ইয়োনাস বাসানাভিস্যুস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ইয়োনাস বাসানাভিস্যুস
ইয়োনাস বাসানাভিস্যুস
জন্ম(১৮৫১-১১-২৩)২৩ নভেম্বর ১৮৫১
মৃত্যু১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯২৭(1927-02-16) (বয়স ৭৫)
সমাধিরাসোস সমাধিস্থান
৫৪°৪০′৯″ উত্তর ২৫°১৮′১০″ পূর্ব / ৫৪.৬৬৯১৭° উত্তর ২৫.৩০২৭৮° পূর্ব / 54.66917; 25.30278
জাতীয়তালিথুয়ানীয়
নাগরিকত্ব
  • রাশিয়ান সাম্রাজ্য
  • বুলগেরিয়া রাজ্য
  • দ্বিতীয় পোলিশ প্রজাতন্ত্র[১]
মাতৃশিক্ষায়তনমস্কো বিশ্ববিদ্যালয় (১৮৭৯)
পেশাচিকিৎসক
পরিচিতির কারণঅসরা এর প্রকাশক, লিথুয়ানীয় বৈজ্ঞানিক সমিতি’র প্রতিষ্ঠাতা, লিথুয়ানিয়ার স্বাধীনতা আইন এর স্বাক্ষরকারী
দাম্পত্য সঙ্গীগ্যাব্রিয়েলা এলিওনোরা মো’ল
পিতা-মাতা
  • জুরাস বাসানাভিসিয়াস (১৮২৬-১৮৭৯) (পিতা)
  • মারে বের্সতোনিউতে (১৮২৬-১৮৯০) (মাতা)
আত্মীয়ভাই ভিনকাস বাসানাভিসিয়াস
স্বাক্ষর

ইয়োনাস বাসানাভিস্যুস (Jonas Basanavičius, পোলিশ: ইয়ান বাসানোভিচ; ২৩ নভেম্বর ১৮৫১ - ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯২৭) ছিলেন একজন সক্রিয়তাবাদী ও লিথুয়ানিয়ার জাতীয় পুনর্জাগরণের প্রবক্তা। লিথুয়ানিয়া একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হওয়া পর্যন্ত সকল মুখ্য ঘটনার অংশীদার ছিলেন তিনি এবং তার এই অবদানের জন্য অনেক সময়ই তাকে অনানুষ্ঠানিকভাবে "জাতির পিতা" (লিথুয়ানীয়: tautos patriarchas)-এর সম্মানে ভূষিত করা হয়।

কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণকারী বাসানাভিস্যুসের হবার কথা ছিল একজন ধর্মযাজক, কিন্তু তার পরিবর্তে তিনি মস্কো মেডিক্যাল অ্যাকাডেমিতে চিকিৎসাশাস্ত্রে পড়াশোনার পথ বেছে নিয়েছিলেন। তিনি ১৮৮০ থেকে ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তৎকালীন বুলগেরিয়া রাজ্যে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। লম্বা দূরত্ব স্বত্বেও তিনি লিথুয়ানিয়ার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতেন। তিনিই সর্বপ্রথম "অস্‌রা" (Aušra, ১৮৮৩) নামক লিথুয়েনীয় ভাষার একটি পত্রিকা চালু করেন, সেখানে লিথুয়ানিয়া বিষয়ক নিবন্ধ লিখে ছাপাতে দিতেন, লিথুয়ানীয় লোকাচারসমূহের নমুনা (গান, রূপকথার গল্প, পৌরাণিক ঘটনা, ধাঁধা ইত্যাদি) সংগ্রহ করেও ছাপাতেন। তিনি বুলগেরিয়ার স্থানীয় রাজনীতির সাথেও সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯০৫ সালে তিনি লিথুয়ানিয়ায় ফিরে যান এবং তাৎক্ষণিকভাবেই লিথুয়ানিয়ার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত হন। ১৯০৫ সালে অনুষ্ঠিত ভিলনিয়াস সম্মেলন (লিথুয়ানীয়: Didysis Vilniaus Seimas) এর আয়োজক কমিটির সভাপতি ছিলেন তিনি। ১৯০৭ সালে তিনি লিথুয়ানীয় বৈজ্ঞানিক সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন, যা ছিল লিথুয়ানীয় ইতিহাস, নৃকুলবিদ্যা, ভাষাতত্ত্ব বিষয়ক বিজ্ঞজনদের একটি সংঘ। বাসানাভিস্যুস এই সংঘের সভাপতি হন এবং আজীবন এর কর্মকাণ্ডে নিজেকে উৎসর্গ করেন। ১৯১৭ সালে তিনি ভিলনিয়াস সম্মেলন কর্তৃক লিথুয়ানিয়া পরিষদের জন্য নির্বাচিত হন। ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে পরিষদের যে অধিবেশনে লিথুয়ানিয়ার স্বাধীনতা আইন গৃহীত হয়, তিনি ঐ অধিবেশনের সভাপতি ছিলেন এবং প্রথম ব্যক্তি হিসেবে তাতে স্বাক্ষর করেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরিণতিতে ভিলনিয়াস বেশ কয়েক বার ক্ষমতার রদবদলের মধ্য দিয়ে গেলেও বাসানাভিস্যুস শহর ত্যাগে অস্বীকৃতি জানান ও শহরের যাদুঘর, গ্রন্থাগার, সংগ্রহশালার সুরক্ষা অব্যাহত রেখে লিথুয়ানীয় সাংস্কৃতিক উপকরণসমূহ নিয়ে তার গবেষণা চালিয়ে যান। ১৯২০ সালের অক্টোবরে যেলিগফস্কির বিদ্রোহের পর, ভিলনিয়াস পোল্যান্ডের অংশ হয়ে যায় এবং সেখানে লিথুয়ানীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ বা সীমিত হয়ে পড়ে। শহরে বাসানাভিস্যুসের উপস্থিতি, তিক্তরূপে বিবাদমান ভিলনিয়াস অঞ্চলের প্রতি লিথুয়ানীয় দাবির প্রতীক হয়ে ওঠে। ১৯২৭ সালে যখন তিনি মৃত্যুবরণ করেন, লিথুয়ানিয়ার সরকার পাঁচ দিনের শোক ঘোষণা করে।

বাল্যকাল ও প্রাথমিক শিক্ষা[সম্পাদনা]

