কাবাবচিনি
কাবাবচিনি | |
---|---|
কাবাবচিনি | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | উদ্ভিদ |
শ্রেণীবিহীন: | সপুষ্পক উদ্ভিদ |
শ্রেণীবিহীন: | অ্যানজিওস্পার্ম |
শ্রেণীবিহীন: | ম্যাগনোলিডস |
বর্গ: | পিপারেলস |
পরিবার: | পিপারেসি |
গণ: | পিপার |
প্রজাতি: | পি. কিউবেবা |
দ্বিপদী নাম | |
পিপার কিউবেবা কার্ল লিনিয়াস | |
প্রতিশব্দ | |
কাবাবচিনি বা কিউবেব (Piper Cubeb) উদ্ভিদের একটি প্রজাতি। পশ্চিম আফ্রিকায় কিউবেব বলতে অনেক সময় পশ্চিম আফ্রিকার কিউবেব (Piper guineense) বোঝায়। কিউবেব বা টেইলড পিপার, পিপার গোত্রের একটি উদ্ভিদ, এর ফল ও তেলের জন্য এটি উৎপাদন করা হয়। জাভা আর সুমাত্রা দ্বীপে প্রচুর উৎপাদিত হয় বলে ‘জাভা পিপার’ বলেও ডাকা হয়। ফল পাকার আগেই সংগ্রহ করে সতর্কতার সাথে শুকানো হয়। বাণিজ্যিক কিউবেব শুকনো বেরি আর বোঁটার সমন্বয়ে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। শুকনো ফলত্বক ভাঁজ পরা, ধূসর বাদামি বা কালচে হয়ে থাকে। এর বীজ শক্ত, সাদা ও তৈলাক্ত হয়ে থাকে।কিউবেবের গন্ধ সুন্দর, স্বাদ কটু, মৃদু তেঁতো। স্বাদ জ্যামাইকা পিপার ও ব্ল্যাক পিপারের মাঝামাঝি। কিউবেব আরব বণিকদের সাথে ভারত হয়ে ইউরোপে আসে। কিউবেব এর আরব নামে আলকেমি বইতে উল্লেখিত আছে। জন পারকিন্সন তার বইতে উল্লেখ করেছেন, ১৬৪০ সালে পর্তুগালের রাজা ব্ল্যাক পিপার উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে কিউবেব উৎপাদনের উপর নিষেধ আরোপ করেছিলেন। উনিশ শতকে ঔষধি গুনের কারণে খানিকটা প্রত্যাবর্তন হলেও মূলত ইউরোপে এটি বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। জিন আর সিগারেটে সুগন্ধি হিসেবে ব্যবহারের জন্য পশ্চিমে আর খাদ্যের অনুষঙ্গ হিসেবে ইন্দোনেশিয়ায় এর ব্যবহার অবশ্য চালু ছিল। [১]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীতে থিওফ্রাস্টাস সিনেমন ও কাসিয়ার সাথে কিউবেবের উল্লেখ করেন সুগন্ধি উপাদান হিসেবে। গুইলেম বাড ও ক্লদিয়াস সাল্মাসিয়াস কিউবেবকে কমাকুন নামে শনাক্ত করেছেন, যা সম্ভবত এর জাভানিজ নামের সাথে সম্পর্কযুক্ত। এটি থিওফ্রাস্টাসেরও আগের সময়কার গ্রিক বাণিজ্যের একটি নিদর্শন জাভা দ্বীপে। সেই সময়েই জাভা দ্বীপের কিউবেব উৎপাদনকারীরা এর বীজের চারা উৎপাদনক্ষমতা নষ্ট করে তারপর উৎপাদন করত তাদের একচেটিয়া ব্যবসা ধরে রাখার উদ্দেশ্যে।
টাং সময়কালে শ্রীভিজায়া থেকে কিউবেব চীনে আমদানি করা হয়। ভারতে ‘কাবাব চিনি’ অর্থাৎ চায়নিজ কিউবেব নামে পরিচিত ছিল। চীনে এই পিপার সংস্কৃতের সাথে মিলিয়ে ‘ভিলেঙ্গা’ বা ‘ভিদেঙ্গা’ নামে পরিচিত ছিল। লি সু এর মত ছিল, এটি কালো পিপারের সাথে একই গাছে উৎপন্ন হয়। টাং চিকিৎসকরা অনেক রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কিউবেব ব্যবহার করেছে, কিন্তু চীনারা খাদ্যদ্রব্যের স্বাদ বৃদ্ধির জন্য এটি ব্যবহার করেছে এমন কোনও প্রমাণ সুস্পষ্টভাবে পাওয়া যায় না।
