কিয়ানু রিভস
কিয়ানু রিভস | |
---|---|
জন্ম | কিয়ানু চার্লস রিভস ২ সেপ্টেম্বর ১৯৬৪ |
জাতীয়তা | কানাডীয় |
পেশা | অভিনেতা |
কর্মজীবন | ১৯৮৪ – বর্তমান |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | নিচে দেখুন |
সঙ্গী | জেনিফার সাইম (১৯৯৮–২০০০) অ্যালেকজান্ড্রা গ্রান্ট (প্রায় ২০১৮–বর্তমান)[১][২] |
কিয়ানু চার্লস রিভস (/kiˈɑːnuː/ kee-AH-noo; জন্মঃ ২ সেপ্টেম্বর ১৯৬৪)[৩][৪] হলেন একজন কানাডীয় অভিনেতা, প্রযোজক, পরিচালক এবং সঙ্গীত শিল্পী। তিনি বৈরুতে জন্মগ্রহণ করেন এবং টরন্টোতে বেড়ে উঠেন। রিভস ইয়ংব্লাড (১৯৮৬) নামক ফিচার চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিষেক করেন। তার আগে থিয়েটার প্রযোজনায় এবং টেলিভিশন চলচ্চিত্রগুলিতে অভিনয় শুরু করেছিলেন। সায়েন্স ফিকশন কমেডি বিল অ্যান্ড টেডের একসেলেন্ট অ্যাডভেঞ্চার (১৯৮৯) এ তাঁর যুগান্তকারী ভূমিকার মাধ্যমে জনপ্রিয় হন এবং পরবর্তীতে এর সিক্যুয়ালে তিনি তার ভূমিকাকে আবার তিরস্কার করেছিলেন। তিনি স্বাধীন নাটক মাই ওউন প্রাইভেট আইডাহো (১৯৯১) চলচ্চিত্রে অভিনয় করার জন্য প্রশংসা অর্জন করেছিলেন। পয়েন্ট ব্রেক (১৯৯১) এবং স্পিড (১৯৯৪) এর মুখ্য ভূমিকা নিয়ে নিজেকে অ্যাকশন হিরো হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। রিভস সবচেয়ে বেশি পরিচিত তার চলচ্চিত্র অভিনয়ের জন্য যার শুরু হয় ১৯৮৫ সালে এবং তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বিস্তৃত।[৫] তার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হলোঃ স্পিড, দ্য ম্যাট্রিক্স, পয়েন্ট ব্রেক প্রভৃতি।
বক্স অফিসে বেশ কয়েকটি ব্যর্থতার পরে রিভসের অভিনয় হরর ফিল্ম দ্য ডেভিলস অ্যাডভোকেট (১৯৯৭) তে বেশ প্রশংসিত হয়েছিল। সাফল্য ও ব্যপক পরিচিতি পান ১৯৯৯ সালে শুরু হওয়া বিজ্ঞানভিত্তিক ফিকশন সিরিজ দ্য ম্যাট্রিক্সে নিও নামক চরিত্রে অভিনয়ের জন্য। সে জন কনস্টান্টটাইন হিসেবে কনস্টান্টটাইন (২০০৫) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন এবং রোমান্টিক চলচ্চিত্র দ্য লেক হাউস (২০০৬) এ অভিনয় করেন। থ্রিলার বিজ্ঞান কথাসাহিত্য দ্য ডে দ্যা আর্থ স্টুড স্টিল (২০০৮), এবং থ্রিলার অপরাধভিত্তিক চলচ্চিত্র স্ট্রিট কিংস (২০০৮) এ অভিনয় করেন। পরে দীর্ঘদিন আড়ালে থাকার পরে, রিভস ২০১৪ সালে শুরু হওয়া জন উইক চলচ্চিত্র সিরিজের টিটুলার খুনি চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে সাফল্য ফিরে পান।
প্রাথমিক জীবন
[সম্পাদনা]রিভস বৈরুত, লেবাননে জন্মগ্রহণ করেন। তার মা প্যাট্রিশিয়া বন্ড ছিলেন একজন কস্টিউম ডিজাইনার/পারফর্মার এবং তার বাবার নাম হলো স্যামুয়েল নোলিন রিভস জুনিয়র।[৬] রিভসের মা বৈরুতে কাজ করার সময় তার বাবার সাথে দেখা হয়। রিভসের বাবা হিলো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হেরোইন বেচার অপরাধে হাওয়াইয়ে জেল খাটেন। জেলে থাকাকালীন সময় তিনি জেনারেল এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট সম্পূর্ণ করেন।[৭] রিভসের বয়স যখন তিন বছর তখন তার বাবা তার পরিবার ছেড়ে চলে যান।
