সাঁতাও (চলচ্চিত্র)
সাঁতাও | |
---|---|
পরিচালক | খন্দকার সুমন |
প্রযোজক | শরিফ উল আনোয়ার সাজ্জাদ |
রচয়িতা | খন্দকার সুমন |
চিত্রনাট্যকার | খন্দকার সুমন |
শ্রেষ্ঠাংশে |
|
সুরকার | মাহমুদ হায়াৎ অর্পণ |
চিত্রগ্রাহক |
|
সম্পাদক | সুজন মাহমুদ |
পরিবেশক | আইডিয়া এক্সচেঞ্জ |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ৯৭ মিনিট |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | রংপুরী |
সাঁতাও ২০২৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি বাংলাদেশী বাংলা ভাষার চলচ্চিত্র।[২] খন্দকার সুমন সিনেমাটি পরিচালনার পাশাপাশি গল্প, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন।[১] ‘সাঁতাও’ একটি রংপুরী শব্দ। সাতদিন ধরে লাগাতার বৃষ্টি হওয়ার সময়টাকে বোঝাতে দেশের উত্তরাঞ্চলে ‘সাঁতাও’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়।[১] সাঁতাওয়ের সময়ে কৃষিনির্ভর সমাজে কেমন প্রভাব ফেলে, কৃষকদের সংগ্রামী জীবন এবং প্রান্তিক পটভূমি থেকে নারীদের সর্বজনীন সংগ্রাম ও প্রান্তিক মানুষের জীবনের কাহিনি কেন্দ্র করে গণঅর্থায়নে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা হয়েছে।[৩] রংপুর অঞ্চল ঘিরে গড়ে উঠেছে ছবির গল্প।[৪]
পটভূমি
[সম্পাদনা]সদ্য বিয়ে করেছেন জোয়ান কৃষক ফজলু। দিনের বেশিরভাগ সময় যাকে কাটাতে হয় ধানের জমিতে, মাছ ধরার বিলে কিংবা নৌকা বাইচের দলে। স্ত্রীর পুতুলের নিঃসঙ্গতা দূর করতে একটি গরু কেনে। তাছাড়া পুতুল সন্তান সম্ভবা। নতুন অতিথি এলে তার খাদ্যের বাড়তি জোগানের ব্যবস্থা আগাম করে রাখতে হবে।
সন্তানসম্ভবা নারী ও সন্তানসম্ভবা গরু; একে অপরের দুঃখ, কষ্ট, নিঃসঙ্গতা ভাগাভাগির মিথস্ক্রিয়া জমতে জমতেই বাচ্চা জন্ম দিতে গিয়ে মৃত্যু হয় গরুর। এদিকে জন্মদান প্রক্রিয়ায় জটিলতা সৃষ্টি হলে মৃত্যু হয় সদ্য জন্ম নেওয়া ফজলু-পুতুলের সন্তানের।
মা হারানো বাছুর আর সন্তান হারানো পুতুল; পরস্পর পরস্পরকে খুঁজে নেয় সন্তান ও মায়ের অভাব পূরণে। জন্ম নেয় নতুন এক সম্পর্কের। এ সম্পর্কে রক্তের বন্ধন নেই সত্যি; তবে আত্মিক যে বন্ধন সৃষ্টি হয়, তা রক্তের সম্পর্কের চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়।
কৃষকের সংগ্রামী জীবন, মাতৃত্বের সর্বজনীন রূপ ও মানুষের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নায় আবর্তিত হয়েছে সাঁতাওয়ের গল্প।
কলাকৌশলী
[সম্পাদনা]- আইনুন পুতুল - পুতুল চরিত্রে
- ফজলুল হক - ফজলু চরিত্রে
- শ্রাবণী দাস রিমি
- সাবেরা ইয়াসমিন
- স্বাক্ষ্য শাহীদ
- তাসমিতা শিমু
- মিতু সরকার
- ফারুক শিয়ার চিনু
- আফরিনা বুলবুল
- রুবল লোদী
- আলমগীর কবীর বাদল
- রবি দেওয়ান
- দীনবন্ধু পাল
- সালাউদ্দিন
নির্মাণ
[সম্পাদনা]নির্মাতা সুমন কেবল অভিনয় শিল্পীদের কাছ থেকেই নয় অভিনয় নিংরে এনেছেন বন্য শালিক, গরু, বাছুর, তিস্তার ধু-ধু প্রান্তর কিংবা হাঁসের বাচ্চাদের থেকেও। বন্যপ্রাণীদের সিনেমায় মানানসই করে গড়ে তোলা হয়েছে।
গ্রামীণ আবহ ফুটিয়ে তুলতে নির্মাতা যেমন কৃত্রিম আলোর স্বল্প ব্যবহার করেছেন। নৌকা বাইচ, গ্রামের বাজার, দুর্গাপূজার মেলা, ঈদের দিনগুলোর শুটিংয়ের জন্য আলাদা সেট ফেলে ক্যামেরা ধরার পরিবর্তে অপেক্ষা করেছেন। ঈদ, পূজা, বাজার কিংবা মেলার দিনেই প্রকৃত ঘটনার ভেতর চরিত্র ঢুকিয়ে দিয়ে দৃশ্যধারণ করেছেন। যাতে দর্শকের কাছে গল্পগুলো জীবন্ত হয়ে উঠেছে।
সিনেমার সংগীততে বিয়ের গীত, রংপুর অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী ভাওয়াইয়া সংগীত ব্যবহার করা হয়েছে।
সঙ্গীত
[সম্পাদনা]আবহ সংহীত করেছেন মাহমুদ হায়াৎ অর্পণ। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন কামরুজ্জামান রাব্বী, লায়লা তাজনূর সাউদী, লিমা হক।[৫]
মুক্তি
[সম্পাদনা]২০২২ সালে ভারতের অনুষ্ঠিত 'ভারত আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (আইএফএফআই)', গোয়ায় চলচ্চিত্র টা প্রদর্শিত হয়।[৬]
