ডিকি বার্ড
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | হ্যারল্ড ডেনিস বার্ড, এমবিই | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | বার্নসলে, ইংল্যান্ড | ১৯ এপ্রিল ১৯৩৩|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | ডিকি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উচ্চতা | ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি (১.৭৮ মিটার) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডান-হাতি ব্যাটসম্যান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | অফ-ব্রেক, অফ স্পিন | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | আম্পায়ার, ব্যাটসম্যান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৫৬–১৯৫৯ | ইয়র্কশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৫৯–১৯৬৪ | লিচেস্টারশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
প্রথম-শ্রেণী অভিষেক | ১৬ই মে ১৯৫৬ ইয়র্কশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব বনাম স্কটল্যান্ড ক্রিকেট দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষপ্রথম-শ্রেণী | ১২ই আগস্ট ১৯৬৪ লিচেস্টারশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব বনাম এসেক্স কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
তালিকা এ অভিষেক | ১লা মে ১৯৬৩ লিচেস্টারশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব বনাম ল্যাঙ্কাশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ তালিকা এ | ২৭শে মে ১৯৬৪ লিচেস্টারশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব বনাম নর্দাম্পটনশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আম্পায়ারিং তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট আম্পায়ার | ৬৬ (১৯৭৩–১৯৯৬) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই আম্পায়ার | ৬৯ (১৯৭৩–১৯৯৫) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ক্রিকইনফো, ৪ মার্চ ২০১৭ |
হ্যারল্ড ডেনিস বার্ড, এমবিই (ইংরেজি: Harold Dennis "Dickie" Bird, জন্ম: ১৯ এপ্রিল, ১৯৩৩) বার্নসলে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী অবসরপ্রাপ্ত ও খ্যাতনামা ইংরেজ ক্রিকেট আম্পায়ার। তিনি একসময় ক্রিকেট বিশ্বে ডিকি বার্ড নামে খ্যাত ও বিশ্বের শ্রেষ্ঠ আম্পায়ার হিসেবে সকল ক্রীড়ামোদীর প্রশংসা কুড়ান। তার জন্ম ইংল্যান্ডের ইয়র্কশায়ারের বার্নসলে এলাকায়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলাগুলো অপূর্ব দক্ষতার সাথে আম্পায়ার হিসেবে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করে অবসর নিয়েছেন। শৈশবে স্কুল জীবনে ডিকি নামে উপাধি পান তিনি। একজন খনি শ্রমিকের সন্তান হিসেবে ডিকি বার্ড সাউথ ইয়র্কশায়ারের স্টেইনক্রস গ্রামে বাস করতেন। ১৯৪৪ সালে বার্ড একাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে র্যালী সেকেন্ডারী মডার্নের জন্য ১৫ বছর বয়সে ১৯৪৮ সালে বাড়ী ত্যাগ করেন। এছাড়াও কয়লা খনিতে কাজ করার সময় তিনি মনে করলেন যে কাজটি তার জন্য উপযুক্ত নয়। এরপরই তিনি খেলাধুলায় নিজেকে সম্পৃক্ত করেন ও মনোনিবেশ ঘটান। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি চিরকুমার অর্থাৎ বিয়ে করেননি।
প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]বার্ড ফুটবলকে ভীষণ ভালবাসতেন। সেজন্যেই পেশাদারীভাবে ফুটবল খেলার সময় হাঁটুতে আঘাতপ্রাপ্ত হলে পরবর্তী পছন্দ হিসেবে ক্রিকেটে জড়িয়ে পড়েন। বার্নসলীতে থাকাকালীন সময়ে তিনি জিওফ্রে বয়কটের সাথে একই দলে খেলতেন এবং সাংবাদিক ও চ্যাট শো'র কর্ণধার মাইকেল পার্কিনসনের সাথে আজীবনের বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। এরপর ইয়র্কশায়ারে চুক্তিবদ্ধ হন ডিকি বার্ড। বয়কট বার্ডের ব্যাটসম্যান হিসেবে যোগ্যতা সম্পর্কে উচ্চ ধারণা পোষণ করেন কিন্তু ক্রিকেটার হিসেবে নিয়ন্ত্রণহীনতা তাকে বাঁধাগ্রস্থ করেছিল বলে মনে করতেন।