রিভস ছোটবেলায় খেলাধুলায় ভালো করলেও তার ডিসলেক্সিয়ার সমস্যার কারণে পড়াশোনায় তেমন ভালো ছিলেন না। তিনি তার হাই স্কুল আইস হকি দলের একজন সফল গোলরক্ষক ছিলেন এবং এজন্য তাকে “দ্য ওয়াল” ডাকা হতো।[৮] তিনি স্বপ্ন দেখতেন কানাডা দলের হয়ে খেলার[৯] কিন্তু একটি চোটের কারণে সে স্বপ্নের ইতি ঘটে।সত্যিকার অর্থে রিভস ছোটবেলা থেকেই নানারকম সমস্যায় জর্জরিত হন। তার মাত্র তিন বছর বয়সে তার বাবা-মার বিচ্ছেদ হয়।তিনি তার বন্ধু, সন্তান,প্রেমিকা সবাইকে হারিয়ে নিসঙ্গ জীবনযাপণ করছেন।১০০ মিলিয়ন ইউএস ডলারের মালিক হয়েও তার নিজস্ব কোনো বাসা নেই।তিনি এখনও সাবওয়েতে চলাচল করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি একজন একা মানুষ হলেও খুব সম্প্রতি তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
কর্মজীবন
[সম্পাদনা]১৯৮০-র দশক:প্রাথমিক অভিনয় কর্মজীবন
[সম্পাদনা]রিভস নয় বছর বয়সে ড্যাম ইয়াঙ্কিস এর একটি মঞ্চ প্রযোজনায় অভিনয়ের মাধ্যমে তার অভিনয় জীবন শুরু করেন। পনের বছর বয়সে তিনি লিয়া পসলানস থিয়েটারের রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েটের একটি মঞ্চ প্রযোজনায় মারকিউশিওর চরিত্রে অভিনয় করেন। ১৭ বছর বয়সে তিনি হাই স্কুল ছেড়ে অভিনয়ে মনোযোগী হন। তিনি তার মার্কিন সৎ বাবার মাধ্যমে গ্রীন কার্ড লাভ করেন এবং লস এঞ্জেলেসে আসেন।[৮][১০]
তার প্রথম চলচ্চিত্র ছিল ইয়াংব্লাড (১৯৮৬) যেখানে তিনি একজন গোলরক্ষকের চরিত্রে অভিনয় করেন। এরপর কয়েকটি ছোট চরিত্রে অভিনয়ের পর তিনি “রিভারস এজ” চলচ্চিত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবিটি সমালোচকদের প্রশংসা লাভ করে। পরবর্তিতে রিভস পার্মানেন্ট রেকর্ড, বিল অ্যান্ড টেড’স এক্সিলেন্ট অ্যাডভেঞ্চার এবং এর সিক্যুয়েল বিল অ্যান্ড টেড’স বোগাস জার্নি সহ বেশকিছু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।
১৯৯০-র দশক:ব্যাপক জনপ্রিয়তা
[সম্পাদনা]১৯৯১ সাল থেকে রিভস রক ব্যান্ড ডগস্টারে বেস গিটার বাজান। ১৯৯১ সালে তিনি ব্যয়বহুল চলচ্চিত্র পয়েন্ট ব্রেকে অভিনয় করেন যার জন্য তিনি পরের বছর এমটিভির “সবচেয়ে আবেদনময়ী পুরুষ” এর পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও তিনি “মাই ওউন প্রাইভেট আইডাহোর” মতো সফল চলচ্চিত্র করেন। ১৯৯২ সালে তিনি ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলার ব্রাম স্টোকার‘স ড্রাকুলা চলচ্চিত্রে “জনাথন হার্কার” চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবিটি ব্যবসাসফল হলেও কিয়ানু রিভসের অভিনয় সমালোচিত হয়।