এই চলচ্চিত্রে কোনো বিখ্যাত অভিনয় শিল্পী না থাকায় শুরুতে বেশি হল পায় না।[৭] চলচ্চিত্রটি প্রথম ধাপে ২৭শে জানুয়ারী ২০২৩ সালে পাঁচটি সিনেমা হল ঢাকার স্টার সিনেপ্লেক্সের বসুন্ধরা শাখা, যমুনা ব্লকবাস্টার, রংপুরের শাপলা, চট্টগ্রামের সুগন্ধা ও সিলভার স্ক্রিনে প্রদর্শিত হয়।[১][৮]
২০২৩ সালের ১৩ অক্টোবর ওটিটি প্লাটফর্ম বায়স্কোপে ‘সাঁতাও’ সিনেমাটি মুক্তি পায়।[৯] ২০২৩ সালের ২২শে ডিসেম্বর অ্যামাজন প্রাইমে মুক্তি পায়।[১০]
পুরস্কার
[সম্পাদনা]ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশ প্যানোরমা বিভাগে সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে পুরস্কার পায় ‘সাঁতাও।[১১][১২]
ভারতের অজন্তা-ইলোরা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ৮ম আসরের প্রতিযোগিতা বিভাগে নির্বাচিত হয়েছে ছবিটি।[১৩] নেপাল আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা আন্তর্জাতিক পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হিসেবে ‘গৌতম বুদ্ধ পুরস্কার’ পায় ।[১০][১৪]
আরও দেখুন
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ "পাঁচ প্রেক্ষাগৃহে চলছে 'সাঁতাও' | বিনোদন"। সময় সংবাদ। ২০২৩-০১-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-৩১।
- ↑ "কাটলো 'সাঁতাও' সংকট, দেখা যাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম-রংপুরে"। বাংলা ট্রিবিউন। ২০২৩-০১-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-৩১।
- ↑ "গণ-অর্থায়নের নতুন সিনেমা 'সাঁতাও'"। সারাবাংলা। ২০১৮-০৮-১২। ২০২৩-০১-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-৩১।
- ↑ আসাদুল্লাহ, মুহাম্মাদ। "'সাঁতাও'য়ে হতে পারে সিনেমায় গ্রামীণ গল্পের পুনর্জন্ম"। bdnews24। ২০২৩-০১-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-৩১।
- ↑ "ভারতের চলচ্চিত্র উৎসবের প্রতিযোগিতা বিভাগে 'সাঁতাও'"। সারাবাংলা। ২০২৩-০১-০৮। ২০২৩-০১-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-৩১।
- ↑ "গোয়া চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত 'সাঁতাও'"। সারাবাংলা। ২০২২-১১-২৪। ২০২৩-০১-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-৩১।
- ↑ "অবশেষে হল পাচ্ছে 'সাঁতাও'"। দৈনিক ইত্তেফাক। ২০২৩-০১-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-৩১।
- ↑ "দেশের ৫ হলে মুক্তি পেল 'সাঁতাও'"। সমকাল। ২০২৩-০১-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-৩১।
- ↑ "ওটিটিতে 'সাঁতাও', দেখা যাচ্ছে ফ্রিতে"। চ্যানেল আই অনলাইন (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-১০-১৪। ২০২৩-১০-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-১৪।
- ↑ ক খ "'সাঁতাও' মুক্তি পেল আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে"। ajkalerkhobor.net। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১২-২২।
- ↑ "মুক্তি পেল 'সাঁতাও', দর্শক বাড়লে হল বাড়বে"। চ্যানেল আই অনলাইন। ২০২৩-০১-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-৩১।
- ↑ "বাংলাদেশ প্যানারোমায় সেরা 'সাঁতাও'"। সারাবাংলা। ২০২৩-০১-২২। ২০২৩-০১-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-৩১।
- ↑ "ভারতের চলচ্চিত্র উৎসবের প্রতিযোগিতা বিভাগে 'সাঁতাও'"। সারাবাংলা। ২০২৩-০১-০৮। ২০২৩-০১-৩১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-৩১।
- ↑ "আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে 'সাঁতাও'"। জাগোনিউজ২৪.কম। ২১ ডিসেম্বর ২০২৩। ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ডিসেম্বর ২০২৩।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- বাংলা মুভি ডেটাবেজে সাঁতাও
- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে সাঁতাও (ইংরেজি)