মমতাজ উদ্দিন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মমতাজ উদ্দিন
নাটোর-১ আসনের
সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
১৯৮৬ – ১৯৮৮
পূর্বসূরীআসন তৈরি
উত্তরসূরীনওশের আলী সরকার
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম(১৯৪৯-০৬-০৬)৬ জুন ১৯৪৯
মৃত্যু৬ জুন ২০০৩(2003-06-06) (বয়স ৫৩)
নাটোর, বাংলাদেশ
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
দাম্পত্য সঙ্গীশেফালী মমতাজ
সম্পর্কআবুল কালাম (ভাই)
সন্তান১ ছেলে, ১ মেয়ে
পিতামাতাবিয়াকুল প্রামানিক (পিতা),

আবেজান বেওয়া (মাতা)

মমতাজ উদ্দিন (২১ সেপ্টেম্বর ১৯৪৯ - ৬ জুন ২০০৩) ছিলেন একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযোদ্ধা। তিনি নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।[১][২] মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০২৩ সালে মুক্তিযুদ্ধে একুশে পদক (মরণোত্তর) প্রদান করে।[৩]

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

মমতাজ উদ্দিন ২১ সেপ্টেম্বর ১৯৪৯ সালে নাটোরের লালপুরের আব্দুলপুরের মিল্কিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম বিয়াকুল প্রামানিক ও মাতার নাম আবেজান বেওয়া। তিনি করিমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে অস্টম শ্রেণি, চকনাজিরপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৬ সালে এসএসসি, নাটোর নবাব সিরাজ উদ দৌলা কলেজ থেকে ১৯৬৮ সালে এইচএসসি এবং ঈশ্বরদী কলেজ থেকে ১৯৭০ সালে স্নাতক পাশ করেন।[৪]

তার স্ত্রী শেফালী মমতাজ নবম জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত সাবেক নারী সংসদ সদস্য ছিলেন। এই দম্পতীর ১ ছেলে শামীম আহমেদ সাগর লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মেয়ে  ফারহানা ববি নিভা, সহকারী রেজিস্ট্রার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।[৪]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

মমতাজ উদ্দিন লেখে-পড়া শেষ করে ১৯৬৮ সালে সালামপুর হাই স্কুলের শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত তিনি সালামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন।[৪]

রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]

মমতাজ উদ্দিন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। লালপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সভাপতি ছিলেন। তিনি ১৯৭৩ সালে লালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৭৫ সালে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও নাটোর জেলা শাখা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন।[১]

তিনি ১৯৮৬ সালের তৃতীয় জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচনে সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রিকসা প্রতীক নিয়ে নাটোর-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন।[১][২]

তিনি ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন পরাজিত হন। ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯১ সালের পঞ্চম, ১২ জুন ১৯৯৬ সালের সপ্তম ও ২০০১ সালে জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নাটোর-১ আসন থেকে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ফজলুর রহমান পটলের নিকট পরাজিত হন।[৫][২]

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা[সম্পাদনা]

মমতাজ উদ্দিন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশ লিবারেশন ফ্রন্টের (মুজিব বাহিনী) কমান্ডার ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শেষে পুণরায় শিক্ষকতা পেশায় ফিরেন।[৪]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

মমতাজ উদ্দিন ২০০৩ সালের ৬ জুন মৃত্যুবরণ করেন। স্থানীয় নাটোর পুলিশ জানিয়েছিল যে রাত ১০.০০ টার সময় নাটোরের গোপালপুর-আবদুলপুর রোডের দারইপাড়ায় ১০ জন সশস্ত্র ব্যক্তির একটি দল মমতাজ উদ্দিনের মোটরসাইকেলে বাধা দেয় এবং তাকে কুপিয়ে হত্যা করে।[৬] ১৩ মার্চ ২০১৩ সালে রাজশাহীর একটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল মমতাজ উদ্দীপনকে হত্যা করার দায়ে নয়জনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীব কারাদণ্ড দেয় এবং প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে।[৭]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "৩য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ এপ্রিল ২০২০ 
  2. "মমতাজ উদ্দিন, আসন নং: ৫৮, নাটোর-১"দৈনিক প্রথম আলো। ৩১ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০২৩ 
  3. "একুশে পদক পাচ্ছেন নাটোরের শহীদ মমতাজ উদ্দিন"ঢাকা মেইল। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩। ৩১ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০২৩ 
  4. "মমতাজ উদ্দিন একুশে পদক পাওয়ায় লালপুরবাসির কৃতজ্ঞতা প্রকাশ"Ekushey Sangbad। ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩। ৩১ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০২৩ 
  5. "লালপুরের সাবেক এমপি মমতাজ হত্যা মামলার রায় ৫ মার্চ"banglaNews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-২৩ 
  6. "নাটোরে এমপি মমতাজ হত্যা দিবস পালন, যোগ দেয়নি স্ত্রী-পুত্র"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-২৩ 
  7. "নাটোরের মমতাজ হত্যা মামলায় ৯ জনের যাবজ্জীবন"দৈনিক সংগ্রাম। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-২৩