ইনাম আহমদ চৌধুরী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ইনাম আহমদ চৌধুরী
প্রাইভেটাইজেশন কমিশনারের চেয়ারম্যান
কাজের মেয়াদ
২০০১ – ২০০৬
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে সচিব
কাজের মেয়াদ
১৯৮৮ – ১৯৯৩
পূর্বসূরীএম কে আনোয়ার
উত্তরসূরীলুৎফুল্লাহিল মজিদ
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম (1937-06-29) ২৯ জুন ১৯৩৭ (বয়স ৮৬)
বারোকোট, গোলাপগঞ্জ, সিলেট, আসাম, ব্রিটিশ ভারত
(বর্তমান বাংলাদেশ)
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
অন্যান্য
রাজনৈতিক দল
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল
দাম্পত্য সঙ্গীনাগিনা আহমদ চৌধুরী
সম্পর্কফারুক আহমেদ চৌধুরী (ভাই),
ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী (ভাই),
ফখরুদ্দীন আহমদ (বোনে স্বামী)
সন্তান১ ছেলে ও ১ মেয়ে
পিতামাতাগিয়াসুদ্দিন আহমদ চৌধুরী (পিতা),
রফিকুন্নেছা খাতুন চৌধুরী (মাতা)
প্রাক্তন শিক্ষার্থীঅক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,
ঢাকা কলেজ

ইনাম আহমদ চৌধুরী (জন্ম ২৯ জুন ১৯৩৭) হলেন একজন বাংলাদেশি অবসরপ্রাপ্ত সরকারি আমলা, রাজনীতিবিদ ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য। তিনি বিশ্বব্যাংকএডিবির বিকল্প গভর্নর ছিলেন।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে সচিব এবং প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় বাংলাদেশ সরকারের প্রাইভেটাইজেশন কমিশনারের চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন।[১][২]

প্রাথমিক ও পারিবারিক জীবন[সম্পাদনা]

ইনাম আহমদ চৌধুরী ২৯ জুন ১৯৩৭ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের আসামের সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জের বারোকোট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা গিয়াসুদ্দিন আহমদ চৌধুরী ছিলেন ঢাকার কমিশনার। মা রফিকুন্নেছা খাতুন চৌধুরী। তার বড় ভাই ফারুক আহমেদ চৌধুরী বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত বাংলাদেশী কূটনীতিকবাংলাদেশি সরকারি আমলা যিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন। তার আরও দুই ভাই ও দুই বোন রয়েছেন, প্রয়াত মাসুম আহমেদ চৌধুরী (কূটনীতিক), ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী (রাষ্ট্রদূত, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও অধ্যাপক), বোন নাসিম হাই (স্বামী শহীদ কর্নেল সৈয়দ আবদুল হাই), ছোট বোন নীনা আহমেদ (স্বামী ফখরুদ্দীন আহমেদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা)।[৩][৪]

ইনাম তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের আসামের শিলংয়ে শিক্ষা জীবন শুরু করেন। তিনি ১৯৫২-৫৩ সালে ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের জেনারেল সেক্রেটারি থাকাকালে শহীদ মিনার নির্মাণ ও রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন সম্পর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্যে কলেজ থেকে বহিষ্কৃত হন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও আইন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তীতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও স্নাতকোত্তর অধ্যায়ন করেন।

ব্যক্তিগত ভুবনে আছেন সহধর্মিণী নাগিনা আহমদ চৌধুরী এবং পুত্র নাদিম ও কন্যা ইনা ফেরিয়েল। তিনি পৃথিবীর প্রায় প্রত্যেকটি দেশ ভ্রমণ করেছেন।[৫]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

ইনাম আহমদ চৌধুরী ১৯৬০ সালে সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তানে যোগদান করেন। ব্যাংককে জাতিসংঘের ‘এস্কাপ’ কমিশনের সেক্রেটারি, আই.ডি.বি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট। লন্ডনস্থ ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আই.এম.ও) সভাপতি। লন্ডনে ইকোনমিক মিনিস্টার পদে থাকাকালে লন্ডনস্থ অর্থনৈতিক প্রতিনিধিবর্গের এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে সচিব ছিলেন তিনি।

তিনি বিশ্বব্যাংক ও এ.ডি.বি’র বিকল্প গভর্নর ছিলেন।

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে অবদানের জন্যে রাশিয়া থেকে ‘লিজিয়ন অব অনার’ প্রাপ্তি। কমনওয়েল্থ সোসাইটি অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও ঢাকাবাসী সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা। বাংলাদেশ-চীন গণমৈত্রী সমিতির উপদেষ্টা।

