সাগরিকা (ক্ষেপণাস্ত্র)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সাগরিকা (ক্ষেপণাস্ত্র)

একটি সাগরিকা ক্ষেপণাস্ত্রের ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ।
প্রকার সংক্ষিপ্ত-পাল্লার এসএলএমবি
উদ্ভাবনকারী ভারত
ব্যবহার ইতিহাস
ব্যবহারকাল অগাস্ট ২০১৮[১]
ব্যবহারকারী ভারতীয় নৌবাহিনী
উৎপাদন ইতিহাস
নকশাকারী প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা
উৎপাদনকারী ভারত ডায়নামিক্স লিমিটেড
তথ্যাবলি
ওজন ৬–৭ টন (৬.৬–৭.৭ শর্ট টন)[২][৩]
দৈর্ঘ্য ১০ মি (৩৩ ফু)
ব্যাস ০.৭৪ মি (২.৪ ফু)

ওয়ারহেড বিস্ফোরক, কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র

ইঞ্জিন দুই পর্যায়ের রকেট মোটর
প্রপেল্যান্ট কঠিন জ্বালানী
অপারেশনাল
রেঞ্জ
১,০০০ কেজি পেইড লোড সহ ৭৫০ কিমি[৪] (৪৩৫ মাইল)
নির্দেশনা
পদ্ধতি
মধ্যবর্তী-গতিপথ: জিপিএস/নাভিক উপগ্রহ নির্দেশিকা সহ আন্তঃদেশীয় বিমানপোতচালন ব্যবস্থা
প্রান্তিক: টেরিনের কনট্যুর ম্যাচিং[৫]
লঞ্চ
প্লাটফর্ম
অরিহন্ত -শ্রেণির ডুবোজাহাজ, এস৫-শ্রেণির ডুবোজাহাজ

কে-১৫ বা বি-০৫ সাংকেতিক নামেও পরিচিত সাগরিকা একটি ভারতীয় ডুবোজাহাজ-হতে-উৎক্ষিপ্ত নিক্ষেপী ক্ষেপণাস্ত্র (এসএলবিএম), যার পরিসর বা পাল্লা ৭৫০ কিলোমিটার (৪৬৬ মাইল)।[৪][৬] ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রতিশোধমূলক পারমাণবিক স্ট্রাইকসমূহের জন্য নকশাকৃত। এটি কে ক্ষেপণাস্ত্র পরিবারের অন্তর্ভুক্ত এবং ভারতের পারমাণবিক ত্রয়ীর একটি অংশ গঠন করে।[৭]

বিবরণ[সম্পাদনা]

কে-১৫ একটি দ্বি-পর্যায়ের ডুবোজাহাজ-হতে-উৎক্ষিপ্ত নিক্ষেপী ক্ষেপণাস্ত্র। ক্ষেপণাস্ত্রটি তার উৎক্ষেপণ মঞ্চ থেকে বেরিয়ে আসতে ও জল পৃষ্ঠে উঠে যাওয়ার জন্য একটি গ্যাস বুস্টার ব্যবহার করে। একটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় পৌঁছানোর পরে, একটি কঠিন রকেট মোটর চালু করা হয়। ক্ষেপণাস্ত্রটির পরিসীমা বা পাল্লা প্রায় ৭৫০ কিলোমিটার (৪৬৬ মাইল) এবং উড়ানের সময় সর্বোচ্চ ৫ কিলোমিটার (৩ মাইল) উচ্চতায় পৌঁছে যায়।[৮]

উন্নয়ন[সম্পাদনা]

কে-১৫ ক্ষেপণাস্ত্রটির উন্নয়ন ১৯৯০-এর দশকের শেষদিকে ভারতীয় নৌবাহিনী পারমাণবিক শক্তিচালিত অরিহন্ত-শ্রেণির ডুবোজাহাজসমূহের সাথে ব্যবহারের জন্য একটি ডুবোজাহাজ-হতে-উৎক্ষিপ্ত নিক্ষেপী ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির লক্ষ্য নিয়ে শুরু হয়।[৯][১০] এটি হায়দ্রাবাদে প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার (ডিআরডিও) ক্ষেপণাস্ত্র কমপ্লেক্সে তৈরি করা হয়।[১১]

প্রকল্প ৪২০ নামে পরিচিত আন্ডার ওয়াটার মিসাইল লঞ্চের উন্নয়ন ২০০১ সালে সম্পন্ন হয় এবং পরীক্ষার জন্য ভারতীয় নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপকটি গুজরাতের হাজিরায় তৈরি করা হয়।[১২] সাগরিকা ক্ষেপণাস্ত্রটি ভারতের পারমাণবিক শক্তিচালিত অরিহন্ত-শ্রেণির ডুবোজাহাজের সাথে একীকরণ শুরু করা হয় এবং ২০০৯ সালের ২৬ জুলাই পোতাশ্রয় পরীক্ষা শুরু করা হয়।[১৩]

এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ২০০৮ সালের মধ্যে সফলভাবে সাতবার উৎক্ষেপণ করা হয় এবং এর সর্বোচ্চ পরিসীমা বা পাল্লা পর্যন্ত চারবার পরীক্ষা করা হয়। ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারির পরীক্ষা, বিশাখাপত্তনমের উপকূলে জলভাগের ৫০ মিটার (১৬০ ফুট) নীচে নিমগ্ন একটি পন্টুন থেকে পরিচালিত হয়।[৯][১১][১৪][১৫] কে-১৫ সাগরিকার একটি স্থল-ভিত্তিক সংস্করণ ২০০৮ সালের ১৪ নভেম্বর সফলতার সাথে পরীক্ষামূলকভাবে উৎক্ষেপণ করা হয়।[১৬] ক্ষেপণাস্ত্রটির একটি সম্পূর্ণ পরিসীমা বা পাল্লার পরীক্ষা ২০১২ সালের ১১ই মার্চ করা হয়।[১৭][১৮] ক্ষেপণাস্ত্রসমূহের দ্বাদশ ও চূড়ান্ত উন্নয়নের পরীক্ষা ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়। ডিআরডিওর মহাপরিচালক ভি. কে. সরস্বতের মতে, এই ক্ষেপণাস্ত্রটির আবারো ৭০০ কিলোমিটার ব্যাপ্তি পরীক্ষা করা হয় এবং এর একক অঙ্কের প্রভাব-নির্ভুলতার সাথে তার সমস্ত উদ্দেশ্য পূরণ করা হয়।[১৯] পরীক্ষাটি আইএনএস অরিহন্তের সাথে ক্ষেপণাস্ত্রের একীকরণের পরে অনুষ্ঠিত হয়।[২০][২১][২২] একটি ডামি বা নিরস্ত্র কে-১৫ সাগরিকা ক্ষেপণাস্ত্র ২০১৫ সালের ২৫শে নভেম্বর সফলভাবে আইএনএস অরিহন্তের থেকে পরীক্ষিত হয়।[২৩] এই ক্ষেপণাস্ত্র ২০১৮ সালের ১১ই আগস্ট ও ১২ই আগস্ট মোট তিনবার পরীক্ষা করা হয়।[১]

এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ২০১৮ সালের আগস্ট মাস থেকে পুরোপুরি কার্যকর হয়।[১]

ব্যবহারকারী[সম্পাদনা]

 ভারত

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Nuke-capable submarine-launched missile operationalised, India in select triad club"The New Indian Express। ১৯ আগস্ট ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০২১ 
  2. "India successfully test-fires underwater missile"The Hindu। ২৭ জানুয়ারি ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  3. "Sagarika missile test-fired successfully"The Hindu। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৮। ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  4. "India tests new underwater nuclear missile"The Times of India। ২৬ মার্চ ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০১৬ 
  5. CSIS। "Sagarika/Shaurya"Missile Threat। CSIS। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জানুয়ারি ২০২০ 
  6. Unnithan, Sandeep (২০ নভেম্বর ২০১০)। "The secret 'K' missile family"India Today (ইংরেজি ভাষায়)। 
  7. "India gets sub-marine missile power"। Ibnlive.com। ২০০৭-০৭-০৭। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০২১ 
  8. Unnithan, Sandeep (জানুয়ারি ১৭, ২০০৮)। "The secret undersea weapon"India Today (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০২১ 
  9. "Final test of K-15 ballistic missile on Tuesday : Latest Headlines, News - India Today"। Indiatoday.intoday.in। ২০০৮-০২-২৫। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০২১ 
  10. "India ready for new missile test"BBC News। ১৯৯৮-০৯-০৪। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০২১ 
  11. "Sagarika missile test-fired successfully"The Hindu। ২০০৮-০২-২৭। ২০০৮-০২-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০২১ 
  12. "In a workshop at Hazira, Indian underwater missile launcher gets ready for trial"। Indianexpress.com। ২০০১-০৫-২৮। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০২১ 
  13. "thaindian.com/newsportal/india-news India joins elite group"। Thaindian.com। ২০০৯-০৭-২৭। ২০১২-১০-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০২১ 
  14. Pandit, Rajat (২০০৮-০২-১৯)। "India ready to join elite N-strike club"The Times of India। ২০১২-১০-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০২১ 
  15. "India can now fire missiles from under water"। Ibnlive.com। ২০০৮-০৫-১২। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০২১ 
  16. India test-fires nuclear-capable missile[অকার্যকর সংযোগ]
  17. "K15 test fired"। Ibnlive.in.com। ২০১২-০৩-১৩। ২০১২-০৩-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০২১ 
  18. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২০ মে ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০২১ 
  19. "K-15 SLBM is a beast with gen-next tech"ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। ৩০ জানুয়ারি ২০১৩। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০২১ 
  20. "India test fires missile from under sea, completes nuclear triad"NDTV। ২৭ জানুয়ারি ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০২১ 
  21. "India successfully test-fires underwater missile"দ্য হিন্দু। ২৭ জানুয়ারি ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০২১ 
  22. "Report: India successfully tests nuclear-capable, medium-range missile"দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট। ২৭ জানুয়ারি ২০১৩। ২৮ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০২১ 
  23. Luthra, Gulshan (২৬ নভেম্বর ২০১৫)। "Nuclear capable Arihant submarine successfully test-fires unarmed missile"The Economic Times। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুলাই ২০২১ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]