শ্রীবাটি

স্থানাঙ্ক: ২৩°৩১′১৭″ উত্তর ৮৮°১০′৪৩″ পূর্ব / ২৩.৫২১২৮০° উত্তর ৮৮.১৭৮৬৩২° পূর্ব / 23.521280; 88.178632
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

শ্রীবাটি (ইংরেজি: Sribatiপশ্চিমবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমায় অবস্থিত একটি গ্রাম এবং গ্রাম পঞ্চায়েত

শ্রীবাটি
Sribati
গ্রাম
শ্রীবাটির স্কাইলাইন
শ্রীবাটি পশ্চিমবঙ্গ-এ অবস্থিত
শ্রীবাটি
শ্রীবাটি
শ্রীবাটি ভারত-এ অবস্থিত
শ্রীবাটি
শ্রীবাটি
স্থানাঙ্ক: ২৩°৩১′১৭″ উত্তর ৮৮°১০′৪৩″ পূর্ব / ২৩.৫২১২৮০° উত্তর ৮৮.১৭৮৬৩২° পূর্ব / 23.521280; 88.178632
দেশ ভারত
রাজ্যপশ্চিমবঙ্গ
জেলাপূর্ব বর্ধমান
ব্লককাটোয়া ||
সরকার
 • ধরনপঞ্চায়েত
 • শাসকশ্রীবাটি গ্রাম পঞ্চায়েত
আয়তন
 • মোট১৮৬.৪২ হেক্টর (৪৬০.৬৫ একর)
উচ্চতা১৮ মিটার (৫৯ ফুট)
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট২,৬৫৬
 • জনঘনত্ব১,৪০০/বর্গকিমি (৩,৭০০/বর্গমাইল)
সময় অঞ্চলভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+৫:৩০)
ডাক সূচক সংখ্যা৭১৩৫১৪

ভূগোল[সম্পাদনা]

সমুদ্রসমতল থেকে ১৮ মিটার উচ্চতায়, উত্তরে ব্রাহ্মণী নদী এবং দক্ষিণে খড়ি নদীর মধ্যবর্তী অবস্থিত শ্রীবাটি গ্রাম।

জনসংখ্যার উপাত্ত[সম্পাদনা]

২০১১-র আদম শুমারি অনুযায়ী শ্রীবাটির জনসংখ্যা ২,৬৫৬ জন, যার মধ্যে ১,৩৫২ জন পুরুষ এবং ১,৩০৪ জন নারী। ৬-বছরের কম বয়সী শিশুদের সংখ্যা ৩১৪, অথবা মোট জনসংখ্যার ১১.৮২%। শ্রীবাটির গড় লিঙ্গ অনুপাত ৯৬৪, যেটা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের গড় ৯৫০-এর চেয়ে বেশি। শ্রীবাটির শিশু লিঙ্গ অনুপাত ১০২৬, যেটা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের গড় ৯৫৬-র চেয়ে বেশি।[১]

অনেক গ্রামবাসীরা তফসিলি জাতির সদস্য। তফসিলি জাতির হার মোট জনসংখ্যার ৪৩.১৫%, এবং তফসিলি উপজাতির হার ০.১১%।

২০১১ সালে শ্রীবাটির মোট সাক্ষরতার হার ৬৪.৩৫%, যেটা পশ্চিমবঙ্গের গড় ৭৬.২৬%-র তুলনায় কম। শ্রীবাটির পুরুষ সাক্ষরতার হার ছিল ৭০.৬৮% এবং মহিলা সাক্ষরতার হার ছিল ৫৭.৭৩%। শ্রীবাটিতে শিক্ষা প্ৰতিষ্ঠান বলতে, একটি উচ্চবিদ্যালয় আছে, শ্রীবাটি গোকুল কৃষ্ণ উচ্চবিদ্যালয়, যেখান দশম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষা প্রদান করা হয়।[২]

অর্থনীতি[সম্পাদনা]

গ্রামের বেশীরভাগ লোকেরা কৃষি বা কৃষি-সম্পর্কিত কাজে জড়িত। গ্রামের ৮৬৮ কর্মীর মধ্যে ১১৪ জন কৃষক (মালিক বা সহ-মালিক) এবং ৪২৭ জন কৃষিশ্রমিক।

প্রশাসন[সম্পাদনা]

শ্রীবাটির শাসন সত্তা হলো শ্রীবাটি গ্রাম পঞ্চায়েত। একটি নির্বাচিত সারপঞ্চের নেতৃত্বে শ্রীবাটি গ্রাম পঞ্চায়েত গ্রামের পরিচালনা করে।

পর্যটক আকর্ষণ[সম্পাদনা]

টেরাকোটা শিব তৃমন্দির[সম্পাদনা]

শ্রীবাটির মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ঊনবিংশ শতাব্দীর টেরাকোটার অপূর্ব কারুকার্য করা তিন শিবমন্দির।[৩] প্রত্যেক মন্দিরের ভেতরে এক-একটি শিবলিঙ্গ আছে, এবং সেই অধিষ্ঠাতা দেবতার নামকরণ লিখিত আছে: শ্রী বিস্বেসর (অষ্টপাথরের তৈরি), শ্রী ভোলানাথ (শ্বেতপাথরের তৈরী), এবং শ্রী চন্দ্রেস্বর (অষ্টপাথরের তৈরি)।

