রোমান পুরাণ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রোমুলাস এবং রেমাস, লুপারক্যাল, পিতা টিবার, প্যালাটাইন, ট্রজানের রাজত্বকাল (৯৮-১১৭ খ্রিস্টাব্দ)

রোমান পুরাণ হচ্ছে প্রথাগত গল্প যার ভিত্তি হচ্ছে রোমান সাহিত্য এবং ভিজ্যুয়াল আর্টসে ফুটে ওঠা প্রাচীন রোম এর কিংবদন্তি ও ধর্মীয় ব্যবস্থা। রোমান পুরাণ বলতে এই উপস্থাপণার আধুনিক গবেষণাকেও বোঝায় এবং উপস্থাপনার বিষয় যে কোন সময়ের অন্যান্য সংস্কৃতির সাহিত্য ও শিল্পকর্মে প্রকাশিত বিষয়বস্তুও হতে পারে।

রোমীয়গণ তাদের প্রথাগত বর্ণনা সে অলৌকিক বা অতিপ্রাকৃত উপাদান যাই হোক ঐতিহাসিক হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। তাদের গল্পগুলো প্রায়শই রাজনীতি ও নৈতিকতা এবং সম্প্রদায় বা রোমান রাজ্যের প্রতি ব্যক্তির দায়িত্ব সম্পর্কিত। বীরত্ব একটি গুরুত্বপূর্ণ থিম। গল্পগুলোতে রোমান ধর্মীয় চর্চা প্রতিফলিত হয় যা ধর্মতত্ত্ব বা কসমোজেনির তুলনায় আচার, পালন এবং প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পর্কিত।[১]

রোম এর প্রাকইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় ইতালীয় উপদ্বীপে গ্রীক ধর্মের ব্যাপক প্রভাব থাকায় রোমান ধর্ম ও পৌরাণিক কাহিনী অধ্যায়ন বেশ জটিল এবং পরবর্তীতে রোমান লেখকগণ গ্রীক সাহিত্য মডেল অনুকরণ কর শিল্পকর্ম তৈরী করে। ধর্মতত্ত্বের ক্ষেত্রে রোমানুণ গ্রীকদের মত নিজেদের দেবতার পরিচয় নির্ধারণে উৎসাহী ছিলো এবং তারা গ্রিক দেবতার গল্পগুলো নিজেদের দেবতাদের নামে অনুবাদ করে।[২] রোমের প্রথমদিকের কাল্পনিক এবং পৌরাণিক কাহিনীর সঙ্গে এট্রুসক্যান ধর্মের গতিশীল সম্পর্ক ছিলো কিন্তু গ্রীকদের চেয়ে কম নথিভুক্ত হয়েছে।

রোমান পুরাণে গ্রীক সাহিত্যের মত ঐশ্বরিক চরিত্রের বর্ণনায় বেশ কিছুটা ঘাটতি দেখা যায়[৩]গ্রিক পুরাণ এর বিভিন্ন চরিত্রের মত রোমুলাস এবং রেমাস দুগ্ধপোষ্য মেয়ে-নেকড়ে বিখ্যাত, ট্রোজান হর্সব্যতীত[৪] কারণ মধ্যযুগ এবং রেনেসাঁর সময় থেকে ল্যাটিন সাহিত্য সমগ্র ইউরোপে ব্যাপকভাবে পরিচিত ছিলো। রোমানদের গ্রীক পুরানের অনুবাদিত ব্যাখ্যা এবং গ্রীক উৎসের তুলনায় "শাস্ত্রীয় পুরাণের" সচিত্র উপস্থাপনা একে সুপরিচিত করে তোলে। ওভিদ'র মেটামরফসিসে লিখিত গ্রীক পুরাণ অগাস্টাসের সময়ে লিখিত যা ক্যানোনিকাল হিসেবে পরিচিত হয়।

রোমান পুরাণের বৈশিষ্ট্য[সম্পাদনা]