বাসানাভিস্যুস তৎকালীন রুশ সাম্রাজ্যের অধীন রাষ্ট্র, পোল্যান্ড কংগ্রেস (বা রুশ পোল্যান্ড) এর আগুস্তোভ প্রদেশ (Augustów Governorate) এর ওযকাবালিয়াই (Ožkabaliai, পোলিশ: Oszkobole) গ্রামে, এক লিথুয়ানীয় কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার ছোট ভাই ভিনকাস ১৮৬১ সালে জন্মগ্রহণ করেন; বাকি ভাইবোনেরা শৈশবেই মারা যায়। জন্মকালীন জটিলতার কারণে তার ধর্মপ্রাণ ক্যাথোলিক পিতা-মাতা প্রার্থনা ও প্রতিজ্ঞা করেন যে, তাদের প্রথম সন্তানকে তারা ধর্মযাজক হবার শিক্ষা দেবেন। সেই প্রতিজ্ঞা মেনে তারা স্থানীয় শিশুদের জন্য একজন গ্রামীণ শিক্ষকের পৃষ্ঠপোষকতা করেন। সেখানে বাসানাভিস্যুস প্রাথমিক পড়া, লেখা ও পাটীগণিত শিক্ষার পাশাপাশি গির্জার সেবকের কাজও করতেন। তিনি এরপর লুকসিয়াই (Lukšiai) এর একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও পড়াশোনা করেন। সেই সময় পোলিশকে কুলীন ও শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে তুলনামূলকভাবে মর্যাদাকর ভাষা হিসেবে গণ্য করা হত। রাষ্ট্রীয় প্রশাসনে রুশ ভাষা প্রচলিত ছিল, আর সেখানে লিথুয়ানীয় ভাষার ব্যবহার ছিল কৃষক শ্রেণির মানুষের মধ্যে। ১৮৬৩ এর অভ্যুত্থান এর পর, পোলীয় ভাষা ও সংস্কৃতির প্রভাব লাঘব করার উদ্দেশ্যে, জারপন্থী কর্তৃপক্ষ নানাবিধ রুশকরণ (Russification) নীতি বাস্তবায়ন করে। এমন একটি নীতির সুবাদে বাসানাভিস্যুস, মারিয়ামপোলে মাধ্যমিক বিদ্যালয় (Marijampolė Gymnasium)- এ ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান। অভ্যুত্থানের পূর্বে কোন লিথুয়ানীয়র ছেলের পক্ষে এমন কোন বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া দুষ্কর ছিল, যেখানে অভিজাত পোলিশদেরই একচেটিয়া সুবিধা দেওয়া হতো। বাসানাভিস্যুস ১৮৬৫ সালে প্রথম বার ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে অনুত্তীর্ণ হন, কিন্তু পরের বছর তিনি সফলতা লাভ করেন।

স্থানীয় গিরিদূর্গ এবং তার পিতা-মাতা, যারা স্নেহের সাথে স্থানীয় গান, পৌরাণিক কাহিনী আর গল্পের ভাণ্ডারের সাথে তাকে পরিচয় করিয়ে দেন, সেখান থেকেই বাসানাভিস্যুসের মধ্যে লিথুয়ানীয় ভাষা, সংস্কৃতি ও ইতিহাসের যথার্থ মূল্যায়নের প্রতি আগ্রহ গড়ে ওঠে। তার এই আগ্রহ গভীরভাবে বাড়তে থাকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে, যেখানে তিনি লিথুয়ানীয় ইতিহাসের সব কালজয়ী লেখকের (মাচিজ স্ত্রিকফ্‌স্কি, আলেকজান্ডার গুয়ানিনি, ইয়ান দুগোশ, মার্চিন ক্রোমার) সাথে পরিচিত হন, লিথুয়ানীয় লোক সঙ্গীত নিয়ে অধ্যয়ন করেন, ক্রিস্টিওনাস ডোনালাইটিস (Kristijonas Donelaitis) রচিত দ্য সিজনস (The Seasons), অ্যাডাম মিচকেভিচ রচিত কনরাড ওয়ালেনরড (Konrad Wallenrod), ভ্লাদিস্লাভ সিরোকোম্‌লা (Władysław Syrokomla) রচিত মার্জিয়ার (Margier)– এর মতন সব কালজয়ী কবিতা পড়েন, এবং আরও পড়েন ইউসেফ ইগ্নাৎসি ক্রাশেফ্‌স্কি (Józef Ignacy Kraszewski) এর লেখা ঐতিহাসিক কল্পকাহিনী। আর্নেস্ট রেনান (Ernest Renan) এর যীশুর জীবন (Life of Jesus) এর সমালোচনামূলক একটি প্রবন্ধ পড়ে তিনি ধর্মের দিক থেকে কিছুটা বিচ্যুত হয়ে যান। ১৮৭৩ সালে স্নাতক হবার পর, তাকে সেইনি যাজক শিক্ষালয় (Sejny Priest Seminary)– তে না পাঠিয়ে মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য উনি তার বাবা-মাকে বোঝান।

বাসানাভিস্যুস প্রথমে ইতিহাস ও ভাষাতত্ত্ব অধ্যয়নের জন্য মস্কো যান, কিন্তু দুটি ষান্মাসিক এর পর তিনি মস্কো মেডিক্যাল একাডেমিতে বদলি হয়ে যান। আবারও তিনি অভ্যুত্থান-পরবর্তী রুশকরণ নীতি থেকে লাভবান হন। পোল্যান্ড কংগ্রেসের লিথুয়ানীয় ছাত্রদের জন্য বরাদ্দ দশটি ফেলোশিপ এর একটি পান তিনি (বার্ষিক ৩৬০ রুবল)। সম্পূরক আয় হিসেবে তিনি গৃহশিক্ষকতা বেছে নেন, কিন্তু সেখানে জীবনযাপনের মান ছিল খুবই রূঢ় এবং এর স্থায়ী প্রভাব পড়ে তার স্বাস্থ্যের ওপর। বাসানাভিস্যুস সক্রিয়ভাবে ছাত্রদের কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করতেন, লিথুয়ানিয়ার অগ্রগতির খোঁজখবর রাখতেন, এবং লিথুয়ানীয় ঐতিহ্য নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে থাকেন। রুশ রাষ্ট্রীয় গ্রন্থাগার ও বিশ্ববিদ্যালয় পাঠাগার থেকে তথ্য সংগ্রহ করে, মহা-নৃপতি কেস্তুতিস (Kęstutis) এর ওপর পর্যালোচনা লেখার ইচ্ছা ছিল তার। তিনি সচরাচর গ্রীষ্মকাল লিথুয়ানিয়াতে লোক সঙ্গীত, রূপকথা, ধাঁধা সংগ্রহ করে কাটাতেন।

বুলগেরিয়ায় চিকিৎসক হিসেবে কর্মজীবন[সম্পাদনা]

