বিষয়বস্তুতে চলুন

রুকনউদ্দিন বারবাক শাহ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

রুকনউদ্দিন বারবাক শাহ (শাসনকাল ১৪৫৯-১৪৭৪) ছিলেন সুলতান নাসিরউদ্দিন মাহমুদ শাহের পুত্র ও উত্তরাধিকারী। বারবাক শাহ তার পিতার শাসনামলে সপ্তগ্রামের গভর্নর নিযুক্ত হন। পিতার মৃত্যুর পর ১৪৫৯ সালে তিনি ক্ষমতালাভ করেন।

কলিঙ্গের সাথে সংঘর্ষ

[সম্পাদনা]

রিসালাতুস শুহাদা অনুযায়ী বারবাক শাহের শাসনামলে কলিঙ্গের গজপতি রাজ্যের (বর্তমান উড়িষ্যা) রাজা দক্ষিণ বঙ্গ আক্রমণ করেন এবং মান্দারান দুর্গ দখল করেন। বারবাক শাহ তার সেনাপতি শাহ ইসমাইল গাজিকে তাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেন। ইসমাইল গাজি কলিঙ্গের সেনাদের পরাজিত করে দুর্গ পুনরুদ্ধার করেন।

কামরূপ অভিযান

[সম্পাদনা]

কামরূপের (বর্তমান আসাম) রাজা কামেশ্বর বাংলার উত্তর অঞ্চলে আক্রমণ করেন। শাহ ইসমাইল গাজিকে এবারও কামরূপের বিরুদ্ধে প্রেরণ করা হয়। সন্তোষের যুদ্ধক্ষেত্রে বারবাক শাহের সেনাবাহিনী ধ্বংস হয়ে গেলেও ইসমাইল গাজি তার গুণের কারণে কামেশ্বরের মন জয় করেন। কামরূপের রাজা ইসলাম গ্রহণ করেন এবং বারবাক শাহের অধীনতা স্বীকার করেন।[] তবে ইসমাইল গাজির গৌরব বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। গুজব ছড়ায় যে তিনি কামেশ্বরের সাথে পরিকল্পনা করে নিজের জন্য কামরূপে একটি স্বাধীন রাজ্য সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন। ইসমাইল গাজিকে হত্যা করা হয় এবং তার মৃতদেহ দুটি ভিন্ন স্থানে দাফন করা হয়।

মিথিলা জয়

[সম্পাদনা]

বারবাক শাহ মিথিলা (বর্তমান জনকপুর) আক্রমণ করেন এবং এই অঞ্চল জয় করেন। তিনি কেদার রায়কে এই অঞ্চলের গভর্নর নিযুক্ত করেন।

শাসিত অঞ্চল

[সম্পাদনা]

কামরূপ অভিযানের মাধ্যমে তার শাসিত এলাকা উত্তরে করতোয়া নদী পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। ১৪৬৮ সালে তিনি হাজিগঞ্জ দুর্গতিরহুতের চারপাশের এলাকা আক্রমণ করেন। এই বিজয় বুড়িগঙ্গা নদী পর্যন্ত তার রাজ্যের সীমানা বিস্তার করে। একটি সূত্রমতে সিলেট বারবাক শাহের নিয়ন্ত্রণাধীন ছিল। আরেকটি বর্ণনা মতে, বাকেরগঞ্জও সালতানাতের অংশ ছিল। তিনি চট্টগ্রামে কর্তৃত্ব পুনপ্রতিষ্ঠিত করেন।[]

পণ্ডিতদের পৃষ্ঠপোষকতা

[সম্পাদনা]

বারবাক শাহ মুসলিম ও হিন্দু পণ্ডিতদের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তার সময়ে জয়নুদ্দিন তার রাসুল বিজয় রচনা করেন ও ইবরাহিম কাওয়াম ফারসি গ্রন্থ ফারহাংই ইব্রাহিম (শরফনামা বলেও পরিচিত) রচনা করেন। রায়মুকুল ব্রশপতি মিশ্র, মালাধর বসু, কৃত্তিবাস ও কুলাধর সেসময়কার অগ্রগণ্য হিন্দু পণ্ডিত ছিলেন।[]

রুকনউদ্দিন বারবাক শাহ ১৪৭৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

রুকনউদ্দিন বারবাক শাহ
পূর্বসূরী
নাসিরউদ্দিন মাহমুদ শাহ
বাংলার সুলতান
১৪৫৯–১৪৭৪
উত্তরসূরী
শামসউদ্দিন ইউসুফ শাহ

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. ABM Shamsuddin Ahmed, Ruknuddin Barbak Shah ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩০ নভেম্বর ২০১০ তারিখে, Banglapedia: The National Encyclopedia of Bangladesh, Asiatic Society of Bangladesh, Dhaka, Retrieved: 2011-05-03