পম্পেই এর দেয়ালচিত্র, ভেনাস শল্যচিকিৎসক ইয়াপুক্সের দিকে তাকিয়ে আছেন যিনি তার সন্তান আইনিয়াসের ক্ষত পরীক্ষা করছেন, ক্রন্দনরত বালকটি তার প্রপৌত্র আস্ক্যানিয়াস, লুলুস নামেও পরিচিত, জুলিয়াস সিজার এবং জুলিও-ক্লডিয়ো রাজবংশের কিংবদন্তি উত্তরপুরুষ।

রোমান ধর্মের আনুষ্ঠানিকতা এবং গ্রীক ধর্মে পৌরাণিক কাহিনী কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করতো তাই অনেকসময় স্থানীয় পুরাণের উপর রোমানদের অধিকার বেশি বলে সন্দেহ হয়। এটা রোমান্টিকতার পণ্য এবন ১৯ শতকের শাস্ত্রীয় বৃত্তি গ্রীক সভ্যতাকে অধিক "প্রকৃত সৃজনশীল" হিসেবে মূল্যায়িত করেছে।[৫] রেনেসাঁ থেকে ১৮ শতক পর্যন্ত রোমান মিথ ছিলো অনুপ্রেরণার উৎস বিশেষ করে ইউরোপীয় চিত্রশিল্পের।[৬] রোমান ঐতিহ্য ঐতিহাসিক পুরাণ বা কিংবদন্তি, শহরের পত্তন এবং সমৃদ্ধি নিয়ে সমৃদ্ধ। এসব বর্ণনায় মানব চরিত্রের ব্যাখ্যা করা হয়েছে যারা মাঝে মাঝে দেবতার নিকট হতে সাহায্য পেতো কিন্তু স্বর্গীয় নির্ধারিত ভাগ্যে এগিয়ে যায়। রোমের প্রাক পর্বে ইতিহাস এবং পুরাণের মধ্যে পারষ্পরিক এবং পরিপূরক সম্পর্ক ছিলো। [৭] যেমন টি. পি. ওয়াইজম্যানের নোটঃ

রোমান গল্পের আবেদন এখনো আছে যা ১৩০০ সালে দান্তে , ১৬০০ সালে শেক্সপীয়ার এবং ১৭৭৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা পিতাদের কাছে ছিলো। মুক্ত নাগরিক হয়ে কি লাগে? পরাশক্তি কি এখনো একটি প্রজাতন্ত্র হতে পারে? কীভাবে ভালো কর্তৃপক্ষ খুনী স্বৈরাচারে রূপান্তরিত হয়?

রোমান পুরাণের প্রধান উৎস ভার্জিলের আনেইড এবং লাইভির ইতিহাসের প্রথম কয়েকটি বই সেই সাথে ডায়োনিসিয়াসের রোমান পুরাকীর্তিসমূহ। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উৎসের মধ্যে ওভিদের ফাস্টি, রোমান ধর্মীয় ক্যালেন্ডারের ছয়-বই কবিতা এবং প্রোপারতিয়েসের লেখা এলিজির চতুর্থ বই। রোমান পুরাণের বিভিন্ন দৃশ্য রোমান দেয়াল চিত্র, মুদ্রা এবং ভাস্কর্য বিশেষ করে রিলিফে প্রদর্শিত হয়েছে।

প্রতিষ্ঠিত পুরাণ[সম্পাদনা]

রোমের প্রতিষ্ঠিত পুরাণের অদ্যাপি ভালো সূত্র হচ্ছে আয়েনিড এবং লাইভির প্রাথমিক ইতিহাস। প্রথমদিকে গ্রীক বীরত্বের কিংবদন্তি এই স্থানীয় ভান্ডারে যুক্ত হয়। ট্রোজান রাজপুত্র আয়েনাসকে চিত্রিত করা হয় লেভিনিয়ার স্বামী যিনি রাজা ল্যাটিনাসের কন্যা ছিলেন, লাতিনির প্যাট্রোনিমিক্যাল পূর্বপুরুষ এবং রোমুলাস এবং রেমাসের পূর্বপুরুষ। ট্রোজানকে রোমান জনগণের পৌরাণিক পূর্বপুরুষ হিসেবে গ্রহণ করা হয়[৮]

অন্যান্য পৌরাণিক[সম্পাদনা]

