চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী
জন্ম১৯৬০ (1960) (বয়স ৬৪)
সন্দ্বীপ, চট্টগ্রাম
আনুগত্য বাংলাদেশ
সেবা/শাখা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
কার্যকাল১৫ জুন ১৯৮০- ২০১৮
পদমর্যাদা লেফটেন্যান্ট জেনারেল
ইউনিটইনফ্যান্ট্রি কর্পস
নেতৃত্বসমূহ
  • এনডিসি কমান্ডার
  • এআরটিডিসি এর জিওসি
  • ৯ম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি
  • এসএসএফ মহাপরিচালক
  • বিইউপির ভাইস চ্যান্সেলর
  • বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি মহাপরিচালক
  • পরিচালক সামরিক গোয়েন্দা
  • সিয়েরা লিওনে জাতিসংঘের মিশন কার্যক্রমের প্রধান
  • বিজিবির অপারেশন পরিচালক
যুদ্ধ/সংগ্রামইউএনএএমএসআইএল
ইউএনওএমওজেড
পুরস্কার
  • বীর বিক্রম
  • সেনাবাহিনী পদক (এসবিপি)

চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী বীর বিক্রম, এসবিপি, এনডিসি, পিএসসি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা এবং জাতীয় প্রতিরক্ষা কলেজের সাবেক কমান্ড্যান্ট ছিলেন। তিনি পূর্বে আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডক্ট্রাইন কমান্ড (এআরটিডিওসি) এর জিওসি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।

প্রথম জীবন[সম্পাদনা]

তিনি ১৯৬০ সালে চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ থানাতে জন্মগ্রহণ করেন।[১]

প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা[সম্পাদনা]

১৫ ই জুন ১৯৮০ সালে দ্বিতীয় বিএমএ লং কোর্সের সাথে তিনি ইনফ্যান্ট্রি কোরে কমিশন লাভ করেন। [২] রাষ্ট্রবিজ্ঞান, প্রতিরক্ষা বিজ্ঞান, ব্যবসা প্রশাসনে মাস্টার্স, এলএলবি ডিগ্রি এবং জাতীয় উন্নয়ন ও নিরাপত্তা বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। সামরিক শিক্ষাগত যোগ্যতা অর্জনের জন্য ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ থেকে এনডিসি, কমান্ড ও স্টাফ কলেজ থেকে পিএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। [১] জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘সাব-রিজিওনাল ট্রানজিট; ইটস ম্যানেজমেন্ট, ইমপ্যাক্ট অন ডেভলপমেন্ট এন্ড সিকিউরিটি : অ্যাসেসমেন্ট এন্ড রিকোমেনডেশন’ শীর্ষক অভিসন্দর্ভের জন্য চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।[৩]

পেশা[সম্পাদনা]

১টি পদাতিক ইউনিট, রাইফেলস ব্যাটালিয়ন ও পদাতিক ব্রিগেড কমান্ড করেন। দায়িত্ব পালন করেছেন পদাতিক ডিভিশনসহ সেনাসদরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে। তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির ব্যাটালিয়ন কমান্ডার, বাংলাদেশ রাইফেলসের পরিচালক অপারেশন ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পরিচালক সামরিক গোয়েন্দা পরিদপ্তর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়াও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস সাপোর্ট অপারেশন্স ট্টেনিং এবং ননকমিশন অফিসার্স একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও প্রথম প্রধান প্রশিক্ষক ছিলেন তিনি। [৪]

২০১০ সালের এপ্রিল মাসে চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হয়ে বাংলাদেশ আনসারগ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক হিসেবে যোগ দেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালের ভাইস চ্যান্সেলর নিযুক্ত হন তিনি। ঢাকা লজিস্টিকস এরিয়ার কমান্ডার ছাড়াও স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) মহাপরিচালক থেকে নবম পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) হিসেবে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। লেফটেন্যান্ট জেনারেল হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে জিওসি হিসেবে তিনি আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডে (আর্টডক) যোগ দেন। কমান্ড্যান্ট হিসেবে ২০১৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি তিনি ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে যোগ দেন।

জাতিসংঘ মিশন[সম্পাদনা]

