শামসুর রহমান খান শাহজাহান
শামসুর রহমান খান শাহজাহান | |
---|---|
টাঙ্গাইল-৩ আসন আসনের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ৭ ডিসেম্বর ১৯৭০ – ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ | |
কাজের মেয়াদ ৭ মার্চ ১৯৭৩ – ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯ | |
কাজের মেয়াদ ৭ মে ১৯৮৬ – ৩ মার্চ ১৯৮৮ | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১৯৩৩ |
মৃত্যু | ২ জানুয়ারি ২০১২ |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশি |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | রাজনীতিবিদ |
শামসুর রহমান খান শাহজাহান (১৯৩৩ - ২ জানুয়ারি ২০১২) ছিলেন একজন বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও সংসদ সদস্য। তিনি ১৯৭১ সালে গঠিত অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ আঞ্চলিক প্রশাসন কাউন্সিলের সভাপতি ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের সহচর ছিলেন। এছাড়ও তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে একাধিকবার টাঙ্গাইল-৩ আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]শাহজাহান ১৯৩৩ সালে টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলার বাগুন্তা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন।
রাজনৈতিক জীবন
[সম্পাদনা]শাহজাহান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন এবং ১৯৫৪ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত তিনি ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।[১] শিক্ষাজীবন শেষে তিনি টাঙ্গাইলের রাজনীতিতে সক্রিয় হন এবং ১৯৬৫ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগের টাঙ্গাইল শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন ও ১৯৮৫ সালে সভাপতি নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে জেলা থেকে তাকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।[১] ২০০৪ সালের ৫ই জানুয়ারি পুনরায় তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন ও মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।[১]
শাহজাহান ১৯৭০-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসন থেকে জয়ী হয়ে গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।[২] বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর অনুষ্ঠিত প্রথম[৩] ও ১৯৮৬ সালে তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে জয় লাভ করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[২][৪][৫][৬] তবে তিনি ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী লুৎফর রহমান খান আজাদের কাছে পরাজিত হন।[৫][৭][৮][৯]
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ
[সম্পাদনা]শাহজাহান বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১ সালে অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার (মুজিবনগর সরকার নামে পরিচিত) গঠিত হলে তিনি এ সরকারের ২ নং আঞ্চলিক প্রশাসন পরিচালনার দায়িত্ব পান। ২ নাম্বার প্রশাসনিক অঞ্চলটি ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলা থেকে ১৯৭০-এর নির্বাচনে নির্বাচিত জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ সদস্যদের নিয়ে গঠিত হয়েছিল যেখানে তিনি সভাপতির দায়িত্ব পান। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে এ অঞ্চলটি ১১ নাম্বার সেক্টরের অধীনে পরিচালিত হয়। যুদ্ধ চলাকালীন তিনি অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে ভারতে সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করেন ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব প্রদান করেন।
গ্রন্থ
[সম্পাদনা]শাহজাহান তার জীবদ্দশায় বেশ কিছু গ্রন্থ রচনা করেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ‘মুক্তিযুদ্ধের ডায়েরি, চিঠি ও স্মৃতিচারণ’ এবং ‘কেউ দাবায়ে রাখতে পারবানা’। এর মধ্যে ‘কেউ দাবায়ে রাখতে পারবানা’ বইটি শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের উপর ভিত্তি করে লিখিত।
ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন
[সম্পাদনা]শাহজাহানের চাচাত ভাই লুৎফর রহমান খান আজাদ বিএনপির মনোনয়নে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ও প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ভাতিজা আমানুর রহমান খান রানা নবম ও দশম জাতীয় সংসদের সদস্য ছিলেন।[১] ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শাহজাহানের ভাই আতোয়ার রহমান খান টাঙ্গাইল-৩ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[১]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "টাঙ্গাইলে চালকের আসনে খান পরিবার"। মানবজমিন। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ ক খ "রানার জায়গা দখলে আ'লীগের অর্ধডজন নেতা, স্বস্তিতে বিএনপি"। দৈনিক যুগান্তর। ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "১ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "৩য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ ক খ "টাঙ্গাইল-৩: বিএনপিকে ঠেকাতে রানার বিকল্প নেই"। বাংলানিউজ২৪.কম। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "এমপি রানার আসন দখলে নিতে আ.লীগের অর্ধডজন নেতা মাঠে"। ভোরের কাগজ। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "লুতফর রহমান খান আজাদ"। প্রথম আলো। ১০ নভে ২০১৮। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসে ২০১৮।
- ↑ "একাদশ সংসদ নির্বাচন"। সমকাল। ৭ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "রানার পরিবর্তে কে হচ্ছেন প্রার্থী"। বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ১৯৩৩-এ জন্ম
- ২০১১-এ মৃত্যু
- প্রথম জাতীয় সংসদ সদস্য
- তৃতীয় জাতীয় সংসদ সদস্য
- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ
- বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- টাঙ্গাইল জেলার রাজনীতিবিদ
- মুক্তিবাহিনীর কর্মকর্তা
- বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে জড়িত ব্যক্তি
- বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য
- ১৯৩০-এর দশকে জন্ম
- ২০১২-এ মৃত্যু
- ২০শ শতাব্দীর বাঙালি
- ২১শ শতাব্দীর বাঙালি
- বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