৫০ লিটা’র ব্যাঙ্ক-নোটে ইয়োনাস বাসানাভিস্যুস

১৮৭৯ এর বসন্তে স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর, বাসানাভিস্যুস লিথুয়ানিয়াতে ফিরে যান এবং ওযকাবালিয়াই, ভিল্কাভিশকিস, এবং আলেকসোটাস– এ অল্প সংখ্যক রোগী দেখতেন। ব্যক্তিগত চর্চা প্রতিষ্ঠার আশায় তিনি অক্টোবর, ১৮৭৯ তে আবার রাশিয়া যান, কিন্তু শীঘ্রই তৎকালীন বুলগেরিয়া রাজ্য থেকে, প্রায় ৮০০০ অধিবাসীর শহর লম পালাঙ্কাতে, একটি হাসপাতালের প্রধান হওয়ার আকর্ষণীয় প্রস্তাব গ্রহণ করেন। জানুয়ারি ১৮৮০ এর শেষ দিকে সেখানে পৌঁছানোর পর, তিনি পুরনো একটা হোটেলের জায়গায় অবস্থিত একটি জরাজীর্ণ হাসপাতাল দেখতে পান, এবং উদ্যমের সাথে একটি নতুন ভবন নির্মাণের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, রোগীদের জন্য বহির্বিভাগ সুবিধা চালু করেন, এবং হাসপাতাল আসলে মরার জায়গা, সুস্থ হয়ে ওঠার জায়গা নয় – এই ধারণা থেকে বের করে আনার জন্য কঠোর প্রচেষ্টা চালান। ১৮৮০ সালে, হাসপাতালটিতে ৫২২ জন আবাসিক রোগী ও বহির্বিভাগে ১,১৪৪ জন রোগী ছিল, যেখানে ১৮৭৯ সালে সর্বসাকুল্যে রোগী ছিল মাত্র ১৯ জন। তার চাকরিতে বেতন ছিল ভালো, আর ব্যয়ও ছিল কম, তাই বেশ দ্রুতই তিনি দেনা শোধ করে সঞ্চয় শুরু করতে সক্ষম হন। এছাড়াও বাসানাভিস্যুস চিকিৎসা-বিষয়ক গবেষণা নিবন্ধ লিখতেন, বুলগেরীয় রাজনীতিবিদ পেত্‌কো কারাভেলভ (Petko Karavelov) এর সমর্থনে উদারপন্থী রাজনৈতিক নিবন্ধ লিখতেন, এবং প্রুশীয়-লিথুয়ানীয় মাধ্যমে সাংস্কৃতিক নিবন্ধও লিখতেন, যার মধ্যে রয়েছে তিল্‌জের যাত্রী (মূল: Tilžės Keleivis) ও লিথুয়ানীয় পত্রিকা (আক্ষরিক অনুবাদ, মূলনাম: Lietuwißka Ceitunga), এবং অ্যাকাডেমিক সাময়িকী নিবন্ধ লিথুয়ানীয় সাহিত্য সংঘের বার্তা (মূল শিরোনাম: Mitteilungen der Litauischen literarischen Gesellschaft)। তা সত্বেও, এই প্রকাশনাগুলো অনেক বেশি জার্মান নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং লিথুয়ানীয় সক্রিয়তাবাদীদের বিকাশের জন্য একেবারেই যথেষ্ট ছিল না। বাসানাভিস্যুস একটি প্রকৃত লিথুয়ানীয় পত্রিকা প্রতিষ্ঠার জন্য মনস্থির করেন।

১৮৮১ সালের মার্চে, রাশিয়ার জার দ্বিতীয় আলেক্সান্ডার এর গুপ্তহত্যার পর, বুলগেরীয় রাজপুত্র আলেক্সান্ডার অফ ব্যাটেনবার্গ উদারপন্থীদের ওপর কঠোর হন। নির্যাতনের শিকার হওয়ার আশঙ্কায় বাসানাভিস্যুস ১৮৮২ সালের মে মাসে বুলগেরিয়া ত্যাগ করেন। ডিসেম্বর ১৮৮২ তে প্রাগে স্থায়ী হওয়ার আগে তিনি অনেক মাস ধরে বেলগ্রেড, ভিয়েনা, লিথুয়ানিয়াতে ঘুরে বেড়িয়েছেন। সেখানেই তিনি অসরা পত্রিকার প্রকাশের ব্যবস্থা করেন, যা ছিল লিথুয়ানীয় ভাষায় প্রথম সংবাদপত্র। প্রথম সংখ্যাটি প্রকাশিত হয়েছিল মার্চ ১৮৮৩ সালে এবং একে অনেক সময়ই লিথুয়ানীয় জাতীয় পুনর্জাগরণের সূচনা বলে অভিহিত করা হয়। বাসানাভিস্যুস এর সম্পাদকীয় নীতি পরিচালনা করতেন, আর ইউর্গিস মিক্সাস (Jurgis Mikšas) পূর্ব প্রুশিয়ার রানিত (Ragnit) এ ছাপার কাজ দেখাশোনা করতেন। পত্রিকাটি এরপর চোরাই পথে লিথুয়ানিয়াতে নিয়ে যাওয়া হতো, কেননা ঐ সময়ে রুশ সাম্রাজ্যে লিথুয়ানীয় ভাষায় প্রকাশনা ছিল অবৈধ। শীঘ্রই বাসানাভিস্যুস অসরা'র সম্পাদকীয় ক্ষমতা হারান ইয়োনাস স্লিয়ুপাস (Jonas Šliūpas) এর কাছে। একটি অবৈধ প্রকাশনায় সম্পৃক্ত থাকায় বাসানাভিস্যুস ১৯০৫ সাল পর্যন্ত লিথুয়ানিয়াতে ফিরে যেতে পারেননি।

প্রাগে বাসানাভিস্যুসের সাথে পরিচয় হয় গ্যাব্রিয়েলা এলিওনোরা মো'লের, যিনি ছিলেন একজন বোহিমিয়ান জার্মান, এবং তারা ১৮৮৪ সালের মে মাসে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের পরপরই নবদম্পতি বুলগেরিয়া চলে যান, যেখানে ততদিনে রাজনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছিল। বাসানাভিস্যুস প্রথমে এলেনা শহরে একটি চাকরি পান, কিন্তু ১৮৮৫ সালেই লম পালাঙ্কাতে ফিরে যাবার ব্যবস্থা করতে সক্ষম হন। সেখানে তার জীবন একের পর এক দুঃসহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে পার হয়। সার্ব-বুলগেরীয় যুদ্ধের কারণে ঢেউয়ের মত যুদ্ধাহতরা হাসপাতালে আসতে থাকে, আর তার সাথে ছিল টাইফাস জ্বরের মহামারী। বাসানাভিস্যুস নিজেই ফেব্রুয়ারি ১৮৮৬ এর দিকে নিউমোনিয়া আর টাইফাস জ্বরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। ১৮৮৭ এর আগস্টে তিনি একটি গুপ্তহত্যা চেষ্টা থেকে বেঁচে যান, কিন্তু একটি গুলি তার বাম কাঁধের হাড়ের নিচে বাকি জীবন আটকে থাকে এবং তার নানাবিধ স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হয়। তার আততায়ী, আলেক্সান্ডার মানোয়িলভ, দশ বছরের সাজা ভোগ করে, কিন্তু কখনোই তার এই কাজের কারণ পুরোপুরি ব্যখ্যা করেনি। ১৮৮৯ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি মো’ল যক্ষ্মা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন, বাহ্যত তার মৃত্যু পথযাত্রী মায়ের কাছ থেকে প্রাগে থাকাকালেই এর জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হন তিনি। স্ত্রীর মৃত্যু বাসানাভিস্যুসকে প্রায় বছরখানেকের জন্য অবসাদ ও বিষণ্ণতার মধ্যে ঠেলে দিয়েছিল।