লার্স পোরসেন্নার উপস্থিতিতে মিউসিয়াস স্ক্যাইভোলা, ১৬৪০ এর প্রথমদিকে ম্যাথিয়াস স্টমের আঁকা।
এরাইভ্যাল অভ গ্যালাটি শুনছেন পলিফেমাস, পম্পেইর ফোর্থ স্ট্যাইলে আঁকা প্রাচীন রোমান ফ্রেস্কো (৪৫-৭৯ খ্রিস্টাব্দ)

রোমান পুরাণের চরিত্র প্রায়শই রাজনৈতিক অথবা নৈতিক যা রোমান ধর্মে বর্ণিত স্বর্গীয় আইনের প্রেক্ষিতে রোমান সরকার গড়ে উঠেছে এবং ব্যক্তির নৈতিক মূল্যবোধ কি হওয়া উচিত এবং ব্যত্যয় হলে শাস্তি কি হওয়া উচিত তা বর্ণিত হয়েছে।

  • স্যাবিন মহিলা ধর্ষণ, সংঘাত ও মিত্রতার মাধ্য দিয়ে রোমান সংস্কৃতি এবং রোমের গঠনে স্যাবিন গোত্রের গুরুত্ব বর্ণনা করেছে।
  • নুমা পম্পিলাস, স্যাবিন গোত্রের রোমের দ্বিতীয় রাজা যিনি অপ্সরা এগ্রেরিয়ার সংগে যুক্ত হন এবং রোমে অনেক আইনগত ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন।
  • সার্ভিয়াস তুল্লিয়াস, রোমের ষষ্ঠ রাজা, যার রহস্যময় উৎস অবাধে পুরাণে যুক্ত হয়েছে এবং তাকে দেবী ফরচুনার প্রেমিক হিসেবে দাবী করা হয়।
  • তারপেই পাথর, বিশ্বাসঘাতকের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করতে এই পাথর ব্যবহার করা হয়।
  • লুক্রেশিয়া, যার আত্মবলিদান প্রথমদিকের রোমান রাজতন্ত্র উৎখাত করে প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে।
  • ক্লোয়েলিয়া, লার্স পরসেনা কর্তৃক বন্দী করে নিয়ে যাওয়া নারী। তিনি ক্লুসিয় শিবির থেকে একদল রোমান কুমারীকে নিয়ে পালিয়ে আসেন।
  • হোরাটিয়াস এ্যাট দা ব্রিজ
  • মিউসিয়াস স্ক্যাইভোলা, যিনি রোমের প্রতি তার আনুগত্য প্রমাণ করতে আগুনে হাত রাখেন।
  • ক্যায়কুলাস, প্র্যায়েনেস্তের প্রতিষ্ঠাতা।[৯]
  • ম্যানলিনাস এবং গীজ, রোমে ফরাসী অবরোধে ঐশ্বরিক হস্তক্ষপ।[১০]
  • নোনে ক্যাপ্রোটিনি এবং পপলিফুজিয়া উৎসব সংক্রান্ত গল্প।[১১]
  • করিয়োল্যানুস, রাজনীতি এবং নৈতিকতা সংক্রান্ত একটি গল্প।
  • ট্রোজান এবং ইতালিয় সভ্যতার ভিত্তি করথিয়াসের এত্রুস্কান শহর।[১২]
  • রোমে মহান মায়ের (সিবেলে)আগমন।[১৩]

ধর্ম ও পুরাণ[সম্পাদনা]

