আলী বিন আব্দুল্লাহ আল থানি
আলী বিন আব্দুল্লাহ আল থানি علي بن عبد الله آل ثاني | |||||
---|---|---|---|---|---|
কাতারের আমির | |||||
রাজত্ব | ২০ আগস্ট, ১৯৪৯–২৪ অক্টোবর, ১৯৬০ | ||||
রাজ্যাভিষেক | ২০ আগস্ট, ১৯৪৯ | ||||
পূর্বসূরি | আব্দুল্লাহ বিন জসিম আল থানি | ||||
উত্তরসূরি | আহমদ বিন আলী আল থানি | ||||
জন্ম | ৫ জুন, ১৮৯৫ দোহা, কাতার | ||||
মৃত্যু | ৩১ আগস্ট, ১৯৭৪ বৈরুত, লেবানন | ||||
বংশধর | আহমদ মুহাম্মদ আব্দুলাহ | ||||
| |||||
পিতা | আব্দুল্লাহ বিন জসিম আল থানি | ||||
মাতা | মরিয়ম বিনতে আব্দুল্লাহ আল আতিয়াহ |
আলী বিন আব্দুল্লাহ বিন জসিম বিন মুহাম্মদ আল থানি (১৮৯৫-১৯৭৪) ছিলেন কাতার রাজ্যের একজন আমির। শেখ আলি কাতারের প্রথম আমির হিসেবেও পরিচিত যিনি ভারত, মিশর, ইউরোপ, লেবানন এবং লেভান্ত সফর করেছেন। ১৯৬০ সালের মে মাসে শেখ আলীর এক চাচাতো ভাই তাকে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে তার বাসভবনে হত্যার চেষ্টা করে এবং তিনি ২৮ অক্টোবরে আহমদ বিন আলী আল থানির হাতে ক্ষমতা অর্পণ করে পদত্যাগ করেন।
জীবনী
[সম্পাদনা]প্রাথমিক জীবন ও রাজত্ব
[সম্পাদনা]শেখ আলী বিন আবদুল্লাহ ১৮৯৫ সালের ২৫ শে জুন দোহায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা হলেন আবদুল্লাহ বিন জসিম আল থানি। ১৯৪৯ সালের ২০ আগস্ট তিনি কাতারের আমির হন এবং তিনি প্রথম কাতারি আমির হিসেবেও পরিচিত, যিনি বিদেশে অন্যান্য দেশ সফর করেছেন। তিনি নিজের শাসনামলে শিক্ষা এবং অবকাঠামোর ওপর খুবই জোর দেন। পদত্যাগের পর তিনি কাতারে কয়েক বছর বসবাস করেছিলেন। তিনি আলেমদের সাথে বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে খুব মিশুক ছিলেন।
শাসনামল
[সম্পাদনা]তার শাসনামলে ১৯৪৯ সালের ৩১ ডিসেম্বরে বন্দর শহর মেসাইদ থেকে উপকূলীয় কাতারি তেলের প্রথম চালানের তত্ত্বাবধান করেন, যা তেল যুগে কাতারের প্রবেশকে চিহ্নিত করে।[১] তেলের প্রথম চালানের তত্ত্বাবধানের পাশাপাশি তার শাসনামলে ছেলে ও মেয়েদের জন্য প্রথম নিয়মিত স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অর্থায়ন ও প্রথম স্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণ দেখা যায়। এগুলি ছাড়াও শেখ আলী দোহা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ, বেশ কয়েকটি সড়ক নেটওয়ার্ক তৈরিসহ জল, বিদ্যুৎ ও বন্দর সুবিধাগুলিরও তদারকি করেন। তিনি অতিরিক্ত সরকারীবিভাগ ও মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি প্রথম যৌথ স্টক কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। [১] ব্রিটিশ রয়্যাল এয়ার ফোর্সের প্রাক্তন অফিসার ফিলিপ প্ল্যান্টকে ১৯৫০ সালের জানুয়ারিতে আমিরের উপদেষ্টা হিসাবে নিযুক্ত করা হয়।[১] সে বছরই ব্রিটেন আর্থার জন উইল্টনকে কাতার অঞ্চলে তাদের প্রথম রাজনৈতিক কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়। [১]
১৯৫২ সাল শেখ আলী এবং ইরাক পেট্রোলিয়াম কোম্পানির মধ্যে একটি নতুন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির শর্তাবলীর অধীনে কাতার তেল রপ্তানি থেকে লাভের ৫০% অর্জন করে।[১] কাতারের বিভিন্ন অঞ্চলে তেল অনুসন্ধানের সাথে সামঞ্জস্য রেখে শেখ আলী তেলের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি পরিচালনার জন্য একটি কার্যকর প্রশাসনিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ নেন। [১] পদত্যাগের পর তিনি অসংখ্য আলেমের সাথে বন্ধুত্ব করার পর বহু ঐতিহাসিক ইসলামি বই ছাপতে শুরু করেন, যা আগে কখনো ছাপা হয়নি। এসব বইপত্র লেবাননের আলমাক্তাব আল ইসলামিতে ছাপা হয়।[১]
