৃত্যুশিবিরে কর্মদক্ষতা বাড়াতে তাঁরা রাসায়নিক গ্যাস বিষক্রিয়া ব্যবহার করেন যেটা মানব ইতিহাসে সর্বাধিক সংখ্যায় হত্যাকাণ্ডের নজির হিসেবে স্থান দখল করে আসছে।[৫৩]
ফ্রান্স আক্রমণের সময় জার্মান বাহিনী একটি ফরাসি জৈব গবেষণা কেন্দ্র দখল করে এবং তথাকথিতভাবে জার্মানিতে আলুর গোবরে পোকা ব্যবহারের অভিসন্ধি খুজে পায়।[৫৪]
যুদ্ধ শেষ হবার সাথে সাথে ফরাসি সামরিক বাহিনী তাদের উপনিবেশ আলজেরিয়ায় দখলকৃত জার্মান রাসায়নিক অস্ত্রের পরীক্ষা শুরু করে, যার মধ্যে ছিল টাবুন, একটা চরম বিষক্রিয় নার্ভ এজেন্ট। ১৯৪০ এর দশকের শেষের দিকে টাবুন-পূর্ণ গোলাবারুদের পরীক্ষা একটি নৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাড়ায়, প্রায়শই গবাদি পশুপাখি ছিল এসব পরীক্ষার বিষয়বস্তু।[৫৫] এসব রাসায়নিক পরীক্ষার স্থান ছিল আলজেরিয়ার বি২-নামুস, মরক্কোর সীমান্ত থেকে ১০০ কিলোমিটার(৬২ মাইল) পূর্বে একটি জনমানুষশূন্য মরুভূমি, এছাড়াও আরও অনেক।[৫৬][৫৭]
ধারণা করা হয়, ১৯৮৫ সালে ফ্রান্সের নিকট প্রায় ৪৩৫ টন রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদ ছিল, যা ন্যাটোভুক্ত দেশসমূহের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ১৯৮৯ সালে প্যারিসে একটি সম্মেলনে ফ্রান্স ঘোষণা করে, যে, সে আর কোন প্রকার রাসায়নিক অস্ত্রের অধিকারী নয়, কিন্তু প্রয়োজন হলে তাৎক্ষণিকভাবে অস্ত্র প্রস্তুতের ক্ষমতা সে বহন করে।[৫৮]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]- পরমাণু শক্তিবিরোধী বিক্ষোভ (ইংরেজিতে, ইংরেজি উইকিপিডিয়া)
- ফরাসি পারমাণবিক বাহিনী(ইংরেজিতে, ইংরেজি উইকিপিডিয়া)
- ফরাসি সিমুলেশন প্রজেক্ট(পারমাণবিক পরীক্ষার বিকল্প) (ফরাসিতে, ফরাসি উইকিপিডিয়া)
- পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ (ইংরেজিতে, ইংরেজি উইকিপিডিয়া)
- মুরুরুয়া (ইংরেজিতে, ইংরেজি উইকিপিডিয়া)
- পারমাণবিক শক্তিমুক্ত এলাকা- নিউজিল্যান্ড (ইংরেজিতে, ইংরেজি উইকিপিডিয়া)
- গণবিধ্বংসী অস্ত্র
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ "Nuclear Weapons: Who Has What at a Glance"। Arms Control Association। ACA। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১৬।
- ↑ ক খ "Global nuclear weapons: downsizing but modernizing"। sipri। SIPRI। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১৬।
- ↑ "Minimize Harm and Security Risks of Nuclear Energy"।
- ↑ "CNS - Chemical and Biological Weapons Possession and Programs Past and Present"। Federation of American Scientists। ২০০১-১০-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৩-২১।
- ↑ "France and the Chemical Weapons Convention"। French Ministry of Foreign and European Affairs। ২০০৮-০৪-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৩-২১।
- ↑ https://fas.org/issues/nuclear-weapons/status-world-nuclear-forces/
- ↑ Table of French Nuclear Forces (Natural Resources Defense Council, 2002)
- ↑ "NEW YORK HERALD TRIBUNE, EUROPEAN EDITION, 'JOLIOT-CURIE RIPS AMERICA FOR ATOMIC ENERGY REPORT'"। Woodrow Wilson International Center for Scholars।
- ↑ "Weapons of Mass Destruction (WMD): Nuclear Weapons"। GlobalSecurity.org।
- ↑ ক খ Origin of the Force de Frappe (Nuclear Weapon Archive)
- ↑ https://fas.org/nuke/guide/israel/nuke/farr.htm
- ↑ "Archived copy"। ২০১৫-০৪-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৯-২৪।
- ↑ "Mohammed Omer Wins Norwegian PEN Prize - WRMEA"। www.wrmea.org।
- ↑ Pinkus, Binyamin; Tlamim, Moshe (২০০২)। "Atomic Power to Israel's Rescue: French-Israeli Nuclear Cooperation, 1949–1957"। Israel Studies। 7 (1): 104–138। জেস্টোর 30246784।
- ↑ "Israel's Nuclear Weapons"। www.au.af.mil। ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০১৯।
- ↑ Stuck in the Canal, Fromkin, David - Editorial in The New York Times, 28 October 2006
- ↑ "Archived copy" (পিডিএফ)। ২০০৭-০৯-২৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০২-০৯।
- ↑ Die Erinnerungen, Franz Josef Strauss - Berlin 1989, p. 314
- ↑ Germany, the NPT, and the European Option ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ এপ্রিল ২০১২ তারিখে (WISE/NIRS Nuclear Monitor)
