য্যাহরিলা ইনসান

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
য্যাহরিলা ইনসান
পোস্টার
পরিচালকপুট্টানা কানাগাল
প্রযোজকবীরেন্দ্র সিনহা
কাহিনিকারটি আর সুব্বা রাও
শ্রেষ্ঠাংশেঋষি কাপুর
মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়
নীতু সিং
অম্বরিশ
প্রাণ
সুরকাররাহুল দেব বর্মণ
চিত্রগ্রাহকসুদর্শন নাগ
সম্পাদকভি পি কৃষ্ণ
প্রযোজনা
কোম্পানি
প্রগতি চিত্রা ইন্টারন্যাশনাল
মুক্তি২০ নভেম্বর ১৯৭৪
স্থিতিকাল১৪৬ মিনিট[১]
দেশভারত
ভাষাহিন্দি

য্যাহরিলা ইনসান (হিন্দি: जहरीला इंसान, অনুবাদ'বিষাক্ত মানুষ') হচ্ছে ১৯৭৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি হিন্দি চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটির পরিচালক ছিলেন দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্রের পরিচালক পুট্টান্না কানাগাল এবং প্রযোজনা করেছিলেন বীরেন্দ্র সিনহা। চলচ্চিত্রটিতে মুখ্য ভূমিকায় ছিলেন ঋষি কাপুর, মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়, নীতু সিং, অম্বরিশ এবং প্রাণ। চলচ্চিত্রটি বক্স অফিসে তেমন একটা সাফল্য না দেখাতে পারলেও রাহুল দেব বর্মণের সুরারোপিত কিশোর কুমারের গাওয়া 'ও হংসিনী' গানটা দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো।[২][৩]

কাহিনী[সম্পাদনা]

অর্জুন একজন রগচটা কিন্তু নরম মনের মানুষ। তিনি সর্বদা এমন পরিস্থিতিতে পড়েন যে অন্যরা তাকে খারাপ ব্যক্তি হিসাবে গ্রহণ করে। তাঁর শিক্ষক, যাকে তিনি মাস্টারজি বলেছেন, একমাত্র ব্যক্তি যিনি তাঁকে বোঝেন এবং তাঁর ভাল গুণাবলীর প্রশংসা করেন, তাই অর্জুন তাঁর ইচ্ছাকে পুরোপুরি অনুসরণ করেন। অর্জুন আরতি নামে এক মহিলাকে পছন্দ করে এবং তাকে বিয়ে করতে চায় তবে আরতির বাবা এই জোটের বিরোধিতা করে এবং জোর করে তাকে তার পছন্দের কোনও ব্যক্তির সাথে বিয়ে দেয়। অর্জুন হতাশ হয়ে পড়েছে, তবে শীঘ্রই তার খ্রিস্টান কলেজের সাথ মার্গারেটে প্রেমের সন্ধান পেয়ে যায়। সময় পার হওয়ার সাথে সাথে তিনি আরতিকে পরাভূত করে মার্গারেটে নিজেকে নিয়োজিত করেন। অন্য শহরে ব্যবসায় ভ্রমণের সময় অর্জুন দেখতে পান যে আরতি এখন বেশ্যা। ক্ষুব্ধ ও বিরক্ত হয়ে অর্জুন নিজেকে এক করুণ অবস্থায় পেয়ে যায়। মার্গারেটের চাচা এবং মা তাঁর অর্জুনকে বিয়ে করার বিরুদ্ধে। অর্জুন এবং মার্গারেট পাহাড়ে পালিয়ে যায়; মাস্টারজি তাদের সাথে গিয়ে অর্জুনকে শান্ত করার চেষ্টা করলেন, কিন্তু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করলেন এবং তার পরিবর্তে তাঁকে পাহাড়ের উপরে ধাক্কা দিয়ে তাঁর মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিলেন। তাঁর শিক্ষককে হত্যার কারণে আহত হয়ে অর্জুন মার্গারেটকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন তিনি কোথায় চলে যাবেন তিনি যদি যোগ দেবেন; তিনি বলেন যে সে করবে, এবং উভয়েই তাদের মৃত্যুর দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

অভিনয়ে[সম্পাদনা]

প্রযোজনা[সম্পাদনা]