তিনি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ পিস সাপোর্ট অপারেশনস ট্রেনিং (BIPSOT) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং পিয়ানোয়ার সিনিয়র ইন্সট্রাক্টর এবং চীফ ইন্সট্রাক্টর ছিলেন। সুইজারল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও নেপালের জাতিসংঘ বিষয়ক বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য তিনি একজন প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেছিলেন। তিনি ১৯৯৯ সালে নেপালের জাতিসংঘের প্রশিক্ষণের জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। তিনি সিয়েরা লিওনে বাংলাদেশ কন্টেইন্টেন্টের জাতিসংঘের সামরিক পর্যবেক্ষক ও চিফ অফ অপারেশন্স হিসাবে মোজাম্বিকে চাকরি করেন। জাতিসংঘ বিষয়ক প্রশিক্ষণ পরিচালনার জন্য তিনি সুইজারল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং নেপালেও কাজ করেছেন প্রশিক্ষক হিসেবে। মোজাম্বিকে জাতিসংঘ সামরিক পর্যবেক্ষক এবং সিয়েরালিওনে বাংলাদেশ কনটিনজেন্টে চিফ অব অপারেশন্স হিসেবে কাজ করেন তিনি।[৩]

স্বীকৃতি[সম্পাদনা]

চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের সময় অসীম সাহস, ত্যাগ ও বীরত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি 'বীরবিক্রম' উপাধিতে ভূষিত হন। [৫] ২০১২ সালের ডিসেম্বরে সাভারে তাজরিন গার্মেন্টসের উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেন। তিনি সাভারে রানা প্লাজার উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেন। উদ্ধার অভিযানের নেতৃত্বের জন্য তিনি "সেনাবাহিনী পদক" (এসবিপি) পেয়েছিলেন। [৬] তার নেতৃত্বে ১৬ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে বাংলাদেশ সবচেয়ে বড় মানব পতাকা রেকর্ড ভাঙে। ২৬ মার্চ ২০১৪ তারিখে বাংলাদেশ আবারো তার নেতৃত্বে ঢাকায় জাতীয় সংগীত গাইতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক লোক একটি নতুন রেকর্ড তৈরি করেন। দুটো বিশ্ব রেকর্ড গিনেস বুকে গিয়েছিল। এই বিশ্ব রেকর্ডের স্বীকৃতি স্বরূপ "সেনাবাহিনী পদক" (এসবিপি) প্রদান করা হয়। অসাধারণ অবদানের জন্য তাকে বিশিষ্ট সেবা পদক (ওএসপি) প্রদান করা হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্য সবচেয়ে আধুনিক সিম্পার্টিয়েড ওয়ার গেম সেন্টারের সহায়ক ও প্রতিষ্ঠাতা প্রধান ছিলেন। তিনি স্বর্ণকিশোরি নেটওয়ার্কের উপদেষ্টা ছিলেন। তার অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য প্রতিষ্ঠানটি তাকে ২০১৮ সালে "স্বর্ণ মানব" হিসাবে ভূষিত করা হয়।

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

ব্যক্তি জীবনেও অত্যন্ত সদালাপী, পড়াশুনা করতে এবং গলফ খেলতে পছন্দ করেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল হাসান।[৭] তিনি বগুড়া গল্ফ ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। স্ত্রী ফারজানা নিগার, কন্যা মারগুবা হাসান জারা ও পুত্র ফাইয়াজ হাসান চৌধুরীকে নিয়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল হাসানের সংসার। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি চ্যানেল আই এর টিভি উপস্থাপিকা ফারজানা ব্রাউনিয়ার সাথে দ্বিতীয় বিবাহে আবদ্ধ হন।[৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Profile: Brigadier General Chowdhury Hasan Sarwardy, psc"National Defence College। ২৬ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০১৩ 
  2. "NDC Commandant"National Defence College। ৯ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০১৫ 
  3. BanglaNews24.com। "এনডিসি এখন সেন্টার অব এক্সিলেন্স: লে. জে. হাসান"banglanews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৬-১২ 
  4. "2014 07 24 Dinner IHO LTG Chowdhury Hasan Sarwardy, CG ARTDOC, Bangladesh Army"Official Digital Archive of Fort Benning and the Maneuver Center of Excellence। ২০১৫-০৫-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মে ২০১৫ 
  5. "Major General Chowdhury Hasan Sarwardy honoured"Bangladesh Sangbad Sangstha (BSS)। ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩। ২০১৫-০৯-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০১৩ 
  6. "A successful 'rescue commander'"The Independent। Dhaka। ১৫ মে ২০১৩। ২৮ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০১৩ 
  7. "History of BGC"bdgolf.net। Bangladesh Golf। ২০ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৯