১৯৫৬ থেকে ১৯৬৪ সালের মধ্যে ডিকি বার্ড প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ইয়র্কশায়ার এবং লিচেস্টারশায়ারের পক্ষে ইংলিশ কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে অংশ নিয়েছিলেন। কাউন্টিতে খেলার পর তিনি কোচ হন এবং আম্পায়ার হিসেবে অন্তর্ভুক্তির পূর্বে লীগ ক্রিকেটে খেলেছিলেন।[১]
আম্পায়ারিত্ব
[সম্পাদনা]১৯৭০ সালে প্রথমবারের মতো কাউন্টি ক্রিকেটে আম্পায়ার হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি। এরপর ৩ বছর পর লীডসের হেডিংলি স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার টেস্ট ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে অভিষেক ঘটান ডিকি। তিনি খারাপ আবহাওয়াজনিত কারণে খেলা বন্ধ রাখতে চাইতেন এবং ব্যাটসম্যানের বিপক্ষে এলবিডব্লিউ বা লেগ বিফোর উইকেটের সিদ্ধান্ত তেমন একটা দিতেন না।
১৯৮০ সালে ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার লর্ডসে অনুষ্ঠিত শতবর্ষীয় টেস্টে সকলের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন ডিকি বার্ড। শনিবারের নমনীয় সূর্যকিরণে তিনি এবং তার সহযোগী ডেভিড কনস্টেন্ট পূর্বদিনের বৃষ্টিজনিত কারণে পিচের বাইরে ঘাষে শিশির জমা হওয়ায় খেলা চালাতে বিলম্ব করছিলেন। ক্রুদ্ধ মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব বা (এমসিসি) কর্মকর্তারা আম্পায়ারদ্বয়ের ৫মবারের মতো পিচ পর্যবেক্ষণের ফলে দলের অধিনায়ককে লং রুমে ফেরত নিয়ে যান। ইয়ান বোথাম এবং গ্রেগ চ্যাপেল মাঠে এসে দাঁড়ালেও বার্ড তার খাতায় পিচ পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট টুকে রাখেন। অবশেষে ঐদিন বিকাল ৩:৪৫ ঘটিকায় খেলা শুরু হয় এবং খেলা শেষ হলে পুলিশ প্রহরায় ডিকি বার্ডকে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল।[২]
১৯৭৫ সালে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধনী খেলায় পিচজনিত কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দল ১৭ রানে জয়ী হয়। বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় ও আম্পায়ারদ্বয় দর্শক কর্তৃক আক্রান্ত হন এবং ঘটনাটি স্মরণীয় হয়ে থাকে। একবছর পর বার্ড দক্ষিণ লন্ডন থেকে বাসযোগে আসার সময় লক্ষ্য করেন কন্ডাক্টর একটি সাদা টুপি পরে আছেন যা দেখতে নিজের টুপির মতো ছিল। তিনি এ ব্যাপারে আলাপ করে যা জানতে পারেন তাহলো নিম্নরূপ:-
“ | জনাব, আপনি কি মি. ডিকি বার্ডের নাম শুনেননি। আমার মাথার টুপিটি তার টুপিরই একটি। আমি এ টুপিটি বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলায় তার মাথা থেকে নিয়ে চলে আসি। | ” |
- বললেন বাসের কন্ডাক্টর।[৩]
বার্ডের শারীরিক ও মানসিক দৃঢ়তায় খেলা পরিচালনায় নিপুণতা লক্ষ্য করা ছিল উল্লেখ করার মতো। তিনি অনেক নামী-দামী খেলোয়াড়েরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং তাদের অশেষ শ্রদ্ধা কুড়ান। এছাড়াও, ব্রিটেনের রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ মাঠে আসবেন বিধায় ডিকি বার্ড মাঠে ৫ ঘণ্টা আগে এসেই উপস্থিত হয়েছিলেন।
১৯৯৬ সালে ডিকি বার্ড তার ৬৬তম ও চূড়ান্ত টেস্টে ইংল্যান্ড বনাম ভারতের মধ্যকার খেলা থেকে চলে আসার সময় গার্ড অব অনার পান এবং স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকেরাও দাঁড়িয়ে তাকে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন। এটিই ছিল তার আম্পায়ার হিসেবে টেস্ট ম্যাচে অংশগ্রহণ। বার্ড একজন আবেগপ্রবণ ব্যক্তিত্ব ছিলেন এবং এ ঘটনায় তিনি কেঁদেও ফেলেন। দু'বৎসর পর ১৯৯৮ সালে কাউন্টি খেলা থেকেও সরে দাঁড়ান ডিকি।