১৮৯১ সালে বাসানাভিস্যুস বুলগেরিয়ার নাগরিকত্ব লাভ করেন,[২] এবং ১৮৯২ সালে ২৫,০০০ অধিবাসীর ভার্না শহরে পদোন্নতি লাভ করেন, কিন্তু তার স্বাস্থ্য সমস্যার ক্রমাবনতি হতে থাকে। তিনি অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন (অ্যারিদ্‌মিয়া, ইংরেজি: arrhythmia), স্নায়ুদৌর্বল্য (নিউরাস্থিনিয়া, ইংরেজি: neurasthenia), স্নায়ুশূল (নিউরালজিয়া, ইংরেজি: neuralgia), অস্বাভাবিক ত্বকীয় সংবেদন (প্যারাস্থিশিয়া, ইংরেজি: paraesthesia) রোগে ভুগতে থাকেন। এ কারণে ১৮৯৩ সালে তিনি সরকারি চাকরিতে অব্যাহতি দেন এবং ব্যক্তিগত চর্চা আর বুলগেরিয়ার প্রথম ফার্দিনান্দ এর প্রাসাদে যাতায়াতের মধ্যেই তার কর্মকাণ্ড সীমাবদ্ধ রাখেন। ১৮৯৪ সালে যখন রাশিয়ার দ্বিতীয় নিকোলাস নতুন জার হন, বাসানাভিস্যুস বেশ কয়েক বার অস্ট্রিয়া সফর করেন, তার রোগব্যাধির প্রতিকারের সন্ধানে। ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি স্ট্রোক আক্রান্ত হন এবং ভিয়েনাতে যান, সেখানে তার এক্স-রে তে ধরা পড়ে যে, আততায়ীর গুলি তার হাড়ের নিচে আটকে আছে। কিন্তু চিকিৎসকেরা তা অপারেশন করে বের করে আনতে অস্বীকৃতি জানান।

তার নানাবিধ রোগব্যাধি সত্বেও, বাসানাভিস্যুস চিকিৎসাবিদ্যা ও নৃকুলতাত্ত্বিক গবেষণা চালিয়ে যান এবং এমনকি রাজনীতিতেও প্রবেশ করেন। ১৮৯৮ সালে তিনি বুলগেরীয় সাহিত্য সমাজ– এ নির্বাচিত হন। তিনি পূর্ব প্রুশিয়া ভ্রমণ করেন, যেখানে ১৮৯৮ এর জার্মান আইন-সভা (German Reichstag) নির্বাচনে, চারজন প্রুশীয়-লিথুয়ানীয় প্রার্থীর হয়ে প্রচারণা চালান (ইয়োনাস স্মালাকিস নির্বাচিত হন)। এছাড়াও তিনি গণতান্ত্রিক দল এ যোগ দেন এবং ১৮৯৯ থেকে ১৯০৩ পর্যন্ত ভার্না পৌরসভার নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। তিনি দলীয় সম্মেলনেও অংশগ্রহণ করতেন এবং স্বাস্থ্যসেবার ওপর দলীয় কর্মসূচি প্রনয়ণে সহায়তা করেন। এতদসত্বেও, তার মূল আগ্রহ ছিল লিথুয়ানীয় ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে। দীর্ঘ দূরত্ব সত্বেও, তিনি লিথুয়ানীয় কাহিনী ও গান সংগ্রহ করে ১৮৯৮-১৯০৫ সাল পর্যন্ত আমেরিকায় লিথুয়ানীয়-মার্কিন ছাপাখানাগুলোতে ছাপাতে দিতেন। ব্যক্তিগতভাবে, তিনি মনে করতেন তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল তার আজীবনের গবেষণা-তত্ত্ব, যা হচ্ছে, লিথুয়ানীয়রা থ্রেশীয় (Thracians)ফ্রিজিয়দের (Phrygians) বংশোদ্ভূত, এবং এজন্য বুলগেরীয়দের সাথে তাদের সম্পর্ক সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ। তার এই তত্ত্ব অন্যান্য পণ্ডিত কর্তৃক গৃহীত হয়নি।

লিথুয়ানিয়ায় প্রত্যাবর্তন[সম্পাদনা]

ভিলনিয়াস সম্মেলন[সম্পাদনা]

রাশিয়া রুশ-জাপান যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিল এবং ১৯০৫ এর বিপ্লব তাদের ঘিরে ধরেছিল। লিথুয়ানিয়ায় প্রকাশনার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। বাসানাভিস্যুস বহু বছর দায়িত্ব পালনের পর অবশেষে বুলগেরিয়ার অবসর ভাতার অধিকারভোগী হন এবং সেটাই লিথুয়ানিয়া ফিরে যাবার উপযুক্ত সময় বলে বিবেচনা করেন, যদিও তার লিথুয়ানিয়া ফেরার অনুমতি ছিল না। মে ১৯০৫ সালে তিনি বুলগেরিয়া ত্যাগ করেন এবং আগস্ট মাসে ভিলনিয়াস পৌঁছান। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি লিথুয়ানীয় সক্রিয়তাবাদীদের কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন এবং লিথুয়ানীয় সম্মেলনের ব্যাপারে প্রচারণা চালান, যা পরে ভিলনিয়াস সম্মেলন হিসেবে পরিচিত হয়। ভিলনিয়াস বার্তা (Vilniaus žinios) পত্রিকার কর্মীদের সহায়তায় পনের সদস্য-বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠিত হয়, এবং তার সভাপতি হন বাসানাভিস্যুস। নভেম্বর ১৯০৫ সালে আয়োজক কমিটির নামে, বাসানাভিস্যুস রুশ সাম্রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী সার্গেই ভিত্তের উদ্দেশ্যে একটি বিতর্কিত স্মারকলিপি রচনা করেন, যাতে রুশ সাম্রাজ্যে লিথুয়ানিয়ার স্বায়ত্তশাসনের দাবি জানানো হয়।

