ছাগলনাইয়া আক্রমণ
ছাগলনাইয়া আক্রমণ | |||||
---|---|---|---|---|---|
| |||||
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী | |||||
![]() ![]() ![]() ![]() |
![]() ![]() |
ছাগলনাইয়া আক্রমণ এমন একটি লুঠনার্থক আক্রমণ বোঝায় যা বৃহত্তর ভুলুয়ার সীমান্তাঞ্চল ছাগলনাইয়ায় সংঘটিত হয়েছিল।
পটভূমি[সম্পাদনা]
কুকিরা একটি চীনা-তিব্বতি জাতিগোষ্ঠী যারা বর্তমান ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল জুড়ে, মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাংশে এবং বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে বিস্তৃত। বাংলাদেশের সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগগুলির আঞ্চলিক ইতিহাসে সীমান্তভূমিতে কুকিদের আক্রমণ বেশ প্রচলিত ছিল।[১]
প্রাথমিক আধুনিক যুগে ছাগলনাইয়া পার্বত্য ত্রিপুরা রাজ্যের অংশ ছিল, যদিও পূর্ব বাংলা ও বৃহত্তর ভুলুয়ার মতো ছাগলনাইয়া একটি সমভূমি ছিল। কুকিরা ত্রিপুরার পার্বত্য অঞ্চলে বসবাস করতেন, এবং সমভূমিতে ছিল বাঙ্গালী ও ইংরেজদের উপস্থিতি। ছাগলনাইয়ার বাঙ্গালীরা উপসাংস্কৃতিক ও ভাষাগত ভাবে নোয়াখাইল্লা। বৃহত্তর নোয়াখালী আগে ভুলুয়া রাজ্য নামে পরিচিত ছিল।
বিবরণ[সম্পাদনা]
১৮৬০ খ্রীষ্টাব্দের ৩১ জানুয়ারিতে, কুকিরা কুকি রিয়াঙ্গের নেতৃত্ত্বে পার্বত্য ত্রিপুরা থেকে ছাগলনাইয়ার সমভূমিতে হানা দেয়।[২] বখশগঞ্জ এলাকাকে লুটপাট করার পরপরেই কুকিরা বসন্তপুর গ্রামের কমল পোদ্দারকে হত্যা করে এবং তাঁর ঘরের মহিলাদেরকে অসম্মান করে। এই আক্রমণের খবর পেয়ে পার্শ্ববর্তী কোলাপাড়া গ্রামে গুণাগাজী ও সর্দার জকিমল কুকিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা দেয়। কুকিরা ৭০০ নারীকে অপহরণ করে এবং মুন্সী আব্দুল আলী ইংরেজ কর্তৃপক্ষকে কুকিদের নৃশংসতার খবর জানান। যুদ্ধে তবুও কুকিরা এক-দুই দিন ছাগলনাইয়ায় থাকে এবং ১৮৫ ইংরেজদেরকে হত্যা করে ও ১০০ জনকে অপহরণ করে। ইংরেজরা তারপর নোয়াখালী, ত্রিপুরা (কুমিল্লা) ও চট্টগ্রাম জেলা থেকে পুলিশ-সৈন্যদল পাঠায় কিন্তু কুকিরা তখন দেশীয় রাজ্যের জঙ্গলে ফিরে। এই ঘটনার পর, কুকিরা কখনও ছাগলনাইয়ায় ফিরে আসেনি।[৩]
তৎকালীন নোয়াখাইল্লা কবি গুল বখশ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি পূঁথি রচনা করেছিলেন যা বর্তমানে "কুকি কাটার পূঁথি" নামে সুপরিচিত।[৪] রাজমালাতেও এই ঘটনার উল্লেখ আছে যেখানে পার্বত্য ত্রিপুরা রাজ্যের ফৌজদার ধরনী সিংহের অবদান উল্লেখ করা হয়েছে।[৫]
আরও দেখুন[সম্পাদনা]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ T. Haokip, 'The Kuki Tribes of Meghalaya: A Study of their Socio-Political Problems', in S.R. Padhi (Ed.). Current Tribal Situation: Strategies for Planning, Welfare and Sustainable Development. Delhi: Mangalam Publications, 2013, p. 85.
- ↑ জন এডোয়ার্ড ওয়েবস্টার (১৯১১)। "History"। Eastern Bengal and Assam District Gazetteers। দ্যা পাইয়োনিয়ার প্রেস। পৃষ্ঠা ৩০।
- ↑ আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ; আহমদ শরীফ (১৯৬০)। সৈয়দ সাজ্জাদ হোসায়েন, সম্পাদক। A Descriptive Catalogue Of Bengali Manuscripts। ঢাকা: পাকিস্তান এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ৭৪।
- ↑ রণজীৎ কুমার সমাদ্দার (১৯৯১)। বাংলার গণসংগ্রামের পটভূমিকা। বনমালী বিশ্বনাথ প্রকাশন। পৃষ্ঠা ১১৪।
- ↑ "কোলাপাড়া: গুণাগাজী ও জকিমল প্রসঙ্গ"। ইতিহাস সম্মেলন। পরিষদ। ১৯৬৮। পৃষ্ঠা ৬৭-৬৯।