তুলশীমালা চাল
তুলশীমালা আলোক সংবেদনশীল আমন প্রজাতির ধান। জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে আগস্ট মাসের ১ম সপ্তাহ পর্যন্ত এই ধান লাগানো হয়। অক্টোবর মাসের শেষ থেকে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি ফুল আসে। ডিসেম্বরের ১ম সপ্তাহ থেকে শেষ সপ্তাহ (অগ্রহায়ণ মাসের মাঝামাঝি থেকে পৌষ মাসের শুরু) পর্যন্ত ধান কাটা হয়।[১] প্রতি হেক্টরে ফলন বলন ছাড়া ২.৫০ থেকে ২.৭৫ মে. টন আর বলনে (প্রতি হেক্টর) উৎপাদন হয় ৩.০০-৩.২৫ মে. টন। বয়সকাল থাকে ১২৫-১৪০ দিন (বলান ও ফলনের ওপর নির্ভর করে)। ধানের রং কালচে ধূসর। ১০০০ ধানের গড় ওজন: গড়ে ১১ গ্রাম (শুকনা ধান)।[২] শেরপুরের তুলশীমালা ধানের জিআই নিবন্ধন পেতে ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি)-এর কাছে জিআই পণ্যের আবেদন করেছে শেরপুর জেলা প্রশাসক। সকল প্রক্রিয়া শেষ করে ২০২৩ সালের ১২ জুন দেশের ১৪শ ভৌগোলিক নির্দেশকের পণ্যের নিবন্ধন সদন লাভ করেছে শেরপুরের তুলশীমালা ধান।[৩][৪]
বৈশিষ্ট্য
[সম্পাদনা]তুলশীমালা ধান গাছের উচ্চতা ১১০-১৮৫ সেমি, গড় কুশির সংখ্যা ৮-১০টি। শীষের গড় দৈর্ঘ্য ২২-২৪ সেমি (বলনে শীষের দৈর্ঘ্য বেশি হয়)। শীষে দানার গড় সংখ্যা: ১৪০-১৮০ টি। এটি খরা সহিষ্ণু। সাধারণ নাবী জাত হিসেবে কৃষকরা আবাদ করে থাকে। আকষ্মিক বন্যাপ্রবণ এলাকার জন্য অত্যন্ত উপযোগী। বলন (ধান গাছ তোলে পুনরায় একই জমিতে লাগানো) করলে রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ সাধারণত কম হয়। ঢলে পড়ার প্রবণতাও কম দেখা যায়। বলন করে চারা রোপন করলে চারার দৈর্ঘ্য বেশি হওয়ায় এক-থেকে দেড় ফুট গভীর পানিতেও রোপর করা যায়।
ব্যবহার
[সম্পাদনা]চাল সুগন্ধি, চিকন ও সুস্বাদু। পোলাও, বিরিয়ানি, পায়েস, খিচুড়ি, ভাত, পিঠা, ফ্রাইড রাইস সহ অন্যান্য খাবারে বিশেষ উপযোগী।[৫]

শেরপুরের তুলশীমালা চালের সুনাম ও সমৃদ্ধি শতশত বছর আগের। সম্প্রতি শেরপুর জেলার ব্র্যান্ডিং সুগন্ধি চাল তুলশীমালা[৬]। দেশের বিভিন্ন জেলায় নানা প্রজাতির সুগন্ধি ধানের চাল উৎপাদিত হলেও শেরপুরের সুগন্ধি তুলশীমালা চাল গুন, মান ও সুগন্ধে ভিন্ন রকম। [৭]ঈদ-পূজা বিভিন্ন উৎসব পার্বণে তুলশীমালা সুগন্ধি চাল আত্মীয়দের বাড়িতে পাঠানো, এটা শেরপুর জেলার এক প্রাচীন রীতি। বাড়িতে নতুন জামাই আসলে অনেককেই তুলশীমালা চালের পোলাও রান্না করে। যার জন্য এটাকে অনেকেই জামাই আদর চাল বলে থাকে। স্বাদ ও গন্ধে অতুলনীয়।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "তুলশীমালা"। কৃষি বাতায়ন। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০২০।
{{ওয়েব উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: ইউআরএল-অবস্থা (লিঙ্ক) - ↑ "তুলসীমালার যত কদর"। বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০২০।
{{ওয়েব উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: ইউআরএল-অবস্থা (লিঙ্ক) - ↑ "শেরপুরের তুলশীমালা চাল"। তুলশীমালা চাল। ১৬ জুন ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুন ২০২৩।
- ↑ "শেরপুরের তুলশীমালা ধান পেলো জিআই পণ্যের স্বীকৃতি"। দৈনিক জনকণ্ঠ। ১৫ জুন ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুন ২০২৩।
- ↑ "কদর বাড়ছে শেরপুরের সুগন্ধি চাল তুলশীমালার!"। বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০২০।
{{ওয়েব উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: ইউআরএল-অবস্থা (লিঙ্ক) - ↑ "শেরপুরের ব্র্যান্ডিং সুগন্ধি তুলসীমালা চাল"। যায়যায়দিন। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০২০।
{{ওয়েব উদ্ধৃতি}}: উদ্ধৃতি শৈলী রক্ষণাবেক্ষণ: ইউআরএল-অবস্থা (লিঙ্ক) - ↑ "সুগন্ধী তুলসীমালা ধানে আগ্রহ বাড়ছে"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ৬ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০২০।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- বিডিনিউজ ২৪ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৬ জুন ২০২০ তারিখে
- উইকিবই