নবম শতকে লেখা ‘এক হাজার এক রজনী’ গ্রন্থে উর্বরতা বৃদ্ধির ঔষধ হিসেবে কিউবেবের উল্লেখ পাওয়া যায়, যার থেকে আন্দাজ করা যায় এরও আগে থেকে আরবে চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে এটি ব্যবহার করা হত। ১০ম শতক থেকে আরব রন্ধন প্রক্রিয়াতে এক উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়। ১৩ শতকে লিখিত মার্কো পোলোর ভ্রমণ বিষয়ক গ্রন্থে জাভা দ্বীপকে কিউবেবসহ অন্য অনেক মূল্যবান মশলার উৎপাদনক্ষেত্র হিসেবে দেখানো হয়। চতুর্দশ শতকে রাউএন ও লিপ্পি প্রমুখ ব্যবসায়ীদের দ্বারা পিপার রূপে গ্রেইন কোস্ট থেকে ইউরোপে কিউবেব আমদানি করা হয়। কিউবেব জাদুবিদ্যার অনুষঙ্গ হিসেবে ব্যবহৃত হত বলে উল্লেখ পাওয়া যায়, বেশ কিছু গ্রন্থে ‘দুরাত্মা’ দমনের জন্য কিউবেবের ব্যবহার সম্পর্কে উদ্ধতি পাওয়া যায়। বিক্রি নিষিদ্ধ করার পর ইউরোপে নাটকীয়ভাবে এর ব্যবহার কমে যায়, কেবল চিকিৎসাক্ষেত্রে কিছু ব্যবহার ঊনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত পরিলক্ষিত হয়। বিংশ শতাব্দীর প্রথম থেকেই ইন্দোনেশিয়া থেকে কিউবেব ইউরোপ ও আমেরিকায় আমদানি হত। ধীরে ধীরে কমতে কমতে ১৯৪০ সালের পর কিউবেবের বেচাকেনা মোটামুটি বন্ধই হয়ে যায়।
রসায়ন
[সম্পাদনা]শুকনো কিউবেব ফলে মনোটারপিন, সিসকুইটারপিন কয়েক রকমের সিনেউল ও কিউবেবোল নামক অ্যালকোহল থাকে। পানিতে ডিস্টিলিং কিউবেবের সম্পৃক্ততায় ১৫ শতাংশ উদ্বায়ী তেল থাকে। কিউবেবাইন, অর্থাৎ তরল অংশের ফরমুলা C15H24। এটি হাল্কা সবুজ বা নীল-হলুদ তরল, উষ্ণ কেঠো অনেকটা কেম্ফরজাতীয় গন্ধ আছে। পানির সাথে রেক্টিফাই করার পর বা রাখার পর রম্বস আকৃতির ক্রিস্টাল গঠন দেখায়। কিউবেবাইন (সংকেত C20H20O6) ক্রিস্টাল গঠনের যৌগ যা কিউবেবে থাকে, ১৮৩৯ সালে ইগুইন সবেরান ও কেপিটাইন এটি আবিষ্কার করেন। কিউবেব বা এর মণ্ড অর্থাৎ তেল বের করে নেয়ার পর যে অংশটুকু থাকে তা থেকে এটি পাওয়া যায়। এই ঔষধ, এর গাম, ফেটি অয়েল, মেলেট, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়ামের মত ১ শতাংশ কিউবেবিক এসিড ও ৬ শতাংশ রেজিন ধারণ করে। ফলের ডোজ ৩০ থেকে ৬০ গ্রেইন, আর ব্রিটিশ ফার্মাকোপিয়ার একটি টিঙ্কচার আছে ৪ থেকে ১ ড্রামের।
ব্যবহার
[সম্পাদনা]ভারতে,আয়ুর্বেদের বেশ কিছু নথিতে কিউবেবের ঔষধি গুনের উল্লেখ পাওয়া যায়। চারক ও শুশ্রূতার কিছু নিরাময়মূলক বর্ণনা পাওয়া যায় মুখের ও গলার সংক্রমণের প্রতিরোধে,জ্বর ও কাশির নিরাময়েও এর ব্যবহারের কথা শোনা যায়। ইউনানি চিকিৎসকরা কামকলার সময় স্ত্রী ও পুরুষ যৌনাঙ্গের আশেপাশে লাগানোর জন্য একপ্রকার মণ্ডও প্রস্তুত করে থাকেন কিউবেব থেকে। এই বিশেষ গুণ থাকার জন্য কিউবেবের আরেক নাম ‘হাব উল উরাস’। চীনা চিকিৎসায় কিউবেবের উষ্ণতাধর্মী গুণ কাজে লাগানো হয়। আর তিব্বতে ‘ছয়টি উপকারি গুল্মের’ মধ্যে একটি হলো এই কিউবেব।
