শনিবারের চিঠি
![](http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/5/57/%E0%A6%B6%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B0_%E0%A6%9A%E0%A6%BF%E0%A6%A0%E0%A6%BF_%E0%A6%AA%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0_%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BE.jpg/300px-%E0%A6%B6%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B0_%E0%A6%9A%E0%A6%BF%E0%A6%A0%E0%A6%BF_%E0%A6%AA%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0_%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BE.jpg)
শনিবারের চিঠি বাংলাভাষার অন্যতম বিখ্যাত সাহিত্য-সাময়িকী, যা বিংশ শতকের প্রথমার্ধে ১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রবর্তিত হয়েছিল। এটি ছিল একটি সাপ্তাহিক কাগজ এবং এর মূল স্বত্বাধিকারী ছিলেন অশোক চট্টোপাধ্যায় [১] যোগানন্দ দাস এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। তবে আদ্যোপান্ত শনিবারের চিঠি'র প্রাণপুরুষ ছিলেন কবি-সাহিত্যিক সজনীকান্ত দাস। শনিবারের চিঠি দুই পর্যায়ে প্রকাশিত হয়েছিল। এর প্রথম প্রকাশ ১০ই শ্রাবণ ১৩৩১ তথা ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দের ২৬শে জুলাই। প্রতিষ্ঠালগ্নে সম্পাদক ছিলেন যোগানন্দ দাস। তবে ভাদ্র ১৩৩১/ ফাল্গুন ১৩৩১ সংখ্যা (সাপ্তাহিক একাদশ সংখ্যা) থেকে সজনীকান্ত দাস সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এতে যারা লিখেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম মোহিতলাল মজুমদার, হেমন্তকুমার চট্টোপাধ্যায়, নীরদচন্দ্র চৌধুরী পরিমল গোস্বামী প্রমুখ। এঁদের ভাষা ছিল ব্যঙ্গময়; সমালোচনার লক্ষ্য ছিল পিত্ত জ্বালিয়ে দেয়া।[২]
প্রভাব
[সম্পাদনা]এই সাপ্তাহিক সাহিত্যপত্রটি ১৯৩০-৪০-এর দশকে কলকাতা কেন্দ্রিক বাঙলা সাহিত্যের জগতে বিশেষ সাড়া জাগিয়েছিল। আধুনিক বাংলা সাহিত্যের পথিকৃৎ কল্লোল, প্রগতি, কালি-কলম, পরিচয়, পূর্বাশা, কবিতা, চতুরঙ্গ প্রভৃতি পত্রিকাসমূহের সঙ্গে শনিবারের চিঠি’র নাম জড়িত অবিচ্ছেদ্যভাবে। রবীন্দ্রনাথ-প্রমথ চৌধুরী-শরৎচন্দ্র থেকে আধুনিক বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ লেখকদের সংখ্যায় সংখ্যায় তুলোধোনা করে পত্রিকাটি সকলের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে গিয়েছিল। এর সঙ্গে কল্লোল গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব ছিল আক্রমণাত্মক ; পাশ্চাত্য আধুনিকতার স্পর্শে উদ্বেলিত কল্লোল যুগের চার পাশ ঘিরে ছিল শনি'র চক্র। তবে শনিবারের চিঠি সে সময়কার সাহিত্যচেতনাকে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল।
শনিবারের চিঠি'র অন্যতম প্রধান আকর্ষণ ছিল এর "সংবাদ সাহিত্য"। এই অংশে সমসাময়িক কালে প্রকাশিত কবিতা, উপন্যাস, ছোটগল্প, প্রবন্ধ ইত্যাদি সম্পর্কে খবরাদি প্রকাশ করা হতো। ভাষা ছিল রম্য, কার্যত ব্যঙ্গার্থক। কবি জীবনানন্দ দাশ যখন ছিলেন স্বল্পালোচিত তখন শনিবারের চিঠিতে তার অন্তত ৩৩টি কবিতা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল।[৩]
এ কথা ভাবা অন্যায্য হবে যে, ব্যঙ্গবিদ্রূপেই শনিবারের চিঠি নিঃশেষিত হয়ে গিয়েছিল। শনিবারের চিঠি’তে তৎকালীন প্রধান লেখদের রচনা বিপুল পরিমাণে প্রকাশিত হয়েছে।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬, পৃষ্ঠা ৫০, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
- ↑ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। চিঠিপত্র (দ্বাদশ খণ্ড)। বিশ্বভারতী গ্রন্থন বিভাগ। পৃষ্ঠা ৫২২।
- ↑ "সজনীকান্ত ও জীবনানন্দ", ফয়জুল লতিফ চৌধুরী, বইমেলা ২০০০, সময় প্রকাশন ঢাকা।