এনাম বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন ক্যাপিটালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ছিলেন।

রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]

ইনাম আহমদ চৌধুরী ১৯৯৯ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগ দেন।

তিনি জেনারেল জিয়াউর রহমানের বিএনপি প্রতিষ্ঠার পিছনে থাকা কয়েকজন আমলাদের একজন ছিলেন। রাজনৈতিক অঙ্গনে পাক-পন্থী কূটনীতিক-রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত এই মানুষটির অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য জামায়াতে ইসলামীকে চারদলীয় জোটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা পরবর্তীতে বিশ-দলীয় জোটে বিস্তৃত হয়।

তিনি ২০০১ সালে লতিফুর রহমানের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত নির্বাচন কর্মসূচির পিছনেও নায়ক।

তিনি ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদায় খালেদা জিয়া সরকারের প্রাইভেটাইজেশন কমিশনারের চেয়ারম্যান ছিলেন।

তিনি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ছিলেন। ২০১৩ সালে বিএনপির আন্দোলনের সময় একবার গ্রেফতারও হন তিনি।

২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একাদশ সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ আসনে তিনি বিএনপি মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮ সালে গণভবনে শেখ হাসিনার হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে তিনি আওয়ামী লিগে যোগ দেন।[৬]

বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য।

গ্রন্থ[সম্পাদনা]

ইনাম আহমদ চৌধুরী ছাত্রজীবনে মাসিক প্রভাতী ও ছোটগল্প সংকলন নতুন ছবি প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে মাসিক যমুনারও সম্পাদক ছিলেন। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ

  • চিরঞ্জীব জিয়া[৭]
  • ধায় গাড়ি ধূম ছাড়ি[৮]
  • ভাবনায় বাংলাদেশ[৯]
  • নতুন ছবি[১০]
  • Genocide They Wrote[১১]
  • ছোটদের জিয়াউর রহমান ও বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ[১২]
  • আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা[১৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "আজ ইনাম আহমেদ চৌধুরীর জন্মদিন"দৈনিক নয়াদিগন্ত। ২৯ জুন ২০২১। ১৩ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০২৩ 
  2. "সাবেক সচিববৃন্দ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ১৬ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০২৩ 
  3. "'বঙ্গবন্ধুর অতি ঘনিষ্ঠ ও প্রিয়পাত্র ছিলেন'"বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ১৭ মে ২০১৭। ১৩ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০২৩ 
  4. "Enam Ahmed Chaudhury"তৃতীয় মাত্রা (ইংরেজি ভাষায়)। ১৩ নভেম্বর ২০২৩। ১৩ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০২৩ 
  5. মহিবুল ইজদানী খান ডাবলু (১ জানুয়ারি ২০২১)। "ইনাম আহমেদ চৌধুরীকে কী কাজে লাগাবে আ. লীগ"নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকম। ১৩ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০২৩ 
  6. "লিগের উপদেষ্টা পদে মনোনীত হলেন ইনাম আহমেদ চৌধুরী"এই সময় বাংলা। ৭ জুলাই ২০১৯। ১৩ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০২৩ 
  7. ইনাম আহমদ চৌধুরী (২০০২)। চিরঞ্জীব জিয়াবাংলাদেশ: হাসি প্রকাশনী। পৃষ্ঠা ৪০৮। 
  8. ইনাম আহমদ চৌধুরী (২০১২)। ধায় গাড়ি ধূম ছাড়িবাংলাদেশ: অ্যাডর্ন পাবলিকেশন। পৃষ্ঠা ১৯২। আইএসবিএন 9789842002755 
  9. ইনাম আহমদ চৌধুরী। ভাবনায় বাংলাদেশবাংলাদেশ: হাসি প্রকাশনী। 
  10. ইনাম আহমদ চৌধুরী। নতুন ছবিবাংলাদেশ: হাসি প্রকাশনী। 
  11. ইনাম আহমদ চৌধুরী, শাওকত লিটন (২০১৬)। Genocide They Wrote। ডেইলী স্টার বুকস। পৃষ্ঠা ১৬৮। আইএসবিএন 9789849207573 
  12. ইনাম আহমদ চৌধুরী (২০০২)। ছোটদের জিয়াউর রহমান ও বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদবাংলাদেশ: হাসি প্রকাশনী। পৃষ্ঠা ৭২। আইএসবিএন 9848336036 
  13. ইনাম আহমদ চৌধুরী। আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাবাংলাদেশ: হাসি প্রকাশনী।