মধ্যযুগে আরব চিকিৎসকরা প্রসিদ্ধ ছিলেন, আর তারা কিউবেব ব্যবহার করতেন কাবাবা নামে, যখন তারা ‘ওয়াটার অফ আল বাটম’ প্রস্তুত করতেন। ‘এক হাজার এক রজনী’ গ্রন্থে কিউবেবকে এক ধন্বন্তরি উপাদান হিসেবে দেখানো হয় যৌন দুর্বলতা সমাধানের ঔষধ তৈরির ক্ষেত্রে। ‘বীর্য ঘন করার’ এক মোক্ষম ওষুধ তৈরি হত এক ধরনের মিশ্রণ হিসেবে, যা শামস আল দ্বীন নামক ব্যক্তির জন্য তৈরি হয়েছিল, সেই ওষুধ ব্যবহার করে তিনি সন্তান লাভের সফল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে পেরেছিলেন বলে এই গ্রন্থে উল্লেখ আছে। অন্যান্য আরব লেখকরাও কিউবেব ব্যবহারে নিঃশ্বাসের সুগন্ধ, ব্লাডারের প্রদাহে উপশম ও দেহ মিলনে মাধুর্য লাভের উপায় হিসেবে এর ব্যবহার উল্লেখ করেছেন। ১৬৫৪ সালে লন্ডন ডিসপেনসেটোরিতে নিকোলাস কালপেপার কিউবেব সম্পর্কে লিখেন, ‘এটি উষ্ণ এবং মস্তিষ্কের উন্নতি সাধন করে, পাকস্থলী উত্তপ্ত করে ও কামের উদ্রেক করে’। পরে ১৮২৬ সালে এই তথ্য সংস্করণ করা হয়, ‘আরবরা একে কেবেব ও চাইনিজ কেবেব বলে অভিহিত করে, এটি জাভা দ্বীপে উৎপন্ন হয় আর জরায়ুর শীতলতার ক্ষেত্রে এটি ফলপ্রসূ সমাধান। ১৮১৫ সাল থেকে ইংল্যান্ডে কিউবেবের আধুনিক চিকিৎসাবিষয়ক প্রয়োগ চলে আসছে। বিভিন্ন ধরনের প্রয়োগ, যেমন তেল, টিংচার, ফ্লুয়িড যৌগ, তৈলাক্ত রেজিন ও বাস্প (গলায় প্রদাহের উপশমে) ইত্যাদি দেখা যায়। অল্প পরিমাণের কিউবেব ব্রংকাইটিস নিরাময়ের ওষুধ ও জীবাণুনাশকেও ব্যবহার করা হয়। তবে গনোরিয়া রোগের চিকিৎসায় এর জীবাণুনাশক ধর্ম বিশেষ কাজে লাগে। উইলিয়াম ওয়াট ১৯০৮ সালে লিখেন, ‘এটি জননাঙ্গের মিউকোসা মেমব্রেনে বেশি কাজ করে’। এই কাজের আরেকটি অনুষঙ্গ ‘কোপাইবা’র তুলনায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিউবেব ব্যবহার বেশি সুবিধাজনক। উদ্বায়ী তেল রূপে কিউবেব সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়ে থাকে, ৫ থেকে ২০ মিনিম পরিমাপে এটি সেবন করা হয়, যা মিউসিলেজে বা উয়েফারের মাধ্যমে সেবন করা হয়। তবে প্রস্রাবের জটিলতায় এর ব্যবহারের ক্ষেত্রে অ্যালবিউমিন সংক্রান্ত কিছু সাদৃশ্যগত সমস্যা হতে পারে। ন্যাশনাল বোটানিক ফার্মাকোপিয়া ১৯২১ সালে কিউবেবকে “ফোর এলবাস” এর চমৎকার উপশম বলে অভিহিত করে।
রান্নার ক্ষেত্রে
[সম্পাদনা]মধ্যযুগে ইউরোপে কিউবেব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রান্নার উপকরণ হিসেবে সমাদৃত ছিল। মাংস রান্নার উপকরণ হিসেবে ও সস হিসেবে ব্যবহৃত হত এটি। কাঠবাদামের জুস ও বিভিন্ন মশলার সমন্বয়ে সসের উপকরণ তৈরি হত। সুগন্ধের জন্য কিউবেব সেবন ও খাওয়া হত। চতুর্দশ শতাব্দীতে পোল্যান্ডে রসুন, জিরা ও কিউবেব মিশ্রণে তৈরি ভিনেগার ব্যবহৃত হত। এখনকার যুগেও স্যুপে অনেক ক্ষেত্রে এটি ব্যবহৃত হয়।