১৯০৫ সালের ৪-৫ ডিসেম্বর ২,০০০ এরও বেশি লোক ভিলনিয়াস সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে। বাসানাভিস্যুস এর সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। প্রবল আবেগঘন ও বিক্ষুব্ধ আলোচনার পর সম্মেলনে একটি চার-অনুচ্ছেদের প্রস্তাব গৃহীত হয়, যা জারপন্থী সরকারকে লিথুয়ানিয়ার সবচেয়ে ভয়ানক শত্রু বলে ঘোষণা করে এবং লিথুয়ানিয়ার স্বায়ত্তশাসনের দাবি জানায়। প্রস্তাবে জারপন্থী শাসকগোষ্ঠীর প্রতি সহিষ্ণু ও শান্তিপূর্ণ বিরোধিতার আহ্বান জানানো হয়, যেমন- কর না দেওয়া, ধর্মঘট পালন, নির্দিষ্ট পণ্য বর্জন ইত্যাদি। স্বায়ত্তশাসন অর্জিত না হলেও এবং জারপন্থী কর্তৃপক্ষ দ্রুতই নিজেদের নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করলেও, এটাই ছিল ১৯১৮ সালে লিথুয়ানিয়ার স্বাধীনতার ভিত্তি। সম্মেলন থেকে উদ্ভূত উদ্যমকে কাজে লাগিয়ে, বাসানাভিস্যুস লিথুয়ানীয় গণতান্ত্রিক দল (লিথুয়ানীয়: Tautiškoji lietuvių demokratų partija) গঠন করেন, যা ছিল লিথুয়েনিয়ার প্রথম জাতীয়তাবাদী দল, কিন্তু এটি তেমন একটা খ্যাতি লাভ করতে পারেনি।

যখন জারপন্থী কর্তৃপক্ষ মহাসমাবেশ নিয়ে এর আয়োজকদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে, তখন বাসানাভিসিয়াস ভিলনিয়াস ছেড়ে সেইন্ট পিটার্সবার্গে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সেখানে তিনি পাভেল মিলিয়ুকভ (Pavel Milyukov) এর সাথে সাক্ষাৎ করেন, যিনি ছিলেন সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক দলের নেতা, কিন্তু তার কাছে লিথুয়েনীয় দাবির প্রতি তেমন কোন সমবেদনা পাননি। জানুয়ারি ১৯০৬ এ যখন তিনি ফিরে আসেন, পুলিশ তার জন্য অপেক্ষা করছিল, এবং তিনি দেশ ছেড়ে পালানোর কথা বিবেচনা করলেও, তার বুলগেরীয় পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। কর্তৃপক্ষ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে, কিন্তু তাকে কারাবাস করতে হয়নি। তিনি তার পাসপোর্ট নবায়ন করতে সমর্থ হন, এমনকি এক-বছর রাশিয়ায় বসবাসের অনুমতিও পান। অসুস্থতা ও বারবার স্বাস্থ্য সমস্যা স্বত্বেও তিনি আন্তরিকভাবে রুশ সাম্রাজ্যে প্রতিষ্ঠিত নতুন রাজ্য ডুমার নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেন, লিথুয়েনীয় মাধ্যমে ব্যাপকভাবে লেখালেখি করেন, ক্যাথোলিক গির্জাগুলোতে লিথুয়েনীয় ভাষা ব্যবহারের জন্য প্রচারণা করেন, এবং বিভিন্ন সংগ্রহশালা ও পাঠাগার ঘুরে ঘুরে তার নৃকুলতাত্ত্বিক গবেষণা অব্যাহত রাখেন। যখন রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ ভিলনিয়াস এর বিশপ, এডুয়ার্ড ভন ডার রপ (Eduard von der Ropp)-কে ভিলনিয়াস থেকে বহিষ্কার করে, তখন রপ এর স্থলে একজন লিথুয়েনীয় বিশপকে অধিষ্ঠিত করার জন্য, বাসানাভিসিয়াস একটি প্রতিনিধি দল গঠন করে পোপ ১০ম পায়াসকে (Pope Pius X) রাজি করানোর চেষ্টা করেন। এতে বাসানাভিসিয়াসকে পোলিশ যাজক-সম্প্রদায়ের সাথে প্রত্যক্ষ দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়তে হয়। বাসানাভিসিয়াস একটি কমিশনের সভাপতিত্ব করেন যার মাধ্যমে লিথুয়েনিয়ার প্রথম শিল্প প্রদর্শনী (Pirmoji lietuvių dailės paroda) আয়োজন করা হয়, যা জানুয়ারি ১৯০৭ সালে ভিলেইসিস প্রাসাদে (Vileišis Palace) অনুষ্ঠিত হয়।

লিথুয়ানীয় বৈজ্ঞানিক সমিতি[সম্পাদনা]

১৯০৭ সালের ৭ই এপ্রিল বাসানাভিস্যুস, যিনি ১৮৮০ এর দিকেই একটি বিজ্ঞজন সংঘ প্রতিষ্ঠার জন্য মনঃস্থির করেছিলেন, তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে লিথুয়েনীয় ইতিহাস ও ভাষা সংক্রান্ত গবেষণা-কেন্দ্রিক সংগঠন, লিথুয়ানীয় বৈজ্ঞানিক সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি এই সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন এবং এই সমিতিই তার জীবনের ধ্যানজ্ঞান হয়ে ওঠে। বাসানাভিসিয়াস এই সংঘের সাথে এমনভাবে জড়িয়ে ছিলেন যে, সেটি আর তার ব্যক্তিসত্তা কার্যত অভিন্নই ছিল। এই সংঘ হতে বাসানাভিস্যুসের সম্পাদনায় গবেষণামূলক সাময়িকী "Lietuvių tauta"( বাংলা: লিথুয়ানীয় জাতি) প্রকাশিত হত। এছাড়াও এই সংঘ একটি গ্রন্থাগার, সংগ্রহশালা এবং জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করে। জারপন্থী কর্তৃপক্ষ এই সমিতিকে স্বাগত জানায়নি, এবং এর কর্মকাণ্ডের প্রতি তারা নজরদারি করতো ও কার্যক্রম সীমাবদ্ধ করে দিয়েছিল। যথেষ্ট তহবিল সংগ্রহ করে সমিতির পক্ষ হতে একখণ্ড জমি ক্রয় করা হলেও ভবন নির্মাণের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল ছিল না তাদের। নবীন পণ্ডিতবর্গ কর্তৃক বাসানাভিসিয়াস ও এই সংঘকে খুব মান্ধাতার-আমলের বলে সমালোচনা করা হয়, আবার অন্যদিকে খ্রিস্টান যাজক-সম্প্রদায় তাদের অতি-ইহবাদী বলে আক্রমণ করে, কিন্তু সংঘটি লিথুয়েনীয় বৃত্তির মানোন্নয়ন ও নতুন মানদণ্ড প্রতিষ্ঠা করে।