- ↑ Farr, Warner D (September 1999), The Third Temple's holy of holies: Israel's nuclear weapons, The Counterproliferation Papers, Future Warfare Series, 2, USAF Counterproliferation Center, Air War College, Air University, Maxwell Air Force Base, retrieved July 2, 2006 https://fas.org/nuke/guide/israel/nuke/farr.htm
- ↑ https://fas.org/nuke/guide/israel/nuke/
- ↑ ক খ Ullman, Richard H. (Summer ১৯৮৯)। "The Covert French Connection"। Foreign Policy। 75 (75): 3–33। জেস্টোর 1148862। ডিওআই:10.2307/1148862।
- ↑ "BBC News - Sci/Tech - Neutron bomb: Why 'clean' is deadly"। news.bbc.co.uk।
- ↑ "French Neutron Bomb (Hansard, 16 July 1980)"। hansard.millbanksystems.com। ১৫ জুলাই ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১৯।
- ↑ Treize ans après le dernier des essais nucléaires français, l'indemnisation des victimes en marche. Hervé ASQUIN, AFP. 27 May 2009.
- ↑ Four decades of French nuclear testing ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১০ তারিখে. Julien PEYRON, France24. Tuesday 24 March 2009.
- ↑ ক খ গ Regnault, Jean-Mark (অক্টোবর ২০০৩)। "France's Search for Nuclear Test Sites, 1957–1963"। The Journal of Military History। 67 (4): 1223–1248। জেস্টোর 3396887। ডিওআই:10.1353/jmh.2003.0326।
- ↑ "RAPPORT N 179 - L'EVALUATION DE LA RECHERCHE SUR LA GESTION DESDECHETS NUCLEAIRES A HAUTE ACTIVITE - TOME II LES DECHETS MILITAIRES"। www.senat.fr।
- ↑ 1960: France explodes third atomic bomb, BBC On This Day (ইংরেজি)
- ↑ "France's Nuclear Weapons - Origin of the Force de Frappe"। nuclearweaponarchive.org।
- ↑ "Dossier de présentation des essais nucléaires et leur suivi au Sahara" (পিডিএফ)। সেপ্টেম্বর ২৫, ২০০৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ১৫, ২০১৯।
- ↑ ক খ গ La bombe atomique en héritage, L'Humanité, February 21, 2007 (ফরাসি)
- ↑ "EcoVision Festival - Edizione 2007"। ২৩ জানুয়ারি ২০০৯। ২৩ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৯ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১৯।
- ↑ "Nuclear submarines collide in Atlantic'". The Guardian, February 16th, 2009
- ↑ "France 'would use nuclear arms'". BBC News, Thursday 19 January 2006
- ↑ "Nucléaire : Mise à l'eau du terrible devant Sarkozy - France - LCI"। ২০০৯-০১-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-১৬।
- ↑ "France cuts its nuclear weapons by a third"[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]. The Daily Telegraph (London).
- ↑ Question of French nuclear tests in the Sahara. GA Res. 1379 (XIV). UNGA, 14th Sess. UN Doc A/4280 (1959). http://www.un.org/documents/ga/res/14/ares14.htm
- ↑ "Archived copy"। ২০০৯-০১-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৩-২৩।
- ↑ "Archived copy"। ২০১২-০২-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৩-২৩।
- ↑ "Archived copy"। ২০১১-০৭-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৮-১৯।
- ↑ Frame, Tom (২০০৪)। No Pleasure Cruise: The Story of the Royal Australian Navy। Crows Nest: Allen & Unwin। পৃষ্ঠা 251। আইএসবিএন 978-1-74114-233-4।
- ↑ Les essais nucleaires—report of the French Senate (in French)
- ↑ Lichfield, John (৪ আগস্ট ২০০৬)। "France's nuclear tests in Pacific 'gave islanders cancer'"। The Independent। London। সংগ্রহের তারিখ ১৮ অক্টোবর ২০১২।
- ↑ ক খ Les victimes des essais nucléaires enfin reconnues ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩১ মে ২০০৯ তারিখে. Marie-Christine Soigneux, Le Montange (Clermont-Ferrand). 27 May 2009.
- ↑ « J’ai participé au premier essai dans le Sahara » DANIEL BOURDON, 72 ans, de Thourotte. Le Parisien. 24 May 2009.
- ↑ ক খ গ Government earmarks €10 million for nuclear test victims ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৮ মার্চ ২০০৯ তারিখে. France 24. Tuesday 24 March 2009.