রিভস ১৯৯৪ সালে অ্যাকশন চলচ্চিত্র স্পিড-এ অভিনয়ের মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। ছবিতে রিভসকে নেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। কেননা এর আগে তাকে একা কোনো চলচ্চিত্রের শীর্ষ চরিত্রে দেখা যায়নি। কিন্ত স্পিডের সাফল্য রিভসের অভিনয় জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
স্পিডের সাফল্যের পর তিনি বেশকিছু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন যা অসফল ছিল। ১৯৯৭ সালে আল পাচিনো এবং শার্লিজ থেরনের সাথে দ্য ডেভিল‘স অ্যাডভোকেট চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে পুনরায় সাফল্যের দেখা পান। ১৯৯৯ সালে তিনি দ্য ম্যাট্রিক্স চলচ্চিত্রে “নিও” নামের এক হ্যাকারের চরিত্রে অভিনয় করে। চলচ্চিত্রটি ব্যবসাসফল হয় এবং সমালোচকদের প্রশংসা লাভ করে।
ধর্মবিশ্বাস
[সম্পাদনা]তিনি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। তিনি থেরবাদ বৌদ্ধ ধর্ম সম্পর্কে বিশ্বাসী।[১১] প্রথম জীবনে নাস্তিক হয়ে বড় হলেও পরবর্তীতে ১৯৯৩ সালে দ্য লিটল বুদ্ধ চলচ্চিত্রের পর তিনি বৌদ্ধ ধর্ম সম্পর্কে জানতে পারেন ও বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেন।তিনি বিভিন্ন বৌদ্ধ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।[১২] তিনি প্রতি সপ্তাহে ২ বার বৌদ্ধ বিহারে যান।
চলচ্চিত্র তালিকা
[সম্পাদনা]চলচ্চিত্র
[সম্পাদনা]টেলিভিশন
[সম্পাদনা]বছর | শিরোনাম | ভূমিকা | টীকা |
---|---|---|---|
১৯৮৪ | হ্যানগিন্ ইন | কিশোর ক্রেতা | পর্ব: "হ্যাপিনেস ইজ অ্যা ওয়ার্ম গ্রোভার" |
১৯৮৫ | নাইট হিট | ছিনতাইকারী ১ | ২ পর্ব |
কমেডি ফ্যাক্টরি | ক্রেকারস | পর্ব: "ফাস্ট ফুফ" | |
লেটিং গো | স্টেরেও কিশোর ১ | টেলিভিশন চলচ্চিত্র | |
১৯৮৬ | দ্য ডিজনি সান্ডে মুভি | মাইকেল রিলে (যুবক) | পর্ব: "ইয়ং অ্যাগেইন" |
আন্ডার দ্য ইনফ্লুয়েন্স | এডি টালবট | টেলিভিশন চলচ্চিত্র | |
ব্রাদারহুড অফ জাস্টিস | ডেরেক | টেলিভিশন চলচ্চিত্র | |
বেবস ইন টয়ল্যান্ড | জ্যাক নিম্বল | টেলিভিশন চলচ্চিত্র | |
১৯৮৭ | ট্রায়িং টাইমস | জোয়ি | পর্ব: "মুভিং ডে" |
১৯৮৯ | অ্যামেরিকান প্লেহাউজ | কিপ | পর্ব: "লাইফ আন্ডার ওয়াটার" |
দ্য ট্রেসি উলম্যান শো | জেসি ওয়াকার | পর্ব: "টু লাস্ট সোলস" | |
১৯৯০ | বিল অ্যান্ড টেড্স এক্সিলেন্ট অ্যাডভেঞ্চারস | টেড "থিওডোর" লোগান (কণ্ঠ) | ১৩ পর্ব |
২০০৯, ২০১২ | ইজি টু এসেম্বল | ভর্স্তে ফেইরন | ২ পর্ব |
২০১৬ | সুইডিশ ডিকস | টেক্স |
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Keanu Reeves and Alexandra Grant's Sweet Love Story: Proudly Public After Years Together"। PEOPLE.com। ২০২০-০৭-০৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১২-০১।