ডিকি বার্ড ৬৬টি টেস্টে আম্পায়ারিত্ব করেন যা ঐ সময়ে বিশ্বরেকর্ড গড়েন এবং ৩টি বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতাসহ ৬৯টি একদিনের আন্তর্জাতিক খেলায়ও আম্পায়ার হিসেবে নিজের নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন।
২০০৭ সালে তিন-জাতির গোল্ড বিচ ক্রিকেট সিরিজে আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন শেষে অবসর গ্রহণ করেন। অস্ট্রেলিয়ার পার্থের স্কারবোরো বিচে অনুষ্ঠিত ঐ প্রতিযোগিতায় ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় ক্রিকেট দল অংশ নিয়েছিল।
অবসর পরবর্তী জীবন
[সম্পাদনা]- মাই অটোবায়োগ্রাফী শিরোনামে ডিকি বার্ড তার নিজের আত্মজীবনী লিখেন। বইটির ভূমিকা লিখেছিলেন মাইকেল পার্কিনসন। প্রকাশের পর জীবনীটির দশ লক্ষেরও বেশি সংখ্যা বিক্রি হয়।[৪] ডিকি বার্ড ফাউন্ডেশনের প্রধান হিসেবে বার্ড সুবিধাবঞ্চিত আঠারোর কম বয়সী খেলোয়াড়দেরকে সহায়তা করে যাচ্ছেন।
- ট্রিগার হ্যাপী টেলিভিশনে ডিকি বার্ড অংশ নিয়েছিলেন।
সম্মাননা
[সম্পাদনা]- ১৯৮৬ সালে তিনি রাণীর কাছ থেকে অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার বা এমবিই পদকসহ হাডার্সফিল্ড, লিডস্ এবং শেফিল্ড হালাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেন। ফ্রিডম অব বার্নসলে দেয়া হয় ডিকিকে। এছাড়াও, ডিকি বার্ড বার্নসলে মাল্টিপল ক্লেরোসিস সোসাইটি'র সম্মানিত উপদেষ্টা।
- ক্রিকেটে অবদানের জন্য ও ডিকি বার্ডের জন্মদিন উপলক্ষে ৬ ফুট উচ্চতার একটি ভাস্কর্য ৩০শে জুন, ২০০৯ তারিখে বার্নসলেতে উন্মোচন করা হয় এবং ১লা জুলাই, ২০০৯ তারিখে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সালে ইয়র্কশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করে যে, বার্ড ২৯ মার্চ তারিখে সাধারণ সভায় সভাপতি হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।[৫] নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হন ও জিওফ্রে বয়কটের স্থলাভিষিক্ত হন।[৬]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Test Match Special 28/12/10
- ↑ http://content-uk.cricinfo.com/wisdenalmanack/content/story/153578.html
- ↑ "Thats owt that lad (Dickie Bird: My Autobiography - Dickie Bird)"। www.dooyoo.co.uk। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ Guardian interview with Bird
- ↑ "BBC Sport - Yorkshire: Former umpire Dickie Bird to become club president". Bbc.co.uk. Retrieved 2014-02-28.
- ↑ Harmison, Steven (২২ মার্চ ২০০৮)। "Boycott? He's got no status with us, he's just a Yorkshire accent"। London: Mail On Sunday। সংগ্রহের তারিখ ৭ মে ২০০৯।
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে ডিকি বার্ড (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে ডিকি বার্ড (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
- দ্য ডিকি বার্ড ফাউন্ডেশন
- ১৯৩৩-এ জন্ম
- জীবিত ব্যক্তি
- অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার পদক বিজয়ী
- ইংরেজ ক্রিকেটার
- ইয়র্কশায়ারের ক্রিকেটার
- ইংরেজ টেস্ট ক্রিকেট আম্পায়ার
- ইংরেজ ওডিআই ক্রিকেট আম্পায়ার
- ইয়র্কশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের সভাপতি
- বার্নসলের ক্রীড়াবিদ
- লিচেস্টারশায়ারের ক্রিকেটার
- অফিসার্স অব দি অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার
- ১৯৪৬ থেকে ১৯৬৮ সময়কালীন ইংরেজ ক্রিকেটার
- ১৯৬৯ থেকে ২০০০ সময়কালীন ইংরেজ ক্রিকেটার
- ইংরেজ আত্মজীবনীকার