রন আর্চার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রন আর্চার
১৯৫৪ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে রন আর্চার
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামরোনাল্ড গ্রাহাম আর্চার
জন্ম(১৯৩৩-১০-২৫)২৫ অক্টোবর ১৯৩৩
হাইগেট হিল, কুইন্সল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া
মৃত্যু২৭ মে ২০০৭(2007-05-27) (বয়স ৭৩)
ব্রিসবেন, অস্ট্রেলিয়া
ডাকনামরন
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার, ম্যাচ রেফারি, প্রশাসক
সম্পর্ককেন আর্চার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৯৩)
৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৩ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট১১ অক্টোবর ১৯৫৬ বনাম পাকিস্তান
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১৯ ৯৮
রানের সংখ্যা ৭১৩ ৩৭৬৮
ব্যাটিং গড় ২৪.৫৮ ৩১.৯৩
১০০/৫০ ১/২ ৪/২১
সর্বোচ্চ রান ১২৮ ১৪৮
বল করেছে ৩৫৭৬ ১৫৬১৮
উইকেট ৪৮ ২৫৫
বোলিং গড় ২৭.৪৫ ২৩.৩৬
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৫/৫৩ ৭/৫৬
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২০/০ ১০৬/০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৩ জুন ২০১৯

রোনাল্ড গ্রাহাম রন আর্চার, এএম (ইংরেজি: Ron Archer; জন্ম: ২৫ অক্টোবর, ১৯৩৩ - মৃত্যু: ২৭ মে, ২০০৭) কুইন্সল্যান্ডের হাইগেট হিল এলাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার, ম্যাচ রেফারি ও প্রশাসক ছিলেন। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫৩ থেকে ১৯৫৬ সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেন।[১] ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে কুইন্সল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে তাকে দেখা যেতো। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে ফাস্ট বোলিংয়ে দক্ষতা প্রদর্শন করেছিলেন ‘রন’ ডাকনামে পরিচিত রন আর্চার

৯ জানুয়ারি, ২০০৬ তারিখে অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকে আইসিসির ম্যাচ রেফারির দায়িত্বে ছিলেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট[সম্পাদনা]

অ্যাংলিকান চার্চ গ্রামার স্কুলে পড়াশোনা সম্পন্ন করেছিলেন তিনি।[২] সহজাত ও উচ্চমার্গীয় অল-রাউন্ডার হিসেবে রন আর্চারের উত্থান ঘটে। ১৯৫১-৫২ মৌসুম থেকে ১৯৫৮-৫৯ মৌসুম পর্যন্ত রন আর্চারের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল।

টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেও ১৯৫৮-৫৯ মৌসুমে কুইন্সল্যান্ডের পক্ষে ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতে থাকেন। ৪০ ঊর্ধ্ব গড়ে রান তুলেন। কিন্তু গোড়ালির আঘাতের কারণে আর খেলতে পারেননি।[১]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট[সম্পাদনা]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ১৯ টেস্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন রন আর্চার। ৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৩ তারিখে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১১ অক্টোবর, ১৯৫৬ তারিখে করাচীতে স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন।

১৯৫২-৫৩ মৌসুমে মেলবোর্নে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষিক্ত হবার পর থেকেই অস্ট্রেলিয়ার নিয়মিত সদস্যের মর্যাদা পেয়েছিলেন। এ সময়ে তিনি ধ্রুপদী ঘরানার মাঝারিসারির ব্যাটসম্যান ও উদ্বোধনী বোলারের দায়িত্ব পালন করতেন। ১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে ইংরেজ দল অস্ট্রেলিয়ায় খেলতে আসে। এ সিরিজে ১৬.৫৩ গড়ে ১৩ উইকেট পেয়েছিলেন ও বোলিং গড়ে দলের শীর্ষস্থানীয় বোলারের মর্যাদাপ্রাপ্ত হন। সিডনিতে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ৩/১২ ও ৩/৫৩ লাভের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসে ৪৯ রানের সর্বোচ্চ রান তুলেন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন, ১৯৫৪-৫৫[সম্পাদনা]