- ↑ Wise, Louis (মার্চ ১১, ২০২০)। "Alexandra Grant On Finding Love With Keanu Reeves & Her Upcoming Marfa Invitational Exhibition"। British Vogue (ইংরেজি ভাষায়)। জুলাই ১৪, ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ১৩, ২০২০।
- ↑ "Monitor"। Entertainment Weekly (1275)। সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৩। পৃষ্ঠা 25।
- ↑ "Keanu Reeves biography"। Biography.com। ২২ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১৫।
- ↑ http://www.nytimes.com/movie/review?res=9D0CE3D9143EF931A25754C0A967958260
- ↑ "Keanu Reeves Film Reference biography"। Film Reference। সংগ্রহের তারিখ মে ১০, ২০০৮।
- ↑ Ryan, Tim (এপ্রিল ২২, ২০০১)। "Memories of Keanu"। Honolulu Star-Bulletin। ২৪ মে ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মে ১০, ২০০৮।
- ↑ ক খ Lipworth, Elaine (নভেম্বর ২২, ২০০৮)। "Keanu Reeves: The three billion dollar man"। Daily Mail। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ৬, ২০১৪।
- ↑ Arpe, Malene (অক্টোবর ২২, ২০১৩)। "Keanu Reeves talks memes, hockey and Licks burgers during Reddit AMA"। Toronto Star। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ৬, ২০১৪।
- ↑ Day, Aubrey (নভেম্বর ২০০৮)। "THE TOTAL FILM INTERVIEW: KEANU REEVES"। Total Film। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ৬, ২০১৪।
- ↑ "Keanu Reeve : A simple Buddhist Celebrity" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-০৫।
- ↑ Tobias, Scott; Tobias, Scott (২০১৭-০২-১০)। "The Tao of Keanu Reeves, From 'Whoa!' to 'John Wick'"। Rolling Stone (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-০৫।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে কিয়ানু রিভস (ইংরেজি)
- রটেন টম্যাটোসে কিয়ানু রিভস (ইংরেজি)
- ১৯৬৪-এ জন্ম
- জীবিত ব্যক্তি
- কানাডীয় অভিনেতা
- কানাডীয় চলচ্চিত্র পরিচালক
- কানাডীয় চলচ্চিত্র প্রযোজক
- কানাডীয় গায়ক
- ২১শ শতাব্দীর কানাডীয় অভিনেতা
- ২০শ শতাব্দীর কানাডীয় অভিনেতা
- টরন্টোর অভিনেতা
- অন্টারিওর অভিনেতা
- কানাডার জন্মগত নাগরিক
- কানাডীয় অল্টারনেটিভ রক সঙ্গীতজ্ঞ
- বৌদ্ধধর্মে ধর্মান্তরিত
- মার্কিন অভিনেতা
- বৌদ্ধ অভিনেতা
- কানাডীয় চলচ্চিত্র অভিনেতা
- কানাডীয় টেলিভিশন অভিনেতা
- কানাডীয় কণ্ঠাভিনেতা
- মার্কিন বংশোদ্ভূত কানাডীয় ব্যক্তি
- চীনা বংশোদ্ভূত কানাডীয় ব্যক্তি
- ইংরেজ বংশোদ্ভূত কানাডীয় ব্যক্তি
- আইরিশ বংশোদ্ভূত কানাডীয় ব্যক্তি
- ইন্টারনেট মিম
- পুরুষ বেস গিটারবাদক