কিউবেব আরব অঞ্চল হয়ে আফ্রিকায় পৌঁছে গিয়েছিল। মরক্কোর রন্ধনশিল্পে মসলাদার খাবারে আর সুজিতে ডায়মন্ড আকারে কাটা কিউবেব মধু আর খেজুরের সমন্বয়ে পরিবেশিত হত। ‘রাস এল হানোট’ নামের বিখ্যাত মসলা মিশ্রণেও মাঝে মাঝে এটি ব্যবহৃত হত। ইন্দোনেশিয়ার রন্ধনশিল্পে, বিশেষ করে ‘ইন্দোনেশীয় কারি’ তে এটি প্রায়ই ব্যবহৃত হয়।
সিগারেট ও স্পিরিট
[সম্পাদনা]অ্যাজমার উপশমে কিউবেব সিগারেট আকারে ব্যবহৃত হতো,আর ফ্রানজাইটিস ও ‘হে’ ফিভারেও এটি ব্যবহার করা হত। এডগার রাইস বারোজ কিউবেব সিগারেট সেবন করতেন,তিনি মজা করে বলতেন, এত এত কিউবেব সিগারেট না টানলে ‘টারজান’ সিরিজের জন্ম তিনি মোটেই দিতে পারতেন না। ‘মার্শাল’স প্রিপেয়ারড কিউবেব সিগারেট’ খুব জনপ্রিয় ছিল ২য় বিশ্বযুদ্ধ অবধি। মারিজুয়ানা ব্যবহারকারীরা প্রায়ই বলেন, কিউবেব সিগারেট মারিজুয়ানার চেয়ে কোনও অংশে কম বিপজ্জনক নয়।
রুরাল আইওয়াতে ১৯১২ সালে ‘ট্রাবল’ গানে হ্যারল্ড হিলের সংলাপেও কিউবেব সিগারেটের উল্লেখ ছিল। ২০০০ সালে নর্থ ক্যারোলিনার হেলথ ও হিউম্যান সার্ভিসের টোব্যাকো প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণ ব্রাঞ্জের প্রকাশিত ‘ সিগারেটে পাওয়া উপাদানের তালিকায়’ কিউবেব তেলকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বম্বে স্যাফায়ার জিন কিউবেব ও গ্রেইন অফ প্যারাডাইস থেকে উদ্ভূত উপাদান দ্বারা সুরভিত। ব্র্যান্ডটি ১৯৮৭ সালে যাত্রা শুরু করলেও তারা দাবি করত, ১৭৬১ সালে আবিষ্কৃত কোনও গোপন রেসিপি তারা ব্যবহার করছে। পার্টসভকা নামের বাদামী রাশিয়ান পিপার ভদকা যার কিনা কড়া স্বাদের সুখ্যাতি আছে, সেটি কিউবেব ও কেপসিকাম পিপার থেকে তৈরি হয়।
অন্যান্য
[সম্পাদনা]কিউবেব ভেজাল তেল ও ভারতীয় গুল্মজাত তেলের উপাদান হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। অপরপক্ষে কিউবেবকে জাল করতে আবার পিপার বাকাটাম ও পিপার কেনিনাম ব্যবহার করা হয়।
কিউবেব বেরি প্রেমবিষয়ক ব্ল্যাক ম্যাজিকের জন্য ব্যবহৃত হয় আফ্রিকান আমেরিকান হুডু প্রথার অন্তর্গত আচারে। ২০০০ সালে সিসেডো নামের জাপানিজ কসমেটিক কোম্পানি তাদের বার্ধক্য প্রতিরোধী ফর্মুলা পেটেন্ট করে যার অনেকগুলো উপাদানের মধ্যে কিউবেবও আছে। ২০০১ সালে সুইস কম্পানি ফারমেনিক কিউবেবোল নামের যৌগ পেটেন্ট করে যা কিউবেব তেল থেকে পাওয়া যায়, যা স্নিগ্ধতা ও আরামদায়ক অনুভূতি আনে। এই পেটেন্ট চুইং গাম থেকে শুরু করে ড্রিঙ্কস, টুথপেস্ট, জেলাটিন ভিত্তিক উপাদানের ক্ষেত্রেও কিউবেবোলের প্রয়োগের বিষয়ে আলোচনা করে।
- ↑ Chisholm 1911, পৃ. 607।