ধীরলয়ে শুরু করলেও ১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমনে ত্রিনিদাদে ৮৪, ব্রিজটাউনে ৯৮ ও জ্যামাইকার কিংস্টনে অভিষেক টেস্ট শতরান করেন। ঐ সিরিজে ৬০.৬৬ গড়ে ৩৬৪ রান তুলেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২৫.০৫ গড়ে ১৮ উইকেট নিয়ে আদর্শ অল-রাউন্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। কিন্তু, পাকিস্তানে আঘাতপ্রাপ্তির ফলে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হন তিনি।[১]

১৯৫৬ সালে অস্ট্রেলিয়া দলের সাথে পাকিস্তান গমন করেন। করাচীতে সিরিজের একমাত্র টেস্টে হাঁটুতে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হন। ফলশ্রুতিতে মাত্র ২৩ বছর বয়সেই তাকে খেলার জগৎ থেকে অকালে অবসর গ্রহণ করতে হয়েছিল।

অবসর[সম্পাদনা]

ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর টেলিভিশন নির্বাহী হিসেবে কাজ করেন। এছাড়াও, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার আচরণবিধি নিয়ন্ত্রণ কমিশনার ও আইসিসি মনোনীত ম্যাচ রেফারি হিসেবে অংশ নেন। ক্রিকেট খেলায় অসামান্য অবদান রাখার প্রেক্ষিতে কুইন্সল্যান্ড ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের আজীবন সদস্যরূপে অন্তর্ভুক্ত হন।[৩]

১২ জুন, ১৯৯৫ তারিখে সম্প্রদায়, ক্রিকেট ও ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ রন আর্চারকে মেম্বার অব দি অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়া উপাধিতে ভূষিত করা হয়।[৪] ১৪ জুলাই, ২০০০ তারিখে ক্রিকেটে অসামান্য অর্জনের স্বীকৃতিদানে অস্ট্রেলিয়ান স্পোর্টস মেডেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।[৫] ২০০৯ সালে কুইন্সল্যান্ড স্পোর্ট হল অব ফেমে মরণোত্তর অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[৬]

দেহাবসান[সম্পাদনা]

২৭ মে, ২০০৭ তারিখে ৭৩ বছর বয়সে ব্রিসবেনে রন আর্চারের দেহাবসান ঘটে। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণকারী কেন আর্চার সম্পর্কে তার কনিষ্ঠ ভ্রাতা ছিলেন।[৭]

ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি ক্রিগ ও’কনর রন আর্চার সম্পর্কে মন্তব্য করেন যে, ‘সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে হলেও টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবনে তিনি বেশ সফল ছিলেন। কিন্তু, দুঃখজনকভাবে আঘাতের কারণে তাঁকে খেলা থেকে চলে আসতে হয় যা আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় থাকলে হয়তো পুনরায় খেলার জগতে ফিরে যেতে পারতেন। তাসত্ত্বেও উদ্যমী ও হর্ষোৎফুল্ল চিত্তের অধিকারী হিসেবে খেলাকে আজীবন আঁকড়ে ধরে রেখেছিলেন।’[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Ron Archer player profile"। ESPNcricinfo। 
  2. Mason, James (২০১১)। Churchie: The Centenary Register। Brisbane, Australia: The Anglican Church Grammar School। আইএসবিএন 978-0-646-55807-3 
  3. "Mr Ron Archer AM"। QSport। ২৫ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১৪ 
  4. "Ron Archer AM"Department of the Prime Minister and Cabinet। ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০১২ 
  5. "Ken Archer"Department of the Prime Minister and Cabinet। ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০১২ 
  6. "Mr Ron Archer AM"Queensland Sport Hall of Fame। qsport.org.au। ২৭ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জানুয়ারি ২০১৪ 
  7. "Ron Archer dies at 73"Cricinfo। ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০০৭ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]