সবচেয়ে পুরাতন মন্দিরটি, শ্রী চন্দ্রেশ্বর, খ্রিষ্টাব্দ ১৮০২ সালে শ্রীমতি ভবানীচরণ চন্দ্র দ্বারা নির্মিত। পূর্ব ভারতের রেখদেউল শৈলীর তৈরী, চতুস্কোন চাতাল থেকে চূড়া অব্দি বিভিন্ন পৌরাণিক বিষয় নিয়ে দেওয়ালের চার-দিকে টেরাকোটার সজ্জা। তার মধ্যে দেখা যায় দশাবতার, দশমহাবিদ্যা, এবং রামলীলার দৃশ্য।[৪]

১৮৩৬ সালে স্থানীয় জমিদারি চন্দ্র পরিবারের সদস্য, শ্রী রামকান্তচন্দ্র চন্দ্র এবং তার স্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবী দ্বারা নির্মিত হয় দ্বিতীয় এবং তৃতীয় মন্দির। শ্রী ভোলানাথকে উৎসর্গ করা মধ্যম মন্দিরটি পঞ্চরত্ন শৈলীতে নির্মিত এবং দেওয়ালের টেরাকোটায় শৈব, বৈষ্ণব এবং তন্ত্র ধর্ম প্রসঙ্গ বিচিত্র সজ্জা রয়েছে। শ্রী বিশেস্বরকে নিবেদিত তৃতীয় মন্দিরটি অষ্টভুজ ভিত্তির ওপর রেখদেউল শৈলীতে নির্মিত। টেরাকোটার সজ্জায় দেখা যায় ঐ সময়কার সাধারণ সামাজিক-সাংস্কৃতিক দৃশ্য এবং একটি নকল-দরজার ওপরে পাথরের প্লেটে পাওয়া যায় তিন মন্দিরের প্রতিষ্ঠালিপি।

শ্রীবাটির টেরাকোটা তৃমন্দির (এস-ডব্লিউ বি-৩৮) ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের কলকাতা বিভাগের অধীনে একটি ঘোষিত রাষ্ট্রীয় সুরক্ষিত স্মৃতিস্তম্ভ।[৫] এই মন্দিরগুলোর সম্বন্ধে আরো বিস্তারিত দেখতে পারেন এই দূরেক্ষনে|

অন্যান্য আকর্ষণসমূহ[সম্পাদনা]

টেরাকোটা মন্দিরের কাছেই রয়েছে অষ্টাদশ ও উনিশ শতকের বেশ কয়েকটি জমিদারি অট্টালিকা, সংরক্ষেনের বিভিন্ন পদ্ধতিতে। এখানে দেখা যায় বাংলার ঔপনিবেশিক যুগের স্থাপত্য বৈশিষ্ট্য: খোলা আঙ্গিনা, ঝুলন্ত অলিন্দ, এবং তার চতুর্দিকে তিন তলা অব্দি বাসগৃহ। অনেক ঘরগুলোতে উঠোনের এক দিকে আছে উচ্চ ছাদ-ওয়ালা ও দেয়ালে পঙ্খের নকশাকৃত পুজো মণ্ডপ। চন্দ্র বাড়ির সেই পূজা মণ্ডপে এখনও ৩০০ বছরের অব্যাহত বার্ষিক দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হয়।[৬]

আরেকটি নিকটবর্তী আকর্ষণ হচ্ছে খ্রিষ্টাব্দ ১৭০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত শ্রী শ্রী রঘুনাথ জিউ মন্দির। মন্দিরটি স্থানীয় জমিদারি চন্দ্র পরিবারের কুলদেবতা, বিষ্ণুর একটি রূপ, শ্রী রঘুনাথ জিউকে নিবেদিত। ১৭৪২ খ্রিষ্টাব্দে বাংলায় মারাঠা আক্রমণের সময় মারাঠা সেনাপতি ভাস্কর পণ্ডিত এই মন্দিরের শালগ্রাম শিলা লুন্ঠন করেন এবং মন্দিরের কুলপুরোহিতের বিশেষ নিবেদনে পুনরায় ফিরিয়ে দেন।[৭]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Sribati Village Population - Katwa - II - Barddhaman, West Bengal"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-০৬ 
  2. খোঁজখবর। "আজও নাড়ু ও কলা দেওয়া হয় শ্রীবাটী গোকুলকৃষ্ণ চন্দ্র বিদ্যালয়ে | KHONJKHOBOR" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৪-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-০৬ 
  3. "The Telegraph - Calcutta (Kolkata) | Metro | Next weekend you can be at ... Sribati"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-০৮  line feed character in |শিরোনাম= at position 77 (সাহায্য)
  4. Sengupta, Somen (১১ জুন ২০১৭)। "Sribati: Where Temples Mirror a Time" (পিডিএফ)The Hitavada। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০১৮ 
  5. "List of Ancient Monuments and Archaeological Sites and Remains of Arunachal Pradesh - Archaeological Survey of India"। ২০১৮-০৪-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-১২  line feed character in |শিরোনাম= at position 66 (সাহায্য)
  6. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; :0 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  7. ন্দ্র, মহাদেব (2014). চন্দ্র বংশ ও শ্রীবাটি টেরাকোটা. অজয় আচার্য.