ঐশ্বরিক আখ্যান রোমানদের তুলনায় গ্রিক ধর্মীয় বিশ্বাসের মধ্যে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, রোমানদের কাছে অনুষ্ঠান এবং অর্চনা ছিল প্রধান। রোমানদের ধর্ম ধর্মগ্রন্থ এবং নবী কেন্দ্রিক ছিলো না, যাজকদের সাহিত্য ছিলো প্রথমদিককার লাতিন গদ্যের লিখিত রূপ।[১৪] কলেজ অভ পন্টিফস এবং অগার্সের বই (লাইব্রি) এবং বর্ণনা (commentarii) তে আছে ধর্মীয় পদ্ধতি, প্রার্থণা, বিধান এবং ধর্মীয় আইনের উপর মতামত।.[১৫] যদিও কমপক্ষে এই সংরক্ষিত তথ্যের কিছু রোমান সিনেটের জন্য উপলব্ধ ছিলো, এটা ছিলো occultum genus litterarum[১৬]। তবে কিছু সাহিত্য ছিলো গোপনীয় যাতে শুধুমাত্র পুরোহিতদের প্রবেশাধিকার ছিল।[১৭] বিশ্ব ইতিহাস সংক্রান্ত ভবিষ্যদ্বানী এবং রোমের ভাগ্য ইতিহাসের ঝামেলাপূর্ণ অধ্যায়ে সৌভাগ্যক্রমে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে, নেবুলাস সিবেল্লিনের বইয়ে সহসা আবিষ্কার, যা অনুসারে ৬ষ্ঠ খ্রিস্টপূর্বাব্দে টারকুইন দ্যা প্রাউড কুমায়েন সিবেলের কাছ থেকে কিংবদন্তি কিনে নেন। শাস্ত্রীয় এবং খ্রিস্টান লেখকদের মারফৎ জানা যায় ১ম খ্রিস্টপূর্বাব্দের পণ্ডিত ভাররো'র হারিয়ে যাওয়া ধর্ম সংক্রান্ত কাজে প্রাচীন রোমান ধর্মের কিছু তথ্য সংরক্ষিত ছিলো।

ক্যাপিটলিন ত্রয়ী

প্রথম দিকের প্যানথীয়নের প্রধান ছিলো তথাকথিত প্রাচীন ত্রয়ী, বৃহস্পতি, মঙ্গল ও কুইরিনাস যা ফ্লেমেন ছিলো সর্বোচ্চ মানে এবং জানুস ও ভেস্ট্যা। ঐতিহ্য অনুযায়ী রোমান ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা নুমা পম্পিলাস যিনি স্যবিন গোত্রের লোক এবং রোমের দ্বিতীয় রাজা। বিশ্বাস করা হতো রোমান দেবী এগ্রেসিয়া ছিলো তার স্ত্রী ও উপদেষ্টা। এত্রুস্কান প্রভাবিত ক্যাপিটোলিন ত্রয়ীর জুপিটার, জুনো এবং মিনার্ভা পরবর্তীতে প্রাচীন ত্রয়ীকে প্রতিস্থাপিত করে সরকারী ধর্মের কেন্দ্রীয় চরিত্র হয়ে ওঠে - এর একটি উদাহরণ ইন্দো-ইউরোপীয় ধর্ম যেখানে দুজন দেবী এবং একজন পুরুষ মিলে ত্রয়ী সুপ্রিম ত্রয়ী গঠন করে। আভেন্টিন পাহাড়ের উপর ডায়ানার মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয় কিন্তু ডায়ানা নেমোরেনসিস হচ্ছে এই দেবী মূর্তি যা সবচেয়ে বিখ্যাত রোমান বহিঃপ্রকাশ।

ইক্সিয়নের শাস্তিঃ কেন্দ্রে বুধ ক্যাডুসিয়াস ধরে আছে এবং ডানে জুনো তার সিংহাসনে বসে আছেন। পেছনে আইরিস দাঁড়িয়ে আছেন। বামদিকে চাকার পেছনে ভাল্কান দাঁড়িয়ে আছেন, চাকাটি ঘোরাচ্ছেন যার সংগে ইক্সিসকে বেঁধে রাখা হয়েছে। নেফেলে বুধের পায়ের কাছে বসে আছে। রোমান ফ্রেস্কো, ভেট্টি গৃহের ট্রাইক্লিনামের পূর্বদিকের দেয়াল, পম্পেই, চতুর্থ শৈলী (৬০-৭৯ খ্রিস্টাব্দ)।