এই সমিতি প্রদর্শনীর আয়োজন করতো, যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দুটি হচ্ছে ১৯০৮ সালে অসরা এর সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে প্রদর্শনী ও ১৯১৪ সালে লিথুয়েনীয় প্রকাশনা নিষেধাজ্ঞা রহিত করার দশম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত প্রদর্শনী। এই সমিতি লিথুয়েনীয় পাঠ্যপুস্তক প্রকাশ করতে চাইলেও তার জন্য উপযুক্ত লেখক খুঁজে পায়নি। তারা লিথুয়েনীয় বিশ্বকোষ প্রকাশের পরিকল্পনা করলেও সম্পাদকীয় বিবাদ ও আর্থিক অসংগতির কারণে সেই প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়ে। এই সংঘ চার-সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিশন গঠন করে (সদস্যরা ছিলেন- ইয়োনাস ইয়াবন্‌স্কিস (Jonas Jablonskis), কাসিমির বুগ (Kazimieras Būga), ইয়োযাজ বালচিকোনিস (Juozas Balčikonis), এবং ইউর্গিস স্লাপেলিস (Jurgis Šlapelis)), যাদের ওপর লিথুয়েনীয় ভাষার প্রমিতকরণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। বহু তর্ক-বিতর্কের পর, ইয়াবন্‌স্কিস মুখ্য ভাষাবিদ হিসেবে উঠে আসেন এবং লিথুয়েনীয় বাক্যতত্ত্ব প্রসঙ্গে তার রচিত বইটি ১৯১১ সালে সমিতির পক্ষ থেকে প্রকাশিত হয়। এই সংঘ ঐতিহাসিক ভিলনিয়াসের ঊর্ধ্বস্থিত দূর্গ (Vilnius Upper Castle) এর ভগ্নাবশেষের আরও ক্ষয়ক্ষতি রোধের উদ্দেশ্যে সক্রিয়ভাবে গেডিমিনাস পাহাড় (Gediminas Hill)–এ জলাধার-স্তম্ভ নির্মাণের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রচারণা চালায়। বাসানাভিসিয়াস ব্যক্তিগতভাবে সেইন্ট পিটার্সবার্গে গিয়ে এই বিষয়ে আবেদন পেশ করেন।

জুন ১৯১৩ সালে সমিতির বার্ষিক সভায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিনিধি দল প্রেরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যার প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল জাতীয় ভবনের জন্য তহবিল গঠন করা। সিদ্ধান্ত হয় যে, বাসানাভিসিয়াসের যাওয়া উচিত ও মার্টিন ইখ্‌ (Martynas Yčas) তার সাথে যাবেন।[৩] বাসানাভিসিয়াস তার স্বাস্থ্য সমস্যা দেখিয়ে প্রথমে দ্বিধা করলেও, পরে সম্মত হন।[৪] তারা পূর্ব উপকূলের (নিউ ইয়র্ক, ইলিনয়, পেনসিলভানিয়া ও অন্যান্য স্থান) লিথুয়েনীয়-আমেরিকান সম্প্রদায়ের সাথে সাক্ষাৎ করেন। কিন্তু লিথুয়েনীয়দের গা-ছাড়া মনোভাব, স্থানীয় সম্প্রদায়গুলোর মধ্যকার অন্তর্কলহ, এবং সমাজতান্ত্রিকদের আক্রমণ (উদাহরণস্বরূপ, ভিনকাস মিকেভিচাস-কাপসুকাস (Vincas Mickevičius-Kapsukas) লিথুয়েনীয়-আমেরিকান সমাজতান্ত্রিক গণমাধ্যমে এই তহবিল সংগ্রহ অভিযান বর্জনের আহ্বান জানান)।[৫] বাসানাভিসিয়াস এমনতর আক্রমণে গভীরভাবে ক্ষুব্ধ হন কেননা, তার কাছে কারো শ্রেণি বা রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির তুলনায় দেশের প্রতি আনুগত্য ছিল অনেক বেশি গুরুত্ববহ।[৬] সার্বিকভাবে, তারা ১২০ দিনব্যাপী ৮৪টি লিথুয়েনীয় সম্প্রদায় ঘুরে প্রায় ৬,০০০ দাতার কাছ থেকে $২৩,৭৯৯ সংগ্রহ করেন।[৭] এই অর্থ জাতীয় ভবন নির্মাণের জন্য যথেষ্ট ছিল না, আর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় একটি রাশিয়ান ব্যাংক থেকে হারিয়ে যায়।[৮]

ক্লান্তিকর ভ্রমণসূচি বাসানাভিস্যুসের নাজুক স্বাস্থ্যের আরও অবনতি ঘটায়। পর্যবেক্ষকেরা সম্মত হন যে, বাসানাভিসিয়াস ক্রমেই অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন, সক্রিয় অংশগ্রহণকারী না হয়ে পর্যবেক্ষকের ভূমিকায় উপনীত হন। বাসানাভিসিয়াস নিজেও স্বীকার করেন যে, তার কথা বলতে, কিছু মনে রাখতে কষ্ট হত, সার্বিকভাবে তিনি দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন।[৯] তিনি তারপরও বিভিন্ন কমিটি ও সংগঠনে যোগদান করতেন, তবে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই সভাপতি হতেন না। আপাতভাবে তার সদস্যপদ ছিল তার অতীত ভূমিকার জন্য, ভবিষ্যত সাফল্যের আশায় নয়।[১০]

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ[সম্পাদনা]

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরুর সময় বাসানাভিস্যুস বার্লিনে মূত্রথলির সমস্যার চিকিৎসা নিচ্ছিলেন এবং তৎক্ষণাৎ সীমান্ত বন্ধ হয়ে যাবার আগেই ভিলনিয়াস ফিরে যান। যুদ্ধের সময় তিনি লিথুয়েনীয় বৈজ্ঞানিক সমিতির স্বত্বাধিকারসমূহ সংরক্ষণ ও রক্ষা করা এবং যুদ্ধ কবলিত ভুক্তভোগীদের ত্রাণের জন্য লিথুয়েনীয় সমিতির মাধ্যমে শরণার্থী শিবিরে ত্রাণ বিতরণে নিয়োজিত ছিলেন। সেপ্তেম্বর ১৯১৫ সালে, জার্মানরা ভিলনিয়াস দখলে নেয়। অনেক লিথুয়েনীয় পালিয়ে রাশিয়ার ভেতর দিকে চলে যায়, কিন্তু বাসানাভিসিয়াস শহরেই থেকে যান। প্রাথমিকভাবে, পূর্বাংশের সর্বাধিনায়কের (Ober Ost) এর কর্মকর্তারা লিথুয়েনীয় কর্মকাণ্ড সীমিত করে দেয় ও তাদের গণমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, কিন্তু যুদ্ধ আরও এগিয়ে চললে তা কিছুটা শিথিল হয়। বাসানাভিসিয়াস নিজেকে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে মনোযোগী রাখেন; যেমন, তিনি ১৯১৭ সালের গ্রীষ্মে লিথুয়েনীয় বৈজ্ঞানিক সমিতির জন্য নতুন জমির ব্যবস্থা করেন, এবং ভিলনিয়াসের বিশপের এলাকার (Vilnius Diocese) প্রশাসক কাজিমির্জ মিকোলাই মিহালকেভিচ (Kazimierz Mikołaj Michalkiewicz [pl]) এর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার লিথুয়েনীয় যাজকদের ঢাল হয়ে দাঁড়ান।[১১]

