ইপ্সিতা বিশ্বাস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ইপ্সিতা বিশ্বাস
নারীশক্তি পুরস্কার গ্রহণ করছেন
জাতীয়তাভারতীয়
পেশাটার্মিনাল ব্যালিস্টিক বিজ্ঞানী
নিয়োগকারীটার্মিনাল ব্যালিস্টিক রিসার্চ ল্যাবরেটরি (টিআরবিএল), প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিআরডিও), ভারত সরকার
পরিচিতির কারণভারতের সশস্ত্র বাহিনী, আধাসামরিক বাহিনীতে এবং প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়নে নারীর ক্ষমতায়নে অবদান।

ইপ্সিতা বিশ্বাস একজন ভারতীয় টার্মিনাল ব্যালিস্টিক (ক্ষেপণবিজ্ঞানের একটি ক্ষেত্র) বিজ্ঞানী। ২০১৯ সালে তিনি নারীশক্তি পুরস্কারে ভূষিত হন। ভারতের সশস্ত্র বাহিনী, আধাসামরিক বাহিনী এবং প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়নে তাঁর অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে তিনি মহিলাদের জন্য ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কারটি পেয়েছিলেন।

প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা[সম্পাদনা]

ইপ্সিতার জন্ম ও বেড়ে ওঠা কলকাতায়।[১] তিনি ১৯৮৮ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফলিত গণিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।[১] স্নাতকোত্তর করার পরপরই তিনি প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থায় (ডিআরডিও) চাকরির জন্য আবেদন করেন এবং ১৯৮৮ সালেই নির্বাচিত হন। ১৯৯৮ সালে তিনি ডিআরডিওর একটি গবেষণাগার টার্মিনাল ব্যালিস্টিক রিসার্চ ল্যাবরেটরিতে (টিবিআরএল) যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি এই গবেষণাগারে তিনটি বিভাগের নেতৃত্ব দেন।[১]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

তিনি জীবন রক্ষাকারী যন্ত্র, প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা এবং ফ্রেঞ্জিবল বুলেটের (ক্ষুদ্র খণ্ডে বিভক্ত হয়ে লক্ষ্যবস্তু ছাড়া অন্যান্য বস্তুতে অনুপ্রবেশ কমায়) মূল্যায়নের ক্ষেত্রে কাজ করেছেন। ২০১৬ সালে, তিনি টিবিআরএল দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, এই দলটি কম-মারাত্মক প্লাস্টিক বুলেট তৈরি করেছিল। ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনী জম্মু ও কাশ্মীরে ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য এই বুলেট ব্যবহার করেছে। নিরাপত্তা বাহিনী বর্তমানে যে অস্ত্র ব্যবহার করে, যেমন একে-৪৭ রাইফেল, এই প্লাস্টিক বুলেটগুলি সেগুলিতেই ব্যবহার করা যেতে পারে।[১] এই বুলেটগুলি "মৃত্যু কমায়"।[১]

ইপ্সিতা বিশ্বাস এবং তাঁর দল ফ্রেঞ্জিবল বুলেট তৈরিতে জড়িত ছিলেন। এদের বিশেষত্ব হলো এগুলি বুলেটের চেয়ে শক্ত কোনো পৃষ্ঠে আঘাত করলে নিজেরা ছোট খণ্ডে ভেঙে যায়। এর প্রয়োগের ক্ষেত্রে স্কাই মার্শালরা বিমানে থাকা হাইজ্যাকারদের বুলেট দিয়ে গুলি করতে বা গুলি করার হুমকি দিতে পারে, এ ক্ষেত্রে এই নিশ্চয়তা থাকে যে বিমানটি যথেষ্ট মাত্রায় ক্ষতির সম্মুখীন হবে না।[১] এয়ার ইন্ডিয়া ১৯৯৯ সাল থেকে স্কাই মার্শাল ব্যবহার করছে।[২]

পুরস্কার[সম্পাদনা]

২০১৯ সালের মার্চ মাসে, ইপ্সিতা রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ কর্তৃক নারীদের জন্য ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার, নারীশক্তি পুরস্কার "২০১৮"-এ ভূষিত হন। প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়নে তাঁর অবদানের জন্য এবং ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীসমুহের জন্য বুলেটপ্রুফ ভেস্ট ও অন্যান্য প্রতিরক্ষামূলক সামগ্রীর ক্ষেত্রে তাঁর কাজের জন্য তিনি এই পুরস্কারে ভূষিত হন।[৩][৪] রাষ্ট্রপতি ভবনে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি[৫] তিনি 'স্বনির্ভরতার ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্বের জন্য অগ্নি পুরস্কার' এবং 'মেরিটোরিয়াস সার্ভিসের জন্য হাই এনার্জি মেটেরিয়াল সোসাইটি অফ ইণ্ডিয়া (এইচইএমএসআই) টিম অ্যাওয়ার্ড'-এ ভূষিত হয়েছেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Sharma, Aakriti (২০১৯-০৫-২৩)। "Meet Ipsita Biswas, scientist who developed non-lethal plastic bullets"Hindustan Times (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-০৯ 
  2. "Private airlines brace to meet hijack threats"The Times of India। ১১ অক্টোবর ২০০১। ২৩ মে ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০২০ 
  3. "TBRL scientist awarded for contribution to research"Tribune India (ইংরেজি ভাষায়)। ৯ মার্চ ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-০৯ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. "TBRL scientist bags award from President | Chandigarh News"The Times of India (ইংরেজি ভাষায়)। ৯ মার্চ ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-০৯ 
  5. "Nari Shakti Puraskar - Gallery"narishaktipuraskar.wcd.gov.in। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৪-১১