দেবতা স্বতন্ত্রভাবে দৈনন্দিন জীবনের ব্যবহারিক প্রয়োজ়নের প্রতিনিধিত্ব করতেন এবং তারা প্রার্থনা এবং অর্ঘের দাবীদার ছিলেন। প্রথম দিককার দেবতাদের মধ্যে একজন বিশেষজ্ঞ দেবতা ছিলেন বিভিন্ন কর্মকান্ডে তার নাম উঠে এসেছে। প্রাচীন পূজা অর্চনায় চাষ বা বীজ বপন ইত্যাদির জন্য আলাদা দেবতা ছিলো। সব কাজের জন্য আলাদা আলাদা দেব-দেবী ছিলেন। প্রাচীন রোমে তুতেলারী দেবদেবী বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিলো।

একইভাবে জানুস এবং ভেস্টা দ্বার রক্ষা করেন, লারস শস্যক্ষেত্র এবং গৃহ সুরক্ষার দেবতা, প্যালেস চারণভূমি, শনি বপন, সেরেস শস্যের বৃদ্ধি, পমোনা ফলের এবং কনসাস ও ওপ ফসলের দেবতা। এমনকি মহামান্য জুপিটার, যিনি দেবতাদের শাসক, তিনি বৃষ্টির দেবতা, তিনি খামার এবং আঙুর ক্ষেতে বৃষ্টি দান করেন। তার চরিত্রের আরেকটি বিশেষ দিক তাকে বজ্রের দেবতা, মানুষের কর্মকান্ডের পরিচালক এবং রোমান জাতির রক্ষাকর্তা, অলক্ষ্যে তিনি তাদের সৈন্যবাহিনী নিয়ন্ত্রণ করেন। প্রথম দিকে মঙ্গল এবং কুইরিনাস উল্লেখযোগ্য দেবতা ছিলেন, তাদেরকে প্রায়শই একত্রে চিহ্নিত করা হয়। মার্স ছিলেন যুদ্ধদেবতা, তাকে মার্চ এবং অক্টোবর মাসে সম্মানিত করা হতো। আধুনিক পণ্ডিতদের ধারণা কুইরিনাস ছিলেন শান্তির সময়ে সশস্ত্র সম্প্রদায়ের রক্ষাকর্তা।

১৯-শতাব্দীর পণ্ডিত জর্জ উইসসোয়া[১৮] এর ধারণা রোমানদের দুই বিশিষ্ট শেণীর দেবতা ছিলো, ডাই ইন্ডিগেটেস এবং ডাই নোভেনসিডেস বা নোভেনসিলেস: ইন্ডিগেটেস ছিলো রোমান প্রদেশের প্রকৃত দেবতা, তাদের নাম এবং প্রকৃতি প্রথমদিকের পুরোহিতদের উপাধি দ্বারা এবং দিনপঞ্জির নির্ধারিত উৎসব দ্বারা নির্দেশিত হয়, বিশেষ উৎসবের মাধ্যমে এরকম ৩০ জন দেবতাকে সম্মানিত করা হয়; নোভেনসাইডেস হচ্ছে পরবর্তীকালের দেবদেবী যাদের প্রতিমা ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে বিশেষ সংকটে বা প্রয়োজনে শহরে স্থাপিত হয়। আর্নল্ডো মোমিগলিয়ানো এবং অন্যান্যরা যুক্তি দেখান যে এই পার্থক্যের বিপক্ষে।[১৯] হানিবালের সংগে যুদ্ধে রোমানদের আদিবাসী" ও "অভিবাসী" দেবতার পার্থক্য বিবর্ন হতে শুরু করে এবং রোমানেরা শক্তির প্রতীক হিসেবে বিভিন্ন সংস্কৃতির দেবতার পূজা শুরু করে সার্বজনীন ঐশ্বরিক সাহায্যের প্রত্যাশায়।[২০]

বিদেশী দেবতা[সম্পাদনা]