জার্মানরা পোল্যান্ড রাজতন্ত্র নামে একটি পুতুল রাষ্ট্র গঠন করে এবং বাসানাভিসিয়াস লিথুয়েনীয়দের আকাঙ্ক্ষার কথা জার্মান কর্মকর্তাদের জানিয়ে, বেশ কয়েকটি স্মারকলিপিতে যৌথ-স্বাক্ষর করেন। তিনি ভিলনিয়াস সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন এবং ২০-সদস্যবিশিষ্ট লিথুয়েনিয়া পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হন, যদিও তার ভূমিকা মূলত সম্মানসূচক ও আনুষ্ঠানিক ছিল। তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলনের অনুমতি দেওয়ার জন্য জার্মান কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ও পোপ পঞ্চদশ বেনেডিক্টকে চিঠি পাঠান, যদিও তিনি এই প্রক্রিয়ার সক্রিয় কর্মকর্তাদের একজন ছিলেন না।[১২] ১১ ডিসেম্বর ১৯১৭ সালে জার্মান চ্যান্সেলর জর্জ ভন হার্টলিং এর দাবির প্রেক্ষিতে এই পরিষদে একটি আইন গৃহীত হয় যাতে জার্মানির সাথে “দৃঢ় ও অবিচ্ছেদ্য মৈত্রী বন্ধন” এর ডাক দেওয়া হয়।[১৩] জার্মানদের কাছে এমনতর বশ্যতার জের ধরে পরিষদে বিবাদ সৃষ্টি হয় এবং চারজন সদস্য - মিকোলাস বিরযিশ্‌কা (Mykolas Biržiška), স্টেপোনাস কেইরিস (Steponas Kairys), স্তানিস্লোভাস নারুতাভিচাস (Stanisław Narutowicz) এবং ইয়োনাস ভিলেইসিস (Jonas Vileišis), প্রতিবাদে পদত্যাগ করেন।[১৪] সভাপতি আন্তানাস স্মাতোনা (Antanas Smetona), যিনি ১১ ডিসেম্বরের গৃহীত আইনের সমর্থন করেছিলেন, তিনি সাময়িকভাবে অব্যাহতি নেন এবং ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯১৮ সালে যে অধিবেশনে লিথুয়েনিয়ার স্বাধীনতা আইন গৃহীত হয়, সেই অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন তিনি।[১৪] তিনিই সেই আইনে প্রথম স্বাক্ষর করেন।[১২]

শেষ জীবন[সম্পাদনা]

লিথুয়ানিয়ার কাউনাসে অবস্থিত ঐতিহাসিক রাষ্ট্রপতির প্রাসাদে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে টাঙানো জোনাস বাসানাভিসিয়াসের প্রতিকৃতি

জানুয়ারি ১৯১৯ থেকে অক্টোবর ১৯২০ এর মধ্যে ভিলনিয়াস বেশ কয়েক বার রাজনৈতিক পট ও ক্ষমতার হাত বদলের মধ্য দিয়ে যায়, কিন্তু বাসানাভিস্যুস রাজনৈতিক গোলযোগ নিয়ে সামান্যই চিন্তিত ছিলেন এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রতি মনোনিবেশ করেন। তিনি স্বল্পস্থায়ী সমাজবাদী লিথুয়েনীয় সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের সাথেও কাজ করেন, বিশেষত শিক্ষা বিষয়ক কর্মকর্তা ভাচ্‌লোভাস বিরযিশ্‌কা (Vaclovas Biržiška) এর সাথে, ইতিহাস জাদুঘর মেরামতের তহবিল সংগ্রহের জন্য।[১৫] এপ্রিল ১৯১৯ এ শহরটি পোলিশদের দ্বারা অধিকৃত হবার পর, পোলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ লিথুয়েনীয় সক্রিয়তাবাদীদের নানাভাবে হেনস্থা করে; যাদুঘরের জন্য সোভিয়েতদের বরাদ্দ দেওয়া অর্থ বাজেয়াপ্ত করে তারা, অস্ত্র তল্লাশীর নামে লিথুয়েনীয় বৈজ্ঞানিক সমিতি প্রাঙ্গণে অভিযান চালায় ইত্যাদি। বাসানাভিসিয়াস শিক্ষণীয় বক্তৃতার আয়োজন করেন, লিথুয়েনীয় বিদ্যালয়গুলোকে সহায়তা করেন, এবং তার সাংস্কৃতিক গবেষণা চালিয়ে যেতে থাকেন।[১৬] লিথুয়েনীয় ও পোলিশ স্বার্থের মধ্যে ভারসাম্য রেখে, তিনি স্তেফান বাতোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্বোধনীতে অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানান।[১৭] ১৯২০ সালের গোড়ার দিকে, তিনি আবারও লিথুয়েনীয় বৈজ্ঞানিক সমিতির প্রাঙ্গণ স্থানান্তর করতে বাধ্য হন, কেননা জার্মান কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মঞ্জুরকৃত জমি তার পূর্ববর্তী মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।[১৮]

মে ১৯২০ এ, মিকোলাস বিরযিশ্‌কা (Mykolas Biržiška), ক্রিস্টুপাস চিবিরাস (Kristupas Čibiras) ও তেওফিলিয়ুস জোদভাল্‌কিস (Teofilius Juodvalkis) এর সাথে একসাথে, লিথুয়ানীয় গণপরিষদ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করতে, বাসানাভিসিয়াস কাউনাস ভ্রমণ করেন।[১৮] বাসানাভিস্যুসকে সম্মানিত অতিথি হিসেবে অভ্যর্থনা জানানো হয় এবং পুরনো বন্ধু-বান্ধব ও উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গের সাথে তার সাক্ষাৎ হয়। তিনি ভিলনিয়াসে ফেরার আগে, জুনের শুরুর দিকে তার জন্মস্থান ওযকাবালিয়াইয়েও বেড়াতে যান।[১৯] মাসখানেক পর জুলাই ১৯২০ এ, সোভিয়েত ইউনিয়ন শহরটি দখল করে নেয় এবং সোভিয়েত-লিথুয়েনীয় শান্তি চুক্তি মোতাবেক তা লিথুয়েনীয়দের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু ১৯২০ সালের অক্টোবরে যেলিগফ্‌স্কির বিদ্রোহ মঞ্চস্থ হলে, শহরটি আবার পোলিশরা দখল করে ফেলে।[২০] পোলিশ কর্তৃপক্ষ লিথুয়েনীয় বৈজ্ঞানিক সমিতির সদস্যপদ শুধুমাত্র পোল্যান্ডের অধিবাসীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে দেয়।[২১] পোলিশ নিরীক্ষণ ও বাধানিষেধ বাসানাভিসিয়াসকে মহা দুশ্চিন্তায় ফেলে দেয় এবং তিনি গ্রেপ্তার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেন।[২২] শহর ত্যাগ করতে তার অস্বীকৃতি শহরটির প্রতি লিথুয়েনীয়দের দাবির জীবন্ত প্রতীক হয়ে ওঠে।[২৩] জুলাই-নভেম্বর ১৯২৪ সালে, বাসানাভিসিয়াস আবার লিথুয়েনিয়ায় যান এবং বীরের সম্মান লাভ করেন।[২৪] নভেম্বরের ২৩ তারিখে, তার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে কাউনাসে দিনব্যাপী বিশেষ প্রার্থনা, সঙ্গীতানুষ্ঠান এবং আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।[২৫]