এই চলচ্চিত্রটি ছিলো মূলত ১৯৭২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি কন্নড় ভাষার চলচ্চিত্রের পুনর্নির্মাণ, চলচ্চিত্রটির নাম ছিলো নাগারাহাভু, কন্নড় চলচ্চিত্রটি তিনটি আলাদা আলাদা উপন্যাসের কাহিনীর উপর আধারিত ছিলো, ঐ উপন্যাসগুলোও কন্নড় ভাষারই ছিলো, উপন্যাসগুলোর নাম হলোঃ নাগারাহাভু, ওন্দু গান্দু এরাদু হেন্নু এবং সার্পা মাথসারা, এগুলোর লেখক ছিলেন টি.আর. সুব্বা রাও।[৪] পুট্টানা কানাগাল যিনি এই য্যাহরিলা ইনসান চলচ্চিত্রের পরিচালক ছিলেন তিনিই ১৯৭২ সালের কন্নড় চলচ্চিত্র (এই হিন্দি চলচ্চিত্রটির মূল চলচ্চিত্র) পরিচালনা করেছিলেন, তিনি চলচ্চিত্রটি হিন্দি ভাষাতে বানানোর সিদ্ধান্ত নেন এবং প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান 'প্রগতি চিত্রা ইন্টারন্যাশনাল'-এর বীরেন্দ্র সিনহাকে বললে তিনি প্রযোজনা করতে রাজী হয়ে যান। চলচ্চিত্রটির চিত্রগ্রহণের কাজ করেছিলেন সুদর্শন নাগ এবং সম্পাদনা করেছিলেন ভিপি কৃষ্ণ। কন্নড় অভিনেতা অম্বরীশ "নাগারাহাভু" চলচ্চিত্রের মত একই ভূমিকা এই হিন্দি চলচ্চিত্রেও করেছিলেন, যে চরিত্রের নাম ছিলো জলীল।[৫] কন্নড় চলচ্চিত্রটির শিক্ষক চরিত্রটি ধুতি, কালো কোট এবং টারবান পরেছিলেন আর এই হিন্দি চলচ্চিত্রটিতে একই চরিত্রে যিনি ছিলেন তিনি কুর্তা-পায়জামা আর নেহরু-জ্যাকেট পড়েছিলেন। এই চলচ্চিত্রটির জনপ্রিয় গান "ও হংসিনী"র শুটিং হয়েছিলো কর্ণাটকের চিত্রদুর্গতে, চলচ্চিত্রটির অন্যান্য অধিকাংশ শুটিং এখানেই হয়েছিলো।[৬][৭]

সঙ্গীত[সম্পাদনা]

মজরুহ সুলতানপুরীর গীতিতে সঙ্গীত পরিচালনা করেছিলেন রাহুল দেববর্মণ[৩], গানগুলো দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো বিশেষ করে কিশোর কুমারের গাওয়া "ও হংসিনী" গানটি।[৭]

"সাপ সে বাড়কে" গানটি আসল কন্নড় চলচ্চিত্রটির "হাভিনা দেশা" গানের অনুকরণে সুর করা ছিলো।[৮]

নং.শিরোনামগীতিকারকণ্ঠশিল্পীদৈর্ঘ্য
১."সাপ সে বাড়কে"মজরুহ সুলতানপুরীশৈলেন্দ্র সিং০৩ঃ২০
২."মেরে দিল সে ইয়ে ন্যান"মজরুহ সুলতানপুরীশৈলেন্দ্র সিং, আশা ভোঁসলে০৪ঃ১৯
৩."ইয়ে সিলসিলা"মজরুহ সুলতানপুরীআশা ভোঁসলে০৪ঃ১৭
৪."শিরোনাম সঙ্গীত" (বাদ্য) — — 
৫."সুনো কাহানি"মজরুহ সুলতানপুরীলতা মঙ্গেশকর০৪ঃ৫৬
৬."ও হংসিনী"মজরুহ সুলতানপুরীকিশোর কুমার০৫ঃ২৩
৭."দম তুমহারি দম"মজরুহ সুলতানপুরীকিশোর কুমার০৪ঃ১৯

মুক্তি এবং গ্রহণ[সম্পাদনা]

১৯৭৪ সালের ২০শে নভেম্বর চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়,[৯] এবং ব্যবসায়িক ব্যর্থতার মুখে পড়ে।[১০] অভিনেতা ঋষি কাপুর তার এই চলচ্চিত্রটির ব্যর্থতার জন্য মন খারাপ করেন এবং বলেন যে, তার ১৯৭৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত "ববি"-এর মত এটিও সফলতার মুখ দেখবে বলে তিনি মনে করেছিলেন কিন্তু তা হয়নি।[১১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Dharap 1974, পৃ. 374।
  2. Zehreela Insaan (motion picture) (Hindi ভাষায়)। Pragati Chitra International। ১৯৭৪। From 4:57 to 5:01। সংগ্রহের তারিখ ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ 
  3. Burman, Rahul Dev (১৯৭৪)। "Zehreela Insaan"EMI Records। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ 
  4. Deepak, S N (১৫ জুলাই ২০১৮)। "Vishnuvardhan classic back in restored avatar"Deccan Herald। ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ 
  5. Khajane, Muralidhara (২৬ এপ্রিল ২০১২)। "Ambi-tious he wasn't"The Hindu। ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০১৮ 
  6. Sarmmah, Surupasree (২৭ ডিসেম্বর ২০১৬)। "'Any role is challenging'"Deccan Herald। ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ 
  7. Sharma, Devesh (৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬)। "Ten songs of Rishi Kapoor that you shouldn't give a miss"Filmfare। ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ 
  8. https://www.songsofyore.com/similar-songs-in-hindi-and-kannada/
  9. "Zehreela Insaan"The Times of India। ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ 
  10. "Rishi Kapoor's advice to son Ranbir: Don't let success go to your head or failure to your heart"The Indian Express। ৫ জুন ২০১৫। ২৯ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ 
  11. "11 khullam khulla confessions by Rishi Kapoor"The Times of India। ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭। ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]