মিথ্রাস, রোমান দেয়াল চিত্র।

রোমান রাজ্য প্রতিবেশী অঞ্চল দখলের ফলে স্থানীয় দেবতাদের গ্রহণ করা হয়। রোমানরা সাধারণত বিজিত অঞ্চলের স্থানীয় দেবতাদেরকে রোমান রাজ্যের ধর্মীয় দেবতাদের মত সম্মান করতো। এছাড়া ক্যাস্টর এবং পোল্লুক্স যুক্ত হওয়ার ফলে, বিজেতাদের ইতালিতে বসতি স্থাপনের ফলে রোমান প্যানথিয়নে ডায়ানা, মিনার্ভা, হারকিউলিস, শুক্র এবং আরো কিছু ক্ষুদ্র মানের দেবদেবী যুক্ত হয় যাদের অধিকাংশ ইতালির দেবতা এবং কিছু মাগনা গ্রাসিয়ার গ্রীক সংস্কৃতি থেকে উদ্ভূত হয়েছে। ২০৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ফ্রাইজিয়ার পেসসিনাস তগেকে সিবেলের মূর্তি আনা হয় এবং উৎসবের মাধ্যমে রোম তাকে বরণ করে নেয়। ১ম খ্রিষ্টপূর্বাব্দ এর মধ্যভাগের কবি লুক্রেতিউস এবং ক্যাতুল্লাস উভয়েই দেবীর এই বিস্তারের বিরোধিতা করে অর্চনা করেন।

কিছু দৃষ্টান্তে আছে এভোক্যাটিও অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে শত্রু শক্তির দেবীকে আমন্ত্রণ জানানো হয় যাতে সেই অঞ্চল রোমের সংগে যুক্ত হয়।

বিদেশীদের সম্প্রদায়(পেরেগ্রিনি) এবং সাবেক দাস (লিবারটিনি) শহরের মধ্যে তাদের নিজস্ব ধর্মীয় চর্চা অব্যাহত রেখেছিলো। একই ভাবে মিথ্রাস রোমে আসে এবং রোমান সৈন্যবাহিনীর মধ্যে তার মূর্তির জনপ্রিয় রোমান ব্রিটেন পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। গ্রীক দেবদেবীদের উপর অধিক নরত্বারোপ এবং তাদের গুণাবলী ও পুরাণের দ্বারা রোমানদের গুরুত্বপূর্ণ দেবদেবীকে সনাক্ত করা যায়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. John North, Roman Religion (Cambridge University Press, 2000) pp. 4ff.
  2. North, Roman Religion, pp. 4–5.
  3. North, Roman Religion, p. 4.
  4. T. P. Wiseman, Remus: A Roman Myth (Cambridge University Press, 1995), p. xiii.
  5. T. P. Wiseman, The Myths of Rome (University of Exeter Press, 2004), preface (n.p.
  6. Wiseman, The Myths of Rome, preface.
  7. Alexandre Grandazzi, The Foundation of Rome: Myth and History (Cornell University Press, 1997), pp. 45–46.
  8. See also Lusus Troiae.
  9. J.N. Bremmer and N.M. Horsfall, Roman Myth and Mythography (University of London Institute of Classical Studies, 1987), pp. 49–62.
  10. Bremmer and Horsfall, pp. 63–75.
  11. Bremmer and Horsfall, pp. 76–88.
  12. Bremmer and Horsfall, pp. 89–104; Larissa Bonfante, Etruscan Life and Afterlife: A Handbook of Etruscan Studies (Wayne State University Press, 1986), p. 25.
  13. Bremmer and Horsfall, pp. 105–111.
  14. Moses Hadas, A History of Latin Literature (Columbia University Press, 1952), p. 15 online.
  15. C.O. Brink, Horace on Poetry.
  16. Cicero, De domo sua 138.
  17. Jerzy Linderski, "The libri reconditi," Harvard Studies in Classical Philology 89 (1985) 207–234.
  18. Georg Wissowa, De dis Romanorum indigetibus et novensidibus disputatio (1892), full text (in Latin) online.
  19. Arnaldo Momigliano, "From Bachofen to Cumont," in A.D. Momigliano: Studies on Modern Scholarship (University of California Press, 1994), p. 319; Franz Altheim, A History of Roman Religion, as translated by Harold Mattingly (London, 1938), pp. 110–112; Mary Beard, J.A. North and S.R.F. Price.
  20. William Warde Fowler, The Religious Experience of the Roman People (London, 1922) pp. 157 and 319; J.S. Wacher, The Roman World (Routledge, 1987, 2002), p. 751.