- ↑ Court denies nuclear test victims compensation ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০ অক্টোবর ২০১২ তারিখে. France 24. Friday 22 May 2009
- ↑ Essais nucléaires français au sud de l’Algérie: La France définit six critères[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]. "La voix de l’oranie" (Oran, Algeria). 21 May 2009.
- ↑ Nuclear compensation bill falls short of expectations ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩১ মে ২০০৯ তারিখে. France24. Wednesday 27 May 2009
- ↑ VICTIMES ALGÉRIENNES DES ESSAIS NUCLÉAIRES FRANÇAIS. Sur quels critères sera évalué le handicap? ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০০৯-০৫-২১ তারিখে. L'Expression (Algeria), 18 May 2009, p.24
- ↑ From Cooperation to Complicity: Degussa in the Third Reich, Peter Hayes, 2004, pp 2, 272, আইএসবিএন ০-৫২১-৭৮২২৭-৯
- ↑ Milton Leitenberg; Raymond A Zilinskas; Jens H Kuhn (২৯ জুন ২০১২)। The Soviet Biological Weapons Program: a history। Harvard University Press। পৃষ্ঠা 442–। আইএসবিএন 978-0-674-06526-0।
- ↑ Jonathan Tucker (১৮ ডিসেম্বর ২০০৭)। War of Nerves: Chemical Warfare from World War I to Al-Qaeda। Knopf Doubleday Publishing Group। পৃষ্ঠা 120–123। আইএসবিএন 978-0-307-43010-6।
- ↑ "First World War.com - Weapons of War: Poison Gas"। firstworldwar.com।
- ↑ https://fas.org/nuke/guide/france/cbw/
- ↑ Fredrik Wetterqvist (১৯৯০)। French Security and Defence Policy: Current Developments and Future Prospects। DIANE Publishing। পৃষ্ঠা 105–। আইএসবিএন 978-1-56806-347-8।
গ্রন্থপঞ্জি
[সম্পাদনা]- (ফরাসি) জিন-হুগুয়েস ওপ্পেল, Réveillez le président, Éditions Payot et rivages, ২০০৭ (আইএসবিএন ৯৭৮-২-৭৪৩৬-১৬৩০-৪). এই বইটি ফ্রান্স এর পারমাণবিক বাহিনীর ওপর রচিত একটি কল্পকাহিনী; বইটিতে বিংশ শতাব্দীর পরবর্তী অর্ধাংশে সংগঠিত ঐতিহাসিক সত্য ঘটনার ওপর দশটি অধ্যায় রয়েছে।
টীকা
[সম্পাদনা]বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ফরাসি পারমাণবিক কর্মসূচীর গভীরভাবে বিশ্লেষিত ব্যাকগ্রাউন্ডের ভিডিও[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- sonicbomb.com এ পাওয়া ফরাসি পারমাণবিক কর্মসূচীর ভিডিও আর্কাইভ[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] at
- ফরাসি পারমাণবিক ডকট্রিনের পরিবর্তন?, রায়ল্ট, চার্লস - ISRIA, ২৫ জানুয়ারি, ২০০৬.
- দেশ পরিচয়: ফ্রান্স (পারমাণবিক ঝুঁকি উদ্যোগ)
- পারমাণবিক বৈজ্ঞানিদের বুলেটিন ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ আগস্ট ২০০৯ তারিখে
- পারমাণবিক নোটখাতা: ফরাসি পারমাণবিক বাহিনী, সেপ্টেম্বর/অক্টোবর ২০০৮।
- পারমাণবিক পলিসি: ফ্রান্স একা জুলাই / আগস্ট ২০০
- The French atomic energy program September 1962
- গ্রিনপিস চলচ্চিত্র (রেইনবো ওয়ারিয়র এর ওপর বোমাবাজির ওপর, যেটি ছিল ফরাসি পরমাণুবাদবিরোধী একটি জাহাজ)
- Nuclear Files.org (ফ্রান্সের বর্তমান ক্ষমতা নিয়ে গবেষণা)
- (ফরাসি) Archives sur le Centre d'Expérimentations Nucléaires du Pacifique (C.E.P.) à Moruroa, Hao et Fangataufa
- আলসোস ডিজিটাল লাইব্রেরি কর্তৃক ফরাসি পারমাণবিক কর্মসূচীর ওপর চিন্থিত গ্রন্থপঞ্জি
- যুক্তরাষ্ট্র-ফ্রান্স পারমাণবিক সম্পর্কের ওপর উড্রো উইলসন পারমাণবিক বিস্তাররোধ আন্তর্জাতিক ইতিহাস প্রকল্পের পেজ যুক্তরাষ্ট্র-ফ্রান্স পারমাণবিক সম্পর্কের ওপর উড্রো উইলসন পারমাণবিক বিস্তাররোধ আন্তর্জাতিক ইতিহাস প্রকল্পের বেশ কিছু মৌলিক দলিল রয়েছে।