১৯২৭ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি বাসানাভিস্যুস নিজ গৃহে পড়ে যান। তার কোন একটি লেখা ছিল যেটা সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তিনি হাসপাতালে যেতে অস্বীকৃতি জানান। হাসপাতালে তার মূত্রথলি ও ফুসফুসের সংক্রমণ ধরা পড়ে, যা তার শরীর প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছিল।[২৬] ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯২৭ সালে, লিথুয়েনিয়ার স্বাধীনতার ৯ম বর্ষপূর্তিতে তিনি লিথুয়েনীয় বৈজ্ঞানিক সমিতি সংক্রান্ত বিষয়াবলি নিয়ে আলোচনা করেন এবং স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে শামিল হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন।[২৭] ঐদিন সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। লিথুয়েনিয়া সরকার পাঁচ-দিনব্যাপী শোক ঘোষণা করে এবং তার শেষকৃত্যে অংশগ্রহণের জন্য ১২-সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রেরণ করে। ২১ ফেব্রুয়ারিতে রাসোস সমাধিস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।[২৬]

উত্তরাধিকার[সম্পাদনা]

বাসানাভিস্যুসের সম্মানে বুলগেরিয়ার ভার্না শহরের একটি রাস্তার নামকরণ করা হয় ড. বাসানোভিচ সড়ক (বুলগেরীয়: ул. Д-р Иван Басанович) নামে। ভার্নার পানাগুরিশ্‌তে (Panagyurishte) শহরে তার পূর্বতন বাসভবনের স্থানে একটি স্মৃতিফলক স্থাপন করা হয়।[২৮] প্রাগের আংলিচ্‌কা ১৫, ভিনোরাডি (Anglická 15, Vinohrady)-তে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে একটি স্মৃতিফলক উন্মোচন করা হয়।[২৯]

বাসানাভিস্যুস লিথুয়ানীয় লোকাচারবিদ্যা যেমন- গান, রূপকথার গল্প, এবং ধাঁধা সংগ্রহ করতেন ও নিজের জীবদ্দশায় চৌদ্দটি বই প্রকাশ করেন। ১৯৯৩-২০০৪ সালের মধ্যে, লোকাচারবিদ লিওনার্দাস সাউকা ও কস্তাস আলেক্সিনাস, বাসানাভিস্যুসের সংগ্রহকৃত লোকাচারের প্রায় ৭,০০০ নিদর্শনকে বিন্যস্ত করে ১৫-খণ্ডের জোনাস বাসানাভিসিয়াস লোকাচার সংগ্রহশালা নামে প্রকাশ করেন।[৩০]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

সারিতে[সম্পাদনা]

  1. Breslavskienė 2012
  2. Šlapelytė-Sirutienė 1977
  3. Senn 1980, পৃ. 43
  4. Senn 1980, পৃ. 44
  5. Senn 1980, পৃ. 46–47
  6. Senn 1980, পৃ. 47
  7. Senn 1980, পৃ. 48
  8. Senn 1980, পৃ. 50
  9. Senn 1980, পৃ. 49
  10. Senn 1980, পৃ. 54
  11. Senn 1980, পৃ. 57–58
  12. Senn 1980, পৃ. 57
  13. Eidintas, Žalys এবং Senn 1999, পৃ. 28–29
  14. Eidintas, Žalys এবং Senn 1999, পৃ. 29
  15. Senn 1980, পৃ. 59–60
  16. Senn 1980, পৃ. 61
  17. Senn 1980, পৃ. 62–63
  18. Senn 1980, পৃ. 63
  19. Senn 1980, পৃ. 64
  20. Senn 1980, পৃ. 68–69
  21. Senn 1980, পৃ. 72
  22. Senn 1980, পৃ. 70
  23. Senn 1980, পৃ. 77
  24. Senn 1980, পৃ. 72–73
  25. Senn 1980, পৃ. 73
  26. Senn 1980, পৃ. 74
  27. Senn 1980, পৃ. 73–74
  28. Vasiliauskienė 2011
  29. Lietuvos žinios 2013
  30. Šlekonytė 2010

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

  • Breslavskienė, Laimutė (১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১২)। "Kuo unikalūs neseniai aptikti J. Basanavičiaus dokumentai?" (লিথুয়েনীয় ভাষায়)। Bernardinai.lt। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০১৭ 
  • Eidintas, Alfonsas; Žalys, Vytautas; Senn, Alfred Erich (১৯৯৯)। Tuskenis, Edvardas, সম্পাদক। Lithuania in European Politics: The Years of the First Republic, 1918–1940 (Paperback সংস্করণ)। New York: St. Martin's Pressআইএসবিএন 0-312-22458-3 
  • Lietuvos žinios (২০১৩-১২-১৬)। "Prahoje atidengta atminimo lenta Jonui Basanavičiui" (লিথুয়েনীয় ভাষায়)। ২০১৭-১১-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ নভেম্বর ২০১৭ 
  • Senn, Alfred Erich (১৯৮০)। Jonas Basanavičius, the Patriarch of the Lithuanian National Renaissance। Newtonville, Mass.: Oriental Research Partners। আইএসবিএন 0-89250-251-7 
  • Šlapelytė-Sirutienė, Gražutė (মে ১৯৭৭)। "Daktaras Jonas Basanavičius Lietuvos sostinėje"Aidai (লিথুয়েনীয় ভাষায়)। 5: 193–198। আইএসএসএন 0002-208X 
  • Šlekonytė, Jūratė (২০১০)। "Foreword"The Digital Library of Lithuanian Folklore by Jonas Basanavičius। Institute of Lithuanian Literature and Folklore। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০১৭ 
  • Vasiliauskienė, Rūta (২০১১-১০-১২)। "Dr. J. Basanavičiaus jubiliejus minimas ir Bulgarijoje" (লিথুয়েনীয় ভাষায়)। Santaka, Vilkaviškio krašto laikraštis। সংগ্রহের তারিখ ১৫ নভেম্বর ২০১৭ 
  • Imperial Moscow University: 1755-1917: encyclopedic dictionary। Moscow: Russian political encyclopedia (ROSSPEN)। A. Andreev, D. Tsygankov। ২০১০। পৃষ্ঠা 55–56। আইএসবিএন 978-5-8243-1429-8 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]