১৯৫০ এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে শেখ আলীকে কেন্দ্র করে অসংখ্য বিক্ষোভ পরিচালিত হয়। ১৯৫০ এর দশকের শুরুর দিকে তেল কোম্পানিগুলির দিকে লক্ষ্য করে অসন্তুষ্ট তেল শ্রমিকরা অনেক প্রতিবাদের আয়োজম করেছিল। তখন তিনি তেল কোম্পানি এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাজ করেন। ১৯৫৬ সালে দোহায় বিক্ষোভ দেখা দেয় এবং আমিরের প্রতি আরো বৈরী মনোভাব প্রদর্শন শুরু করে। সে বছরই সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ হয়। এতে ২,০০০ জন অংশগ্রহণ করে, যাদের বেশির ভাগই ছিল তেল শ্রমিক ও আরব জাতীয়তাবাদীদের সাথে জোটবদ্ধ উচ্চ-পদস্থ কাতারি লোকজন। [২]
১৯৬০ সালের মে মাসে শেখ আলীর এক চাচাতো ভাই তাকে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে বৈরুতে নিজের অবসরকালীন বাসভবনে হত্যার চেষ্টা করে।[৩] এর কিছুদিন পর তিনি ২৮ অক্টোবর তিনি আহমদ বিন আলী আল থানিকে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পদত্যাগ করেন। [৪]
বিয়ে ও সন্তান
[সম্পাদনা]শেখ আলী বিন আবদুল্লাহ আল থানির দুইজন স্ত্রী ছিলেন; শেখা হামদা আল-থানি ও শেখা মরিয়ম বিনত আবদুল্লাহ আল আত্তিয়াহ। তাদের মোট ১৪ সন্তান ছিল: ১১ ছেলে ও ৩ মেয়ে। উল্লেখ্য যে, এই তালিকাটি তাদের বয়স অনুযায়ী, বড় ছেলে থেকে ছোট পর্যন্ত অবরোহক্রমে রয়েছে। কন্যাদের ক্ষেত্রেও তাই।
- শেখ কাসিম বিন আলী আল থানি
- শেখ আহমাদ বিন আলী আল থানি
- শেখ মোহাম্মদ বিন আলী আল থানি
- শেখ ফাহাদ বিন আলী আল থানি
- শেখ খলিফা বিন আলী আল থানি
- শেখ গানিম বিন আলী আল থানি
- শেখ হামাদ বিন আলী আল থানি
- শেখ আবদুল্লাহ বিন আলী আল থানি
- শেখ খালিদ বিন আলী আল থানি
- শেখ আবদুল রহমান বিন আলী আল থানি
- শেখ আল ওয়ালিদ বিন আলী আল থানি
- শেখা মারিয়াম বিনতে আলী আল থানি (১৯৪২- ২১ মে, ২০১৪)
- শেখা বোথাইনা বিনতে আলী আল-থানি
- শেখা মাওজা বিনতে আলী আল-থানি
মৃত্যু
[সম্পাদনা]শেখ আলী জীবনের বছরগুলিতে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়ে পড়েন এবং তিনি লেবাননে তার বাড়িতে থাকতেন। সেখানে নাসিব আলবারবির তার যত্ন নিতেন। তিনি ১৯৭৪ সালের ৩১ আগস্ট বৈরুতের বারবীর হাসপাতালে মারা যান। এরপর তার মরদেহ কাতারে নিয়ে যাওয়া হয় এবং আল রাইয়ান পৌরসভার একটি কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ "Shaikh Ali Bin Abdullah Al Thani"। Diwan। ২১ জুন ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০১২।
- ↑ Herb, Michael (২০১৪)। The Wages of Oil: Parliaments and Economic Development in Kuwait and the UAE। Cornell University Press। আইএসবিএন 978-0801453366।
- ↑ "Sheik of Qatar is safe in a shooting"। newspapers.com। The Kansas City Times। Associated Press। ৩১ মে ১৯৬০। পৃষ্ঠা 8। ১১ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।(সদস্যতা প্রয়োজনীয়)
- ↑ Yitzhak Oron (১৯৬০)। Middle East Record। Weidenfeld & Nicolson Ltd। পৃষ্ঠা 406।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]আলী বিন আব্দুল্লাহ আল থানি জন্ম: ৫ জুন ১৮৯৫ মৃত্যু: ৩১ আগস্ট ১৯৭৪
| ||
শাসনতান্ত্রিক খেতাব | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী আব্দুল্লাহ বিন জসিম আল থানি |
কাতারের আমির ১৯৪৯–১৯৬০ |
উত্তরসূরী আহমদ বিন আলী আল থানি |